গরুর হাট বৃষ্টিতে নাকাল
২৭ জুন ২০২৩, ১০:২৫ পিএম | আপডেট: ২৭ জুন ২০২৩, ১১:৪২ পিএম
কাঁদা-পানিতে লেপ্টালেপ্টি অবস্থা ঈদুল আজহার কোরবানির পশুর হাট। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে এবার রাজধানীর দুই সিটিতে বসেছে ১৭টি অস্থায়ী পশুর হাট। এর বাইরে গাবতলী ও সারুলিয়ায় দুটি স্থায়ী হাটেও প্রচুর গরু নিয়ে এসেছেন ব্যবসায়ীরা। হাটগুলো জমে উঠলেও গত দুই দিনের বৃষ্টিতে এখন বেহাল অবস্থা। কর্দমাক্ত হাটে ক্রেতা-বিক্রেতারাও পড়েছেন বিপাকে। বৃষ্টির কারণে অনেক গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, এ অবস্থায় পশুর দামও কমে গেছে। ফলে লোকসানের আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর শনিরআখড়া, কমলাপুর, রহমতগঞ্জ, সারুলিয়া, আফতাবনগরসহ অন্যান্য হাট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
পশুর হাটগুলোতে দেখা যায়, সোমবার থেকে থেমে থেমে বৃষ্টির হওয়ায় কোরবানির পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে হাটে আসা ক্রেতারাও পড়েছেন ভোগান্তিতে। কোনও কোনও হাট বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। হাঁটু পানিতে রাখা হয়েছে গরু। ক্রেতাদের হাটে ঘুরতে হচ্ছে কাদা পেরিয়ে। সব মিলে বৃষ্টিতে নাকাল গরুর হাট। বৃষ্টির পানি থেকে রক্ষা পেতে অনেক ব্যবসায়ী বালুর বস্তা বিছিয়ে তার ওপরে গরু রেখেছেন। অনেকে আবার ত্রিপল, ভারী পলিথিন দিয়ে গরু রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। তবে এর মধ্যেই গরু বিক্রি বেড়েছে। ৬০ হাজার থেকে শুরু করে দেড় লাখ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত গরু বিক্রি হচ্ছে। তবে মাঝারি আকৃতির গরুর চাহিদা বেশি হওয়ায় দাম কিছুটা এখনো বেশি।
ব্যবসায়ীরা জানান, আবহাওয়া খারাপের কারণে ক্রেতা সমাগম কম। যারা হাটে আসছেন, তারা দাম জানতে চেয়ে চলে যাচ্ছেন, কিনছেন না। ব্যবসায়ীরা মনে করেন, আবহাওয়া ভালো হলে ফের জমে ওঠবে পশুর বেচাকেনা। গতকাল শনিরআখড়া হাটে দেখা যায় গরু বিক্রি শুরু হয়েছে। আগের সোমবারের চেয়ে মঙ্গলবার বেশ গরু বিক্রি হয়েছে। আগের দিনের চেয়ে দাম কিছুটা কমেছে। এক সাপ্তাহ আগে গরুর হাট শুরু হলে বিক্রেতা আকাশ ছোঁয়া দাম হাকায়। ফলে কয়েকদিন গরু বিক্রি হয়নি। তবে জহিরুল ইসলাম নামের একজন বিক্রেতা জানান, তিনি কিশোরগঞ্জ থেকে ২০টি গরু নিয়ে এসেছিলেন। মঙ্গলবার ৫টি গরু বিক্রি হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে সারুলিয়া হাটে গিয়ে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রাকে করে গরু, ছাগল, মহিষ নিয়ে হাটে এসেছেন ব্যবসায়ীরা। আর যারা পশু কিনতে হাটে এসেছেন, তারাও বৃষ্টি আর কর্দমাক্ত পরিবেশ দেখে না কিনেই ফিরে যাচ্ছেন। তবে এই হাটের বাইরের অংশে দুই-একটি গরু ও ছাগল বিক্রি হতে দেখা গেছে।
রহমতগঞ্জ ফ্রেন্ড সোসাইটির হাটেও একই অবস্থা দেখা গেছে। ক্রেতা-ব্যবসায়ীদের চেষ্টার পরেও বৃষ্টি থেকে কেউই রক্ষা পাননি। বিক্রেতা, ক্রেতা ও দর্শনার্থী সবাই ভিজেছেন। বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ায় এরইমধ্যে অনেক গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। হাটে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে গরুর জ্বরের ওষুধও সংগ্রহ করতে দেখা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেশি দামে লোভে ইনজেকশন নিয়ে গরু মোটাতাজাকরণ করে হাটে উঠিয়েছে অনেক চতুর ব্যবসায়ী। ফলে ওই সব গরু অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। শনির আখড়া হাটে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেল কাথাও কোথাও হাঁটু পানির সঙ্গে পশুর মল-মূত্র মিশে যাওয়ায় হাটে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের। একইসঙ্গে গত দুই দিনে বেড়েছে মশার উপদ্রবও। একদিকে বৃষ্টির বাগড়া, তার ওপরে মশার উপদ্রবে হাটে বিরাজ করছে নাকাল অবস্থা।
সারুলিয়া হাটে সরেজমিন ঘুরেছেন এমন এক সাংবাদিক জানান, মেহেরপুর থেকে আসা ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম জানান, সোমবার ১২টি গরু নিয়ে হাটে এসেছি। প্রতিটি গরুর দাম গড়ে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। আসার পর পরই দুইটি গরু বিক্রি হলেও এরপর বৃষ্টির কারণে ক্রেতারা আর দাম-দরও করেননি। কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার খামারি বদিউল আলম বলেন, আমার নিজের ঘরে পালিত তিনটি গরু নিয়ে এসেছি। বৃষ্টির কারণে একটি গরুর ঠান্ডা লেগে গেছে। আবহাওয়া এমন খারাপ থাকলে কম দামেই বিক্রি করে দেওয়া লাগতে পারে।
আফতাবনগর হাটে দেখা গেছে, হাটের সীমানা ছাপিয়ে গরু চলে গেছে অনেক দূর। সেখানে হাঁটার রাস্তায়ও পানি জমে গেছে। বৃষ্টির মধ্যেই ভিজছে গরুগুলো। এ অবস্থায় আশপাশে দোকান-পাট না থাকায় বিপদে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। গরু রেখে বেশিদূর যাওয়াও তাদের জন্য ঝুঁকি। মঙ্গলবার দুপুরে অঝোর বৃষ্টিতে অনেক ব্যবসায়ীকে ভিজতে দেখা গেছে। কবির হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, আগের রাতে (সোমবার) গরুর সঙ্গে আমরাও বৃষ্টিতে ভিজেছি। এখন বৃষ্টিতে ভেজা মানেই জ্বর আসতে পারে, ঠান্ডা লাগতে পারে। সে কারণে চিন্তাই আছি। আরেক ব্যাবসায়ী আতিকুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টির কারণে ভোগান্তি অনেক বেড়েছে। আগামী কয়দিন কী হয় আল্লাহ জানেন। যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে ওপরের শেড কিংবা ত্রিপল কোনও কাজে আসছে না। গরুও ভিজছে, মানুষও ভিজছে। এভাবে চলতে থাকলে গরুর দাম যে পড়ে যাবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
গাবতলী হাটে দুদিন ঘুরেছেন এমন সাংবাদিকরা জানান, গাবতলী হাটের লাখো গরুর সমাহার। তবে বৃষ্টির কারণে কদমাক্ত হাটে আগের দুদিনের চেয়ে গতকাল মঙ্গলবার বেশ গরু বিক্রি হয়েছে। আগে ব্যাপারী ও গরু বিক্রেতারা গরুর দাম না ছাড়ায় তেমন বিক্রি হয়নি। বৃষ্টির পর গরু বিক্রেতারা কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে দাম হাকাচ্ছেন। ফলে ক্রেতারা গরু দরদাম করে কিনতে শুরু করেছেন। কমলাপুর হাটে প্রচুর গরু উঠেছে। হাটের আশপাশের প্রতিতি গলিতে গরু এমনকি মতিঝিলে গুরু রাখা হয়েছে। মধুমতি সিনেমা হলের সামনে গরু বিক্রেতা রহিম উল্লাহ জানান, গরু বিক্রি শুরু হয়েছে। বৃষ্টির কারণে ব্যপারীরা গরু ছাড়তে শুরু করেছে। ##
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
রানার অটোমোবাইলস পিএলসির এজিএম সম্পন্ন
আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ কাজের আহ্বান: এমরান আহমদ চৌধুরী
নকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির উপর শুল্ক কমানোর দাবি বাজারের ২০ শতাংশ খাদ্য মানহীন
লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে জনসম্মুখে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, নাকে খত
বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ
বিশ্বে বছরজুড়ে আলোচনায় যুদ্ধ, নির্বাচন ও মূল্যস্ফীতি
যুক্তরাষ্ট্র আগুন নিয়ে খেলছে : চীন
আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার না হলে জুলাই আগষ্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে: ডা. জাহিদ হোসেন
মেক্সিকোতে প্লেন বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ৭
মাথাপিছু ১৪০০ ডলারের চেক পাচ্ছেন ১০ লাখ মার্কিনি
৯১ শিশু খেলোয়াড়সহ ৬৪৪ ক্রীড়াবিদকে হত্যা করেছে ইসরাইল
মোজাম্বিকে ঘূর্ণিঝড় চিডোরে নিহত ৯৪
মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সম্মানহানী
রাফালের আগমনে ভারত সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি
উত্তর প্রদেশে নিহত ৩ খলিস্তানি নেতা
ভারতে বাল্যবিবাহবিরোধী অভিযানে আটক ৫০০০
মুজিবল্যান্ড বানিয়ে হিন্দুস্তানে থাকুক আ.লীগ : রাশেদ প্রধান
গ্রেফতার ভয়ে পোল্যান্ড সফর বাতিল করলেন নেতানিয়াহু
পানামা খাল দখলের হুমকিকে ভর্ৎসনা পানামা প্রেসিডেন্টের
স্বৈরাচারের দোসর শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী-সন্তানসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা