ফাঁকির রাস্তা ঢলে শেষ
১৬ আগস্ট ২০২৩, ১০:৪৭ পিএম | আপডেট: ১৭ আগস্ট ২০২৩, ১২:০০ এএম
টানা কয়েকদিনের বৃষ্টি পাহাড়ি ঢল আর বন্যায় চট্টগ্রামের সড়ক অবকাঠামো বেহাল হয়ে পড়েছে। সরকারি হিসেবে মহানগর ও জেলায় ৭৭৩ কিলোমিটার কাঁচা পাকা সড়ক বিনষ্ট হয়েছে। জোড়াতালি দিয়ে চলছে সড়ক সংস্কার কাজ। তাতে পথে পথে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে লোকজনকে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জোড়াতালি তথা নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে সড়ক নির্মাণ ও সংস্কার করায় কয়েকদিনের বৃষ্টিতেই তা বিনষ্ট হয়ে গেছে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, ফাঁকির রাস্তা ঢলেই শেষ হয়ে গেছে। এবারের বর্ষায় তেমন বৃষ্টিপাত হয়নি।
তবে চলতি মাসের শুরু থেকে টানা বর্ষণ সেই সাথে জোয়ার ও পাহাড়ি ঢলে সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়। বিশেষ করে দক্ষিণ চট্টগ্রামের কয়েকটি উপজেলায় প্রবল বন্যায় গ্রামীণ জনপদের সড়ক অবকাঠামো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ছাইফুল্লাহ মজুমদার জানান, বৃষ্টিপাত পাহাড়ি ঢল ও বন্যায় জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ৭২৩ কি.মি. সড়ক নষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে পাকা সড়ক ৩৫৩ কি.মি. এবং বাকি ৩৭০ কি.মি. আধা পাকা ও কাঁচা সড়ক। বিভিন্ন উপজেলা থেকে ক্ষয়ক্ষতির এ বিবরণ দেয়া হয় তা থেকে এ চিত্র পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি। অন্যদিকে মহানগরীতে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি পাহাড়ি ঢল আর জোয়ারে সৃষ্ট পানিবদ্ধতায় প্রায় ৫০ কি.মি. সড়ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, যেসব সড়কে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ছিল না সেসব সড়ক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। এসব গর্তে আটকা পড়ছে ভারী যানবাহন। তাতে প্রতিনিয়ত ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে, যানজটও স্থায়ী রূপ নিয়েছে। মহানগরীর বেশিরভাগ এলাকা প্রবল জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে। এখনও অনেক এলাকায় রাতে-দিনে দুইবার জোয়ারের পানি উঠছে। জোয়ারে প্লাবিত এলাকার সড়কের অবস্থাও এখন বেহাল। মহানগরীর বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, চকবাজার, নিউমার্কেট, কদমতলী, আগ্রাবাদ-এক্সেস রোড, সিডিএ এভিনিউ, জাকির হোসেন রোডসহ অনেক এলাকায় সড়ক ভেঙেচুরে একাকার হয়ে গেছে।
বড় বড় সড়কের পাশাপাশি অলিগলিতেও সড়কের বেহাল দশা। যেসব সড়কে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি জমেছে সেসব সড়কে ক্ষতি হয়েছে বেশি। ভারী যানবাহনের চাকায় এসব সড়কে খানাখন্দক বেড়েই চলেছে। সিমেন্ট ক্রসিং থেকে বিমানবন্দর সড়কের ড্রাইডক এলাকায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় সড়কে হাঁটুসমান পানি জমে আছে। ভারী বর্ষণ হলে সড়কের ওই অংশে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। হাঁটুসমান পানির উপর দিয়ে চলে বন্দরের আমদানি-রফতানি পণ্যবাহী লরি কাভার্ডভ্যানসহ ভারী যানবাহন। তাতে বিশাল অংশে রীতিমত ভাঙন দেখা দিয়েছে। তবে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা সচল করার কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।
স্থানীয়রা বলছেন, বর্ষার আগেই এসব সড়ক সংস্কার করা হয়। কিন্তু নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় সামান্য বৃষ্টি কিংবা জোয়ারের পানিতে এসব সড়ক যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। বেশিরভাগ সড়কে নেই পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা। পানি জমে বিনষ্ট হয়েছে অনেক সড়ক। বৃষ্টি থামার পর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে জোড়াতালি দিয়ে এসব সড়ক সংস্কার করে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করা হচ্ছে। এখানেও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। ফলে বৃষ্টি জোয়ারে আবারও এসব সড়ক বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বর্ষার মধ্যেও মহানগরীর বেশ কয়েকটি সড়কের মধ্যে উন্নয়নের জন্য খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। নগরীর প্রধান সড়কের ফকিরহাট থেকে আগ্রাবাদ হয়ে দেওয়ানহাট ও টাইগারপাস পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ চলছে। প্রধান সড়কটির একপাশের অবস্থা মোটামুটি ভালো হলেও অন্যপাশের অবস্থা একেবারেই বেহাল। লালখান বাজার থেকে শুরু করে দেওয়ানহাট, আগ্রাবাদ-বারিক বিল্ডিং, ফকিরহাট হয়ে সল্টগোলা পর্যন্ত সড়কের বামপাশে অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এ সড়কে চলাচল করে ভারী যানবাহন। এসব ভারী যানবাহনের চাকায় সড়কে খানাখন্দ বেড়েই চলেছে। বেহাল সড়কের কারণে লালখান বাজার থেকে সল্টগোলা ক্রসিং পর্যন্ত যানজট স্থায়ী রূপ নিয়েছে।
মহানগরীর ইপিজেড থেকে সিমেন্ট ক্রসিং হয়ে বিমানবন্দর এবং কাটগড় পর্যন্ত সড়কেও বড় বড় গর্ত। চট্টগ্রাম বন্দরের আমদানি-রফতানি পণ্যবাহী ভারী যানবাহন এসব সড়ক দিয়ে চলাচল করে। সড়কের গর্ত ভরাট না করায় ভারী যানবাহনের চাপে এসব সড়ক ভেঙেচুরে একাকার হয়ে যাচ্ছে। নবনির্মিত আউটার রিং রোড এবং পোর্ট কানেকটিং রোডের বিভিন্ন অংশেও সড়কের ক্ষতি হয়েছে। তবে সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। যেসব সড়কে বড় বড় গর্ত তৈরি হয় সেসব ভরাট করা হচ্ছে।
এলজিইডির কর্মকর্তারা জানান, গ্রামীণ জনপদে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার শুরু হয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণ চট্টগ্রামের অনেক এলাকায় যেসব সড়ক প্লাবনে ভেঙেচুরে গেছে সেগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংস্কার করা হচ্ছে। প্রবল বন্যায় সাতকানিয়া চন্দনাইশ, পটিয়াসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় সড়ক ভেঙেচুরে একাকার হয়ে গেছে। ভেসে গেছে ছোট ছোট ব্রিজ, কালভার্ট। অনেক সড়কের ইট, কংকর পর্যন্ত উঠে গেছে। বেশ কয়েকদিন বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হাতাহাতি, আহত ৩
দুইবার আবেদন করেও দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় মাল্টার নাগরিকত্ব পায়নি তারিক সিদ্দিকের পরিবার
মাদুরোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের
এবি পার্টির জাতীয় কাউন্সিল শুরু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে
মায়ের জন্য রান্না করা খাবার নিয়ে হাসপাতালে তারেক রহমান
রাজশাহীতে এবেলা ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
লোহিত সাগরে হুথিদের হামলায় পিছু হটল মার্কিন যুদ্ধজাহাজ
আশুলিয়ায় মেরামতের নাম করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে
'বিয়ের গন্ডগোল' নিয়ে জোভান–তটিনী আত্মপ্রকাশ
ভারতে বসে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার চেষ্টা করছেন ফ্যাসিস্টের দোসর আলাউদ্দিন নাসিম
রুশ জ্বালানিখাতে আবারও যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা
সিরিয়ার দামেস্কের মসজিদে পদদলিত হয়ে নিহত ৪ জন
কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসছে লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল
খাদ্য পরিস্থিতির ওপর নিয়মিত নজর রাখতে পুনর্গঠন হলো এফপিএমসি
দেশে অস্তিত্বহীন দলবাজরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করছে: জয়নুল আবদিন ফারুক
ফরিদপুরে যুবককে কুপিয়ে ও চোখ উপড়ে হত্যা
ভারতে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরলেন ১২ বাংলাদেশি
লন্ডন ক্লিনিকে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সবশেষ যা জানা গেল
বাংলাদেশকে সব ধরনের সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত: ভারতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত
মানুষ আমি দেবতা নই, আমারও ভুল হয়: নরেন্দ্র মোদি