উৎসবের নামে মুসলিমদের শিরকের পথে ঠেলে দিচ্ছে সরকার

Daily Inqilab মেহেদী হাসান পলাশ

১২ এপ্রিল ২০২৫, ০১:১০ এএম | আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৫, ০১:১০ এএম

দেশের সব মাদরাসায় দুই দিনব্যাপী বাংলা নববর্ষ উদযাপনের নির্দেশ দিয়েছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। বুধবার এক অফিস আদেশে, চৈত্র সংক্রান্তি ও বাংলা নববর্ষ এবং আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর নববর্ষ উপলক্ষ্যে সব মাদরাসায় নিজস্ব ব্যবস্থাপনা উৎসবমুখর পরিবেশে ও সাড়ম্বরে এ উৎসব পালন করতে বলা হয়েছে।
অফিস আদেশে বলা হয়েছে, জাতীয় চৈত্র সংক্রান্তি ও বাংলা নববর্ষ এবং চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষ্যে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন মাদরাসাসমূহে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উৎসবমুখর পরিবেশে ও সাড়ম্বরে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠান উদযাপনের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

বিষয়টি নিয়ে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রশাসন শাখার উপপরিচালক মোহাম্মদ আরিফুর রহমান মজুমদার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে একটি নির্দেশনা জারি করে সব মাদরাসায় দুই দিনব্যাপী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চৈত্র সংক্রান্তি ও বাংলা নববর্ষ উদযাপন করতে বলা হয়েছে। সে আলোকে তিনটি সরকারি ও অন্যান্য বেসরকারি মাদরাসার প্রিন্সিপাল, সুপার ও এবতেদায়ি প্রধানদের চৈত্র সংক্রান্তি ও বাংলা নববর্ষ উদযাপনের নির্দেশনা দিয়ে আদেশ জারি করা হয়েছে।’

পহেলা বৈশাখের আগের দিন অর্থাৎ চৈত্র মাসের শেষ দিন চৈত্র সংক্রান্তি নামে এটি জাতীয়ভাবে পালনের চেষ্টা করা হচ্ছে গত কয়েক বছর ধরে। ‘সংক্রান্তি এলায়েন্স’ নামের একটি সংগঠন চৈত্র সংক্রান্তিকে জাতীয়ভাবে পালনের এবং এদিনে জাতীয় ছুটি ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছিল বেশ কয়েক বছর ধরে। বর্তমান বহুত্ববাদী সরকার ও এর সংস্কৃতি উপদেষ্টা এ বছর জাতীয়ভাবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, মুসলিমদের ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাদরাসা ছাত্রদেরও এসব উৎসব সাড়ম্বরে পালনের নির্দেশ দিয়েছে বহুত্ববাদী সরকার। এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার পূর্বে চৈত্র সংক্রান্তির ইতিহাসটা একবার জেনে নেয়া যাক :

চৈত্র সংক্রান্তি ও চড়ক পূজা
ষাটের দশকে ছায়ানট শিল্পী গোষ্ঠী যখন বাংলা নববর্ষ উৎযাপনের সিদ্ধান্ত নেয় তখন তারা একই সাথে বর্ষবরণ, হেমন্তবরণ, বসন্তবরণ উৎসব পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কালের বিবর্তনে নববর্ষ বরণের পাশাপাশি বসন্তবরণও অনেকটা জনপ্রিয়তা পায়। বিগত শতাব্দীর শেষ দশকে ছায়ানটি চেতনার সাংস্কৃতিক কর্মীরা এরও একধাপ এগিয়ে ‘বাঙালী’ সমাজে উৎযাপিত হওয়া ১২ মাসে ১৩ পার্বনকে উৎযাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সন্দেহ নেই বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীগণ তাদের ১২ মাসে অনুষ্ঠিত ১৩ পূজাকে ঘিরে ১৩টি পার্বন বা উৎসব পালন করে থাকে। বাঙালী হিন্দুদের এ উৎসবকে ‘বাঙালী সংস্কৃতি’ বলে ব্যাপকভাবে উৎযাপনের ও প্রসারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে মুসলমানের ঘরে জন্ম গ্রহণকারী ও মুসলমান নাম ধারণকারী কিছু রবীন্দ্রপ্রেমী সংস্কৃতি কর্মী। অথচ এদেশের অধিবাসী ৯০% মুসলমানের যেসব উৎসবে সমগ্র বাংলাদেশ জেগে ওঠে সেই ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা, মুহাররম, ঈদে মিলাদুন্নবী প্রভৃতি উৎসব উদযাপনে ব্যাপারে তারা থাকে সম্পূর্ণ নির্বিকার।

যাইহোক, এই ১২ মাসে ১৩ পার্বণের অন্যতম হচ্ছে চৈত্র সংক্রান্তি। বাংলা বছরের শেষ দিন অর্থাৎ চৈত্র মাসের শেষ দিনে বাংলাদেশের এবং ভারতের বেশ কিছু এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা এই চৈত্র সংক্রান্তি উৎসব পালন করে আসছে। উল্লিখিত সাংস্কৃতিক বলয়ের লোকেরা বিগত দেড় দশক ধরে ঘরোয়াভাবে চৈত্র সংক্রান্তি উৎসব পালন করে আসছিল এবং তা জাতীয়ভাবে পালনের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছিল। ২০০৭ সালে প্রথম তাদের এ প্রচেষ্টা সফলতার মুখ দেখে। বাংলা ১৪১৭ সালের শেষদিন ৩০ চৈত্র বেশ কিছু জাতীয় প্রতিষ্ঠান এবং জাতীয়ভাবে পরিচিত সংগঠন প্রকাশ্যে চৈত্র সংক্রান্তি উৎসব পালন করেছে। এ বছর বেশ কিছু জাতীয় পত্রপত্রিকা চৈত্রসংক্রান্তি নিয়ে বিশেষ প্রবন্ধ, নিবন্ধ প্রকাশ করে। বলাবাহুল্য এ সব প্রবন্ধ-নিবন্ধে চৈত্রসংক্রান্তি ও চড়ক পূজাকে ‘সার্বজনীন বাঙালী উৎসব’ বলে তুলে ধরা হয়।

চৈত্র সংক্রান্তি মূলত হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব। শাস্ত্র ও লোকাচার মতে, এই দিনে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস প্রভৃতি কাজকর্মকে পূণ্যজনক বলে মনে করা হয়। চৈত্র সংক্রান্তি উৎসবের প্রস্তুতি চলে গোটা মাস জুড়ে। পুরো মাস জুড়ে সন্ন্যাসীরা দল বেঁধে গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গান করে ভিক্ষা মাগে। আর এই ভিক্ষার প্রাপ্ত চাল- ডাল ও অন্যান্য দ্রব্যাদি দিয়ে চৈত্র সংক্রান্তির উৎসব আয়োজন করা হয়। গানের দলে শিব হনুমান কালীর মুখোশ পরে থাকে অনেকে। কোথাও কোথাও সন্ন্যাসীরা এ সময় সাথে একটি শিব লিঙ্গ(চড়ক) বহন করে থাকে। সাধারণ সময়ে এই শিব লিঙ্গকে পানিতে ডুবিয়ে রাখা হয়। ঢোল বাদ্য বাজিয়ে সন্নাসীরা শিব কীর্তন গেয়ে পানি থেকে এই গাছ তুলে আনে। এরপর এই গাছকেও পূজা করা হয়।

চৈত্র সংক্রান্তির মূল উৎসব হচ্ছে চড়ক পূজা। বাংলাপিডিয়া মতে, এটি হিন্দুদের একটি ধর্মানুষ্ঠান। চৈত্র মাসের সংক্রান্তিতে এটি পালিত হয়। এর অপর নাম নীলপূজা। পশ্চিম বঙ্গের গম্ভীরাপূজা বা শিবের গাজন এই চড়ক পূজারই রকমফের। এ পূজা খুবই আড়ম্বরপূর্ণ। এতে জলভরা একটি পাত্রে শিবের প্রতীক শিব লিঙ্গ রাখা হয়, যা পূজারীদের কাছে ‘বুড়োশিব’ নামে পরিচিত। এ পূজার পুরোহিত হলেন আচার্য ব্রা‏হ্মণ বা গ্রহবিপ্র, অর্থাৎ পতিত ব্রা‏হ্মণ। চড়ক ফ’জার বিশেষ বিশেষ অঙ্গ হলো কুমিরের পূজা, জ্বলন্ত অঙ্গারের উপর হাঁটা, কাঁটা আর ছুরির উপর লাফানো, বাণফোঁড়া, শিবের বিয়ে, অগ্নিনৃত্য, চড়ক গাছে দোলা এবং দানো-বারানো বা হাজারা পূজা। দানো- বারানো বা হাজারা পূজা করা হয় সাধারণত শ্মশানে। চড়কপূজার মূলে রয়েছে ভূতপ্রেত ও পূণর্জন্মবাদের ওপর বিশ্বাস। এর বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রাচীন কৌমসমাজে প্রচলিত নরবলির অনুরূপ।

চড়ক উৎসবে বহু প্রকার দৈহিক যন্ত্রণা ধর্মের অঙ্গ বলে বিবেচিত হয়। চড়কগাছে অর্থাৎ একটি উচুঁ খুঁটিতে ভক্ত বা সন্নাসীকে লোহার হুক দিয়ে চাকার সঙ্গে বেঁধে দ্রুত বেগে ঘোরানো হয়। তার পিঠে, হাতে পায়ে জিহ্বায় এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গে বাণ ফোঁড়া অর্থাৎ লোহার শলাকা বিদ্ধ করা হয়। কখনো কখনো জ্বলন্ত লোহার শলাকা তার গায়ে বিদ্ধ করা হয়। ১৮৬৫ সালে ইংরেজ সরকার আইন করে এ নিয়ম বন্ধ করলেও গ্রামের সাধারণ লোকের মধ্যে কোথায়ও কোথাও এ অনুষ্ঠান এখনো প্রচলিত আছে।

চড়কপূজা আদি লোক সংস্কৃতির অন্যতম ধারাও বটে। এর উদ্যোক্তারা কয়েকজনের একটি দল নিয়ে সারা গ্রাম ঘুরে বেড়ায়। দলে থাকে একজন শিব ও দুজন সখী। একজনকে সাজানো হয় লম্বা লেজওয়ালা হনুমান। তার মুখে থাকে দাড়ি আর হাতে থাকে কাঠের তরবারী। পুরো দেহ ঢাকা থাকে মাছ ধরার পুরোনো জাল দিয়ে, আর মাথায় থাকে উজ্জ্বল লাল রঙের ফুল।সখীদের পায়ে থাকে ঘুঙুর। তাদের সঙ্গে থাকে ঢোল-কাঁসরসহ বাদকদল। সখীরা গান ও বাজনার তালে তালে নাচে। এদেরকে নীল পাগলের দলও বলা হয়। এরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে গাজনের গান গায় আর নাচ পরিবেশন করে। গ্রামবাসীরা তাদের ইচ্ছামত টাকা-পয়সা ও চাল-ডাল দান করে। কেউবা তাদের একবেলা খাবারও দেয়। এবাবে সারা গ্রাম ঘুরে দলটি দান হিসাবে যে দ্রব্যাদি পায় তা দিয়ে হয় চড়ক পূজা। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে মেলা বসে। সাধারণতঃ তিন থেকে পাঁচদিন পর্যন্ত এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়।

অন্য একটি সূত্রে বলা হয়েছে, পশুপত সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাচীন কাল থেকেই এ পূজার প্রচলন ছিল। লোকশ্রুতি আছে, চৈত্রের শেষ দিন শিবভক্ত বানরাজা তার সঙ্গীদের নিয়ে শিবকে পাওয়ার জন্য প্রর্থনায় মত্ত হয়ে নিজের শরীর থেকে রক্ত বের করে শিবের উদ্দেশ্যে নিবেদন করেন। এতে ভগবান শিব খুশী হন। এ কারণেই শৈব সম্প্রদায়ের মানুষ চৈত্র সংক্রান্তি দিন শিবকে খুশী করতে শরীর থেকে রক্ত ঝরিয়ে চড়ক উৎসবের আয়োজন করে। চড়ক পূজার মূলে রয়েছে ভুত প্রেত ও পূনর্জন্মবাদে বিশ্বাস। দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্নভাবে চড়কপূজার প্রচলন রয়েছে। তবে যে বিষয়টিতে সবার মিল রয়েছে তা হলো: একজন সন্ন্যাসীর পিঠের মাংস পেশীতে লোহার শিক বা বড়শী গেঁথে দেয়া হয়। তারপর মাঠের মাঝখানে খাড়াভাবে পোঁতা চড়ক গাছের(লম্বা শাল অথবা গজারীর গাছ) শীর্ষে মাটির সমান্তরালভাবে স্থাপিত ঘূর্ণন সক্ষম লম্বা বাঁশ বা কাঠের এক প্রান্তে সন্ন্যাসীর শরীরে গাঁথা লোহার শিকের সাথে বাঁধা দড়ি আটকে ঘুরানো হয়।

“লোকশ্রুতিতে জানা যায়: চড়কের গাছটি হচ্ছে শিবলিঙ্গের প্রতীক। আর সেই গাছের উপর আড়াআাড়িভাবে টানানো বাঁশটি হচ্ছে কালী দেবীর যৌনাঙ্গ। শিবলিঙ্গের উপর ভর করে কালির যৌনাঙ্গের ঘুর্ণন হচ্ছে চড়ক পূজার মর্মকথা। নতুন বছরটা যেন শিব-কালীর যুগল মৈথুনের মতো শস্য উর্বর হয়ে উঠে..” (দৈনিক আমার দেশ, ১১ মে ২০০৭ দ্রষ্টব্য)। “চড়কের মাঠে যাওয়ার আগে বাড়ির উঠানে সন্ন্যাসীদের দেবাংশী বা শিবের অংশ হয়ে উঠার কৃত্যাচারে তা-ব নৃত্য করতে দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে জয় ঢাক বাদ্যের সাথে ভক্তদের হরিবোল উচ্চারণের ভেতর সন্ন্যাসীরা রামদা ও ত্রিশূল নিয়ে বহুবিধ কসরত করে। এরপর সন্ন্যাসীরা চড়ক উপলক্ষে শিবের কাছে মানতকারী গ্রামবাসীদের আনা আমপাতা দিয়ে ঢাকা জলপাত্রের সামনে এসে জয়ঢাক বাদ্যের ভেতর ধূপ ধোঁয়ার ইন্দ্রজাল তৈরী করে মহিষের শিঙ্গা বাজায়। মানতিদের মানত গ্রহণের পর উঠানের একপাশে বিছানো শিতল পাটির দিকে সম্মোহিতের মতো ছুটে যায় শিব-সন্ন্যাসীরা। পাটিতে উপুড় হয়ে শুয়ে তারা তাদের পিঠে চড়কে ঝুলে পড়ার জন্য বড়শি বিঁধিয়ে নেয়।

চড়কের মাঠে উপস্থিত অন্য কিছু ভক্তের গালে ও জিহ্বায় লোহার শিক বিদ্ধ করা হয়। চড়কের মাঠে উপস্থিত কালির মুখোশ পরা জ্যান্ত কালী মূর্তির সামনে জয়ঢাক বাদ্যের সঙ্গে শিবের তা-ব নৃত্য করা হয়। লৌকিক মহাকাব্য রামায়ণের জনপ্রিয় চরিত্র হনুমানজি, রাবণ ও রামের যোদ্ধাদের ভূমিকায় তরুণ ও শিশুদের অভিনয় করতে দেখা যায়। বহুপূর্বে চড়ক পূজার সাথে নরবলীর সম্পর্ক ছিলো বলে কোথাও কোথাও শোনা যায়। তবে কয়েক বছর আগেও সদ্য মৃত মানুষের কাটা মাথা ও তার রক্ত ছাড়া পঞ্চগড় অঞ্চলের চড়ক পূজা হতো না।
চড়ক পূজার আয়োজনের জন্য পুরোহিতের সেবকরা তখন চৈত্র সংক্রান্তির সময়ে আশে পাশের গ্রামে এবং করবস্থানগুলোতে নজর রাখতো কেউ মারা গেল কিনা? কাউকে কবর দেয়া হলো কিনা? আর চৈত্র সংক্রান্তির ভেতর কেউ মারা গেলে তাকে কবর দিয়ে আসার পর রাতের আঁধারে খুব সতর্কতার সাথে চড়ক পূজার পুরোহিতের সেবকেরা সেই মৃত মানুষের মাথাটা কেটে আনতো। তারপর সেই মাথাকে চড়কের আয়োজনের মধ্যে কালিকে উপহার দেয়া হতো। বর্তমানে ঐ অঞ্চলের মুসলমান জনগণ বিষয়টি সম্পর্কে সতর্ক হয়ে পড়ার পর এখন আর মানুষের মাথা নিয়ে পঞ্চগড় অঞ্চলে চড়কের আয়োজন হচ্ছে না ঠিকই তবে তার পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে কবুতর হত্যার রক্ত এবং মৃত মানুষের মাথার খুলি। বর্তমানে একই খুলিকে বারবার চড়কপূজায় ব্যবহার করা হচ্ছে। পূর্বে একেক বছর সদ্য মৃত মানুষের মাথার আলাদা আলাদা মাথা নিয়ে চড়ক পূজা করা হতো।”

এই হলো চৈত্র সংক্রান্তি ও তার মূল উৎসব চড়ক পূজা। এ বছর এটিএন নিউজের কল্যাণে দেশবাসী গাজীপুরের একটি প্রত্যন্ত গ্রামের চৈত্র সংক্রান্তির অনুষ্ঠান সরাসরি দেখার সুযোগ পেয়েছেন। যারা দেখেছেন তাদের কাছে বিনীত প্রশ্ন, এই অনুষ্ঠান কি বাঙালী সংস্কৃতি বলে বাঙালী মুসলমানদের সমাজে উদযাপন যোগ্য? উল্লিখিত আলোচনায় নিঃশঙ্কভাবে প্রমাণিত হয়, এটি হিন্দুদের একটি বিশেষ ধর্মীয় উৎসব। উৎস, ইতিহাস ও পালন পদ্ধতি সবকিছু প্রমাণ করে এটি হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের তা পালনে মুসলমানদের মনে কোনো দ্বিধা থাকতে পারে না। কিন্তু চৈত্র সংক্রান্তি বা চড়কপূজাকে ‘বাঙালী সংস্কৃতি’ বলে বাংলাদেশী মুসলমানদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

এবারে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের যে সমস্ত উৎসব মাদরাসায় ব্যাপকভাবে উদযাপন করা নির্দেশ দিয়েছে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড সেগুলো কী এবং কিভাবে পালিত হয় তা নিয়ে সংক্ষেপে আলোকপাত করা যেতে পারে।

বিজু উৎসব
বিজু চাকমাদের প্রধান উৎসব। ১২ এপ্রিল পালন করা হয় ফুলবিজু। এই দিন ভোরের আলো ফুটার আগেই ছেলেমেয়েরা বেরিয়ে পড়ে ফুল সংগ্রহের জন্য। সংগ্রহিত ফুলের একভাগ দিয়ে বুদ্ধকে পূজা করা হয় আর অন্যভাগ জলেতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। বাকি ফুলগুলো দিয়ে ঘরবাড়ি সাজানো হয়। চৈত্র মাসের শেষ দিন। অনেকের মতে ফুল বিজু মূলত গঙ্গা পূজা। চাকমারা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী হলেও অতীতে তারা একসময় হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছিল। সেই প্রভাবে এখনো গঙ্গা পূজা করে থাকে। এতে সূর্যোদয়ের লগ্নে পানির দেবতার উদ্দেশ্যে কলাপাতায় আতপচাল, ফল-মুল, চিনি বা গুড়, ফুল, প্রজ্জ্বলিত মোম বা প্রদীপ-ইত্যাদি নৈবেদ্য সাজিয়ে পূজা দেয়া হয়। এরপর বৌদ্ধ মন্দিরে গিয়ে পূজা-অর্চণা চলে। ১৩ এপ্রিল পালন করা হয় মুলবিজু। এইদিন সকালে বুদ্ধমূর্তি স্নান করিয়ে পূজা করা হয়। বৌদ্ধ পুরোহিত বা ভান্তেরা এ দিন পাবেন নতুন গেরুয়া কাপড়। গৃহপালিত পশু-পাখিকে এ দিন সকালে স্নান করানো হয়।

বিঝুকে কেন্দ্রে করে ভাত থেকে এ সময় বানানো হয় দু’ধরণের উৎকৃষ্ট মানের মদ। একটি হচ্ছে দো-চোয়ানি, আরেকটি হচ্ছে ভাত পঁচিয়ে বানানো ভাতের রসজগরা বা কাঞ্জি। দো-চোয়ানির রঙ একেবারে পানির মতো স্বচ্ছ। এটি ভাত পঁচিয়ে তার রস ডিস্টিল করে বানানো হয়। দুবার ডিস্টিল বা চোয়ানো হয় বলে এর এমন নামকরণ। উৎসব উপলক্ষে এই মদ ব্যাপকভাবে পান করা হয়। এছাড়াও আরো অনেক আয়োজন থাকে এই উৎসবে।

বৈসু
ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর প্রধান উৎসব বৈসু। প্রথম দিনকে বলা হয় হারি বৈসু, দ্বিতীয় দিনকে বৈসুমা এবং তৃতীয় বা শেষ দিনটিকে বলা হয় বিসিকতাল। মূলত আগামী দিনের সুখ ও সমৃদ্ধির জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা হয়। তিনদিন ব্যাপী এই বৈসুর প্রথম দিন হারি বৈসু। হারি বৈসুতে ভোরবেলায় ফুলগাছ থেকে ফুল তোলার প্রতিযোগিতা চলে। সেই ফুল দিয়ে বাড়ি সাজানো হয় এবং পাশাপাশি সেই ফুল মন্দির এবং পবিত্র স্থানে দিয়ে শ্রদ্বা নিবেদন করা হয়। হারি বৈসুকের দিনে ভোরবেলায় ফুলগাছ থেকে ফুল সংগ্রহ করার প্রতিযোগিতা শুরু হয় এবং এই ফুলে একাংশ দিয়ে পুরো বাড়ি ফুল দিয়ে সাজানো হয় এবং ফুলের আর এক অংশ দিয়ে নদীর তীরে ,মন্দিরে এবং পবিত্র স্থানে ফুল, ধুপ এবং দীপ জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকে। এছাড়াও আরো অনেক আয়োজন থাকে তিন দিনব্যাপী এই উৎসবে।

সাংগ্রাই
মারমা সম্প্রদায় সেই আদিকাল থেকে অন্যান্য সম্প্রদায় থেকে ভিন্ন আঙ্গিকে পুরনো বছরের বিদায় এবং নতুন বছরের আগমনকে স্বাগত জানাতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালন করে আসছে, যা মারমা ভাষায় সাংগ্রাই নামে পরিচিত। বাংলায় সংক্রান্তি শব্দটি মারমা ভাষায় সাংগ্রাই।

সাংগ্রাইয়ের এর প্রথম রাতে সংগৃহীত ফুল শেষ রাত্রি আগত হবার পর অর্থ্যাৎ ভোরের আলো ফোটার আগেই দলে দলে পাহাড়ে গিয়ে ‘সাংগ্রাই পাইং’ তুলে এনে মায়ের হাতে তুলে দেয়। গিন্নিরা সকাল হলেই সুই - সুতা দিয়ে ফুলগুলো সাজাতে থাকে। প্রথমে ভগবান বুদ্ধকে ফুল দিয়ে পূজা করে সেগুলো দিয়ে প্রত্যেক বাড়িরই প্রতিটি দরজা গুলোকে সাজানো হয়। বাড়ির দরজায় সাজানো ফুলগুলো দিয়েই বোঝতে পারা যায় সাংগ্রাই অর্থাৎ নতুন বর্ষবরন শুরু হয়ে গেছে।

পাইংছোয়াই’ এর দিন অর্থাৎ এপ্রিলের ১৩ তারিখেই ভোর হতে পুর্ণদিন ব্যাপি সাংগ্রাই জীঃঈ শুরু হয়। সাংগ্রাইকে উপলক্ষ করে পাহাড়ি সমতলে বিশাল হাট বসে। হাটে সাংগ্রাইয়ের জন্য ব্যবহৃত প্রায় সকল প্রয়োজনীয় জিনিসই পাওয়া যায়। গিন্নীরা সাংগ্রাইতে বিহারে পাঠানোর জন্য অনেক ভালো ভালো খাবার কিনে। এছাড়াও গৌতম বুদ্ধকে স্নান করানোর জন্য পবিত্র পানি, পাকা নারিকেল, চীনা কাগজ, মোমবাতি, আগরবাতি ইত্যাদি বিহারে পাঠানোর জন্য যার যে রকম সামর্থ্য সেই অনুযায়ী কিনে। এছাড়া সাংগ্রাইতে ছোট-বড় সবারই মাঝে নতুন জামা থাকবেই। আর ছোট্ট বাচ্চারা সাংগ্রাইতে পানি মারার জন্য পানির বোতল, পানি মারার নানা রকমের প্লাস্টিকের অস্ত্রও কিনে রাখে।

প্রধান সাংগ্রাই বর্তমানে ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুসারে এপ্রিলের ১৪ তারিখেই পালন করা হয়। মারমা গৃহিণীরা (ইংথসাং) ভালো ভালো ছোয়াঈ (বিহারে যে খাবার পাঠানো হয় তাকে ‘ছোয়াঈ’ বলে) আর পিঠা নিয়ে বিহারে যায়। শুধু নিজেদের বিহার ছাড়াও আশেপাশের বিহারেও ‘ছোয়াঈ’ পাঠানো হয়। ‘ছোয়াঈ’ শুধু ভগবানের উদ্দেশ্যে নয়, নিজেদের আতœীয়দের মাঝে যারা উপোসথ শীল পালন করে তাদের উদ্দেশ্যেও পাঠানো হয়। বিহার ছাড়াও মারমা বিভিন্ন দেবতাদেরকেও পূজা দেওয়া হয়।

প্রধান সাংগ্রাই তে বিহারে যে ভগবান বুদ্ধ আছে তাদেরকে পবিত্র পানি দিয়ে গোসল করানো হয়। বুদ্ধকে স্নানস্কৃত পানিকে মারমারা খেয়ে থাকে কারণ মারমাদের বিশ্বাস এই বুদ্ধ স্নানস্কৃত পানি তাদের শরীরে সকল রোগমুক্তির অবসান করাবে। আর এর পরেই ধর্মদেশনা হয়। এতে এলাকার সকল পুরুষ-মহিলা যোগ দেয়। সকল পরিবারেই চাল-নারকেল-চীনা কাগজ-মোমবাতি বিভিন্ন দ্রব্যাদি বিহারে ভগবানের উদ্দেশ্যে নিয়ে আসে। বিহারের প্রধান বৌদ্ধ ভিক্ষু নতুন বছরের শুভদিনের জন্য ধর্মদেশনা দেন।সেই সাথে নতুন বছরের দিনগুলো যেন শুভাকাঙ্ক্ষায় পরিপূর্ণ হয় তার জন্য প্রার্থনা করা হয়। ধর্মদেশনার পরই বৌদ্ধ বিহারে সকলেই ভগবানের উদ্দেশ্যে মোমবাতি জ্বালানো হয়। শুধু ভগবান নয় অনেক তাদের পূর্বপুরুষদের জাদিতেও মোমবাতি প্রজ্বলন করা হয়।
প্রধান সাংগ্রাই এর দিনের আলো শেষ হয়ে সন্ধ্যে নামতেই মারমা তরূণ-তরূণীরা তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে বিহারে চলে যায়। বিহারে বিহারে গিয়ে তারা মোমবাতি জ্বালাতে থাকে। হাজার হাজার মোমের আলোয় ছেয়ে উঠে প্রতিটা বিহার।সাংগ্রাইকে কেন্দ্র করে এ রাতে প্রত্যেকটা বিহারেই এক নতুন সাজে সেজে উঠে।

মোমবাতি প্রজ্জ্বলন শেষে মারমা তরূণ-তরূণীরা বৌদ্ধ ভিক্ষুদের কাছে একসাথে বসে ধর্মদেশনা শুনে। এছাড়াও পরবর্তী দিনের “ড়িলংপোয়ে” এর জন্য একসাথে বসে আলোচনা করে।সাংগ্রাই এর প্রধান আকর্ষণ হল পানি খেলা যেটিকে মারমারা বলে “রিলং পোয়েঃ” । সাংগ্রাই উৎসবের শেষদিনে এই পানি খেলা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সূত্র- উইকিপিডিয়া।

প্রশ্ন হল, সরকার ও মাদরাসা অধিদপ্তর চৈত্র সংক্রান্তি বিজু বৈসু সাংগ্রাই প্রভৃতি উৎসব পালনের নামে মাদরাসার মুসলিম ছাত্রদের দিয়ে শিব ও কালী পূজা, গঙ্গা পূজা, বুদ্ধ পূজা করাতে চাইছে? মাদরাসা মুসলিম ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মুসলিম ধর্ম মতে মূর্তিপূজা কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ। অথচ মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর মাদরাসা ছাত্রদের দিয়ে উৎসবের নামে সেই পূজা পার্বণ উদযাপনের মধ্য দিয়ে মুসলিম ছাত্রদের শিরকের পথে ঠেলে দিল।
এটাই কি বহুত্ববাদী দর্শন ও সাংস্কৃতিক রূপরেখা?

বাংলাদেশ মুসলিম ছাড়াও বিভিন্ন ধর্মের ও জাতির মানুষ বসবাস করে। বাংলাদেশ রাষ্ট্র যদি তাদের ধর্মীয় বা সামাজিক অনুষ্ঠান রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করতে চায় তাতে আপত্তির থাকতে পারে না। বাংলাদেশ সরকার জাতীয়ভাবে চৈত্র সংক্রান্তি বিজু, বৈসু, সাংগ্রাই প্রভৃতি অনুষ্ঠান সাড়ম্বরে পালন করতে চায় তা অবশ্যই করতে পারে। বাঙালি হিন্দুদের চৈত্র সংক্রান্তি উৎসব সাড়ম্বরে জাতীয়ভাবে পালন করতেই পারে, যেভাবে দুর্গোৎসব পালন করছে। এতে তো কেউ বাধা দিচ্ছে না। কিন্তু বাঙালি সংস্কৃতির বরণ ডালায় তুলে সেগুলোকে মুসলিম সমাজের মধ্যে পরিবেশন কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

 


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে যেভাবে অবস্থান নিয়েছে বিএনপির অঙ্গ সংগঠন
খালেদা জিয়ার আগমন উপলক্ষে বিমানবন্দরে কড়া নিরাপত্তা
বেগম খালেদা জিয়ার দেশে আসা গনতন্ত্রের পথকে আরো সহজ করবেঃ মির্জা ফখরুল
বিমানবন্দর থেকে গুলশান: স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত রাজপথ
খালেদা জিয়াকে আনতে ফিরোজা থেকে বিমানবন্দর গেল নতুন গাড়ি ‘টয়োটা ক্রাউন’
আরও
X
  

আরও পড়ুন

খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে যেভাবে অবস্থান নিয়েছে বিএনপির অঙ্গ সংগঠন

খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে যেভাবে অবস্থান নিয়েছে বিএনপির অঙ্গ সংগঠন

সেনাবাহিনীর নিরাপত্তায় ফিরোজা

সেনাবাহিনীর নিরাপত্তায় ফিরোজা

খালেদা জিয়ার আগমন উপলক্ষে বিমানবন্দরে কড়া নিরাপত্তা

খালেদা জিয়ার আগমন উপলক্ষে বিমানবন্দরে কড়া নিরাপত্তা

বেগম খালেদা জিয়ার দেশে আসা গনতন্ত্রের পথকে আরো সহজ করবেঃ মির্জা ফখরুল

বেগম খালেদা জিয়ার দেশে আসা গনতন্ত্রের পথকে আরো সহজ করবেঃ মির্জা ফখরুল

বিমানবন্দর থেকে গুলশান: স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত রাজপথ

বিমানবন্দর থেকে গুলশান: স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত রাজপথ

ভারতে শিক্ষার্থীদের ভিসা অগ্রাধিকারে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ঘোষণা

ভারতে শিক্ষার্থীদের ভিসা অগ্রাধিকারে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ঘোষণা

অপেক্ষায় ফিরোজা

অপেক্ষায় ফিরোজা

খালেদা জিয়াকে আনতে ফিরোজা থেকে বিমানবন্দর গেল নতুন গাড়ি ‘টয়োটা ক্রাউন’

খালেদা জিয়াকে আনতে ফিরোজা থেকে বিমানবন্দর গেল নতুন গাড়ি ‘টয়োটা ক্রাউন’

ইসরায়েলের সহায়তায় গাজায় লুটপাট, ধরা পড়লেই মৃত্যুদণ্ড দিচ্ছে হামাস

ইসরায়েলের সহায়তায় গাজায় লুটপাট, ধরা পড়লেই মৃত্যুদণ্ড দিচ্ছে হামাস

ইয়েমেনে ভয়াবহ হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র

ইয়েমেনে ভয়াবহ হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র

বিমানবন্দর থেকে পথে পথে জনতা

বিমানবন্দর থেকে পথে পথে জনতা

জাবিতে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ছাত্রলীগ কর্মীর খাতা বাতিল

জাবিতে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ছাত্রলীগ কর্মীর খাতা বাতিল

ময়মনসিংহে দুই দিনে ৬ থানার ওসিকে একযোগে বদলির আদেশ

ময়মনসিংহে দুই দিনে ৬ থানার ওসিকে একযোগে বদলির আদেশ

মস্কোতে টানা ড্রোন হামলায় আতঙ্ক, সাময়িকভাবে বন্ধ চার বিমানবন্দর

মস্কোতে টানা ড্রোন হামলায় আতঙ্ক, সাময়িকভাবে বন্ধ চার বিমানবন্দর

খালেদা জিয়াকে বরণ করতে বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের ঢল

খালেদা জিয়াকে বরণ করতে বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের ঢল

এনসিপির হাতে আটক বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতাকে পুলিশে সোপর্দ

এনসিপির হাতে আটক বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতাকে পুলিশে সোপর্দ

একদিনেই ইয়েমেন, লেবাননসহ ৪ দেশে ইসরায়েলের মুহুর্মুহু হামলা

একদিনেই ইয়েমেন, লেবাননসহ ৪ দেশে ইসরায়েলের মুহুর্মুহু হামলা

গাজা পুরোপুরি দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার

গাজা পুরোপুরি দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার

খালেদা জিয়ার দেশে ফিরতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, যানজট নিরসনে কাজ করছে পুলিশ-সেনা

খালেদা জিয়ার দেশে ফিরতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, যানজট নিরসনে কাজ করছে পুলিশ-সেনা

একাত্তরের পর প্রথমবারের মতো ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে নিরাপত্তা মহড়ার নির্দেশ

একাত্তরের পর প্রথমবারের মতো ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে নিরাপত্তা মহড়ার নির্দেশ