অজানা অনেক তথ্য রয়ে গেছে: ওবায়দুল কাদের

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

১৬ আগস্ট ২০২৩, ০৫:৫৬ পিএম | আপডেট: ১৬ আগস্ট ২০২৩, ০৫:৫৬ পিএম

 

১৫ আগস্টের ঘটনায় নিজেদের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমাদের বিবেকের কাছে আমরা নিজেরা অনেকেই অপরাধী। বঙ্গবন্ধুর জন্য আমরা বড় বড় পদে গেছি, বড় বড় নেতা হয়েছি। বঙ্গবন্ধুর ডাকে কর্নেল জামিল সাড়া দিয়েছেন। তিনি যে সাহস, আনুগত্য, দেশপ্রেম দেখিয়েছিলেন সেটা কি কোনো পলিটিশিয়ান, বঙ্গবন্ধু যাদের নেতা বানিয়েছেন তারা কেউ কি দেখাতে পেরেছেন? পারেননি। এটাই হলো সত্য।

বুধবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধুর ৪৮তম শাহাদাৎবার্ষিকীতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণসভায় সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১৯৭৫ এ বীরপুরুষ কর্নেল জামিল, আমরা সবাই কাপুরুষ। আমাদের যাদের বঙ্গবন্ধু ডেকেছিলেন, ভয়ে সাড়া দেইনি। আপনাদের বীরপুরুষ বলা যাবে? আমরা কাপুরুষ। ইতিহাসে এ সত্যকে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।’

তিনি বলেন, ‘সব সত্য আমরা এখনো জানি না। সব সত্য এখনো বের হয়ে আসেনি। অজানা অনেক তথ্য রয়ে গেছে। সত্য প্রকাশ হবেই। বঙ্গবন্ধুকন্যা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছেন, সেখানে অনেক সত্য বেরিয়ে এসেছে। কিন্তু এ সত্য আমরা কতজনে স্বীকার করি? ৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু কয়েকজনকে ফোন করেছিলেন। এরা নেতাও আছেন, সেনাপ্রধান আছেন, কে সাড়া দিয়েছিল? কে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়েছেন? সত্য যদি বলতে হয়, শুধু কর্নেল জামিল ছুটে এসেছিল ৩২ নম্বরে। আমরা কোনো নেতা আসিনি। আমরা কেউ বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ৩২ নম্বরে আসিনি। ঘাতকরা যখন গুলি করছিল তখন বঙ্গবন্ধু কর্নেল জামিলকে ফোন করেছিলেন, সোবহানবাগ একবার বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন, কর্নেল জামিল কোনো বাধা মানেননি, তিনি ছুটে গেছেন বঙ্গবন্ধুর ভবনের দিকে, আর তাকে পথের মধ্যে হত্যা করা হয়।

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আগস্ট মাস এলে বিএনপি নেতাদের চোখমুখ শুকিয়ে যায়। সত্যের মুখোমুখি হতে তারা ভয় পায়। ইতিহাসের অনেক প্রশ্ন আছে, সেই প্রশ্নের জবাব বারবার চেয়েও তাদের কাছে পায়নি। জিজ্ঞেস করেছিলাম- ১৫ আগস্টের খুনিদের নিরাপদে বিদেশে পাঠালো কে? ১৫ আগস্টের খুনিদের বিদেশে চাকরি দিয়ে পুরস্কার করলো কে? জিয়াউর রহমান নয়?’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ডালিমের সঙ্গে দেখা হলে বলেছিল ওয়েলডান মেজর ডালিম। কেন? ফারুকদের প্রস্তাবে কী বলেছিল সবই আছে লিখিত। হত্যা যে করে আর হত্যার যে মদত দেয়, উভয় সমান অপরাধী। হত্যাকারীদের দুঃসাহস দিয়েছে জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান দুঃসাহস না দিলে পৃথিবীতে এ ঘটনা ঘটাতে পারে না।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুলকে আমি বলি বারবার একই প্রশ্ন করেছি, আবারও করছি সেই প্রশ্ন। খন্দকার মোশতাকের সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাংলাদেশের সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করেছিল কে? জিয়াউর রহমান। পঞ্চম সংশোধনী কে করেছিল? মির্জা আব্বাসের লজ্জা করে না? যখন বলে সংবিধানের কাটা-ছেঁড়া করেছে আওয়ামী লীগ, তাদের কাটা-ছেঁড়া সংবিধান আমরা মানি না, মির্জা আব্বাসের লজ্জা করে না? জিয়াউর রহমান এ সংশোধন এনেছিল বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার বন্ধ করতে। বিচার হবে না।’

আরও একটা প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনাকালীন দেখলাম ষষ্ঠবারের মতো আরেকটা জন্মদিবস। কোন দিন? ১৫ আগস্ট। আগে কিন্তু ছিল না ১৫ আগস্ট। হঠাৎ করেই ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিবস। বিএনপিকে জিজ্ঞেস করি-একজন মানুষের কয়টা জন্মদিবস থাকে? ছয়-ছয়বার জন্মদিবস এ কথা যখন আমি বলি তখন ফখরুল বলে শিষ্টাচারবহির্ভূত। মিথ্যাচার, বিষোদগার। ক্ষমা করবে না ইতিহাস।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত আছেন। সঞ্চালনা করছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ ও উপ-প্রচার সম্পাদক আব্দুল আওয়াল শামীম।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

হবিগঞ্জের সড়কে প্রাণ গেল তিন নারী পোশাক শ্রমিকের

হবিগঞ্জের সড়কে প্রাণ গেল তিন নারী পোশাক শ্রমিকের

বরিশালে জাতীয় মহাসড়কের ওপর নির্মিত পাক অপসারণে নগর ভবনকে সড়ক অধিদপ্তরের চিঠি

বরিশালে জাতীয় মহাসড়কের ওপর নির্মিত পাক অপসারণে নগর ভবনকে সড়ক অধিদপ্তরের চিঠি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হাতাহাতি, আহত ৩

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হাতাহাতি, আহত ৩

দুইবার আবেদন করেও দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় মাল্টার নাগরিকত্ব পায়নি তারিক সিদ্দিকের পরিবার

দুইবার আবেদন করেও দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় মাল্টার নাগরিকত্ব পায়নি তারিক সিদ্দিকের পরিবার

মাদুরোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের

মাদুরোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের

এবি পার্টির জাতীয় কাউন্সিল শুরু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

এবি পার্টির জাতীয় কাউন্সিল শুরু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

মায়ের জন্য রান্না করা খাবার নিয়ে হাসপাতালে তারেক রহমান

মায়ের জন্য রান্না করা খাবার নিয়ে হাসপাতালে তারেক রহমান

রাজশাহীতে এবেলা ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

রাজশাহীতে এবেলা ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

লোহিত সাগরে হুথিদের হামলায় পিছু হটল মার্কিন যুদ্ধজাহাজ

লোহিত সাগরে হুথিদের হামলায় পিছু হটল মার্কিন যুদ্ধজাহাজ

আশুলিয়ায় মেরামতের নাম করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে

আশুলিয়ায় মেরামতের নাম করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে

'বিয়ের গন্ডগোল' নিয়ে জোভান–তটিনী আত্মপ্রকাশ

'বিয়ের গন্ডগোল' নিয়ে জোভান–তটিনী আত্মপ্রকাশ

ভারতে বসে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার চেষ্টা করছেন ফ্যাসিস্টের দোসর আলাউদ্দিন নাসিম

ভারতে বসে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার চেষ্টা করছেন ফ্যাসিস্টের দোসর আলাউদ্দিন নাসিম

রুশ জ্বালানিখাতে আবারও যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা

রুশ জ্বালানিখাতে আবারও যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা

সিরিয়ার দামেস্কের মসজিদে পদদলিত হয়ে নিহত ৪ জন

সিরিয়ার দামেস্কের মসজিদে পদদলিত হয়ে নিহত ৪ জন

কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসছে লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল

কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসছে লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল

খাদ্য পরিস্থিতির ওপর নিয়মিত নজর রাখতে পুনর্গঠন হলো এফপিএমসি

খাদ্য পরিস্থিতির ওপর নিয়মিত নজর রাখতে পুনর্গঠন হলো এফপিএমসি

দেশে অস্তিত্বহীন দলবাজরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করছে: জয়নুল আবদিন ফারুক

দেশে অস্তিত্বহীন দলবাজরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করছে: জয়নুল আবদিন ফারুক

ফরিদপুরে যুবককে কুপিয়ে ও চোখ উপড়ে হত্যা

ফরিদপুরে যুবককে কুপিয়ে ও চোখ উপড়ে হত্যা

ভারতে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরলেন ১২ বাংলাদেশি

ভারতে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরলেন ১২ বাংলাদেশি

লন্ডন ক্লিনিকে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সবশেষ যা জানা গেল

লন্ডন ক্লিনিকে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সবশেষ যা জানা গেল