১৪৪৫ হিজরীর পবিত্র হজের প্রথম হজ ফ্লাইট আজ থেকে চালু হচ্ছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রথম হজ ফ্লাইট (বিজি-৩৩০১) ৪১৯ জন সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীকে নিয়ে সউদী আরবের জেদ্দার উদ্দেশে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যাবে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান,ধর্ম মন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল হামিদ জমাদ্দা, বিমান সচিব এবং হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বিমানবন্দরে হজযাত্রীদের বিদায় জানাবেন। এছাড়া আজ থেকে সাউদিয়া এয়ারলাইন্স ও ফ্লাই নাসের প্রথম হজ ফ্লাইট জেদ্দার উদ্দেশ্যে ঢাকাত্যাগ করবে। বিমানের শেষ হজ ফ্লাইট আগামী ১০ জুন জেদ্দার উদ্দেশ্যে ঢাকাত্যাগ করবে। সাউদিয়া এয়ারলাইন্স ও ফ্লাই নাস ফ্লাইটের শেষ হজ ফ্লাইট আগামী ১২ জুন জেদ্দার উদ্দেশ্যে ঢাকাত্যাগ করবে। আগামী ২১ জুন থেকে সউদী থেকে বিমানের ফিরতি হজ ফ্লাইট শুরু হবে। গতকাল বুধবার আশকোণাস্থ হাজী ক্যাম্পে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে হজকার্যক্রম (২০২৪) উদ্বোধন করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২৫৯টি বেসরকারি হজ এজেন্সির মধ্যে অধিকাংশ এজেন্সির মক্কা-মদিনায় এখনো বাড়ী ভাড়ার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়নি। ফলে অর্ধেকেরও বেশি হজ ভিসা ইস্যু করা সম্ভব হয়নি। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ৩৮ হাজার ৮শ’৫৯ জন হজযাত্রীর হজ ভিসা ইস্যু হয়েছে। সরকারি ব্যবস্থাপনার ৩ হাজার ৯৮৭ জন হজযাত্রীর হজ ভিসা ইস্যু করা হয়েছে। আরো দু’টি হজ ফ্লাইটের সরকারি হজযাত্রীদের ভিসা ইস্যু করা সম্ভব হয়নি। সউদী হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী মঙ্গলবারের মধ্যে হজ ভিসা ইস্যুর সময় সীমা শেষ হবার কথা। হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম ইনকিলাবকে জানান, গাইডসহ এবার বাংলাদেশ থেকে ৮৫ হাজার ৩০৭ জন হজযাত্রী হজে যাবেন। এর মধ্যে গাইডসহ সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ৪১৯ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গাইডসহ ৮০ হাজার ৬৮৮ জন। আগামী ১১ মে পর্যন্ত হজ ভিসা ইস্যুর আবেদনের সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে।

আগামী শুক্র ও শনিবার সউদীর সরকারি ছুটির দিনে হজ ভিসা ইস্যু কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এ অল্প সময়ের মধ্যে ৪৬ হাজার ৪৪৮ জন হজযাত্রীর ভিসা ইস্যু করা সম্ভব হবে কি না তা’নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। গতকাল বুধবার মক্কা থেকে আবাবিল হজ গ্রুপের চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ইনকিলাবকে জানান, নানা সমস্যার কারণে এখনো অর্ধেক হজযাত্রীর মক্কা-মদিনার বাড়ী ভাড়া সম্পন্ন হয়নি। ফলে হজ ভিসা এতো অল্প সময়ের মধ্যে ইস্যু করা সম্ভব হবে না। তিনি হজ ভিসা ইস্যুর আবেদনের সময় আরো দশ দিন বৃদ্ধির জন্য সউদী হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এদিকে, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আইটি বিভাগের প্রি-রেজিষ্ট্রেশনের সার্ভার গত তিন দিন যাবত বিকল থাকায় অনেক হজ এজেন্সি হজযাত্রী রিপ্লেসমেন্ট কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারছে না। এতে হজ ভিসা ইস্যুতে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ হজযাত্রী ও হাজী কল্যাণ পরিষদের চেয়ারম্যান ও আল নাসের এভিয়েশনের স্বত্বাধিকারী ড. আব্দুল্লাহ আল নাসের রাতে ইনকিলাবকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে সার্ভার সর্বদা সচল রাখা এবং ২০২২-২০২৩ সালের হজ মৌসুমের ন্যায় হজযাত্রী প্রতিস্থাপন উন্মুক্ত রাখার জোর দাবি জানান। এতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর কোটার অপচয় হবে না এবং সংশ্লিষ্ট হজযাত্রীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। হাজী ক্যাম্পে বিজনেস অটোমেশনের আইটি কর্মকর্তা মুরাদ জানান, সার্ভার বিকল হয়নি। সার্ভার চালু আছে। চলতি বছর এমনিতেই প্রায় ৪৪ হাজার হজযাত্রীর কোটা খালি যাচ্ছে। এদিকে, একাধিক হজ এজেন্সির মালিক জানান, পাসপোর্টের জটিলতার কারণে হজযাত্রীদের নিকটতম প্রিয়জনদের নামে মূল নিবন্ধন সম্পন্ন করেছে। আরো নানা কারণে নিবন্ধন করেও অনেকেই এবার হজে যেতে পারবে না। এসব কোটার বিপরিতে রিপ্লেসমেন্ট প্রক্রিয়ায় হজযাত্রীরা যাতে হজে যাওয়ার সুযোগ পান তার জন্য ২০২২-২০২৩ সালের ন্যায় হজযাত্রী প্রতিস্থাপন উন্মুক্ত রাখার জন্য ধর্মমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগি হজ এজেন্সির মালিকরা।