বিশ্বের সকল সংকট উত্তরণে রাসূল (সা)-এর আদর্শ অনুসরণই একমাত্র সমাধান : অধ্যাপক মুজিব

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:৫৮ পিএম | আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:৫৮ পিএম

 

 

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, পৃথিবীর কোনো পুরস্কারই আসল পুরস্কার নয়। আল্লাহর সামনে আখেরাতে বিজয়ী হওয়া-ই হচ্ছে মানুষের চরম সফলতা। তাই আখেরাতমুখী জীবনযাপনে আমাদেরকে সর্বদা প্রচেষ্টা চালাতে হবে। বর্তমান সরকারের সকল ব্যর্থতার মূল কারণ হচ্ছে, কুরআন সুন্নাহ্কে বাদ দিয়ে নিজেদের মনগড়া বিধান অনুযায়ী দেশ পরিচালনা করা। অথচ আধুনিক বিশ্বের সকল সংকট উত্তরণে রাসুল (সঃ)-এর আদর্শ অনুসরণই একমাত্র সমাধান।

তিনি বলেন, আইয়ামে জাহেলিয়াত বা অন্ধকার যুগে রাসূল (সঃ) ইসলামের সু-মহান আদর্শের মাধ্যমে যেভাবে পুরো জাতিকে আলোর পথ দেখিয়েছিলেন, তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বাংলার এই সবুজ ভূখন্ডে একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। তিনি সকলকে এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত রাসূলুল্লাহর (সা) জীবনীর উপর সীরাত পাঠ প্রতিযোগিতা-২০২২ এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় আরও বক্তব্য প্রদান করেন, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুস সবুর ফকির ও এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারি সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসেন খান ও ড. মোবারক হোসেন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

 

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, প্রত্যেক মুসলমানকে রাসূলের (সা) সীরাত তথা জীবনী জানতে হবে। হযরত মুহাম্মদ (সা) এর ব্যক্তি জীবন, পারিবারিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন জানা এবং তা অনুসরণ করা উম্মতের জন্য অতিব জরুরি, এটা ঈমানের-ই অংশ। তিনি সমাজ ও রাষ্ট্রে কুরআন ও সুন্নাহকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কুরআনের এই বিধান প্রতিষ্ঠার জন্য ৮০টি’র উপরে যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন এবং ২৩ টি’র অধিক যুদ্ধে সেনাপতি হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সেই রাসূলের জীবনি অনুসরণ করে যদি আমরা জীবনযাপন করতে পারি তাহলে দুনিয়ার কোন প্রতিযোগীতায় পুরস্কার না পেলেও কাল কেয়ামতের দিনে আমরা নিশ্চিত পুরস্কার পাবো ইনশাআল্লাহ।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার ভোটাধিকারকে হরণ করে নিবার্চন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। ফলে এই সরকারের অধীনে আর কোনো সাজানো নিবার্চন নয়, নির্দলীয় কোয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা করে তার অধীনে নির্বাচনের মধ্যমে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। তাহলেই দেশ ও জাতির কল্যাণ হবে। ক্ষমতাসীন অবৈধ সরকারকে ক্ষমতা হস্তান্তর করে চলে যেতে হবে নতুবা জনগণকে সাথে নিয়ে জামায়াতে ইসলামী চলমান আন্দোলনকে তীব্র থেকে তীব্রতর করে এই সরকারের পতন নিশ্চিত করবে ইনশাআল্লাহ।

সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, রাসূল (সঃ) এর সীরাতকে সামনে রেখে ইকামতের দ্বীনের কাজকে বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি যেভাবে হিকমা ও কৌশল শিখিয়েছেন সেভাবে ইসলাম কায়েমের জন্য কাজ করে যেতে হবে। তাহলে দুনিয়ার কোনো শক্তিই আমাদেরকে দমিয়ে রাখতে পারবেনা। স্বাধীনতা পরবর্তী যারা ক্ষমতায় এসেছে সুপরিকল্পিতভাবে জামায়াতে ইসলামীকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে। আমাদের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে সম্পুর্ণ অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে। রাসূল (সঃ) এর যুগেও এই জুলুম নির্যাতন ছিল, তিনি যেভাবে সবকিছু সহ্য করে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেছেন ঠিক তেমনিভাবে আমাদেরও বাংলার জমীনে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতে হবে। ইসলামের মানদন্ডে সবকিছু পরিচালনা করতে হবে। আজ বাংলাদেশে স্বাভাবিকভাবে বাঁচার পরিবেশ নেই, সঠিক কথা বলার অধিকার নেই, নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য কথা বললে যেকোনে সময় গুম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ অবস্থা থেকে দেশের মানুষকে মুক্ত করার জন্য এই সরকারের পতন ও কেয়াটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সবাইকে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে।

ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে রাসূল (সঃ) এর জীবন ও আদর্শকে সঠিকভাবে শিক্ষা না দেওয়ার ফলে প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদেরকে সঠিক পথে পরিচালনা করতে পারতেছে না। আজকে পত্রিকার শিরোনামে নিয়মিত দেখতে পাই বর্তমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো সন্ত্রাস, মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। আমাদের বোনেরা যাদের কাছে শিক্ষা গ্রহণের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছে তাদের কাছেও নিরাপদবোধ করছেনা ফলে নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য তাদেরকে নিয়মিত সংগ্রাম করতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতে থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় হচ্ছে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে রাসূলের (সঃ) জীবন ও কর্মকে সঠিকভাবে শিক্ষা দিতে হবে এবং রাসুলুল্লাহর (সা) আদর্শকে ধারণ করে বাস্তব জীবনে তা কাজে লাগাতে হবে।

সিরাত পাঠ প্রতিযোগিতায় যারা বিজয়ী হয়েছেন, ক-গ্রুপে প্রথম- সামমুদ্দোহা আব্দুল্লাহ্ শিবলী নোমানী, দ্বিতীয়- মুজাহিদুল ইসলাম, তৃতীয়- মো. সোলাইমান, চতুর্থ- জয়নাল আবেদীন, পঞ্চম- আবু জাফর। খ গ্রুপে প্রথম- ইদ্রিস হাওলাদার, দ্বিতীয় আ: হামিদ রুকন, তৃতীয়- হাসানুল বান্না, চতুর্থ-হাফেজ মহিবুল ইসলাম, পঞ্চম- শাহাদাত হোসাইন। গ গ্রুপে প্রথম- বনি ইয়ামিন মিয়াজী, দ্বিতীয়- গিয়াস উদ্দীন, তৃতীয়- মো: জাকির হোসেন, চতুর্থ- তমিজ উদ্দিন সরোয়াদ্দী, পঞ্চম- শরিফুল ইসলাম। বিজয়ীদের নগদ টাকা, আকর্ষণীয় বই সেট ও ক্রেস্ট উপহার প্রদান করা হয়।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে মামলা

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে মামলা

আজ ছোট পর্দায় মুক্তি পাবে নাটক 'হোয়াট এ বৌ'

আজ ছোট পর্দায় মুক্তি পাবে নাটক 'হোয়াট এ বৌ'

পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের ছবি সরিয়ে ফেললেন ভারতের সেনাপ্রধান

পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের ছবি সরিয়ে ফেললেন ভারতের সেনাপ্রধান

বরিশাল ইন্সটিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন এন্ড অ্যলায়েড সায়েন্সেস চিকিৎসা সেবায় ব্যাপক অবদান রাখছে

বরিশাল ইন্সটিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন এন্ড অ্যলায়েড সায়েন্সেস চিকিৎসা সেবায় ব্যাপক অবদান রাখছে

হাসিনাকে নিয়ে ‘সম্ভাব্য ঝুঁকি’তে সচেতন ছিলেন না টিউলিপ এটি ‘দুঃখজনক’ : লরি ম্যাগনাস

হাসিনাকে নিয়ে ‘সম্ভাব্য ঝুঁকি’তে সচেতন ছিলেন না টিউলিপ এটি ‘দুঃখজনক’ : লরি ম্যাগনাস

শেখ পরিবার একটি চোরের কারখানা’

শেখ পরিবার একটি চোরের কারখানা’

অব্যাহতি পাওয়া এসআইদের আন্দোলনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতা মামুন

অব্যাহতি পাওয়া এসআইদের আন্দোলনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতা মামুন

জিমি কার্টারের প্রতি ৩০ দিনের শোকাবস্থা উপেক্ষা করে ট্রাম্পের পতাকা উত্তোলন

জিমি কার্টারের প্রতি ৩০ দিনের শোকাবস্থা উপেক্ষা করে ট্রাম্পের পতাকা উত্তোলন

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা: খালেদা-তারেকসহ সব আসামি খালাস

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা: খালেদা-তারেকসহ সব আসামি খালাস

টিউলিপের জায়গায় নিয়োগ পেলেন এমা রেনল্ডস

টিউলিপের জায়গায় নিয়োগ পেলেন এমা রেনল্ডস

পদত্যাগপত্রে টিউলিপ সিদ্দিক যা লিখেছেন

পদত্যাগপত্রে টিউলিপ সিদ্দিক যা লিখেছেন

টিউলিপের পদত্যাগ ইস্যুতে প্রেস উইংয়ের বিবৃতি

টিউলিপের পদত্যাগ ইস্যুতে প্রেস উইংয়ের বিবৃতি

আজ বায়ুদূষণের শীর্ষে কায়রো, ঢাকার অবস্থান ৬ নম্বরে

আজ বায়ুদূষণের শীর্ষে কায়রো, ঢাকার অবস্থান ৬ নম্বরে

মেয়ের বাড়ি থেকে ফেরার পথে লাশ হলো "মা"!

মেয়ের বাড়ি থেকে ফেরার পথে লাশ হলো "মা"!

মীরসরাইয়ে মুন্না খুনের ঘটনায়, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক বহিষ্কার

মীরসরাইয়ে মুন্না খুনের ঘটনায়, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক বহিষ্কার

দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন গ্রেফতার

দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন গ্রেফতার

আজ সারদায় ৪৮০ এসআইয়ের সমাপনী কুচকাওয়াজ

আজ সারদায় ৪৮০ এসআইয়ের সমাপনী কুচকাওয়াজ

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ৬৩ জন ফিলিস্তিনি, মানবিক সংকট চরমে

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ৬৩ জন ফিলিস্তিনি, মানবিক সংকট চরমে

ছাগলকাণ্ডের সেই মতিউর ও তার স্ত্রী গ্রেফতার

ছাগলকাণ্ডের সেই মতিউর ও তার স্ত্রী গ্রেফতার

সেন্টমার্টিনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিন রিসোর্ট পুড়ে ছাই

সেন্টমার্টিনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিন রিসোর্ট পুড়ে ছাই