বিচার বিভাগীয় তদন্ত চায় আর্টিকেল নাইনটিন
০৯ আগস্ট ২০২৩, ১১:১৫ পিএম | আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২৩, ১২:০০ এএম
২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহারের কারণে বাংলাদেশে যেসব মানুষ নিহত হয়েছেন, কারাদ- ভোগ করেছেন এবং সুষ্ঠু বিচার পাননি তার জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি করে সমস্ত ঘটনার বিশ্লেষণ করে যারা এর জন্য দায়ী তাদেরকে জবাবদিহিতার সম্মুখীন করতে হবে- এমন দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিন। সংস্থাটি বলেছে, এসবের দায়-দায়িত্ব সরকার এড়াতে পারে না। এছাড়াও, ‘বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়ায়’ বাংলাদেশ সরকারকে সাধুবাদ জানিয়ে গতকাল বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও তথ্যের অধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিন, বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর সংশোধন করে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩’ করার সিদ্ধান্তের জন্যে বাংলাদেশ সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে। আর্টিকেল নাইনটিন শুরু থেকেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিতর্কিত ও দমনমূলক ধারাগুলোকে বিশেষ করে মানহানি এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করে এমন ধারাগুলোকে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বাতিল বা সংশোধন করার দাবি জানিয়ে আসছিল। এই উদ্দেশ্যে আর্টিকেল নাইনটিন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের পরপরই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদ-ের আলোকে এই আইনকে সম্পূর্ণ বিশ্লেষণ করে আইনমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চপর্যায়ের সাথে ২০১৮ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে অ্যাডভোকেসি করে আসছিল।
আর্টিকেল নাইনটিন দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনের মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত ইতিবাচক। আমরা আশা করি, এই আইনের স্থলে নতুন প্রস্তাবিত ‘সাইবার সিকিউরিটি আইন ২০২৩’ এর বিধানগুলো যেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদ-ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। বিশেষ করে নতুন আইন যেন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, ভিন্নমত, মুক্তচিন্তা চর্চা করার ক্ষেত্রে কোন বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। আমরা আশা করব, সরকার নতুন প্রস্তাবিত আইন সমস্ত অংশীজনদের সাথে আলোচনা করে সবার পরামর্শ ও মতামতের ভিত্তিতে প্রণয়ন করবে। এক্ষেত্রে আর্টিকেল নাইনটিন যে কোনো ধরনের সহায়তা করার জন্য প্রস্তুত আছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত অপরাধ নিয়ে ২০০৬ সালে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন প্রণয়ন করা হয়। ওই আইন পাশের পর থেকেই এই আইনের বিভিন্ন ধারা বিশেষ করে ৫৭ ধারার অপব্যবহার নিয়ে তুমুল বিতর্ক ওঠে। সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীদের আন্দোলনের মুখে সরকার ২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করে তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৪, ৫৫, ৫৬, ৫৭ ও ৬৬ ধারা বাতিল করে তার পরিবর্তে নতুন করে প্রনীত ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন ২০১৮ এ এইসব ধারাগুলোকে আরও বেশি দমনমূলক করে সন্নিবেশিত করে। শুরু থেকেই আর্টিকেল নাইনটিনসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, সাংবাদিক, নাগরিক অধিকার এবং মানবাধিকারকর্মীরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহারের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল।
নতুন প্রস্তাবিত ‘সাইবার সিকিউরিটি আইন ২০২৩’ এ মানহানির অপরাধে কারাদ-ের বিধান বাতিল করে শুধুমাত্র জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১, ২২, ২৩, ২৪, ২৬, ২৮, ৩১ ও ৩২ ধারা অজামিনযোগ্য হলেও প্রস্তাবিত সাইবার সিকিউরিটি আইনে জামিনযোগ্য করা হয়েছে। এ ছাড়া দ্বিতীয়বার একই অপরাধের ক্ষেত্রে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে থাকা দ্বিগুণ শাস্তির বিষয়টি প্রস্তাবিত আইনে রাখা হয়নি। প্রস্তাবিত আইনে অপরাধের সাজাও কিছু ক্ষেত্রে কমানোর কথা বলা হয়েছে। নতুন আইনের প্রস্তাবিত এই সব বিধানকে স্বাগত জানিয়ে আর্টিকেল নাইনটিন সরকারকে আহবান জানায় যাতে অপরাধের সংজ্ঞার অস্পষ্টতা ও ব্যাপকতা, সংশ্লিষ্ট রেগুলেটরি বডি ও আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতাসহ যেসব বিষয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে উদ্বেগ ছিল সেগুলির প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে যাতে নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়।
এটি অত্যন্ত ইতিবাচক যে সরকার জনগণ এবং প্রাসঙ্গিক স্টেকহোল্ডারদের উদ্বেগকে অনুধাবন করে প্রস্তাবিত সংশোধনীতে মানহানির জন্য কারাদ-ের বিধান বাতিল করা, মতপ্রকাশ সম্পর্কিত সমস্ত অপরাধকে জামিনযোগ্য করা, মতপ্রকাশ সম্পর্কিত অপরাধের শাস্তি হ্রাস করাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। আর্টিকেল নাইনটিন দীর্ঘদিন ধরে এসব বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছিল। আর্টিকেল নাইনটিন আশা করে সরকার বাংলাদেশে প্রস্তাবিত সংশোধনীতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং তথ্যের অধিকারের জন্য নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আন্তর্জাতিক মানদ-ের আলোকে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনবে।
আর্টিকেল নাইনটিন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে মতপ্রকাশের কারণে গ্রেপ্তারকৃত সমস্ত মানুষের মুক্তির দাবি জানায়। পাশাপাশি নতুন সাইবার সিকিউরিটি আইনটি প্রণয়নের আগপর্যন্ত মতপ্রকাশের অপরাধে নতুন করে কাউকে গ্রেপ্তার না করা এবং এই আইনে নতুন করে মামলা না নেওয়ার আহ্বান জানায়।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
সুরেক্স এর কমিটি পরিচিতি ও বার্ষিক বনভোজন ৭ ফেব্রুয়ারি
বকেয়া বেতনের দাবিতে নবীনগর- চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ
বিএনপি চাঁদাবাজের দল নয়: দিপু হায়দার
তারকা হওয়ার সব গুনাবলী আছে নাহিদ রানার মধ্যে: আর্থার
গুমের তদন্ত করে বিচারের প্রতিশ্রুতি: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশংসা করল হিউম্যান রাইটস ওয়াচ
বাংলাদেশের একটি আইসিসি ট্রফি দরকার: আর্থার
নেপালি মেয়েকে ব্ল্যাকমেইল যুবককে গ্রেফতার সিআইডির
ওমরাহ পালন করতে গিয়ে মতলবের বৃদ্ধের মৃত্যু
বৈষম্যহীন দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ কায়েম না হওয়া পর্যন্ত থামবো না: ডা. শফিকুর রহমান
ফজর ও আসরের নামাজের পর জানাযার নামাজ পড়া প্রসঙ্গে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে দু-একদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত
মেহেরপুরে উদীচীর দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন পণ্ড
ডিমলায় ‘স্বপ্ন পূরণের প্রত্যয়ে আমরা, সামাজিক সংগঠন বাংলাদেশ’র ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন
কুয়েটে ‘ওবিই কারিকুলাম ডিজাইন টিচিং লার্নিং বিষয়ক প্রশিক্ষণ
দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি নির্বাচন দিয়ে দেশটাকে স্থিতিশীলতায় নিয়ে আসুন : এ্যানি
ভোট ডাকাতি করে ওবায়দুল কাদের চারবার এমপি হয়েছিল: ফখরুল ইসলাম
কুড়িগ্রামের উলিপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুর মৃত্যু
মতলবে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ
চবি ছাত্রদলের প্রীতিভোজে হামলার অভিযোগে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
ব্রাহ্মণপাড়ায় এইচএমপিভি সচেতনতায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রচারণা