শান্তি আলোচনার কথা ভাবছে ইউক্রেনীয়রা
২১ আগস্ট ২০২৩, ১১:০২ পিএম | আপডেট: ২২ আগস্ট ২০২৩, ১২:০৩ এএম
ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণের হতাশাজনক পরিণতি গতি কয়েক সপ্তাহ ধরে আন্তর্জাতিক শিরোনামের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। আনাস্তাসিয়া জামুলার কাছে পরিণতিগুলো আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
তিনি সর্ব-মহিলা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সিভিট (ব্লসম)-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা, যা যুদ্ধের সামনের সারিতে থাকা ইউক্রেনীয় বাহিনীকে সমর্থন করে। তার অনুদানের আবেদনগুলি মুখ থুবড়ে পড়েছে। কারণ ইউক্রেনের দ্রুত অগ্রগতির আশা হ্রাস পেয়েছে। জামুলা এখন যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেনীয় সেনাদের হতাশা দূর করতে কাজ করছেন। ইউক্রেনের জনসাধারণের মধ্যেও প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সমালোচনা বেড়েছে এবং অসন্তোষের কারণ স্পষ্ট। ২০১৪ সাল থেকে রাশিয়ার অধিকৃত ক্রিমিয়ায় অগ্রসর হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি এখন আরও বাস্তবসম্মত প্রত্যাশার উপর জোর দিচ্ছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের মুখপাত্র সেরহি লেশচেঙ্কো বলেছেন, ‘এটি এমন ঘোড়া নয় যা আপনি দ্রুত যাওয়ার উদ্দেশ্যে চাবুক পেটাতে পারেন। প্রতি মিটার সামনে আগানোর মূল্য রক্ত দিয়ে পরিশোধ করতে হয়।
ইউক্রেনের নেতৃত্ব এখন - বিশেষভাবে হতাশ যে, পশ্চিমা সরঞ্জামগুলো এখনও প্রতিশ্রুত সংখ্যায় আসেনি। নতুন অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে মিত্রদের মধ্যে বিভ্রান্তি এবং আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা ইউক্রেনের উদ্বেগকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। দেশটির সাধারণ কর্মকর্তাদের একটি সূত্র বলছে যে, প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও ইউক্রেন শতাধিকের মধ্যে মাত্র ৬০টি লেপার্ড ট্যাঙ্ক পেয়েছে। মাইন অকেজো করার যানগুলো বিশেষ অভাব দেখা দিয়েছে। সূত্রটি বলেছে, ‘পশ্চিমা পক্ষ আমাদের যে সম্মুখ আক্রমণ করতে বলছে তা করার জন্য আমাদের কাছে সংস্থান নেই।’
আকাশ প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের অভাব ইউক্রেনের জন্য আরেকটি অসুবিধা হয়ে দাড়িয়েছে। ২০ আগস্ট ডাচ এবং ডেনিশ প্রধানমন্ত্রীরা বলেছিলেন যে তারা নতুন বছর শুরু হলে ৬১টি জেট দান করবেন। সে কারণে ইউক্রেন বাহিনী পাল্টা আক্রমণের ক্ষেত্রে যতটা সম্ভব বিলম্ব করেছে। জুনের শুরুতে একটি বিপর্যয়কর শুরুর পর যখন দুটি পশ্চিমা-প্রশিক্ষিত বাহিনী রাশিয়ার মাইনফিল্ডে অস্বস্তিকর সংখ্যক লোক এবং সরঞ্জাম হারিয়েছে, তাদেরকে প্রাথমিক পরিকল্পনাগুলো সামঞ্জস্য করতে হয়েছে। সূত্রটি বলেন, ‹আমরা আর এমন অভিযানের পরিকল্পনা করি না, যা আগেভাগেই বড় ক্ষয়-ক্ষতির সম্ভবনা দেখায়।›
মারাত্মক আবহ ইউক্রেনের রাজনীতিতেও ছড়িয়ে পড়ছে, যার বেশিরভাগ যুদ্ধের জন্য আটকে রয়েছে। শোনা যাচ্ছে যে, জেলেনস্কি প্রশাসন প্রাথমিক সংসদীয় এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ডাকতে পারে। এর যুক্তি হল যে, একটি সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি বা বড় আঞ্চলিক ছাড়ের প্রয়োজন হতে পারে এমন শান্তি আলোচনায় বসে অজনপ্রিয় হওয়ার পরিবর্তে জাতীয় বীর থাকা অবস্থায় পুনরায় নির্বাচন করা জেলেনস্কির জন্য শ্রেয়। যুদ্ধের সময় একটি নির্বাচন পরিচালনা করা বেশ জটিল হবে, যেখানে প্রায় ৬০ লাখ ইউক্রেনীয় নাগরিক দেশের বাইরে বসবাস করছেন এবং কয়েক হাজার জন বাড়ি থেকে দূরে যুদ্ধ করছেন।
ইউক্রেনে জারিকৃত সামরিক আইন নির্বাচনকে বাধা দেয়। যার অর্থ হল দেশটির সংসদকে নির্বাচনী নিয়ম পরিবর্তনের অনুমোদন দিতে হবে। যাই হোক না কেন, সমীক্ষা ইঙ্গিত করে যে প্রাথমিক ভোটের প্রয়োজনীয়তা নাগরিকদের বোঝাতে সমস্যা হবে জেলেনস্কির দলের। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ভোলোদিমির ফেসেনকো বলেছেন, ‘যেকোনো নির্বাচন, যদি তা হয়, তা হবে জেলেনস্কির ওপর গণভোট। (কমান্ডার-ইন-চীফ ভ্যালেরি) জালুঝ্নি ছাড়া, যিনি যুদ্ধ পরিচালনায় ব্যস্ত, বর্তমানে তার কোন সুস্পষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। জেলেনস্কির দল অনুধাবন করছে যে এর পরিবর্তন ঘটতে পারে।
ইউক্রেনের সামরিক অগ্রগতির অনুপস্থিতিতে রাশিয়ার সাথে শান্তি আলোচনায় এর অবস্থা আর সঙ্গীণ হয়ে উঠবে। দেশটির অপ্রত্যাশিত অংশেও যুদ্ধংদেহী মেজাজের কিছু পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। আগস্টের শুরুতে বাখমুতের উত্তর-পশ্চিমে যুদ্ধরত একজন ইউক্রেনীয় স্নাইপার ইউক্রেনের সম্পূর্ণ ভূখ- পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়ে আলোড়ন তৈরি করেন। তিনি বলেছিলেন যে, অনেক সৈন্য এখন যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানাবে, যা একসময় কল্পনাতীত ছিল। দেশটির সরকারী একটি সূত্রও বলেছে, ‘যে কোনো শান্তি মানেই এখন বিলম্বিত যুদ্ধ। পরবর্তী প্রজন্মকে সমস্যায় ফেলা কেন?
ইউক্রেনের অনেক তরুণ অবশ্য ইতোমধ্যেই এমন যুদ্ধের ভার বহন করছে যার আপাতত কোনো শেষ নেই। তরুণদের জন্য ক্রমাগত বিপজ্জনকভাবে নিয়োগের কাগজপত্র পরিবেশন করা হয় এবং সম্মুখ সমরে পাঠানো হয়, চাপটা বিশেষভাবে তীব্র। দেশটি এখন বেশিরভাগই অনিচ্ছুকদের নিয়োগ করছে। জামুলা বলেন, ‘সবাই জানে যে অঞ্চল পুনরুদ্ধার করার মূল্য সেনাদের মৃত্যু। এমনকি পাল্টা আক্রমণে সাফল্যের আশা করাটাও আত্মঘাতী পদক্ষেপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
পর্তুগালে বাংলাদেশি মালিকানাধীন ভাষা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান "গ্রিনফিল্ড একাডেমী"র যাত্রা শুরু
দীর্ঘ ৫৮বছরপর উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে কাপ্তাই বাইতুল ইলাহ শাহী জামে মসজিদের উন্নয়ন শুরু
অভিষেকের দিনেই বিতর্কে ট্রাম্প ,বাইবেলে হাত না রেখেই শপথ
এবার প্রবাসীদের জন্য ‘ডায়াস্পোরা সেল’ গঠন করল নাগরিক কমিটি
ইসরায়েলপন্থি মার্কো রুবিওকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ
আমাদের এখনো অনেক কিছু করার বাকি আছে : জো বাইডেন
যুদ্ধবিরতি চললেও পশ্চিম তীরে ইসরাইলি হামলায় আহত ১২
সাভারে রূপালী ব্যাংকের এটিএম বুথ উদ্বোধন
মোরেলগঞ্জে স্থানীয় সরকার শক্তিশালী করণে ডরপ’র মতবিনিময় সভা
কৃষক জামালের ক্ষেতে রঙিন ফুলকপি, উদ্বুদ্ধ হচ্ছে অন্য কৃষকরাও
জন্মসূত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার বাতিল
কুয়াশা ও তাপমাত্রা নিয়ে নতুন তথ্য আবহাওয়া অধিদপ্তরের
কলকাতায় প্রকাশ্যে মুরগির মাংস বিক্রি নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ভারত থেকে অনুপ্রবেশের সময় ফেনীতে সুদানের নাগরিক আটক
ক্ষমতা গ্রহণ করেই বাইডেন আমলের ৭৮ নির্বাহী আদেশ বাতিল ট্রাম্পের
পেকুয়ায় প্রাচীন খাল উদ্ধারে পদক্ষেপ জনমনে স্বস্তি
ঢাকার বাতাস ২৪৬ স্কোর নিয়ে আজ ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’
ট্রাম্প ক্যাপিটল হিলের দাঙ্গায় জড়িত ১৫০০ জনকে ক্ষমা করলেন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত ‘সেকেন্ড লেডি’
গাজা একটি ‘বিশাল ধ্বংসস্তূপ’, পুনর্নির্মাণ করা প্রয়োজন: ট্রাম্প