সাভারে পোল্ট্রি শিল্পে বিপর্যয় গরমে মারা যাচ্ছে মুরগী
০৩ মে ২০২৪, ১২:২১ এএম | আপডেট: ০৩ মে ২০২৪, ১২:২১ এএম
চরম বির্যয়ের মুখে পড়েছে সাভারের পোল্ট্রি শিল্প।
উৎপাদন খরচের সাথে বাজার মূল্যের সমন্বয় না থাকায়
ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে এলাকার বেশীরভাগ খামার।
তবে যে কয়টি খামার এখনও টিকে আছে অতিরিক্ত
গরমের কারনে সেসব খামারে মুরগী মারা যাওয়ায় এক
অজানা অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে খামার মালিকরা।
তবে অতিরিক্ত গরমে মুরগী মারা যাওয়ার কোনো তথ্য
প্রাণী সম্পদ অফিসে নেই। এমনকি খামারীদের আপডেট
কোনো তালিকাও তাদের কাছে নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পোল্ট্রি
খাদ্যের দাম বৃদ্ধি, মানসম্পনড়ব
ভ্যাকসিনের অভাব ও ডিম উৎপাদন
খরচ বাড়ায় পোল্ট্রি খামারগুলো
বর্তমানে বন্ধ হওয়ার উপμম।
এ কারণে অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন
কাটাচ্ছেন পোল্ট্রি মালিকরা।
অব্যাহতভাবে লোকসানের মুখে
খামার মালিকদের কাঁধে এখন শুধুই
ঋণের বোঝা। একসময় শিক্ষিত
কর্মহীনরা স্বল্প পুঁজি নিয়ে একদিন স্বপড়ব
দেখছিল নিজের পায়ে দাঁড়ানোর।
কিন্তু নানা ধরনের সমস্যার কারণে
তাদের সে স্বপেড়ব এখন গুড়ে বালি।
উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, নব্বইয়ের
দশকে সাভার উপজেলায় ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় আড়াই
হাজার পোল্ট্রি খামার ছিল। কিন্তু নানান প্রতিকুলতার কারনে ধীরে ধীরে খামার বন্ধের পথে। এরই মধ্যে আবার ২০০৭ সালে শুরু হওয়া এভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লুতে বেশিরভাগ খামার আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। খামারিরা সেই ক্ষতি এখনো পুষিয়ে উঠতে পারেনি। তাই বেশিরভাগ খামারীরাই এ ব্যবসা বন্ধ করে অন্য পেশায় ঝুঁকে পড়ছেন।
জানা যায়, লাভজনক ব্যবসা হিসেবে নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে সাভারের বিভিনড়ব এলাকায় পোল্ট্রি শিল্প বেশ জনপ্রিয়তা পায়। ওই সময় পর্যায়μমে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ আকারে প্রায় আড়াই হাজার বয়লার ও লেয়ার পোল্ট্রি খামার গড়ে ওঠে। এসব খামারে উৎপাদিত মাংস ও ডিম স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকার বাজারের এক বড় অংশ দখল করে নেয়।
সাভারের দেওগাঁ এলাকার আর এস পোল্ট্রির মালিক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার খামারে ১২ হাজার লেয়ার মুরগী ছিল। কিন্তু প্রচন্ড গরমের কারনে দৈনিক ১০টা ২০টা করে মুরগী মারা যাচ্ছে। খামারে ফ্যানের ব্যবস্থা করা হয়েছে তবুও অতিরিক্ত গরমে মুরগী খাবার খেতে পারছে না। খাবার না খাওয়ার ফলে মুরগী দুর্বল হয়ে মারা যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আগে ৯০ ভাগ মুরগী ডিম দিত। এখন গরমের কারনে ৫০ থেকে ৬০ ভাগ ডিম পাচ্ছি। তবুও তুলনামূলকভাবে ছোট ডিম।
গরমে মুরগী মারা যাওয়ার বিষয়টি তিনি উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসকে অবহিত করেননি বলেও জানিয়েছেন। তবে দিনদিন খামারে যে লোকসান গুনতে হচ্ছে তাতে খামার টিকিয়ে রাখা মুশকিল হয়ে যাবে এমনটাই আশংকা করছেন এই খামার মালিক। সাভারে একসময় পোল্ট্রি মালিকদের সংগঠন ‘পোল্ট্রি মালিক কল্যাণ সমিতি’ ছিল। কিন্তু পোল্ট্রি শিল্পে বিপর্যয়ের কারনে মালিকদের সেই সংগঠনের কোন অস্তিত্ব নেই বলে দাবি করেছেন উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সাজেদুল ইসলাম।
সাভারের কান্দি ভাকুর্তা এলাকায় অবস্থিত হাসমত পোল্ট্রি। খামারটিতে প্রায় ১০ হাজার লেয়ার মুরগী রয়েছে। অতিরিক্ত গরমের কারনে দৈনিক কম বেশি মুরগী এই খামারেও মারা যাচ্ছে। খামারটির মালিক হাসমত উল্লাহ ইনকিলাবকে বলেন, ৬ থেকে ৭ বছর ধরে পোল্ট্রির ব্যবসা করে আসছি। নানান প্রতিকূলতা পেরিয়ে এপর্যন্ত এসেছি। অনেকে খামার ছেড়ে অন্য ব্যবসা করছে, কিন্তু আমি কষ্ট হলেও পোল্ট্রি ব্যবসা ধরে রেখেছি। কিন্তু এই গরমে যেভাবে মুরগী মারা যাচ্ছে তাতে হয়তো খামারটি আর টিকিয়ে রাখা যাবে না। এভাবে হয়তো একসময় ধ্বংস হয়ে যাবে এই পোল্ট্রি শিল্প।
খাগুড়িয়া এলাকায় মায়ের দোয়া পোল্ট্রি ফার্মে প্রায় ১৫ হাজার মুরগী রয়েছে। প্রচন্ড গরমে এই ফার্মেও কমবেশি মুরগী মারা যাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন ফার্মের মালিক মালু মিয়া। তারাও মুরগী মারা যাওয়ার বিষয়টি প্রাণী সম্পদ অফিসকে অবহিত করেনি।
সাভার উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সাজেদুল ইসলাম সাভারে পোল্ট্রি শিল্পের বিপর্যয়ের কথা স্বীকার করে বলেন, একসময় সাভারে প্রায় আড়াই হাজার খামার ছিল। ২০০৭ সালে শুরু হওয়া এভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু’র কারনে পোল্ট্রি শিল্পে যে বিপর্যয় শুরু হয়েছ তা এখনও থেমে নেই।
সাভারের ভাকুর্তা, কমলাপুর, বাশবাড়ী ও শিমুলিয়া এলাকায় প্রায় সাড়ে তিনশ’ খামার রয়েছে। যার মধ্যে লেয়ার মুরগীর খামার ১৮টি, বয়লার মুরগীর খামার ১৫০টি এবং বাকীগুলো সোনালী মুরগীর খামার।
অতিরিক্ত গরমে পোল্ট্রি খামারে কোন প্রভাব পড়ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, গরমে মুরগী মারা যাওয়ার কথা কেউ আমাদেরকে অবহিত করেনি।
খামার মালিকদের সর্বশেষ তথ্য এমনকি খামারীদের তালিকা তাদের কাছে নেই বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
সাভার থেকে দিন দিন পোল্ট্রি খামার বিলুপ্ত হওয়ার বিষয়ে সাজেদুল ইসলাম বলেন, দ্রুত নগরায়ণ হয়ে যাচ্ছে, যে কারনে পোল্ট্রি খামার কমে সাভার থেকে অন্যত্র গ্রামাঞ্চলের দিকে চলে যাচ্ছে। আগামী ২/১বছরের মধ্যে সাভারে পোল্ট্রি খামার খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়বে বলেন তিনি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলার শুনানি শুরু
শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন
শিগগিরই বাংলাদেশে আসছেন কুরুলুস উসমানের নায়ক বুরাক অ্যাজিভিট
বাইডেনকে তিরস্কার করে ইসরায়েলে অস্ত্র পাঠাতে বিল পাস
র্যাবের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার খবর সম্পূর্ণ মিথ্যা : যুক্তরাষ্ট্র
৬ তারিখে বাজেট দেবো, বাস্তবায়নও করবো
মেরুকরণই হাতিয়ার মোদির! ভারতে ধর্মের কার্ড খেলার ট্র্যাডিশন চলছেই
অত্যাধুনিক রকেটের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে পাকিস্তান
কুয়েতে নতুন রাষ্ট্রদূত হলেন মেজর জেনারেল তারেক
স্বামীর উপহারের টাকায় লটারি কিনে কোটিপতি স্ত্রী
হাজীগঞ্জে খালে ভাসছিল অজ্ঞাত নারীর লাশ
রাজধানীর বাসাবোয় ১০ তলা বিল্ডিংয় থেকে পড়ে ২ শ্রমিক নিহত
সাউথ এশিয়ান ল’ ইয়ার্স ফোরামের ইন্টারন্যাশনাল চ্যাপ্টারের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা
অধ্যক্ষের কক্ষে শিক্ষককে পেটালেন ছাত্রলীগ নেতা
বিজিবি'র পৃথক অভিযানে ৪ কেজি আইস উদ্ধার, আটক-১
সব বিষয়ে পাস, বাস্তব প্রশিক্ষণে নম্বর না দেয়ায় ফেল ১৩ শিক্ষার্থী
হজ পালনে সউদী গেছেন ২৪ হাজার ২৩৬ জন বাংলাদেশি
২২ মে থেকে বাজারে নওগাঁর আম, সবশেষে আম্রপালি
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ
৬৪ বছর বয়সে বিমান চালনার স্বপ্ন-পূরণ