বিচারবিভাগ নিয়ে আজ রোডম্যাপ দেবেন প্রধান বিচারপতি
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৫ এএম | আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৫ এএম
সারাদেশে কর্মরত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের উদ্দেশে আজ শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) অভিভাষণ দেবেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। এ ভাষণে বিচার বিভাগের জন্য একটি রোডম্যাপ তুলে ধরবেন তিনি। যাতে তিনি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্বতন্ত্রীকরণ ও প্রাতিষ্ঠানিক পৃথককরণসহ বিষয়ে আলোকপাত করবেন।
দেশের সব বিচারককে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর আইন, বিচার ও সংসদ-বিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি আদেশ জারি করে।
আদেশে বলা হয়, দেশের সব আদালতের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মনোনীত একজন করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দিয়ে সব অধস্তন আদালতের অন্য সব বিচারককে ২১ সেপ্টেম্বরের অভিভাষণ অনুষ্ঠানে আবশ্যিকভাবে উপস্থিত থাকতে হবে।
অনুষ্ঠানে দেশের প্রায় দুই হাজার বিচারক উপস্থিত থাকবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিরা, বিচার বিভাগের সংস্কার সংক্রান্ত কমিশনের চেয়ারম্যান আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিগত সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের পহেলা নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক হয় বিচারবিভাগ। পৃথকীকরণের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে ৩৯৪ জন সহকারী জজ নিয়োগ করা হয়। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ সরকার। গত ১৬ বছরে দেশ শাসনের দায়িত্বে থাকলেও বিচারবিভাগ পৃথকীকরণ সংক্রান্ত মাসদার হোসেন মামলার রায় অনুযায়ী প্রতিষ্ঠা করেনি বিচারবিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয়। ফলে অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদায়ন ও পদোন্নতির নিয়ন্ত্রণ ছিলো একচ্ছত্র-ভাবে আইন মন্ত্রণালয়ের হাতে। শুধু সুপ্রিম কোর্ট থেকে নেওয়া হত পরামর্শ।
বিচারবিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বিচারকদের পদায়ন, বদলি ও পদোন্নতির বিষয়টি পৃথক সচিবালয় করে সুপ্রিম কোর্টের হাতে রাখা উচিত। এটা করা সম্ভব হলে বিচারকদের বদলি, পদায়ন ও পদোন্নতি নিয়ে ভবিষ্যতে প্রশ্ন উঠার সুযোগ কম থাকবে। বিচারকরা মনে করেন, কোনো রাজনৈতিক সরকার বিচারবিভাগ পৃথকীকরণের উদ্যোগ নেয়নি। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিচারবিভাগ পৃথকীকরণের রায় কার্যকর করা হয়। এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে বিচারবিভাগের পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া দরকার। শুধু পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠাই নয়, মামলা জট নিরসনে কার্যকর পন্থা বের করার সময় এসেছে বলে মনে করেন বিচারাঙ্গনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।
একাধিক বিচারক বলেন, ভূমি জরিপের মামলা নিষ্পত্তির জন্য দেশের ৬১টি জেলার মধ্যে ৪২টি জেলায় ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল রয়েছে। ১৯ জেলায় এখনো কোনো ট্রাইব্যুনাল নেই। ৫৪ জেলায় নেই কোনো ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনালও। ২০১৮ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করা হলেও এসব আইনের অধীনে দায়েরকৃত মামলা নিষ্পত্তির জন্য কোনো আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়নি। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ বা যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার বিচারকরা এসব মামলার বিচার করছেন।
অধস্তন আদালতের একাধিক বিচারক বলেন, সহকারী জজ ও সিনিয়র সহকারী জজদের স্টেনোগ্রাফার নাই। স্টোনোগ্রাফারের পদ সৃষ্টি হলেও এখনো নিয়োগ হয়নি। স্টোনোগ্রাফার না থাকায় রায় ও আদেশ থেকে শুরু করে মামলার বিচার কার্যক্রম হাতে লিখতে হচ্ছে বিচারকদের। এছাড়া দুই বছর আগে ৭৩ জন বিচারক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পদে পদোন্নতি পান। এসব বিচারকরা এখন পর্যন্ত আলাদা গাড়ি সুবিধা পাননি। যদিও এ ধরনের বিচারকরা জঙ্গি হামলাসহ নানা স্পর্শকাতর মামলার বিচার করছেন। যার কারণে একটা নিরাপত্তহীনতার শঙ্কায় থাকতে হয় তাদের। যদিও প্রশাসনের উপ-সচিব পদমর্যাদার পর্যায়ের কর্মকর্তারা বিনা সুদে গাড়ি ক্রয়ের ঋণ সুবিধা পাচ্ছেন। এছাড়া জেলা পর্যায়ে বিচারকদের নেই সরকারি আবাসন ব্যবস্থা। ভাড়া বাসায় থাকতে হচ্ছে বিচারকদের। বিচারকরা বলছেন, এসব সংকট নিরসন করা গেলেই বাড়বে মামলা নিষ্পত্তির হার। যার মধ্য দিয়ে বিচার-প্রার্থী জনগণের আস্থা বাড়বে বিচারবিভাগের প্রতি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
সুনামগঞ্জে ২২ লাখ টাকার ইলিশ জব্দ
ছাত্রজনতা হত্যার নির্দেশদাতা বিতর্কিত পুলিশ সদস্যরা এখনো লাপাত্তা
রোগীদের সুস্থ করে তুলতে ‘রোবটের মতো’ কাজ করেছে লেবাননের যে চিকিৎসক
মোদীর সফরের আগে ভারত সরকারের নামে যুক্তরাষ্ট্রে মামলা পান্নুনের
মিয়ানমার থেকে মণিপুরে অনুপ্রবেশ ৯০০ জঙ্গির, দাবি ভারতের
৪৩ দিন পর কাজে ফিরলেন আর জি করের জুনিয়র চিকিৎসকরা
গিল-পান্তের ব্যাটে পিষ্ট বাংলাদেশ
ফের মৃত্যুর খেলা! ‘স্কুইড গেম সিজন ২’র টিজারে বিপদের বার্তা
অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি কচুয়ায় যুবলীগ নেতার ৪টি দোকান পুড়েছে দুর্বৃত্তরা
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে বিএনপির দু’পক্ষে সংঘর্ষে আহত অর্ধশতাধিক
লেবাননের বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ১৪
রাঙামাটিতে সেনা, বিজিবি ও পুলিশের টহল, পরিস্থিতি শান্ত
পরমাণু দূষিত পানি নিয়ে চীন ও জাপানের কিছু ঐকমত্য
ঝিকরগাছায় বিএনপি নেতা খায়রুজ্জামান মিনুসহ ২১ নেতাকর্মী বহিষ্কার
হিজবুল্লাহর ভয়ে ইসরাইলিদের আশ্রয়কেন্দ্রের কাছে থাকার নির্দেশ
ভারতের ঘুম হারাম করে পাকিস্তানকে ভয়ঙ্কর হেলিকপ্টার দিচ্ছে চীন
পাকিস্তানে সেনানিবাসে আত্মঘাতি হামলা, সেনাসহ নিহত ১৮
জুলাই বিপ্লবে শহিদের সংখ্যা ১৪২৩, আহত ২২ হাজার
নড়াইলে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জুয়েল গ্রেফতার
নেছারাবাদে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনা ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার নিহতদের স্মরণে বিএনপির আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিল