চাহিদা বেড়েছে জন্মনিবন্ধনের
০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম | আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
দেশের বিভিন্ন এলাকায় জন্মনিবন্ধন নিয়ে সাধারণ মানুষকে চরম হয়রানি হতে হচ্ছে। বিশেষ করে ডিসেম্বর মাস আসলেই এই সমস্যা অনেকটাই বেড়ে যায়। ডিসেম্বরে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন স্কুলে ভর্তি ও নতুন স্কুলে স্থানান্তরের কারণে তাদের বেশি দরকার পরে জন্মনিবন্ধন সনদের। ডিসেম্বর ও নতুন বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে জন্মনিবন্ধন সনদ দরকার হওয়ায় এই সময়টায় চাহিদা বেড়ে যায়। তাকে হিমশিম খেতে হয় জন্মনিবন্ধন সনদ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে। এ সময়ে জন্মসনদের আবেদনপত্র স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি পড়ে।
শুধু স্কুলে ভর্তি নয়, চাকরিতে নিয়োগ, পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্রসহ ১৯টি ক্ষেত্রে জন্ম সনদ আবশ্যক। যে কারণে বছরজুড়ে সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্ম সনদ নিতে ভিড় লেগে থাকে। পদ্ধতি নিয়ে ধারণার অভাব, প্রয়োজনীয় নথিপত্র জোগাড় করতে না পারাসহ নানা সমস্যায় ঘুরপাক খাচ্ছেন জন্ম সনদ করতে যাওয়া ব্যক্তিরা। একবার জন্মনিবন্ধন করা হলেও সেটি অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে না। নতুন করে নিবন্ধন করাতে হচ্ছে। সন্তানদের জন্মনিবন্ধন করাতে গিয়ে বাবা-মায়ের জন্ম সনদ তৈরি, সংশোধন করতে হচ্ছে। এমনও দেখা যাচ্ছে কারো বাংলায় সনদ থাকলেও ইংরেজিতে নেই। কারও আবার ইংরেজি থাকলে বাংলা করা নেই।
২০২১ সালের ১ জানুয়ারি জারি করা সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, ২০০১ সালের পর জন্ম নেওয়া ব্যক্তিদের জন্মনিবন্ধন করাতে হলে মা-বাবার জন্মসনদ থাকা আবশ্যিক। জাতিসংঘ শিশু অধিকার কনভেনশনের অনুচ্ছেদ ৭ অনুযায়ী, জন্মনিবন্ধন করতে হবে শিশুর জন্মের সঙ্গে সঙ্গে। রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ের এক নির্দেশিকায় শিশুর জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্মনিবন্ধনের ব্যাপারে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে বিনা মূল্যে নিবন্ধন করা যাবে। ৪৬ দিন থেকে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত এ খরচ ২৫ টাকা। আর বয়স পাঁচ বছরের বেশি হলে খরচ ৫০ টাকা।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ জানান, প্রতিদিন হাজার হাজার অভিভাবক এসে ভিড় করছেন। লোকবলের অভাবে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী ও প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা পালিয়ে যান। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলররাও আত্মগোপনে চলে যান। পরে মেয়রদের অপসারণ করে প্রশাসক বসানো হয়। অপসারণ করা হয় কাউন্সিলরদেরও। সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে গঠন করা হয় দুটি কমিটি। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় দুই কমিটির ৫০ জন এবং ২০ জন আঞ্চলিক কর্মকর্তাসহ ৭০ জনকে। বর্তমানে ওয়ার্ডগুলোতে প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে সংশ্লিষ্ট সচিবরা দায়িত্ব পালন করছেন। চলতি বছর জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম সহজ করতে ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয় থেকে এ সনদ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। পাশাপাশি জন্মনিবন্ধন সংক্রান্ত কোনো সংশোধনী থাকলে তা করতে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়। পরবর্তীতে সব ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে অপসারণ করা হলে এ সেবা প্রদানের দায়িত্ব দেওয়া হয় ওয়ার্ড সচিবদের। যে কারণে জন্মনিবন্ধন সনদ পেতে ভোগান্তি বেড়ে যায় বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় আগে থেকেই জন্মনিবন্ধন সনদ দেওয়া হতো তাদের আঞ্চলিক ১০টি কার্যালয় থেকে। এ ছাড়া জন্মনিবন্ধন সংক্রান্ত কোনো সংশোধনী থাকলে তা সদরঘাটে অবস্থিত জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে করিয়ে আনতে বলা হতো। বর্তমানে আঞ্চলিক কার্যালয়গুলো থেকে এ সনদ দেওয়া হচ্ছে। তবে, লোকবল সংকট এবং হঠাৎ করে চাপ বেড়ে যাওয়ায় তাদেরও হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানা গেছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, মেয়ের জন্মনিবন্ধন করাতে আসি ওয়ার্ড সচিবের কার্যালয়ে। যেদিনই আসি সেদিনই অতিরিক্ত ভিড়। সবাই এসেছে তাদের সন্তানদের জন্মনিবন্ধন করাতে। তারা সবকিছু চেক করে বলে, আমার জন্মনিবন্ধনের সঙ্গে আমার জাতীয় পরিচয়পত্রের নামের পার্থক্য রয়েছে কিছুটা। এটা আগে সংশোধন না করালে আমার সন্তানের জন্মনিবন্ধন হবে না। এটা নিয়েই কয়েকদিন ধরে ঘুরছি।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, জন্মনিবন্ধনসহ অন্যান্য সনদ সরবরাহ কার্যক্রমে জড়িত অসাধু চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডিএনসিসির ম্যাজিস্ট্রেটরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন। আইন ও বিধি অনুসরণ করে জবাবদিহিতার মধ্য দিয়ে সিটি কর্পোরেশনের প্রতিটি কাজ পরিচালিত হবে বলে আমরা ঘোষণা দিয়েছি। সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে জন্মনিবন্ধন প্রদান করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরপরও যদি কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
সাটুরিয়া উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রেফতার
কলকাতায় বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনের নিরাপত্তা জোরদার
‘সাইবার মানডে’ উপলক্ষে ওয়েব হোস্টিংয়ে লিমডা হোস্টে চলছে ৬০% পর্যন্ত ছাড়!
ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী
ফ্যাসিস্ট সরকারের ৮ বছরের নিষেধাজ্ঞার পর অবশেষে মঞ্চে আসছে থিয়েট্রিক্যাল বাহাস ও কন্ঠনালীতে সূর্য
মিলেছে ‘হারিছ চৌধুরী’র ডিএনএ, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের নির্দেশ
নাম পরিবর্তনের দাবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের
গলায় ফাঁস দিয়ে বৃদ্ধের আত্মহত্যা
আইএসের নৃশংসতার বিচারে জাতিসংঘ ব্যর্থ : নাদিয়া মুরাদ
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে হেফাজতের মানববন্ধন
মানিকগঞ্জে হাঙ্গার প্রজেক্টের গণতন্ত্র অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত
এবার ভারতের মালদহে বাংলাদেশিদের জন্য হোটেল ভাড়া বন্ধ ঘোষণা
কিশোরগঞ্জের হাওর-অর্থনীতি বেগবান করতে চলছে কয়েকশ কোটি টাকার প্রকল্প
প্লাস্টিক ব্যবহার রোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে: অতিরিক্ত সচিব ফাহমিদা খানম
দেশের ৬৯ কারাগারের ১৯টি ঝুঁকিপূর্ণ, ৭০ জঙ্গিসহ ৭০০ বন্দি এখনো পলাতক
পায়রার রাজস্ব আয় বাড়বে তিনগুণ, দেশের অর্থনীতিতে রাখবে বড় ভূমিকা
মমতা ব্যানার্জির মনে গভীর কট্টরপন্থি হিন্দুত্ববাদ : রিজভী
কঠিন সময় পার করছে বাংলাদেশ : প্রধান উপদেষ্টা
কুড়িগ্রামে সাবেক এমপি পুত্র সবুজ গ্রেফতার
ভারতে ৫.৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প