ঢাকা   সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৮ আশ্বিন ১৪৩১

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত বগুড়ার শিশু শিক্ষার্থী রাতুল চলে গেলো না ফেরার দেশে

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:০৮ পিএম | আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:০৮ পিএম

 

 

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গিয়ে পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছিলো বগুড়ার শিশু শিক্ষার্থী জুনায়েদ ইসলাম রাতুল। মৃত্যুর সঙ্গে ৪৮দিন পাঞ্জালড়ে অবশেষে হেরে গেলো সে। আজ ভোর ৫টায় রাজধানীর ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরোসাইন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে রাতুল।

বগুড়া উপশহরের হাকির মোড়ের বাসিন্ধা ছিলো রাতুল। ওখানে সে বাবা, মা ও বড় বোনের সঙ্গে থাকতো। উপশহরের পথ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলো রাতুল।
গত ৫ আগস্ট বিকেলে রাতুলের বড়বোন কলেজ ছাত্রী জেরিন ও ভগ্নিপতি আমির হামজা ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যোগ দেয়। মায়ের বারণ সত্বেও রাতুল নাস্তা না করেই ওদের সঙ্গে গিয়ে স্লোগান দিতে-দিতে বগুড়া সদর থানার অদুরে বড়গোলার কাছে পৌঁছায়। জেরিন জানান- তার পাশেই ছিল রাতুল। হঠাৎ পুলিশের ছোড়া চারটি র্ছরা গুলি এসে লাগে রাতুলের গায়ে, এরমধ্যে একটি লাগে তার মাথায়। গুলিটি তার বাম চোখের মধ্যে দিয়ে মাথার মগজে ঢুকে পড়ে। এরপর পুলিশের ছোড়া আরো অর্ধশতাধিক গুলি লাগে তার শরীরে বিভিন্ন জায়গায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে অজ্ঞান থাকা অবস্থায় রাতুলকে বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে নিয়ে যাওয়া হয়। ওখানে চিকিৎসকরা তাকে রাজধানীর ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিওরোসাইন্স হাসপাতলে নিতে বলেন। ৪৮ দিন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থেকে আজ ভোর ৫টায় চিকিৎসাধিন অবস্থার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে কোমল শিশু রাতুল।

আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় রাতুলের মৃত্যুর সংবাদ বগুড়ায় পৌঁছায়। তার মৃত্যুর খবরে উপশহরে শোকের ছায়া নেমে আসে।

রাতুলের মরদেহ বগুড়ায় আনার জন্য তার বাবা, মা, বোন ও ভগ্নিপতি সবাই ঢাকায় হাসাপাতলে অবস্থান করছেন। রাতুলের বোনবড় জেরিন মোবাইল ফোনে বাসসকে জানান, তাদের আশা ছিল যেহেতু মগজ থেকে গুলি বের করতে সফল অস্ত্রপচার হয়েছে, সেহেতু এ যাত্রা বোধ হয় বেঁচে যাবে তার একমাত্র ভাই রাতুল। তিনি জানান, আমরা এখনও ঢাকায় হাসপাতালে আছি। আমার মা বার-বার মুর্চ্ছা যাচ্ছেন। তাকে সান্তনা দিতে ও লাশ বগুড়া নিয়ে যাবার জন্য ব্যস্ততায় আছি। তাই এই মূহূর্তে আর কোন কিছু কথা বলা যাচ্ছে না।

মা রোকেয়া বেগম ছেলের শিয়রে বসে ৪৮দিন দুই চেখের পাতা এক করতে পারেনি। মা ভাবতো- এইবুঝি ছেলে রাতুল ‘মা’ বলে ডাকবে। বুকে জড়িয়ে ধারে আদর করবে। কিন্তু মায়ের ছিল শুধু অপক্ষে আর অপেক্ষা। ৪৮ দিন চোখ মেলে তাকাইনি রাতুল। মায়ের আর শেষ বারেরমত ‘মা’ ডাক শোনা হলো না। মুদির দোকানী বাবা জিয়াউর রহমান জানান, আমার সর্বস্ব বিক্রি করে ছেলের চিকিৎসা করেছি। তবুও সন্তানকে ফিরে পেলাম না।

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়ে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বগুড়ার শিশু রাতুল’ এই শিরোনামে গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায় (বাসস) একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিলো।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

‘অধ্যাপক’ হিসেবে পদোন্নতি পেলেন শিক্ষা ক্যাডারের ৯২২ জন

‘অধ্যাপক’ হিসেবে পদোন্নতি পেলেন শিক্ষা ক্যাডারের ৯২২ জন

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি মালিক গ্রেফতার

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি মালিক গ্রেফতার

স্বৈরাচারের পতন হলেও দোসররা এখনো রয়ে গেছে : তারেক রহমান

স্বৈরাচারের পতন হলেও দোসররা এখনো রয়ে গেছে : তারেক রহমান

সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিম কারাগারে

সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিম কারাগারে

নদী দখলকারীদের উচ্ছেদে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে - পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

নদী দখলকারীদের উচ্ছেদে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে - পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

এবার ফাঁস হলো রাবি শিবির সভাপতির পরিচয়

এবার ফাঁস হলো রাবি শিবির সভাপতির পরিচয়

ফুটবলের মাঠে চমক দেখাতে চান তাবিথ আউয়াল

ফুটবলের মাঠে চমক দেখাতে চান তাবিথ আউয়াল

শ্রীলঙ্কার চীনপন্থি প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকে কি ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ?

শ্রীলঙ্কার চীনপন্থি প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকে কি ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ?

ডাটা সেন্টারের সক্ষমতা বৃদ্ধির তাগিদ তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টার

ডাটা সেন্টারের সক্ষমতা বৃদ্ধির তাগিদ তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টার

দৈনিক রাজবাড়ী কন্ঠে" প্রকাশকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ফরিদপুর সাংবাদিক জোটের প্রতিবাদ সভা

দৈনিক রাজবাড়ী কন্ঠে" প্রকাশকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ফরিদপুর সাংবাদিক জোটের প্রতিবাদ সভা

হাত-পা ও চোখ বেঁধে ঝুলিয়ে পেটানো হয় --- আবু বাকের

হাত-পা ও চোখ বেঁধে ঝুলিয়ে পেটানো হয় --- আবু বাকের

ইনসি ইকো প্লাস সিমেন্ট নিয়ে এলো বাংলাদেশের সমূদ্র তীরবর্তী অঞ্চলের উপযোগী করে দীর্ঘস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণের সমাধান

ইনসি ইকো প্লাস সিমেন্ট নিয়ে এলো বাংলাদেশের সমূদ্র তীরবর্তী অঞ্চলের উপযোগী করে দীর্ঘস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণের সমাধান

ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা জন্য আমাদের লড়াই চলছে : গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা জন্য আমাদের লড়াই চলছে : গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

বাগমারার সাবেক এমপি এনামুল কারাগারে

বাগমারার সাবেক এমপি এনামুল কারাগারে

কুড়িগ্রামে বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু

কুড়িগ্রামে বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু

রাঙ্গামাটিতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছে রাজনৈতিক দল এলডিপি

রাঙ্গামাটিতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছে রাজনৈতিক দল এলডিপি

পরিস্থিতির আলোকে ছোট ব্যাংকগুলোকে একীভূত করা হতে পারে- গভর্নর

পরিস্থিতির আলোকে ছোট ব্যাংকগুলোকে একীভূত করা হতে পারে- গভর্নর

পোশাক শিল্পের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতির কাক্সিক্ষত উন্নতি হয়নি: বিজিএমইএ

পোশাক শিল্পের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতির কাক্সিক্ষত উন্নতি হয়নি: বিজিএমইএ

অমিত শাহ’র বক্তব্যের কড়া প্রতিবাদ বাংলাদেশের

অমিত শাহ’র বক্তব্যের কড়া প্রতিবাদ বাংলাদেশের

ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও নতুন বাংলাদেশ

ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও নতুন বাংলাদেশ