মনির-হাবিব-হারুনের প্রেতাত্মারা এখনও বহাল পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদে
১২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম
আওয়ামী সরকারের সময় বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের খুন, গুম, ধরে নিয়ে নির্যাতন এবং নানা মামলায় জড়িয়ে বছরের পর বছর কারাগারে আটকে রাখার ঘটনা ছিল নিত্যদিনের। আর এ সব অপরাধের মাস্টার মাইন্ড পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম-হাবিবুর রহমান ও হারুন উর রশীদের প্রেতাত্মারা এখনও বহাল পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদে। পুলিশ সদর দফতর ও সারদা পুলিশ একাডেমিসহ পুলিশের অতিগুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে কর্মরত থেকে এসব কর্মকর্তারা অতি কৌশলে অন্তবর্তীকালীন সরকারের আইন-শৃংখলা রক্ষাসহ নানা কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। একই সাথে এ সব কর্মকর্তারা এসবির সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান ও ডিবির সাবেক প্রধান হারুন অর রশীদের সঙ্গে যোগাযোগও রক্ষা করে চলছেন। ইতোমধ্যে এ সব বিষয় নজরে এসেছে একাধিক সংস্থার। যা তদন্ত করা হচ্ছে। মনির-হাবিব ও হারুন আত্মগোপনে থাকলেও তাদের প্রভাব এখনো বিদ্যমান পুলিশে। রহস্যজনকভাবে এখনো পর্যন্ত তাদের অনেক ঘনিষ্ঠদের আইনের মুখোমুখি হতে হয়নি।
সম্প্রতি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পাঠানো একটি গোয়েন্দা সংস্থা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৫ বিসিএস কর্মকর্তা মোহাম্মদ সানোয়ার হোসেন স্থায়ী ঠিকানা গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর। তিনি আওয়ামী সরকারের সময় ডিএমপির সিটিটিসি ও সুয়াতে কর্মরত থাকাকালীন সময়ে অনেক নিরীহ ধর্মভীরু সাধারণ মানুষকে জঙ্গি বানিয়ে হত্যা করেন তৎকালীন সিটিটিসির প্রধান মনিরুল ইসলামের নির্দেশে। তিনি বিভিন্ন সময়ে জঙ্গিদমনের নামে বিভিন্নস্থানে বোমা পুঁতে রেখে জঙ্গি অপারেশনের নাটক সাজাতেন। নিরীহ মুসলমানের গায়ে সময় নিয়ন্ত্রিত বোমা বেঁধে হত্যা করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, সিটিটিসির সাবেক প্রধান ও পরে এসবি প্রধান মনিরুল ইসলামের ক্যাশিয়ার হিসেবেও পরিচিত ছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। যা তদন্ত করলে বের হবে। তবে সর্বশেষ সোমবার তাকে এন্টি টেররিজম ইউনিট থেকে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। অন্য দিকে পুলিশের এক সময়ে খুব প্রভাবশালী ও সাবেক আইজিপি বেনজিরের ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত ২০তম ব্যাচের অতিরিক্ত ডিআইজি মো: মাসুদুর রহমান, বরিশালের কোতোয়ালী থানার বাসিন্দা। অতিরিক্ত ডিআইজি মো: মাসুদুর রহমান সারদা পুলিশ একাডেমির মত পুলিশের অতিগুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে কর্মরত থেকে অতি কৌশলে অন্তবর্তীকালীন সরকারের আইন-শৃংখলা রক্ষাসহ নানা কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। একই সাথে এ সব কর্মকর্তারা এসবির সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করছেন। তিনি আওয়ামী সরকারের সময় ডিএমপির ডিসি এবং পুলিশ সদর দফতরের গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি ১৭ ও ২০ বিসিএস ব্যাচের নিরপেক্ষ, পেশাদার, সৎ ও বিএনপি-জামায়াত পন্থী কর্মকর্তাদের পদোন্নতিদ-ঢাকায় কর্মরত থাকতে না দেয়াসহ নানা অনৈতিক কাজের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন আওয়ামী সরকারে শেষ ১০ বছর। সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ আইজিপি থাকার সময় পুলিশ সদর দফতরের সকল প্রকার কেনাকাটায় ১০ভাগ কমিশন গ্রহন করতেন বলে গোয়েন্দা রিপোর্টে উল্লেখ্য করা হয়েছে।
গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, অতিরিক্ত ডিআইজি আঞ্জুমান কালাম (বর্তমানে সিআইডিতে পোস্টিং) ২০০৯ থেকে ২০১৮ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত বিশেষ শাখার ফোন ট্যাপিং ইউনিটের প্রধান হিসাবে কাজ করেছিলেন। তিনি এই ১০ বছরে বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের ফোন কল রেকড করে সাবেক এসবি প্রধান জাভেদ পাটোয়ারীকে সমস্ত রাজনৈতিক গোয়েন্দা তথ্য দিয়েছিলেন। জাবেদ পাটোয়ারী সেই গোয়েন্দা তথ্যগুলো ফ্যাসিস্ট হাসিনার সাথে শেয়ার করেন এবং তার ঘনিষ্ঠ হন। উদাহরণ স্বরূপ, আঞ্জুমান কালাম ১১ ডিসেম্বর, ২০১১ তারিখে বিএনপির কর্মসূচির জন্য গোয়েন্দা তথ্য দেন। তারপর এসবি ও ডিএমপি যৌথভাবে বিএনপি কর্মীদের বিরুদ্ধে ওই দিন ভোরে অভিযান চালায় এবং ৫ বিএনপি নেতাকে গুলি করে হত্যা করে। এই কারণে ২০১২ সালে পুলিশ সপ্তাহের ভাষণে ফ্যাসিস্ট হাসিনা তাকে বাঁচানোর জন্য এসবিকে অভিনন্দন জানান। আঞ্জুমান কালাম ২০১৩ সালের মে মাসে হেফাজত হত্যাকাণ্ডের সময় সমস্ত গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করেছিলেন। তিনি ২০১৪ সালের নির্বাচন এবং ২০১৫ সালের প্রতিবাদের সময় বিরোধী নেতাদের সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে সমস্ত হত্যাকাণ্ডের মাস্টার মাইন্ডের একজন ছিলেন। তিনি ২০০৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত সমস্ত ভূয়া জঙ্গি নাটকের মাস্টার মাইন্ড ছিলেন। জাভেদ পাটোয়ারী আইজি হওয়ার পর তিনি পুলিশ সদর দফতরের এলআইসির এআইজি হিসেবে যোগদান করেন। হাসিনা ও জাবেদ পাটোয়ারীর পোষা হিসেবে তিনি ২০১৮ নির্বাচনী প্রচারের সময় সব জেলার এসপিদের কাছে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে সমস্ত গোয়েন্দা তথ্য দিয়েছিলেন। তিনি নিজেই নির্বাচনে কারচুপির জন্য স্থানীয় এসপিদের কাছে সমস্ত অর্থ বিতরণ করেছিলেন। ২০২২ তিনি আইজিপি মামুনের গোপনীয় শাখার প্রধান হন এবং ৫ আগস্ট পর্যন্ত সেই পদে বহাল ছিলেন। তিনি ২৮ অক্টোবর, ২০২৩ বিএনপি নেতাকর্মীদের নিশ্চিহ্ন করতে সব সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে। তিনি সব গোয়েন্দা সংস্থার সাথে সমন্বয় করে জুলাই বিপ্লবের সময় ছাত্র এবং রাজনৈতিক ব্যক্তি সম্পর্কে তথ্য দিয়েছিলেন পুলিশকে।
গোয়েন্দা সংস্থার অপর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশ সদর দফতরের কর্মরত ২১ বিসিএস কর্মকর্তা অতিরিক্ত ডিআইজি মুনতাসিরুল ইসলাম সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকারের স্টাফ অফিসার হিসেবে চার বছর কাজ করেছেন। তিনি হাসান মাহমুদ খন্দকারের (২০১১-২০১৫) সাথে এই পুরো সময়কালে নন-আওয়ামী লীগ নন-ফ্যাসিস্ট পুলিশ অফিসারদের নিপীড়নের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন। হাসান মাহমুদের ডান হাত হিসেবে তিনি ২০১৪ সালের নির্বাচনে এবং ২০১৫ সালের বিক্ষোভে বিরোধী দল বিএনপি ও জামায়াতকে দমন করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি ২০১৩ সালে হেফাজত হত্যায় আইজিপি হাসান মাহমুদের পক্ষে প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবেও কাজ করেছিলেন। তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে লালবাগের ডিসি হিসাবে কাজ করেছিলেন এবং সেই রাতের নির্বাচনে ফ্যাসিবাদী বিজয় নিশ্চিত করতে অন্যান্য সংস্থার সাথে সমন্বয় করেছিলেন। তিনি ৩ বছর এসপি ঝিনাইদহে কাজ করেন এবং এমপি আনার ও তার চোরাচালান সিন্ডিকেটের ঘনিষ্ঠ অংশীদার হন। অতিরিক্ত ডিআইজি হওয়ার পর আইজিপি চৌধুরী মামুন তাকে পুলিশ সদর দফতরের ফোন ইন্টারসেপশন ইউনিটের প্রধান করেন। তিনি ২৮ অক্টোবর, ২০২৩ সালে বিরোধী আন্দোলনকে ভেঙে দেওয়ার জন্য ডিবি হারুনের মূল গোয়েন্দা কর্মকর্তা এবং সমন্বয়কারী ছিলেন। আইজিপি মামুনের বিগত আড়াই বছরের সময় তিনি সমস্ত বিএনপি এবং বিরোধী দলের নেতাদের ফোনালাপ ট্যাপ করেছিলেন। যখন সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি প্রলয় জোয়ার্দার হেডকোয়ার্টারে যোগদান করেছিলেন, তখন মুনতাসির তার সাথে সবসময় তার পোষা হিসেবে ছিলেন। তিনি পুলিশ সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখার প্রধান হিসেবে ছাত্র ও গণহত্যার জন্য এসপি এবং কমিশনারদের কাছে সমস্ত অর্থ বিতরণ করেছিলেন। সে অনেক ছাত্রনেতা এবং বিএনপি নেতাদের ফোন ও ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে এবং জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে ছাত্রদের লোকেশন প্রদান করে তাদের হত্যা করার জন্য। তিনি এখনও পুলিশ সদর দপ্তরে অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে কর্মরত আছেন।
গোয়েন্দা সংস্থার অপর এক প্রতিবেদনে বলঅ হয়েছে, ইশতিয়াক আহমেদ (২৮ বিসিএস ব্যাচ) ২০১৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মোবাইল ফোন ইন্টারসেপশন ইউনিটের প্রধান গোয়েন্দা কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি পুলিশের চার সাবেক আইজিপি শহিদুল হক, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজির আহমেদ এবং চৌধুরী মামুন-এর হয়ে কাজ করেছেন। তিনি এত গুরুত্বপূর্ণ একজন বিশ্বস্ত যে ১১ বছরে ৪ আইজিপি পরিবর্তন করা হয়েছিল কিন্তু, তিনি একই পদে ছিলেন এবং এলআইসির দ্বিতীয় কমান্ডে ছিলেন। তিনি ২০১৪ সালের নির্বাচন এবং ২০১৫ সালের বিক্ষোভ সম্পর্কে সাবেক আইজিপি শহীদুল হককে (বর্তমানে কারাগারে) সমস্ত তথ্য দিয়েছিলেন এবং এর ফলে ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে শত শত বিরোধী নেতাকে হত্যার সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি জাভেদ পাটোয়ারীর শাসনামলে আঞ্জুমান কালামের দ্বিতীয় কমান্ড ছিলেন এবং ২০১৮ সালের রাতের নির্বাচনে অন্যান্য সরকারী সংস্থার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছিলেন। বেনজির আহমেদের শাসনামলে তিনি আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠেন এবং আড়াই বছরের শাসনামলে তার ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তিনি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এসপি পদে উন্নীত হওয়ার আগ পর্যন্ত টানা ১০ বছর ধরে এলআইসি-তে অত্যন্ত সংবেদনশীল পদে কাজ করেছিলেন এবং তিনি সমস্ত বিএনপি এবং বিরোধী দলের নেতাদের ফোনালাপ ট্যাপ করেছিলেন। এসপি হওয়ার পর, চৌধুরী মামুন তাকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আইসিটি শাখায় এআইজি (আইসিটি) পদায়ন করেছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে কেউ তাকে স্পর্শ করতে পারেনি এবং তিনি এখনও সেই গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করছেন।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ্য করা হয়েছে, মনির-হাবিব ও হারুন আত্মগোপনে থাকলেও তাদের প্রভাব এখনো বিদ্যমান পুলিশে। রহস্যজনকভাবে এখনো পর্যন্ত তাদের ঘনিষ্ঠদের কাউকেই আইনের মুখোমুখি হতে হয়নি। জানা গেছে, হারুনের ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত ছিলেন ডিবি মতিঝিলের এডিসি (প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম। বর্তমানে তিনি এপিবিএন ঢাকাতেই কর্মরত। শুরুতে রাঙামাটি এপিবিএন-এ বদলি হলেও হারুনের সহায়তায় এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের নেতার সহায়তায় কয়েকদিনের ব্যবধানে ঢাকায় পোস্টিং করান। রফিকুল ইসলামকে দিয়ে নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করানোর বিষয়টি ছিল ওপেন সিক্রেট। জমি দখল, টাকা উদ্ধারে পারদর্শী হওয়ায় হারুনের পছন্দের তালিকায় তার অবস্থান ছিল শুরুর দিকে। জমিজমা এবং টাকা উদ্ধারের বিষয়টি সম্পূর্ণ আদালতের এখতিয়ার হওয়ার পরও বনশ্রী, রামপুরা এলাকায় বিভিন্ন ধরনের জমি দখল এবং অন্যায়ভাবে লোকজনকে ধরে এনে টাকা আদায় করতেন। হারুনের আরেকজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী এডিসি জুনায়েদ আলম সরকার। ডিবি সাইবার ক্রাইম বিভাগে কর্মরত ছিলেন। হারুনের এপিএস হিসেবেই পরিচিত ছিলেন ডিবি এবং সর্বত্র। আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন সিরাজের মেয়ের জামাই। জুনায়েদ হারুনের মিডিয়া সেল দেখাশোনা করতেন। হারুন ভাতঘরের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতাও তিনি। তার বিরুদ্ধেও ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। জুনায়েদ বর্তমানে ঢাকা এপিবিএনে কর্মরত। ডিবির আরেক প্রভাবশালী এডিসি ছিলেন মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম (সাইফ)। খিলগাঁও জোনাল টিমের প্রধান হিসেবে কাজ করতেন। তিনিও ঢাকায় এপিবিএন-এ কর্মরত। সাইফ পল্টনে থাকা তার ভাইয়ের মানি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে হারুনের টাকা বিদেশে পাচারে সহায়তা করতেন। প্রথমে সেই অর্থ দুবাই যেত। পরবর্তীতে চলে যেত নির্দিষ্ট গন্তব্যে। সাইফের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা রয়েছে।
ডিবির আরেক প্রভাবশালী সদস্য ছিলেন এডিসি আসমা আরা জাহান। ৩০ ব্যাচের এই কর্মকর্তার বাড়ি হারুনের এলাকায়। হারুন সিন্ডিকেটের অন্যতম এই সদস্য এক সময় ডিবি-মাতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। আসমার অন্যতম সহযোগী ৩১ ব্যাচের বদরুজ্জামান জিল্লু। কিশোরগঞ্জে সার্কেলে এএসপি হিসেবে কর্মরত থাকার সময়ই আসমার সঙ্গে তার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। দেড় বছর আগে আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাদা মহিউদ্দিনের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া ৩৪ কোটি টাকার ভাগাভাগি নিয়ে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন হারুন এবং আসমা। বিষয়টি একপর্যায়ে পুলিশের উচ্চপর্যায়েও জানাজানি হয়। কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে আসমাকে ডিএমপি সদর দপ্তরের প্রটেকশন বিভাগে বদলি করেন। এখনো তিনি সেখানেই কর্মরত। যদিও হাসিনা সরকারের শেষ দিকে হাসিনা এবং আসমার সম্পর্ক আগের মতোই স্বাভাবিক হয়েছিল বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।
ডিবি সাইবার বিভাগের কর্মকর্তা ৩০ ব্যাচের এডিসি মনিরুল ইসলাম। হারুনের পছন্দের কর্মকর্তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন মনিরুল। ডিবি হারুনের নির্দেশে টাকা পাচারের অন্যতম মাফিয়া এস আলমের লোকজনকে নিয়মিত সহায়তা করতেন। এখনো তিনি ডিবি সাইবারেই বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
পুলিশ সদর দফতরের একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা ইনকিলাবকে জানিয়েছেন, মনিরুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান ও হারুনের ঘনিষ্ট কর্মকর্তারা সদর দপ্তর ও সারদা পুলিশ একাডেমিসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে কর্মরত আছেন এমন কর্মকর্তার সংখ্যা অন্তত দৃুই শতাধিক। বিগত ১৫ বছর ধরে পুলিশ বাহিনীতে যে ব্যাপক দুনীতি হয়েছে, এসব দুনীতির অংশীদারও ছিলেন এসব কর্মকর্তাই। তাদের কেউ কেউ প্রভাবশালীদের কাছাকাছি থাকার সুবাদে বদলিও ঠেকিয়েছেন বছরের পর বছর। সরকার বদলের পর এরাই এখন বঞ্চিত সেজে প্রভাব বিস্তার করছেন পুরো পুলিশ বাহিনীতে।এমনকি তারা তথ্য পাচারও করছে কৌশলে। যা পুরো পুলিশ বাহিনীর সংস্কারে মারাত্মক ক্ষতি করবে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ইসলামাবাদের দিকে যাচ্ছে ইমরান খানের সমর্থকদের বিশাল বহর
আদালতের নির্দেশনায় ব্যাটারি চালিত রিকশা সমস্যার সমাধান হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ঢাকা-ভাঙ্গা-নড়াইল-খুলনা রেল পথে চলল পরীক্ষামূলক ট্রেন
"অবশেষে গুজব ছড়ানোর অভিযোগ নিয়ে প্রকাশ্যে আসলো সায়রা বানুর বার্তা"
এস আলমের মালিকানাধীন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মহাসড়ক অবরোধ বিক্ষোভ
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তিন দিনের সংঘাতে নিহত ৮২ জন
‘গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে সৎ ও দেশপ্রেমীদের দিয়ে নির্বাচন করানোর ব্যাপারে বিএনপি বদ্ধ পরিকর’
ভারতের রান পাহাড়ের সামনে আবারও ব্যাটিং ধ্বসে অস্ট্রেলিয়া
শপথগ্রহণ করে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে যা বললেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার
৫ বিসিএসে নিয়োগ পাবেন ১৮ হাজার ১৪৯ জন
ইউএই-তে নিখোঁজ ইয়াহুদী রাব্বির লাশ উদ্ধার, ইসরায়েলের দাবি
ঝিকরগাছায় টিউবয়েলের গর্তের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
ওরা জুলাই বিপ্লবের সব স্মৃতি চিহ্ন মুছে দিতে চায়
ফ্রান্সে গণধর্ষণ মামলা ঘিরে দেশজুড়ে হাজার হাজার মানুষের বিক্ষোভ
নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবিরকে হয়রানি, অভিযুক্তকে প্রত্যাহার
শপথ নিলেন নতুন সিইসি ও ৪ কমিশনার
বান্দরবানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে কেএনএ’র ৩ সদস্য নিহত, অস্ত্র-গুলি উদ্ধার
ক্রাউন প্রিন্স শেখ হামদান দুবাই রান ২০২৪-উৎসবে দৌড়বিদদের নেতৃত্ব দিলেন
বেনাপোল বন্দরের সাথে সকল রুটের পরিবহণ ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন চলছে: পাসপোর্ট যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে
সাটুরিয়ায় জমি নিয়ে বিরোধে হামলায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কৃষকের মৃত্যু