ভারতসহ তিন বিদেশি শক্তি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনেছে : জিএম কাদের
২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৪ এএম
আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক চরিত্র নেই জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কাদের বলেছেন, ভারতসহ তিন বিদেশি বড় শক্তি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে কাজ করেছিল। জনগণ নয় বিদেশী ওই শক্তি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনেছে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে জাপার কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। দলের তৃণমূলের নেতাদের মতামত উপেক্ষা করে কেন নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, আগেই বুঝেছিলাম, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে বিদেশি বন্ধুদের সঙ্গে বৈঠকে করে পরিষ্কার বুঝেছি, তিনটি বিদেশি (ভারত, চীন, রাশিয়া) বড় শক্তি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে এবং নির্বাচন সফল করতে কাজ করে যাচ্ছে। শুধু তারা নয়, আরো বেশ কয়েকটি বিদেশি শক্তি আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করতে প্রস্তুত ছিল। নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রশ্নে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছিল জানিয়ে জি এম কাদের বলেন, নির্বাচন বন্ধ করে কোনো দেশে সরকার পরিবর্তন সম্ভব নয়। তাই জাতীয় পার্টি নিয়মতান্ত্রিকভাবে রাজনীতি করছে। নির্বাচনের আগে বর্ধিত সভায় নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মতামত দেয়া হয়েছিল। ভোটে না গেলে ভবিষ্যতে জাতীয় পার্টিকে টিকিয়ে রাখা যাবে কী না সন্দেহ ছিল, তাই নির্বাচনে গিয়েছি। আপনারা আমার ওপর আস্থা রেখেছেন। ভোটের আগ মুহূর্তে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তখন সুষ্ঠুভাবে পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করেছি। মনে হয়েছে, বিভিন্ন বিদেশি শক্তি বিভিন্নভাবে নানা দিকে নিচ্ছিলেন। আর বিএনপির আন্দোলন নিয়ে আমাদের পরিষ্কার ধারণা ছিল, তারা সফল হবে না। আন্দোলন চলাকালে তৃতীয় শক্তি এসে সরকার পরিবর্তন করে, এমন ইতিহাস বাংলাদেশে নেই। ফলে, বিএনপির ১ কিংবা ১০ লাখ বা ১ কোটি লোক নিয়ে রাস্তায় নামলেও বিএনপির আন্দোলন সফল হবে না, তা বুঝতে পেরেছিলাম। কারণ আমেরিকাসহ দুইটা রাষ্ট্র চেয়েছে আন্দোলন সফল হোক। আর অপর তিনটি রাষ্ট্র চেয়েছে বিএনপির আন্দোলন সফল যাতে না পারে। অথচ বিএনপি দোষারোপ করছে আমাকে। আমি জাতীয় পার্টিকে নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও সরকার তার গ্রহযোগ্যতা হারাতো। বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী তাদের দোষ অন্যের ঘাড়ে দিতে চাচ্ছে। অনেকটা শাক দিয়ে মাছ ডাকারমত।
আওয়ামী লীগের কঠোর সমালোচনা করে জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক চরিত্র নেই। আওয়ামী লীগ কিসের স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি? আওয়ামী লীগ তার নিজস্ব সত্ত্বা হারিয়ে ফেলেছে। দলটি যা করছে সবগুলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনান বিরোধী।। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ছয় দফার ডাকে জনগণ সাড়া দিয়েছিল। পরবর্তী দেশের জনগণ তৎকালীন বৈষম্যের শাসন আমলের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বৈষম্যের বিরুদ্ধে দেশের জনগন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে। তিনি বলেন, দেশের জনগণ প্রজাতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করেছে। প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য মুক্তিযুদ্ধের দাবিদার এ দেশের জনগণ। কোনো একক রাজনৈতিক দল নয়। আজ আওয়ামী লীগ সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতানার কথা বলছে। অথচ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না। তারা প্রজাতন্ত্রেকে ধ্বংস করে দেশে কর্তৃত্বতন্ত্র, এক নায়কতন্ত্র ও পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে।
জি এম কাদের বলেন, ৭ জানুয়ারিরর নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়নি। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে জাতীয় পার্টি বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চলছে তা অসত্য এবং বিব্রতকর। আমরা (জাতীয় পার্টি) নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও নির্বাচন হতো। অন্য জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করত। আর সংসদের সেই জাতীয় পার্টি গৃহপালিত দল হতো। সরকার চায় গৃহপালিত বিরোধী দল। আমরা (জাতীয় পার্টি) গৃহপালিত দল নই।
জিএম কাদের বলেন, নির্বাচনে আমি কোনো মনোনয়ন বানিজ্য করিনি। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সরকারি দল থেকে টাকা নিয়েছি তাও অসত্য। আমার ভাবমূর্তিক্ষুন্ন করার জন্য এসব অপপ্রচার করা হচ্ছে। জাতীয় পার্টিকে ধ্বংস করার জন্য এসব বলা হচ্ছে। জাতীয় পার্টির যেসব নেতারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি। অর্থাৎ মনোনয়ন চায়নি এবং পায়নি। তারাও আমাকে সকাল সন্ধ্যা ফোন করে টাকা চেয়েছেন।
বিরোধী দলের নেতা ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের সঙ্গে দরকষাকষি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে নির্বাচন অংশগ্রহণ করা হয়নি। ২৬টি আসন আমাদের ছাড় দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ ওই ২৬টি আসনে তাদের প্রার্থী দিয়েছে। আমি উত্তরা আসনটি চেয়ছিলাম। কারণ উত্তরা আনসটিতে আমি নির্বাচিত হতে পারলে দল পরিচালনা করতে অনেক সাহায্য পাওয়া যেত। ওই আসনটিতে আমার স্ত্রী নির্বাচন করেছেন। কিন্তু তিনি জনপ্রিয় থাকলেও নির্বাচিত হননি।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আওয়ামী লীগ চায় না দেশে তারা ছাড়া আর কোনো রাজনৈতিক দল টিকে থাকুক। জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে যতই ষড়যন্ত্র হোক না কেন জাপা টিকে থাকবে। জিএম কাদেরের নেতৃত্বে যে জাতীয় পার্টি পরিচালিত হচ্ছে সেটিই এরশাদের জাতীয় পার্টি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
চাঁদপুরে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা আসামি বেনাপোলে আটক
ইরান আত্মরক্ষায় কতটা সক্ষমতা অর্জন করেছে
প্রতারণার অভিযোগে বিজিবি সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা
যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকারের মুখোশ উন্মোচিত
সাইবার গ্যাঙের তথ্যফাঁস ও অনলাইন জুয়া বন্ধ করতে হবে
গভীর নলকূপে পানি নেই : জমি ফেটে চৌচির
বৃষ্টি হলে কাদা রোদ হলে ধূলা
আখাউড়ায় ২ প্রার্থীর জরিমানা
একমাস পরে অবশেষে ৫ ভারতীয় নাবিককে মুক্তি দিল ইরান
ফিলিস্তিনিদের বন্দিশালা নির্মাণ করছে ভারতীয় শ্রমিকরা!
চীনে গ্রামীণ বৃত্তিমূলক দক্ষতা প্রতিযোগিতা শুরু
আচমকাই চীনে চালু হোয়াটসঅ্যাপ
মিখাইল মিশুস্তিনকে আবারো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নাম ঘোষণা পুতিনের
নিজ্জর খুনে ফের ‘র’-এর দিকেই আঙুল কানাডার!
সুইডেনে প্রবল বিক্ষোভ
অভিযুক্তদের বয়স ১১ থেকে ১৬!
তামিলনাড়ুতে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ, নিহত ৮
লোহিত সাগরের তলদেশে সামরিক জাদুঘর!
ভারতের নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের অভিযোগ রাশিয়ার
মার্কিন দমনমূলক ব্যবস্থার প্রতিবাদ বেইজিংয়ের