নারী আম্পায়ার দেখে খেলতে চায়নি মাহমুদুল্লাহ-মুশফিকরা, সমালোচনার ঝড়
২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪২ পিএম | আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪২ পিএম
বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে বিতর্ক নিত্যদিনের সঙ্গী, তবে এবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে যা ঘটেছে, তা যেন অতীত সবকিছুকে ছাড়িয়ে গেল। ডিপিএলে গুরুতর বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ক্রিকেটের ২২ গজে নারী আম্পায়ার নিয়ে আপত্তি তুলেছে দুই দল।
দাবি করা হচ্ছে, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে নারী আম্পায়ার দায়িত্ব পাওয়ায় খেলতে আপত্তি জানিয়েছে দুই দল। গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) প্রাইম ব্যাংক এবং মোহামেডানের সুপার লিগের ম্যাচে ঘটেছে এমন ঘটনা। প্রাইম ব্যাংকে জাতীয় দলের সাবেক দুই অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম খেলেন। ওদিকে মোহামেডানে আরেক সাবেক অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ছাড়া ইমরুল কায়েসও খেলছেন।
এমনকি আম্পায়ার ইস্যুতে নির্ধারিত সময়ে খেলা মাঠে গড়ায়নি। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ আম্পায়ারস কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ মিঠু।
প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে মনিরুজ্জামানের সঙ্গে অন-ফিল্ড আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার জেসি এখন আইসিসির একজন অফিশিয়াল আন্তর্জাতিক আম্পায়ার।
জানা গেছে, তাকে দেখে এদিন মাঠেই ক্ষোভ আর হতাশা প্রকাশ করেছিলেন দুই দলের ক্রিকেটার ও অফিশিয়ালরা।
আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ মিঠুকে এ ব্যাপারে দেশের একটি গণমাধ্যমের ভিডিওতে বলতে শোনা গেছে, ‘তিনি (জেসি) একজন আইসিসির অফিশিয়াল আন্তর্জাতিক আম্পায়ার। তাকে যেহেতু দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, অবশ্যই মূল্যায়ন করে দেওয়া হয়েছে। এখন এটা না মানলে তো আমরা বৈষম্য করছি। তারা (দুই দল) এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছিল যে খেলবে না, কিন্তু পরে মেনে নিয়েছে।
আইসিসির প্যানেলভুক্ত আম্পায়ার সাথিরা জাকির জেসি। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা যেখানে অনুমোদন দিয়েছে যেখানে ডিপিএলের দুই দলের এমন কাণ্ড প্রশ্নবিদ্ধ। যদিও দুই দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এত হাইভোল্টেজ ম্যাচে অনভিজ্ঞ বলেই জেসির ব্যাপারে আপত্তি ছিল তাদের।
এ নিয়ে এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে আলোচনা ও সমালোচনা।
সুমিয়া সুমি নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, কিছু লোক এটাকে অন্য ইস্যুতে নিয়ে যাচ্ছেন। নারী আম্পায়ার পরপর কয়েকটি ভুল সিদ্ধান্ত দিয়েছে, এজন্য খেলোয়াড়রা রেগে এই আম্পায়ারকে নিষিদ্ধ করেছে। এছাড়া অন্য কিছু নয়।
রিয়াদ নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, যেই দেশ দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে মহিলা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, সেই দেশে মহিলা আম্পায়ার হলে সমস্যা কোথায় ?
আরিফ ইসলাম নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, একজন নারী আম্পায়ার কখনও পুরুষদের ক্রিকেট ম্যাচে আম্পায়ারিং করতে পারবে না। আর একজন পুরুষ আম্পায়ার কখনও নারী ক্রিকেট ম্যাচে আম্পায়ারিং করতে পারবে না। এর ব্যাতিক্রম হওয়া মানে ক্রিকেটের পরিবেশ নষ্ট করে ফেলা। আর আইসিসি এই নিয়ম মেনে চলে বিধায় ক্রিকেটারদের কোনো সমস্যা হয় না। এখানে বিসিবি আম্পায়ারিং নিয়ে চরম বিব্রতকর পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। কারণ সব জায়গায় নারী-পুরুষের সমান অধিকার চলে না।
মাহবুব শিকদার নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ঠিকই আছে, মেয়েদের ম্যাচে মেয়েরা আম্পায়ারিং করবে। ছেলে আম্পায়ারের কি অভাব পড়ছে দেশে।
মুসা নামে একজন লিখেছেন, নারী আম্পায়ার দেওয়ার উদ্দেশ্য কি ? আমার মতে ছেলেদের আম্পায়ার ছেলে হওয়াটাই উচিত। মেয়েদের জন্য মেয়ে।
লেখক ও সিনিয়র সাংবাদিক মেহেদী হাসান পলাশ ফেসবুকে লিখেছেন, প্রকৃত ঘটনা অনুযায়ী আসলে শিরোনাম হওয়া উচিত ছিল- অনভিজ্ঞ আম্পায়ারের পরিচালনায় ম্যাচ খেলতে অস্বীকৃতি দুই ক্লাবের। কিন্তু কিছু মিডিয়া পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে দিলো।
তিনি আরও লেখেন, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ বাংলাদেশ দলের আন্ডাররেটেড হিরো। বাংলাদেশ দলের প্রয়োজনের যখন যেভাবে, যে পজিশনে খেলানো হয়েছে তারা সেভাবেই সেখানেই খেলেছে। এ নিয়ে তারা কখনোই উচ্চবাচ্য করেনি। মাহমুদুল্লাহ তো বারবার তার পারফমেন্স দিয়ে ফিরে এসে প্রমাণ করেছেন, তিনি লোয়ার অর্ডারে বাংলাদেশের সেরা ম্যাচ উইনার। আর মুশফিকুর রহিম তো বহু বছর ধরে বাংলাদেশ দলে মিস্টার ডিপেন্ডেবল হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত। তবু সাকিব ও তাামিমের মতো তাদের অহঙ্কারী, আত্মম্ভরী, দেশ ও দলের উর্ধ্বে নিজেকে প্রতিষ্ঠা, বেয়াদবি- এসব কোনো রেকর্ডই নেই তাদের।
পলাশ লিখেন, শুধু খেলা দিয়ে নয়, ব্যক্তি জীবনেও এই দুই খেলোয়াড় অত্যন্ত সুশৃঙ্খল ও ধার্মিক জীবনযাপন করে। এর প্রভাব দলের জুনিয়র খেলোয়াড়দের মধ্যেও সঞ্চারিত হয়েছে। ফলে প্রায়ই আমরা দেখি বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়রা যখন দলীয় ও ব্যক্তিগত সাফল্য অর্জন করে মাঠেই সেজদাহ দিয়ে শুকরিয়া আদায় করে, প্র্যাকটিসের চলাকালে নামাজের সময় হলে মাঠেই জামায়াত করে নামাজ পড়ে। এতে ইমামতি করেন মুশফিক বা মাহমুদুল্লাহ। এ ধরণের ছবি অনেকেরই অপছন্দ ও গাত্রদাহরে কারণ। সুযোগ পেয়ে আজ তারাই ঝাল ঝাড়তে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
তবে দুয়েক লিখেছেন, এটা একটা ভয়ংকর অবস্থা। একটা দেশের জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের চিন্তা চেতনার কি অবস্থা! এসব ক্রিকেটারদের দল থেকে নিষিদ্ধ করা উচিত।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে কুইক রেসপন্স টিম চান সিটি মেয়র
দেশব্যাপী সাংস্কৃতিক গণজাগরণ দরকার : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
দক্ষ নারী কর্মীদের বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে কাজ করবে মন্ত্রণালয় : শফিকুর রহমান চৌধুরী
হায়দার আকবর খান রনোর দাফন সম্পন্ন
সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার ও ভুয়া খবর ছড়ানো রোধে বৈশ্বিক পর্যায়ে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি : তারার
মুক্তি পেলেন বিএনপি নেতা হাবিব উন নবী খান সোহেল
গাজীপুরে লিফটে আটকে রোগীর মৃত্যু, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
স্যাটেলাইট প্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা অর্জনে সহযোগিতা করতে চায় ফ্রান্স : প্রতিমন্ত্রী পলক
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. আশরাফ উল আলমের প্ৰয়াণ
চৌদ্দগ্রামে অবস্থিত সৈয়দা আঞ্জুমান আরা বালিকা বিদ্যালয়ের শতভাগ সাফল্য
আগামী শুক্রবার সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি সফলের আহবান_ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগে মোংলা থানার ওসি তদন্তকে প্রত্যাহার
ফিলিস্তিনকে মুক্ত করতে মুসলিম জাতিসংঘ গঠন করতে হবে
ইউরোপ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ব্যবসায় প্রবেশপথ হবে বাংলাদেশ-তুরস্ক
২৫ দিনেও ধরতে পারেনি সেই ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বার
আ.স.ম আবদুর রবকে দেখতে গেলেন মির্জা ফখরুল
মাইজিপি অ্যাপেই খোলা যাচ্ছে বিকাশ অ্যাকাউন্ট
টোলের নামে চাঁদাবাজিতে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম : সাঈদ খোকন
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে চীন-রুশ প্রেসিডেন্টের বিনিময় খুব গুরুত্বপূর্ণ
জর্ডানে যৌথ সামরিক মহড়া