মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব হতে মরিয়া শিক্ষা সচিব
০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:১৯ এএম | আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২৩ এএম

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব পদে নিয়োগ পেতে মরিয়া হয়ে উঠে পড়ে লেগেছেন চুক্তিতে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড.শেখ আব্দুর রশিদ। তবে তাকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব হিসেবে মেনে নিতে চাচ্ছে না প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তাদের দাবি প্রশাসনে অনেক ভালোভালো কর্মকর্তা রয়েছেন তাদের মধ্যে করতে হবে। তারা বলেন, তিনি একজন রিটায়ার্ড অফিসার। যার জুলাই আন্দোলনে কোনো অবদান নাই। ভবিষ্যতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সচিব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হলে তিনি রাষ্ট্রীয় চাপ সামাল দিতে পারবে না। সে কারণে এ জায়গায় নতুন ভালো কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেয়ার দাবি।
ইতোমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সচিব পদে যোগদান করার পরে সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগ দেয়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে চরম উত্তোজনা বিরাজ করছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা ঢাকা অঞ্চলের কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মোসা. রেবেকা সুলতানাকে সচিব নিয়োগ দিয়েছেন। তার যোগদানের তিন দিনের মাথায় ছাত্রলীগের নেত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে উপ-পরিচালক রেবেকা সুলতানাকে অধিদপ্তরে বলদী করা হয়। তবে এ পদে ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে যোগদান করতে হয়। উপ-পরিচালক রেবেকা সুলতানা ঘুষের টাকা না করার কারণে তাকে অধিদপ্তরে বলদী করা হয়েছে। আবার বিএনপির পরিবারের কোনো কর্মকর্তা হলে তাদের হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অতিরিক্ত সচিব ইনকিলাবকে বলেন, শিক্ষা সচিব একজন সৎ, মেধাবরী ও ভালো কর্মকর্তা। স্যারে নাম ভাঙ্গীয়ে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ খালেদ রহীম ড. খ ম কবিরুল ইসলাম, যুগ্ম সচিব মো. নুরুজ্জামান,যুগ্ম সচিব জহিরুল ইসলাম এবং সিনিয়র সচিবের একান্ত সচিব মো,জাকির হোসেন টাকা বিনিময় বদলী বাজিন্য করে আসছেন। তিনি যোগদানের দুই মাস হলে এর পরেও আওয়ামী লীগের কর্মকর্তাদের মন্ত্রণালয় থেকে বদলী করানি।
জানা গেছে, সোমবার রাতে সচিবালয়ের অফিস খুলে চুক্তিতে নিযুক্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ড.শেখ আব্দুর রশিদকে চুক্তি বাতিল করে পূনরায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব হিসাবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ফাইল প্রস্তুত করা হয়েছে। রাতে না হলে আগামীকাল এ সংক্রান্ত এক প্রস্তাব উপদেষ্টা কাযালয়ে পাঠানো হতে পারে। এদিকে এই খবর প্রশাসনে কর্মকর্তাদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ার পর সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের যোগ্য কর্মকর্তাদের মধ্যে উত্তেজনা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনের চুক্তির মেয়াদ চলতি মাসে শেষ হচ্ছে। চলতি সপ্তাহে না হলে আগামী সপ্তাহে মন্ত্রিপরিষদের সচিব হিসেবে নতুন কাউকে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। নতুন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আলোচনায় রয়েছেন,চুক্তিতে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. আব্দুর রশীদ, সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনি এবং নিয়মিত ব্যাচে যারা সিনিয়র সচিব পদে রয়েছেন তাদের মধ্যে অনেকেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগর সচিব পদের জন্য উপদেষ্টা কার্যালয়ে দৌড় যাপ শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে এমনকি পাকিস্তান বা বৃটিশ আমলে কখনই এই পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করা হয়নি। প্রশাসন সার্ভিংস ক্যাডার সিনিয়র কর্মকর্তাকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব করা হয়ে আসছে।অথচ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের উপর ভিত্তি করে গঠিত অন্তর্বকালীন সরকার প্রশাসন ক্যাডারে কর্মকর্তাদের বঞ্চিত করে একজন রিটায়ার্ড অফিসার আব্দুর রশিদকে চুক্তিতে নিয়োগ করা হচ্ছে যার জুলাই আন্দোলনে কোনো অবদান নাই। ভবিষ্যতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সচিব পদে চুক্তিভিত্তিক এমনকি বেসরকারী লোক এই পদে নিয়োগের জন্য চাপ দিতে পারবে। এর জন্য ব্যবহার করা ড. ইউনুসের দ্বারা চুক্তি দেয়ার নজির!
এর আগে ১৭ আগস্ট ড. শেখ আব্দুর রশিদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান তিনি। অতিরিক্ত সচিবের দায়িত্বে থেকে অবসরে যাওয়া এই কর্মকর্তা বিসিএস ৮২ ব্যাচের ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অতিরিক্ত সচিব থেকে অবসরে যান। তিনি সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। এর আগে ড. শেখ আব্দুর রশীদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তারও আগে গত ১৩ আগস্ট পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান পদ থেকে ড. এম খায়রুল হোসেন পদত্যাগ করায় নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন ড. শেখ আব্দুর রশীদ।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অতিরিক্ত সচিব থেকে অবসরে যান তিনি। অতিরিক্ত সচিবের দায়িত্বে থেকে অবসরে যাওয়া এই কর্মকর্তা বিসিএস ৮২ ব্যাচের কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি তার ব্যাচে ফার্স্ট হয়েছিলেন। গত ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব নিয়েই মিথ্যা মামলা দিয়ে তাঁকে ওএসডি করে। পরে তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত হলেও তাঁকে চার বছর পর জানানো হয়, যখন অবসরে যান তিনি। অতিরিক্ত সচিবের দায়িত্বে থেকে অবসরে যাওয়া এই কর্মকর্তা বিসিএস ৮২ ব্যাচের কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি তাঁর ব্যাচে ফার্স্ট হয়েছিলেন। একই ব্যাচের কর্মকর্তা ড. আব্দুল মোমেন। ২০০৯ সালে একই কায়দায় তাঁকেও ওএসডি করা হয়। তখন তিনি বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ১৭ আগস্ট তাঁকে চুক্তিতে ২ বছরের জন্য জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব করা হয়।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

লাইভে গণমাধ্যমের উপর পরীমণির ক্ষোভ প্রকাশ

মিয়ানমারে আবার কেঁপে উঠলো ৫.৬ মাত্রার ভূমিকম্প

দোয়ারাবাজারে ডেভিলহান্ট অপারেশনে ফারুক মাস্টার গ্রেফতার

দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস

ঈদের দীর্ঘ ৯ দিনের ছুটি শেষে রাজধানীতে ফিরছে মানুষ, সদরঘাটে উপচেপড়া ভিড়

হিন্দুদের পাশে বিএনপির নেতাকর্মীরা ছায়া হয়ে থাকবে-কাজী শিপন

সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্টের তালিকায় আয়ারল্যান্ড শীর্ষে, বাংলাদেশ ১৮১তম

ঈদের ছুটিতে সৈয়দপুরে লেগেছে বিয়ের ধুম

‘গরীবের খাদ্য’ খ্যাত মিষ্টিআলু পুষ্টিচাহিদার অন্যতম উৎস হলেও উচ্চ ফলনশীল জাতের আবাদ বৃদ্ধির উদ্যোগ নেই

সৈয়দপুরে ঈদের ছুটিতেও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলোতে মিলছে সকল স্বাস্থ্যসেবা

ইসরাইলে ২০ হাজার অ্যাসল্ট রাইফেল পাঠাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন

দ্রুততম নির্বাচন গণমানুষের দাবি, একক কোন দলের দাবি না-সুলতান সালাউদ্দিন টুকু

গাজায় প্রতিদিন ১০০ শিশু হতাহতের শিকার: জাতিসংঘ

৪টি স্বল্পমেয়াদি কোর্সের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলো বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট

ঢাকার বায়ু অস্বাস্থ্যকর, দূষণ শীর্ষে কাঠমান্ডু

আমরা টানা এক সপ্তাহ হাসপাতালে ছিলাম- রণবীর

শপথ করে গেলাম আজ থেকে আমি ‘জয় বাংলা’ বলব: কাদের সিদ্দিকী

শেখ হাসিনা পালায় গেলেও তার দোসররা এখনও ষড়যন্ত্র করছে: শামা ওবায়েদ

যারা ফ্যাসিবাদ চাপিয়ে দিয়েছে, তারা রাজনীতি করার নৈতিক অধিকার রাখে না : আখতার

টাইম ট্রাভেল: সত্যিই কি সম্ভব অতীতে ফেরা অথবা ভবিষ্যৎ দেখা?