দেশের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য অর্থনৈতিক ইস্যুগুলো তুলে ধরুন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
০৯ আগস্ট ২০২৩, ১১:৪৪ পিএম | আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২৩, ১২:০০ এএম
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘আগামীতে নির্বাচনের আলোচ্য ইস্যু হিসেবে অর্থনৈতিক ইস্যুগুলো তুলে ধরুন। কারণ এইগুলো হচ্ছে আমাদের ভবিষ্যৎ। আপনারা যদি বাংলাদেশের সুন্দর ভবিষ্যৎ আশা করেন তাহলে আমাদের অর্থনৈতিক ইস্যুগুলো তুলে ধরা প্রয়োজন। কারণ সব দেশে নির্বাচনের মূল আলোচ্য বিষয় হলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, মুদ্রাস্ফীতি ইত্যাদি।’
আজ (বুধবার) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্ট (বিএসটি) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়নের গতি-প্রকৃতি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
গত ছয় মাসে পৃথিবীর প্রায় ৬০ টি দেশে নির্বাচন হয়েছে এবং আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আরও ২২টি দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংগুলোতে বাংলাদেশের রাজনীতি, নির্বাচন নিয়ে তাদের অনেক আগ্রহ দেখা যায়, কিন্তু প্রায় শ’খানেক দেশ - যেগুলোতে সম্প্রতি নির্বাচন হয়েছে এবং আগামীতে হবে, সেগুলো নিয়ে তাদের কোন আলোচনা নাই। এর
একটি অর্থ হচ্ছে আমাদের দেশের অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে, তাই সবার আকর্ষণও বেড়েছে।’
সবাইকে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশিরা আপনার মঙ্গল চায় না। তারা আপনার এখানে অশান্তি চায়। অশান্তি হলে দেশ যদি দুর্বল হয়, তাদের অনেক সুবিধা হয়। তাই তারা দেশকে দুর্বল করতে চায়। তাদের ওই ভেল্কিতে অবগাহন করবেন না। দেশের উন্নয়ন এদেশের লোক, সরকার করবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগ জনগণের ওপর বিশ্বাস করি। জনগণের রায়েই আমাদের অবস্থান সুদৃঢ় হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের সাম্প্রতিক যে উন্নয়ন এবং তার ধারাবাহিকতা কীভাবে বজায় রাখা যায়, সেই ইস্যুগুলো তুলে ধরা জরুরি। যেহেতু সামনে নির্বাচন, এখন এসব বিষয় আলোচনায় আসা উচিত।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিএনপির শাসনামলের সাথে আওয়ামী লীগের শাসনামলের তুলনা করে বলেন, ‘২০০১ থেকে ২০০৬ আমাদের অর্থনীতির অবস্থা কেমন ছিল, আমাদের সামাজিক অবস্থা কী ছিল, আমাদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি কতটুকু বিস্তৃত ছিল, আমাদের শিক্ষা ক্ষেত্রে কীরকম অগ্রগতি ছিল। এগুলোর সাথে ২০০৯ থেকে ২০২৩ এর অগ্রগতির তুলনামূলক বিচার করে দেখুন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী নির্বাচন হবে অত্যন্ত স্বচ্ছ ও সুন্দর এবং আমি বিশ্বাস করি বাঙালি জাতি অত্যন্ত পরিপক্ক জাতি। তারা যখন ভোট দেয়, তখন সঠিক জায়গায় ভোট দেয়।’
ড. মোমেন উন্নয়নের জন্য স্থিতিশীলতার উপর জোর দিয়ে বলেন, ‘যে সমস্ত দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আছে, আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা আছে, সেসব দেশে উন্নয়ন সবচেয়ে বেশি হয়।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেশে মারামারি কাটাকাটি চাই না, শান্তি স্থিতিশীলতা চাই। আমরা দেশে এবং এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা চাই। আমরা যদি শান্তি, স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারি তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। আমরা যদি শান্তি স্থিতিশীলতা বজায় রেখে শেখ হাসিনার সরকারকে জয়যুক্ত করতে পারি, তাহলে শেখ হাসিনার শাসনামলে যে উন্নয়ন হয়েছে তার ধারাবাহিকতা চালু থাকবে। আর অন্যথা হলে ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। তখন বাংলাদেশের পরিচয় ছিল সন্ত্রাসের দেশ, দুর্নীতিতে পাঁচ-পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন, নারী-পুরুষ কারোরই নিরাপত্তা ছিল না। যেখানে একদিনে ৬৪টি জেলার মধ্যে ৬৩টি জেলায় বোমাবাজি হয়েছিল, আদালতের এজলাসে বোমাবাজি করে মানুষ মারা হয়েছিল, তখন বিদেশি রাষ্ট্রদূতের উপর বোমাবাজি হয়েছিল, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ করায় বিরোধী দলের নেতার উপর গ্রেনেড হামলা করা হয়েছিল, যেখানে ২৪ জন মানুষ মারা যান ও ৩৭০ জন মারাত্মকভাবে আহত হন - আমরা সেইসব বাংলাদেশে আর দেখতে চাই না।’
ইয়েমেনে ১৮ মাস অপহৃত থাকার পর জাতিসংঘের কর্মকর্তা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল সুফিউল আনামের উদ্ধার হওয়ার সুসংবাদ দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শি নির্দেশনায় আমরা তাকে উদ্ধার করতে পেরেছি, আর এটা সম্ভব হয়েছে সব দেশের সাথে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার কারণে।
বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. উত্তম কুমার বড়ুয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী।
সেমিনারে বক্তব্য রাখেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মিল্টন বিশ্বাস, বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বাহাদুর বেপারি, সম্প্রীতি বাংলাদেশ- এর সদস্য সচিব প্রফেসর ডাঃ মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল), দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার- এর সম্পাদক ড. খান আসাদুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. ফারুক শাহ। অন্যান্য অতিথিদের মধ্য হতে বক্তব্য রাখেন সাবেক রাষ্ট্রদূত আব্দুল হান্নান।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বগুড়ায় বিএনপি নেতা সাজুর ওপর হামলার প্রতিবাদে সভা
ডিআরইউ সদস্য ও সদস্য সন্তানদের উশু প্রশিক্ষণ শুরু
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ১৫, ভাংচুর ও ব্যাপক লুটের অভিযোগ
গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ করে আবারো ঘুরে দাড়াতে চায় ই'কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ
দেবোত্তর বাজারে লিফলেট বিতরণ করলেন জেলা সমন্বয়ক প্রধান ফাহাদ
‘আগস্ট বিপ্লবে ইসলামপন্থিদের বাদ দিয়ে কোনো ইতিহাস রচিত হতে পারে না’
পালালেন এক ওসি, প্রত্যাহার আরেক ওসি
মাগুরার শ্রীপুরের কোদলা গ্রামে দু দলের সংঘর্ষে আহত ১৭ একাধিক ঘরবাড়ি ভাঙচুর
২০১৮ এর কোটা সংস্কার আন্দোলন না হলে ’২৪ এর গণঅভ্যুত্থান হতো না : আবু হানিফ
বগুড়ায় গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতা মামুন
আলফাডাঙ্গায় হালি পেঁয়াজের চাড়া রোপনের ধুম পড়েছে
শিক্ষা ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ড. সোহেল, সদস্য সচিব ড. মাসুদ
মাস্ক, ঘোমটা ও ভুয়া পাসপোর্টসহ 'কট' নিপুণ! তদন্তে রহস্যময় তথ্য
খুনিরাই খুনিকে সহযোগিতা করেছে : সমন্বয়ক হান্নান মাসউদ
নাটোরে মহাশ্মশানের মন্দিরে তরুণ দাস হত্যার মূল আসামি গ্রেপ্তার
টাকাটাই শেষ কথা বাকি সব বাতুলতা! শফিক রেহমান সম্পর্কে যা বললেন ডা: জাহেদ
উত্তরা পশ্চিম থানার জামায়াতের সহযোগী সদস্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শীতার্তদের পাশে জামায়াত
সালথায় রাতের আঁধারে কৃষকের পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধন
রাণীশংকৈলে মারামারি ও ভাংচুরের মধ্য দিয়ে শেষ হলো জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদির শুটিং