সারা দেশে জমে উঠছে পশুর হাট
২৫ জুন ২০২৩, ১১:১১ পিএম | আপডেট: ২৬ জুন ২০২৩, ১২:০১ এএম
রাজধানীসহ সারা দেশে জমে উঠেছে কোরবানি পশুর হাট। কোরবানি ঈদের বাকি আর কয়েক দিন। ঈদকে কেন্দ্র করে পাইকার ও খামারিরা ইতোমধ্যে রাজধানীর অস্থায়ী হাটে কোরবানির পশু আনতে শুরু করেছেন। গ্রাম-গঞ্জেও শুরু হয়ে হয়েছে গরু-ছাগল বেচাকেনা। রাজধানীতে কোরবানির পশু রাখার যথেষ্ট জায়গা না থাকায় কেনাচেনা এখনো জমে উঠেনি। ফলে রাজধানীর অস্থায়ী পশুর হাটে ক্রেতাদের উপস্থিতি তেমন একটা দেখা যায়নি।
রাজধানীর গাবতলী হাট ঘুরে দেখা গেছে, এখনো পুরোদমে পশু আসা শুরু হয়নি। ক্রেতা উপস্থিতিও কম। যেসব পাইকার ও খামারিরাও এসেছেন, তারা অলস সময় পার করছেন। কেউবা ব্যস্ত ছিলেন গবাদিপশুর যতœআত্তি নিয়ে। রাজধানীর হাজারীবাগের পশুর হাটে গিয়েও একই চিত্র দেখা যায়। দিনাজপুরের ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, ১০টি গরু নিয়ে বুধবার গাবতলী হাটে এসেছি। এখনো একটি গরুও বিক্রি করতে পারিনি। তার আনা একেকটি গরুর ওজন তিন থেকে ছয় মণ। রাজধানীর আফতাবনগর ও মেরাদিয়াতে গরুর হাটে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিয়ে আসা গরু খামারিরা ট্রাক থেকে নামিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে রাখছেন। অনেকে ঘুরে ঘুরে দেখছেন বিভিন্ন আকারের গরু। কেউ দাম জানতে চাচ্ছেন। হাট ঘুরে দেখা গেছে, এক লাখের নিচে গরু নেই। এই হাটে খুলনা থেকে ১০টি গরু এনেছেন করিম নামে এক ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, গরু লালনপালনে খরচ বেড়েছে। তাই গত বছরের চেয়ে দাম বেশি হবে এবার। বিভিন্ন হাটের পশু ব্যবসায়ীরা জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে তারা পশু বিক্রির জন্য হাটগুলোতে আসতে শুরু করেছেন। তবে ঈদ এগিয়ে এলে সড়কে যানজট ও ঝামেলা এড়াতে অনেকে কয়েক দিন আগেই চলে এসেছেন বলেও জানান তার।
এদিকে হাটগুলোর ইজারাদারের কর্মীরা জানান, কয়েক দিন ধরেই হাটগুলোতে গরু আসতে শুরু করেছে। ঈদ যত ঘনিয়ে আসবে হাটে পশু আরও বাড়বে। সেই সঙ্গে বিক্রিও জমে উঠবে বলে আশা করছেন তারা। পশুর হাটগুলোতে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের নিরাপত্তার স্বার্থে ডিজিটাল বুথ, জাল টাকা শনাক্তের মেশিনসহ পর্যাপ্ত নিরাপত্তাকর্মীর ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানান তারা। হাটের ভোগান্তি এড়াতে আগেভাগে অনেকেই কোরবানির পশু কিনছেন। যে কারণে দেশের সর্ববৃহৎ গাবতলী পশু হাটের বিক্রি বেড়েছে। গরু-মহিষ, ছাগল-ভেড়া এবং দুম্বাও উঠেছে দেশের সর্ববৃহৎ এই হাটে। তবে পশু আমদানি বন্ধ থাকায় গত বছরের মতো এবারও উটের দেখা মিলবে না ওই হাটে। কোরবানি উপলক্ষে গাবতলী হাটের চারপাশে অস্থায়ী শেড তৈরি করা হয়েছে। এতে করে হাটে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি পশুর ধারণক্ষমতা তৈরি হয়। ঢাকায় স্থায়ীভাবে থাকেন এমন অনেক মানুষের কাছে গাবতলী হাটে পশু কেনা আবেগ ও আস্থার ব্যাপার। ঢাকায় কোরবানি উপলক্ষে অনেক জায়গায় হাট বসলেও সেখানে তারা যান না। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যে’র প্রতিবেদনে :
সৈয়দপুর (নিলফামারী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, নীলফামারীর সব হাটবাজারে কোরবানির পশু আসতে শুরু করেছে। বড় বড় হাট-বাজারের পাশাপাশি সাপ্তাহিক বাজার বসে এরকম হাটেও কোরবানির গরু ও ছাগল উঠছে। তবে গত বছরের চেয়ে এবার গরু প্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার বেশি গুণতে হচ্ছে। একাধিক হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতা-বিক্রেতারা দালালদের খপ্পড়ে পড়ে দরদামে ঠকছেন। তাদের মারপ্যাচে বেকায়দায় ফেলে ফায়দা লুটছেন দালালরা।জেলার মীরগঞ্জ, বোড়াগাড়ি, ঢেলাপীর, টেঙ্গনমারী, শাঁখামাচা প্রভূতি হাটে খামারি ও কৃষকরা কোরবানির পশু আনছেন। তবে, লালন-পালন করা খামারের গরুর চেয়ে কৃষকের পালন করা গরু কিনতে ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এবছর নানা সমস্যার কারণে কোরবানিদাতারা একক নয়, ভাগে গরু কিনছেন। তারা জানান, ফসলের দাম নেই, আবাদে সব শেষ। তাই এককভাবে গরু দেওয়ার ক্ষমতাও নেই। তাই আমরা অনেকে ভাগে এ বছর গরু কিনছি। কোরবানির হাট-বাজারে দালাল চক্রের তৎপরতা বেড়েছে। গরু হাটে আসার আগেই দালালরা দড়ি ধরে নিজেদের কাছে নিচ্ছেন। সাংকেতিক ভাষায় গরু বেচাকেনা করে দিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার কাছ থেকে লাভ আদায় করছেন। এককথায় বলা চলে দালাল ছাড়া কোরবানির গরু-ছাগল বিক্রি হচ্ছে না কোনো হাটে। অনেক হাটে ইজারাদাররা ইচ্ছেমতো হাসিল আদায় করারও অভিযোগ মিলেছে।
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈলে শেষ মুহুর্তে জমে উঠেছে পশুর হাট। কোরবানি সন্নিকটে হওয়ায় কাতিহার ও নেকমরদ হাটে প্রচুর গরু-ছাগলের আমদানি হয়েছে। বিক্রিও বেশ জমে উঠেছে। তবে এবারে ভারতীয় গরু দেখা না গেলেও বিক্রেতা ও ক্রেতা উভয়েই গরু কেনাবেচায় খুশি নন। ক্রেতাদের অভিযোগ-দাম বেশি আর বিক্রেতাদের অভিযোগ তেমন দাম মিলছে না। আশানুরূপ দাম ও চাহিদা কম থাকায় নাখোশ বড় আকারের গরুর মালিকরা। এ বছর বড় গরুর চাহিদা কম, ছোট ও মধ্যম গরু চাহিদা অনেক বেশি। উপজেলায় সপ্তাহে প্রতি শনিবার কাতিহার আর রোববার নেকমরদে গবাদিপশুর হাট বসে। শনিবার কাতিহার শেষ ঈদের হাটে প্রায় ১৫০০ গরু ও ৯১৩টি ছাগল কেনাবেচা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে হাট ইজারাদাররা গরু ছাগলের খাজনার বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা গরু প্রতি ৫০০ টাকা ছাগল প্রতি ১৬০ টাকা হারে নিয়েছে। যা নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করেছে। অনেকে বলেছেন, কোরবানী উপলক্ষে সব জিনিসের দাম এমনিতেই বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই তালিকায় হাটের খাজনাও বাড়িয়ে দিয়েছে এটা মোটেও ঠিক হয়নি। প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।
দিরাই (সুনামগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, হাওর বেষ্টিত উপজেলায় পশুর কেনাবেচা জমে উঠেছে। উপজেলার দূর-দূরান্ত থেকে পছন্দের পশু ক্রয় করতে আসছেন ক্রেতারা। তবে বাজারে প্রচুর গরু থাকলেও গতবারের চেয়ে এবার দাম বেশি। ঈদ ঘনিয়ে আসায় বাধ্য হয়ে অনেককেই বাজেটের চেয়ে বেশি দামে পশু ক্রয় করতে দেখা গেছে। দিরাই পৌর শহরের হেলিপ্যাড মাঠ এলাকায় বাজার কর্তৃপক্ষ মাইকিং করে ক্রেতা-বিক্রেতাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। দিরাই উপজেলারম পাইকার, গৃহস্থ ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে পাইকার ও বিক্রেতারা কোরবানির হাটে গরু, ছাগল নিয়ে আসছেন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
রাজবাড়ীতে পদ্মা নদীর এক বোয়াল ৫২ হাজারে বিক্রি
নাটোরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় চালকসহ এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নিহত
এবার সাদপন্থিদের ১০ দফা দাবি
সা'দ পন্থীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও আশুলিয়া থানায় স্মারক লিপি প্রদান
লক্ষ্মীপুরে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু
বাংলাদেশ নিয়ে কটুক্তি করা বিজেপি নেতা শুভেন্দুকে জুতাপেটা
সিকদার গ্রুপের ১৫ প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ
শীতের তীব্রতায় বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ,বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা
চিরিরবন্দরে আগাম জাতের আলুর ভালো ফলন ও দাম পেয়ে কৃষকেরা খুশি
‘রেমিট্যান্স এ্যাওয়ার্ড-২০২৪’ পেল হংকংয়ে বসবাসরত ১০ বাংলাদেশি নারী
বিডিআর বিদ্রোহ : ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের কমিশন গঠন
মার্কিন সিইও হত্যাকাণ্ড, সামাজিক মাধ্যমে ভুল তথ্যের বিপজ্জনক প্রভাব
গাজীপুরে কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ
ঝিনাইদহে বেসিক জার্নালিজম বিষয়ক প্রশিক্ষণ শেষে সনদ বিতরণ
বছরখানেক সময় পেলে সংস্কার কাজগুলো করে যাব : উপদেষ্টা আসিফ নজরুল
সান্ধ্য আইন বাতিলের দাবি ইবি ছাত্র ইউনিয়নে
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আওয়ামী সরকারের পুনরাবৃত্তি করবে না আশাবাদ রিজভীর
আফগানিস্তানে ফের দূতাবাস চালু করছে সৌদি
হাজারো বিঘা জমিতে পুকুর খনন: ছোট হয়ে যাচ্ছে সালথা-নগরকান্দার মানচিত্র!
প্রতিবাদ সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান, সাদপন্থীদের নিষিদ্ধের দাবি