ধনকুবের মোহাম্মদ আল-ফায়েদের ইন্তেকাল
০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম
মিসরীয় বংশোদ্ভুত ধনকুবের মোহাম্মদ আল ফায়েদ মারা গেছেন। কয়েক দশক ধরে যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত ডিপার্টমেন্টাল স্টোর হ্যারডসের মালিকানা ছিল তার হাতে। মৃত্যুকালে এ ব্যবসায়ীর বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। মোহাম্মদ আল ফায়েদের ছেলে দোদি আল ফায়েদ ও প্রিন্সেস ডায়ানা দুই যুগ আগে প্যারিসে এক দুর্ঘটনায় মারা যান। সেই শোক তিনি কখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি। বিশ্বাস করতেন দোদি ও ডায়ানাকে হত্যা করা হয়েছে। সর্বশেষ বছরগুলোতে তাকে জনসম্মুখে খুব কমই দেখা গেছে। স্ত্রী হেইনের সঙ্গে বাড়িতে থাকতে পছন্দ করতেন মোহাম্মদ আল ফায়েদ।
শুক্রবার পরিবারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে মোহাম্মদ আল ফায়েদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়। সেখান বলা হয়, গত ৩০ আগস্ট প্রিয়জন পরিবেষ্টিত অবস্থায় শান্তিপূর্ণভাবে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। অনেক বছর ধরে মোহাম্মদের মালিকানায় ছিল ফুলহাম ফুটবল ক্লাব। মৃত্যুর খবরে ক্লাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, মোহাম্মদ আমাদের ক্লাবের জন্য যা করেছেন তার জন্য ঋণী থাকব। তার মালিকানায় ফুলহ্যাম এফসি তৃতীয় স্তর থেকে প্রিমিয়ার লিগে উঠে আসে।
সাংবাদিক পিয়ার্স মরগানের মতে, জটিল চরিত্রের মানুষ ছিলেন মোহাম্মদ আল ফায়েদ। তবে দুর্ঘটনায় প্রিয় সন্তান দোদির মৃত্যুর শোক তিনি কখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি। শুরু দিকে মিসরের আলেকজান্দ্রিয়ার রাস্তায় ফিজি পানীয় বিক্রি করতেন স্কুল শিক্ষকের ছেলে মোহাম্মদ আল ফায়েদ। প্রথম স্ত্রী সামিরা খাশোগির সঙ্গে পরিচয়ের পর তিনি নানা ধরনের ব্যবসায়িক উদ্যোগের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। সামিরা ছিলেন সঊদী কোটিপতি অস্ত্র ব্যবসায়ী আদনান খাশোগির বোন। ওই সময় আদনানের আমদানি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন মোহাম্মদ। যদিও তাদের বিয়ে মাত্র দুই বছর স্থায়ী হয়েছিল। ততদিনে মোহাম্মদ আল ফায়েদ নিজস্ব শিপিং ব্যবসা চালু করে পেলেন।
১৯৬৬ সালে বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি ব্রুনাইয়ের সুলতানের উপদেষ্টা নিয়োজিত হন। ১৯৭৪ সালে ব্রিটেনে চলে আসেন মোহাম্মদ আল ফায়েদ। এর পাঁচ বছর পর ভাই আলীর সঙ্গে মিলে দুই কোটি পাউন্ডে প্যারিসের রিটজ হোটেল কিনে নেন। ১৯৮৫ সালে খনি জায়ান্ট লোনরো গ্রুপের সঙ্গে তুমুল প্রতিযোগিতা করে ৬১ কোটি ৫০ লাখ পাউন্ডের বিনিময়ে হ্যারডসের মালিকানা নিজের করে নেন।
মোহাম্মদ আল ফায়েদ বিশ্বাস করতেন, ১৯৯৭ সালে দোদি ও ডায়ানার মৃত্যুর পেছনে প্রিন্স চার্লসের ভূমিকা ছিল। তৎকালীন যুবরাজকে সাহায্য করেছিল ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই৬। ২০০৮ সালে বিষয়টি তদন্ত পর্যায়ে গড়ালে ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জুরিরা মোহাম্মদ আল ফায়েদের আনা সাক্ষ্য প্রত্যাখান করেন। ব্রিটেনে ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য গড়লেও দুইবার দেশটিতে নাগরিকত্ব পাওয়ার চেষ্টায় ব্যর্থ হন মোহাম্মদ আল ফায়েদ। তার নাগরিকত্বের বিনিময়ে অর্থ লেনদেনের বিষয়টি এক সময় ব্রিটিশ রাজনীতিতে ঝড় তোলেন। গুরুত্ব রাজনীতিবিদদের পদত্যাগ পর্যন্ত গড়ায় ওই ঘটনা।
২০১০ সালে কাতারের সার্বভৌম সম্পদ তহবিলের কাছে হ্যারডস বিক্রি করে দেন মোহাম্মদ আল ফায়েদ। হস্তান্তর মূল্যের প্রায় অর্ধেক কোম্পানির ঋণ পরিশোধে ব্যবহৃত হয়। মৃত্যুকালে স্ত্রী ও চার সন্তান রেখে গেছেন মোহাম্মদ আল ফায়েদ। তার সম্পদের পরিমাণ ছিল আনুমানিক ২০০ কোটি ডলার। তিনি বিশ্বের ১৪৯৩তম ধনী ব্যক্তি। সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস, রয়টার্স।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
পিলখানা হত্যাকাণ্ড তদন্তে সহযোগিতার আশ্বাস সেনাপ্রধানের
সন্ত্রাসী হামলায় সিকিউরিটি গার্ড নিহত, আহত ১০
ইবির আইন প্রশাসক হলেন ড. নুরুন নাহার
নাটকীয় জয়ে রংপুরের সাতে সাত
নতুন ফেসবুক পেইজের ঠিকানা দিলেন সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন
ভক্তদের হঠাৎ কি বার্তা দিলেন ঢালিউড কুইন শাবনূর?
পেকুয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান কারামুক্ত
ধ্বংস হওয়া রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠনের জন্যই ৩১ দফা কার্যকর প্রয়োজন: আমিনুল হক
বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে যা জানাল ভারত
হাসিনার এপিএস লিকুর ১৫০ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন, দুদকের ৪ মামলা
মারের কোচিংয়ে জোকোভিচের প্রথম জয়
উত্তরখানে ভূয়া পুলিশ গ্রেফতার
মাত্র ৯৫ দিনে মুহিব্বুল মুরসালিন খানের পবিত্র কুরআন হিফয সম্পন্ন
চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মির্জা ফখরুলের বৈঠক
হাজীগঞ্জে ননদ ভাবির ঝগড়া থামাতে গিয়ে বাবার মৃত্যু
মাসরুর আরেফিন পুনরায় সিটি ব্যাংকের এমডি
নতুন বছরে টেকনোর অসাধারণ অফার
‘১৫ জানুয়ারি ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ'র ঈসালে সাওয়াব মাহফিল সফল করুন’
মালয়েশিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াতে চায় বাংলাদেশ
বিদ্যালয়ের পাশে হাসপাতালের আবর্জনা, মালিককে অর্থদণ্ড