রিজভী

তথাকথিত উন্নয়নের নামে দেশকে গ্যাস চেম্বারে পরিণত করা হয়েছে

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:১৩ এএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:১৩ এএম

তথাকথিত উন্নয়নের নামে দেশকে গ্যাস চেম্বারে পরিণত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, জনগণ একটু বুক ভরে শ্বাস নিতে চায়। একটা নিশ্চিত নিরাপত্তার মধ্যে থাকতে চায়। বিশুদ্ধ বাতাস গ্রহণ করতে চায়। কিন্তু আপনি তো প্রধানমন্ত্রী সেটি দেননি। আপনি জনগণের অক্সিজেন কেড়ে নিয়েছেন। আপনি নিশ্বাস প্রশ্বাস কেড়ে নিয়েছেন। আপনি কথা তথাকথিত উন্ননের নামে দেশকে একটি গ্যাস চেম্বারে পরিণত করেছেন। আজ দেশে বৃক্ষ নেই, নদী ভরাট, খালভরাট সব দখল করেছে। তাহলে বৃষ্টি হবে কেন, তাহলে গাছের পাতা থাকবে কেন , গাছে ফল থাকবে কেন?

গতকাল সোমবার ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ২৩ নং ওয়ার্ডের উদ্যোগে খিলগাঁও তালতলায় মানুষদের মাঝে বিশুদ্ধ খাবার পানি, স্যালাইন ও লিফলেট বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই দেশে নাকি অনেক উন্নয়ন করা হয়েছে। প্রতিদিন আওয়ামী লীগের প্রধানমন্ত্রী থেকে মন্ত্রী-এমপিরা চিৎকার করে বলতে বলতে তাদের গলার ভিতরে আলসার হয়ে গেছে। যদি সত্যিকারের উন্নয়ন হয়, তবে সেই উন্নয়ন তো হবে মানুষটা কেন্দ্র করে। আওয়ামী নেতাদের বিদেশে বাড়ি বানানোর জন্য তো উন্নয়ন নয়। যে উন্নয়নের ছবি দেখে আওয়ামী লীগে নেতারা আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ। সেই উন্নয়ন তো জনগণ দেখতে চায়নি।

তিনি বলেন, সমস্ত বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুৎ তৈরি করা যাবে না। আপনি প্রধানমন্ত্রী কারো কথা শোনেননি। কারণ আপনার লোকদের টাকা চাই। আপনার লোকদের পকেট ভরা চাই। আপনি আপনার লোকদেরকে সুখে-শান্তিতে রাখতে গোটা দেশের মানুষকে মৃত্যুর দিকে, কবরস্থানের দিকে ঠেলে দিয়ে, কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছেন। তার পরিণতি কি? আজ ২৮ দিন যাবত দেশের মানুষ তাপদাহে পুড়ছে, স্কুলের ছাত্র শিক্ষক সহ ১৭ জন মারা গেছেন।

সাবেক ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামানের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, উনি তো অনেক আগেই গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন। এখন সেই গণতন্ত্র কে কেটে কেটে টুকরো টুকরো করেছে এই সরকার তার সাজানো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে। এই সরকার এমন এক সরকার, তার পিছনে একটা সুপার সরকার আছে -সাবেক ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামানকে উদ্দেশ্য করে রিজভী বলেন, সত্যের পক্ষে আসুন। সাবেক আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমেদ এ আন্দোলন নিয়ে কত কথা বলেছিলেন। আপনারা যা করেছেন সে পাপের কিন্তু জবাবদিহিতা করতে হবে। কোথায় কি করেছেন তা রেকর্ড কিন্তু জনগণ রেখেছে, জনগণ জানে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ডা. মো. রফিকূল ইসলাম, শিরিন সুলতানা, যুবদলের জাকির হোসেন সিদ্দিকী, উত্তর বিএনপির আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, ভিপি এজিএম শামসু, হাজী মোহাম্মদ ইউসুফ, এবিএমএ আব্দুর রাজ্জাক, যুবদলের মেহবুব মাসুম শান্ত, ছাত্রদলের তৌহিদুর রহমান আউয়াল প্রমুখ।

এদিকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে যুবদল আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজকে যেখানেই দুর্যোগ ও দুর্ভোগ সেখানেই আওয়ামী লীগ। এই যে, তীব্র তাপ্রবাহ। এজন্য কী সরকার দায়ী নয়? আজকে গাছপালা কেটে ফেলা হচ্ছে। নদী-নালা, খাল-বিল, হাওর-বাওড় সমস্ত কিছু ভরাট করা হচ্ছে। কার স্বার্থে ভরাট হচ্ছে? আওয়ামী ভূমিদস্যুদের স্বার্থে। যুবলীগ ছাত্রলীগকে নতুনভাবে ভূমিদস্যু বানিয়ে জনগণের দম বন্ধ করা হচ্ছে। কারণ তারা তো এদেশে থাকবে না। তারা যাবে মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও দুবাই। সুতরাং ওদের তো দায় নেই।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মরণ খেলা খেলছেন। তিনি আগুন নিয়ে খেলছেন। কেননা প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে শিশু মারা গেছে। মহিলাসহ প্রায় বিশ জন মারা গেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কী দায় নেই? আপনি কয়লা পুড়িয়ে তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র করে সুন্দরবন উজাড় করার ষড়যন্ত্র করছেন। দক্ষিণবঙ্গের সমুদ্র উপকূলের সব উজাড় করে দিচ্ছেন। সেখানে ফল হয়না, এটাতো আপনার কারণে। যেখানেই দুর্নীতি ও লুটপাট সেখানেই আওয়ামী সরকার। আজকে ব্যাংক, বীমা সর্বত্র হরিলুট চলছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ফাঁকা হয়ে গেছে। বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে মানুষ অতীষ্ঠ। তারা নাকি বিদ্যুতে স্বয়সম্পন্ন।

তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে থুথু দিয়ে ইটের দালান গড়া যায় না। যেটা শেখ হাসিনা করেছেন গত কয়েক বছর ধরে। আজকে দেশে কর্মসংস্থান নেই। চারদিকে শুধু হাহাকার আর আহাজারি। সেই পরিস্থিতিতে আল্লাহর অভিশাপ। এই ভয়ঙ্কর অগ্নিবর্ণরুপ বাংলাদেশের প্রকৃতি। এরমধ্যেও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে শেখ হাসিনার নীল নকশা থামছে না। সেজন্যই যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে কারাগারে পাঠানো হলো। এরআগে অনেক নেতাকে কারাগারে পাঠিয়েছে শেখ হাসিনার আদালত।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

১৫ কবি ও সাহিত্যিক পাচ্ছেন রাইটার্স ক্লাব পুরস্কার

১৫ কবি ও সাহিত্যিক পাচ্ছেন রাইটার্স ক্লাব পুরস্কার

ভূমিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন ভারতীয় হাইকমিশনার

ভূমিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন ভারতীয় হাইকমিশনার

হাতে চোট নিয়েও মেয়েকে নিয়ে কানে ঐশ্বরিয়া

হাতে চোট নিয়েও মেয়েকে নিয়ে কানে ঐশ্বরিয়া

ঢাকায় তিনদিনের কোল্ড চেইন ও অবকাঠামো প্রদর্শনী শুরু

ঢাকায় তিনদিনের কোল্ড চেইন ও অবকাঠামো প্রদর্শনী শুরু

ইট মারলে পাটকেল খাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবেন

ইট মারলে পাটকেল খাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবেন

মানুষের প্রতি শেখ হাসিনার আন্তরিকতা ও ভালোবাসা বিরল : নাছিম

মানুষের প্রতি শেখ হাসিনার আন্তরিকতা ও ভালোবাসা বিরল : নাছিম

দেশকে আরো এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

দেশকে আরো এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সোনালিকে ‘অপহরণ’ করতে চেয়েছিলেন শোয়েব আখতার!

সোনালিকে ‘অপহরণ’ করতে চেয়েছিলেন শোয়েব আখতার!

সরকারের লুটপাটে দেশের অর্থনীতি খাদের কিনারায়: এমরান সালেহ প্রিন্স

সরকারের লুটপাটে দেশের অর্থনীতি খাদের কিনারায়: এমরান সালেহ প্রিন্স

রাবিতে গাঁজা সেবনে বাঁধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে মারামারি

রাবিতে গাঁজা সেবনে বাঁধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে মারামারি

বাসে জাবি ছাত্রীকে যৌন হয়রানিতে জড়িতদের শাস্তির দাবি

বাসে জাবি ছাত্রীকে যৌন হয়রানিতে জড়িতদের শাস্তির দাবি

পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ বাড়ানোর সুপারিশ

পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ বাড়ানোর সুপারিশ

মসজিদে জামাত হওয়ার পর আবার জামাত করা প্রসঙ্গে।

মসজিদে জামাত হওয়ার পর আবার জামাত করা প্রসঙ্গে।

রাজধানীতে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা বন্ধে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ

রাজধানীতে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা বন্ধে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ

বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সংসদীয় কূটনীতি কার্যকর হাতিয়ার : স্পিকার

বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সংসদীয় কূটনীতি কার্যকর হাতিয়ার : স্পিকার

সমাজে বিবাহকে সহজ করা দরকার

সমাজে বিবাহকে সহজ করা দরকার

সরকারের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি

সরকারের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি

ইসরাইলের গণহত্যার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ বদলে দিতে পারে বিশ্বরাজনীতি

ইসরাইলের গণহত্যার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ বদলে দিতে পারে বিশ্বরাজনীতি

কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে

কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে

হামলা বন্ধ না করলে ইইউ’র সাথে সম্পর্কে অবনতি ঘটবে

হামলা বন্ধ না করলে ইইউ’র সাথে সম্পর্কে অবনতি ঘটবে