দ্রুত নিষ্পত্তির তোড়জোড়
০৯ আগস্ট ২০২৩, ১১:১৮ পিএম | আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২৩, ১২:০০ এএম
বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে হওয়া নাইকো দুর্নীতি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির তোড়জোর শুরু হয়েছে। সরকারপক্ষ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষের আইনজীবী দ্রুত আবেদনের শুনানি সম্পন্ন করতে দেখাচ্ছেন এই তোড়জোর। এ প্রেক্ষিতে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য করা হয়েছে আগামী ১৪ আগস্ট। এরপর আর সময় বাড়ানো হবে না- মর্মেও জানিয়ে দেন আদালত। গতকাল বুধবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের ডিভিশন বেঞ্চ আবেদনের আংশিক শুনানি গ্রহণ করে এ তারিখ নির্ধারণ করেন। নাইকো দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া।
আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। সরকার পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিনউদ্দিন শুনানিতে অংশ নেন। গত ১৭ মে মামলাটির অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে আবেদন করা হয় হাইকোর্টে।
এর আগে গত ১৯ মার্চ মামলাটিতে বেগম খালেদা জিয়া এবং অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান। চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক এমপি এম এ এইচ সেলিম ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর খালেদা জিয়াসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এজাহারে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৩টি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডার কোম্পানি নাইকোর হাতে তুলে দেয়ার মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের অন্তত ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি সাধনের অভিযোগ আনা হয়।
গতকাল শুনানিতে বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ২০০৭ সালে সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের হয়েছিল। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোনো চার্জশিট হয়নি। হাইকোর্ট মামলাটি বাতিল করেছেন। সেই মামলা বাতিলের বিরুদ্ধে দুদক এখন পর্যন্ত কোনো আপিল করেনি। একই ইস্যুতে মামলায় বেগম খালেদা জিয়া মামলা মোকাবেলা করলে শেখ হাসিনা কেন করবেন না?
জবাবে দুদকের আইনজীবী বলেন, মামলার অভিযোগ গঠনের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে এ আবেদনটি করা হয়েছে। তাদের (খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের) দেখাতে হবে যে, বিচারিক আদালত অভিযোগ গঠনের আদেশে কোথায় আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। আমি বলবো আদেশের কোথাও আইনের ব্যত্যয় ঘটেনি। দুদক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা বাতিলের আদেশের বিরুদ্ধে কেন আপিল করলো না সেটি এ মামলার বিষয়বস্তু নয়। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া নাইকো মামলা কেন বাতিল করা হয়েছে- সেটির বিশদ ব্যাখ্যা হাইকোর্টের রায়ে রয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা আর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলা এক জিনিস নয়। বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে অভিযোগে মামলা হয়েছে তা অন্যান্য অভিযুক্তদের স্বীকারোক্তিতে উঠে এসেছে।
খুরশীদ আলম খান বলেন, ২০১৫ সালে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা নাইকো দুর্নীতি মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। ওই রায়ে আপিল বিভাগ বলেছেন, খালেদা জিয়ার অপরাধ প্রকাশ হচ্ছে, এই অপরাধের গুরুত্ব কতটুকু, তা সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে নির্ণয় হবে। পক্ষান্তরে ২০১০ সালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা নাইকো দুর্নীতি মামলা বাতিলের রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, এ মামলায় কোনো অপরাধ সংঘটিত হয়নি।
এ পর্যায়ে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল শুনানির জন্য সময় প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, আবেদনের ওপর মূল শুনানি করবেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলী। তিনি এখন অসুস্থ। তাই আজকের শুনানি মুলতবি রেখে নতুন সময় নির্ধারণের আর্জি জানাচ্ছি। আদালত তখন বলেন, আমরা দুদকের বক্তব্য শুনি। আপনি নোট নিন। আমরাও নোট নিচ্ছি। এ সময় দুদকের পক্ষে অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান সময় প্রদানের তীব্র বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, এ মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের পর সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় মামলাটির অভিযোগ গঠনের আদেশ চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। আগামী ২২ আগস্ট বিচারিক আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ রয়েছে। হাইকোর্টে শুনানির তারিখ থাকলে বিচারিক আদালত তারিখ পিছিয়ে দিতে হয়। এতে বিচার আটকে থাকে। এসব বিচারে এই আবেদনের শুনানি দ্রুত শেষ হওয়া জরুরি।
আদালত তখন আগামী ১৪ আগস্ট সকাল ১১টায় পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করে বলেন, এরপর শুনানি আর পেছানো হবে না। ওইদিন শুনে (আবেদনের শুনানি) শেষ করে দেবো।
এ পর্যায়ে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মেহেদী হাছান চৌধুরী বলেন, প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি। আমরা আজকে শুনানি করতে চাই। ১০ মিনিটের মধ্যে শুনানি শেষ করব। আদালত তখন আগামি ১৪ আগস্ট পর্যন্ত শুনানি মুলতবি রাখেন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
সুরেক্স এর কমিটি পরিচিতি ও বার্ষিক বনভোজন ৭ ফেব্রুয়ারি
বকেয়া বেতনের দাবিতে নবীনগর- চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ
বিএনপি চাঁদাবাজের দল নয়: দিপু হায়দার
তারকা হওয়ার সব গুনাবলী আছে নাহিদ রানার মধ্যে: আর্থার
গুমের তদন্ত করে বিচারের প্রতিশ্রুতি: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশংসা করল হিউম্যান রাইটস ওয়াচ
বাংলাদেশের একটি আইসিসি ট্রফি দরকার: আর্থার
নেপালি মেয়েকে ব্ল্যাকমেইল, যুবককে গ্রেফতার করলো সিআইডি
ওমরাহ পালন করতে গিয়ে মতলবের বৃদ্ধের মৃত্যু
বৈষম্যহীন দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ কায়েম না হওয়া পর্যন্ত থামবো না: ডা. শফিকুর রহমান
ফজর ও আসরের নামাজের পর জানাযার নামাজ পড়া প্রসঙ্গে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে দু-একদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত
মেহেরপুরে উদীচীর দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন পণ্ড
ডিমলায় ‘স্বপ্ন পূরণের প্রত্যয়ে আমরা, সামাজিক সংগঠন বাংলাদেশ’র ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন
কুয়েটে ‘ওবিই কারিকুলাম ডিজাইন টিচিং লার্নিং বিষয়ক প্রশিক্ষণ
দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি নির্বাচন দিয়ে দেশটাকে স্থিতিশীলতায় নিয়ে আসুন : এ্যানি
ভোট ডাকাতি করে ওবায়দুল কাদের চারবার এমপি হয়েছিল: ফখরুল ইসলাম
কুড়িগ্রামের উলিপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুর মৃত্যু
মতলবে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ
চবি ছাত্রদলের প্রীতিভোজে হামলার অভিযোগে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
ব্রাহ্মণপাড়ায় এইচএমপিভি সচেতনতায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রচারণা