জমে উঠেছে রাজধানীর পশুর হাট
২৬ জুন ২০২৩, ১০:৫১ পিএম | আপডেট: ২৭ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
মুসলিমদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা, আর আত্মত্যাগের মহিমা নিয়ে আসা এই ঈদের অন্যতম অংশ পশু কোরবানি। তাই সারা দেশের মতো রাজধানীর স্থায়ী-অস্থায়ী হাটগুলোরত এরই মধ্যে গরু, ছাগল, ভেড়া উঠেছে ব্যাপক হারে। গতকাল সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন পশুর হাট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকাহাঁকি-ডাকাডাকিতে হাট সরগরম। বাজারে গরু, ছাগলের পাশাপাশি ভেড়া, দুম্বা, মহিষ, গয়ালও দেখা গেছে। বিক্রেতাদের প্রত্যাশা ঈদকে সামনে রেখে বিক্রি হয়ে যাবে তাদের আনা পশুগুলো। আর ক্রেতারা প্রত্যাশা করছেন সহনীয় ও নায্যমূল্যে তারা কোরবানির পশুটি কিনতে পারবেন।
মেরাদিয়ায় অস্থায়ী পশুর হাটে জামালপুর থেকে গরু নিয়ে এসেছেন বেপারী নাজমুল। তিনি বলেন, আমাদের পারিবারিক ব্যবসা এটা। ৩ ভাই রাজধানীর শাজাহানপুর, গাবতলীসহ কয়েকটি হাটে গরু নিয়ে গেছে। আমি মোট ২৭টি গরু নিয়ে এসেছিলাম। ৮টা গরু বিক্রি হয়েছে এখন পর্যন্ত। যে সময় আছে, আশাকরি বাকিগুলোও বিক্রি হয়ে যাবে। আমরা সারাবছরই গরু লালন-পালন করি। এটাই আমাদের ব্যাবসা। বিক্রি না হলে পরে আবার স্থানীয় বাজারে বিক্রির চেষ্টা করব। একই হাটে কথা হয় আরেক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। তিনি বলেন, মাদারীপুরের শিবচর থেকে গরু নিয়ে এসেছি। মূলত স্থানীয় বাজার থেকে কিছুটা বাড়তি দামের আশাতেই এখানে নিয়ে আসা। গরু নিয়ে এসেছিলাম ১১টি, আর ১৮টি ছাগল। এর মধ্যে ৫টি গরু বিক্রি হয়ে গেছে। ৪ লাখ ৬৬ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। আর ছাগল বিক্রি হয়েছে ৩টি।
রাজধানীতে বসা কোরবানির পশুর বড় হাটগুলোর মধ্যে আফতাবনগর হাটটি অন্যতম। কয়েকদিন আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকাররা গরু আনতে শুরু করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকালও হাটে ট্রাকে ট্রাকে ঢুকছে গরু। হাট ঘুরে প্রচুর পরিমাণে গরু দেখা গেলেও ক্রেতাদের উপস্থিতি এখনো সেভাবে দেখা যায়নি। এছাড়া বিক্রেতারা প্রতিটি গরুর দাম বেশি চাচ্ছেন। বিশেষ করে মাঝারি সাইজের গরুর দাম অতিরিক্ত হাঁকছেন বিক্রেতারা। অন্যদিকে যে অল্প সংখ্যক ক্রেতারা হাটে আসছেন, তারা শুধু দাম সম্পর্কে জানছেন। খুব কম সংখ্যক ক্রেতা গরু কিনছেন। সেই কারণে হাটে স্থাপিত হাসিল বুথগুলোও ফাঁকা দেখা গেছে।
হাটে ৭টি গরু এক বিক্রেতা বলেন, হাটে গরুর কোনো অভাব নেই, প্রচুর পরিমাণে গরু। এসব গরুর মধ্যে মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। সেইসঙ্গে দামও বেশি। যদিও এবার গরুর দাম বেশি যাবে, কারণ এবার বেশি দামে গরু কিনেছেন পাইকাররা। মূলত গরুর খাবারের দাম অনেক বেশি যাচ্ছে, তাই সব ধরনের গরু বাড়তি দামে কেনা আমাদের। গত বছর যে গরু দেড় লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে, এবার সেই গরু কমপক্ষে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি হবে। হাটে এসেছি চারদিন হয়ে গেল, কিন্তু ৭টি গরুর মধ্যে এখনো একটি গরুও বিক্রি হয়নি।
রাজধানীর মগবাজার থেকে আফতাবনগর হাটে গরু কিনতে এসেছেন একজন ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, প্রতি বছর আফতাবনগর হাট থেকেই কোরবানির গরু কিনি। এই হাটটিও বড় হাটের মধ্যে একটি, তাই প্রচুর গরু পাওয়া যায়। এসেছি মূলত গরুর দরদাম দেখতে। এসে যা বুঝলাম তাতে দেখলাম বিক্রেতারা এবার গরুর দাম বেশি চাচ্ছে। আর মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা যেহেতু সবচেয়ে বেশি তাই বিক্রেতারা এই গরুগুলো দাম আরও বেশি দাম চাচ্ছে। গতবার দেড় লাখ টাকার গরু এবার চাওয়া হচ্ছে ২ লাখ টাকা। তবে দাম বেশি চেয়েও বিক্রেতারা হতাশ, কারণ হাটে এখনো ক্রেতা নেই। হাট এখনো জমে উঠেনি, কাল থেকে জমে উঠতে পারে। আজ আমিও গরু কিনতে আসিনি, একটু বাজার ঘুরে ধারণা নিতে এসেছি।
মোহাম্মদপুরে বছিলা হাটে মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি। লাখ টাকার নিচে মিলছে না মাঝারি গরু। তবে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে দামের পার্থক্য হচ্ছে ৩০-৫০ হাজার। এক বেপারী জানালেন, তিনি রাতে এই হাটে এসেছেন। তাদের প্রত্যেকটা গরু মাঝারি। কোনটা ১ লাখ ২০ আবার কোনটা ১ লাখ ৪০ হাজার। এসময় তার কাছে প্রশ্ন ছিল ক্রেতারা কোন ধরনের গরু বেশি খুঁজতেছে। তার কাছে সকাল থেকে যতো ক্রেতা আসছে বেশির ভাগ মাঝারি গরু খুঁজতেছে। পুরো হাট ঘুরে দেখা গেল, মাঝারি গরু বেশি বিক্রি হচ্ছে হাটে। প্রতিটি গরুর দাম পড়ছে এক থেকে দেড় লাখ। হাটে এখনো গরু আসছে। কিছু বড় গরু উঠেছে হাটে। সেগুলোর দাম চড়া।
গাবতলী পশুর হাটে ঢুকতেই চোখ পড়ে বাহাদুরের দিকে। হাটে আসা ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করছে সিরাজগঞ্জ থেকে আসা এই গরু। গাবতলী পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটের প্রথম সারির ডান পাশে বাহাদুরকে ঘিরে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জটলা। বিক্রেতা মো. মোশাররফ হোসেন গরুটির দাম চাইছেন ৮ লাখ টাকা। বিক্রেতা যখন বলছিলেন, বাহাদুর এই দিকে তাকাও, গরুটি তখন ফিরে তাকাচ্ছে। মাথা ঘুরাও বললে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, উঁচু হতে বললে উঁচু হচ্ছে। আবার বাহাদুর নাম ধরে ডাকার সঙ্গে সঙ্গেই সাড়া দিচ্ছে। বিক্রেতা বলেন, ওর নাম বাহাদুর। ছোট থেকেই লালন-পালন করছি, খাইয়েছি। কথা বললে শুনে, তাই নাম রেখেছি বাহাদুর। গরুটির বয়স সাড়ে তিন বছর, ৪ দাঁতের বাহাদুরের ওজন ৭৪০ কেজি। তিনি বলেন, ক্রেতারা এখন পর্যন্ত ৬ লাখ টাকা দাম বলেছে, তবে ৭ লাখ টাকা হলে ছেড়ে দেব।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার না হলে জুলাই আগষ্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে - ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন
বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ
লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে জনসম্মুখে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, নাকে খত
নকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির উপর শুল্ক কমানোর দাবি বাজারের ২০ শতাংশ খাদ্য মানহীন
আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ কাজের আহ্বান: সিলেটে এড. এমরান আহমদ চৌধুরী
রানার অটোমোবাইলস পিএলসির এজিএম সম্পন্ন
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় তরুণদের প্রস্তুতি নিতে হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা
২০২৫ সালে নিম্নমাধ্যমিক-মাধ্যমিকে ৭৬ দিনের ছুটির তালিকা প্রকাশ
খুলনা থেকে পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকার পথে যুক্ত হচ্ছে ট্রেন জাহানাবাদ
প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত গ্রহনযোগ্য নির্বাচন দিন
আশুলিয়ায় কিশোর গ্যাং এর হামলায় আহত ৩
মাদারীপুরে পরকীয়ার জেরে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
প্রেসিডেন্টের প্রেস সচিব হলেন সরওয়ার আলম
তোমাদের হাতে উড়তে থাকবে সমৃদ্ধ স্বনির্ভর বাংলাদেশের বিজয় কেতন - সাভার এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মোঃ মঈন খান
দৌলতপুরে পুলিশের মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান : গ্রেফতার-২
ব্রাহ্মণপাড়ায় বোরো ধানের বীজতলা পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষকেরা
পাকিস্তানে সামরিক আদালতে ২৫ বেসামরিক ব্যক্তির সাজায় উদ্বিগ্ন ইইউ
ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে দেশে এনে সকল অপকর্মের বিচার করতে হবে : কাইয়ুম চৌধুরী
ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপি মহাসচিব এর জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত
ভারতের সাথে চুক্তি সার্বভৌমত্বের জন্য ক্ষতিকর