পরিবহন খাতে বিশৃঙ্খলার চেষ্টায় আ.লীগের দোসররা
২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৫ পিএম | আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৫ পিএম
স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পরিবহন সেক্টর শাজাহান খান, এনায়েত উল্যাহ ও ওসমান আলীর আধিপত্য চলতো। এখন তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক হত্যা মামলা। শাজাহান খান ইতোমধ্যেই গ্রেফতার হয়ে রয়েছেন জেলখানায়। খন্দকার এনায়েত উল্যাহ রয়েছেন বিদেশে ও ওসমান আলীসহ পরিবহন খাতের অনেক নেতা রয়েছেন দেশের ভিতরেই আত্মগোপনে। এরই মধ্যে পরিবহন খাতকে চাঁদামুক্ত ও সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষায় বিআরটিএ ও সরকারের কতিপয় সংস্থাকে সাথে নিয়ে কাজ করছে বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। কিন্তু কতিপয় গণপরিবহনের মালিক নামধারী কিছু ব্যক্তি নতুন কৌশলে পরিবহন খাতকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে হাজী বকুল খান ৩০ নভেম্বর এক তলবী সভা আহ্বান করে। এই সভায় পরিচালক ও রেজিস্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়ন্স, ঢাকা বিভাগীয় শ্রম দপ্তর, শ্রম ভবন বরাবর প্রতিনিধি প্রেরণের জন্য আবেদন করে। অনুরূপ একটি আবেদনপত্রের সাক্ষর জাল করে ২৭ নভেম্বর তারিখে সভা ডেকে মো. মজিবুল হোসেন বাদলের নামে জমা দেন। পরবর্তিতে মো. মজিবুল হোসেন বাদল তার নামে ভূয়া স্বাক্ষরে জমা করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৪ নভেম্বর পরিচালক ও রেজিস্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়ন, ঢাকা বিভাগীয় শ্রম দপ্তর বরাবর এক পত্রের মাধ্যমে মো. মজিবুল হোসেন বাদল জানিয়েছেন, তার নাম ব্যবহার করে ভুয়া স্বাক্ষরে সৈয়দ নজরুল ইসলাম কনভেনশন সেন্টার, বড় বাজার, মিরপুর, ঢাকা এই ঠিকানায় আগামী ২৭ নভেম্বর এক তলবী সভা আহ্বান করা হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বি. জে. (অব.) হাবিবুর রহমান উপস্থিত থাকার কথা উল্লেখ রয়েছে। সভায় প্রতিনিধি চাওয়া হয়। তিনি বলেন উক্ত সভা তিনি আহ্বান করেননি। এই পত্রে স্বাক্ষরও তিনি করেননি। পরিবহন সেক্টরকে অশান্ত করা ও তাকে পরিবহন মালিকদের নিকট হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য কুচুক্রি মহল তাদের স্বার্থে নাম ও ভুয়া স্বাক্ষর করেছে। সেখানে যে তথ্য দেওয়া হয় তার সাথে গাড়ীর নম্বর, মোবাইল নম্বর ও এনআইডি নম্বর সঠিক না। তিনি ওই চিঠিরও প্রতিবাদ জানান। ইতোমধ্যেই মো. মজিবুল হোসেন বাদলের নাম ব্যবহার করে ডাকা সভাটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
কয়েকজন পরিবহন মালিক জানিয়েছেন, সোহরাব হোসেন তিনি আগের সরকারের আমলে খন্দকার এনায়েত উল্লার সাথে পরিবহন মালিক সমিতির নেতা ছিলেন। সক্ষতা ও যোগাযোগ ছিল মিরপুরের এমপি আসলাম সহ অন্যান্য আওয়ামী নেতাদের সাথে। শাজাহান খানের ভাগনে মাহমুদ, মহারাজ, স্বপনসহ কিছু ব্যক্তি ঢাকার পরিবহন সেক্টরকে প্রশ্নবিদ্ধ করার আপচেষ্টা করছে এমনটাই জানালেন পরিবহন নেতারা।
পরিবহন খাতের নিয়ন্ত্রক ছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। সরকারের বাসভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রেও ব্যাপক প্রভাব ছিল শাজাহান খানের। সরকারনির্ধারিত ভাড়া না মানলেও পরিবহন কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারত না সরকার। তাদের কথাই ছিল সড়কে আইন। গত সরকার সড়ক আইন প্রণয়ন করলেও শাজাহান খানদের চাপে আইনের ধারা শিথিল করে। শাজাহান খানের ইশারাতেই কথায় কথায় যান চলাচল বন্ধ রেখে মানুষের ভোগান্তিকে জিম্মি করে দাবি আদায় করত পরিবহন কর্মীরা। হাসিনা সরকারের দেড় দশকের শাসনামলের মধ্যে ১৪ বছরে শুধু সড়ক ও মহাসড়ক প্রকল্পের নির্মাণকাজে ২৯ হাজার থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে ধারণা পেয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। ২০০৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১২ বছরে পরিবহন সেক্টরে ১২ হাজার কোটি টাকা চাঁদাবাজির নামে লুট করেছে শাজাহান খানের লোকজন। এক কথায় শাজাহান খান ছিলেন পরিবহন খাতের মাফিয়া ডন। পরিবহন খাতে অন্যায়ভাবে চাঁদাবাজিকে বৈধতা দিয়েছিলেন শাজাহান খান-ওসমান আলী গ্রুপ। গত ১৬ বছরে পরিবহন খাতের নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় শাজাহান খান ছাড়াও ছিলেন সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী। চাঁদাবাজিকে প্রাতিষ্ঠনিক রূপ দেওয়ার অভিযোগ আছে তাদের বিরদ্ধে।
১১ অক্টোবর শুক্রবার ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নামে পতিত সরকারের সুবিদাভোগী কতিপয় ব্যক্তির ডাকা সংবাদ সম্মেলন জাতীয় প্রেসক্লাবে করতে চাইলে সাধারণ বাস মালিকদের পক্ষ থেকে লোকজন এসে সংবাদ সম্মেলন বন্ধ করে দেয়।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, পরিবহন খাতকে চাঁদামুক্ত ও সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষায় বিআরটিএ ও সরকারের সংষ্লিষ্ট সংস্থাকে সাথে নিয়ে আমরা কাজ করছি। কিন্তু গণপরিবহনের মালিক নামধারী কিছু পতিত সরকারের সুবিদাভোগী দুসকৃতিকারী ব্যক্তি নতুন কৌশলে পরিবহন খাতকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে। অতীতে বাস মালিকদের নানাভাবে জিম্মি করে রাখতেন তারা । তখন সড়কে চাঁদাবাজি কোনোভাবেই ঠেকানো যায়নি। কিছু অসাধু বাস মালিক নেতার সঙ্গে আঁতাত করে পরিবহন খাতকে জিম্মি করে রেখেছিলেন । আমরা চাঁদাবাজি বন্ধ ও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ করছি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে শাহবাগে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিক্ষোভ
ভারতে ইলিশ রফতানি বন্ধ চেয়ে করা রিট খারিজ
চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ আটকের প্রতিক্রিয়ায় শাহবাগে বিক্ষোভ, যান চলাচল বন্ধ
সেন্টমার্টিনে চলবে পর্যটকবাহী জাহাজ
বরগুনায় বিদেশী পিস্তলসহ ২৭ মামলার আসামী জাকির গ্রেপ্তার: গুলিবিদ্ধ-১
শাহবাগে চিন্ময় কৃষ্ণ আটকের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে হামলার অভিযোগ
‘নির্বাচনের ট্রেন চলছে, এমন ধারণা দিতে নতুন কমিশন গঠন করেছে সরকার’
টেকনাফে ৫০ হাজার ইয়াবাসহ ‘মাদক কারবারি’ আটক
শ্রম সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রগতিতে মার্কিন প্রতিনিধিদলের প্রশংসা
যত তাড়াতাড়ি নির্বাচিত সরকার হবে ততই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও দেশের মানুষের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে-নুরুল ইসলাম মণি
পুলিশ শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি হলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারতো : নাহিদ ইসলাম
বাচ্চারা প্রাপ্ত বয়স্ক হলেই হলিউড ছাড়বেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সঙ্গে বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ
হজযাত্রায় বিপর্যয়ের আশঙ্কা
বল হাতে বাংলাদেশের ভালো শুরু
দিনাজপুরের বোচাগঞ্জে ২ সার ব্যবসায়ীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা
কমলো সোনার দাম, ভরি ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা
আইডিবি-বিআইএসইডব্লিউ আইটি স্কলারশিপ ৫৯ তম রাউন্ড ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ব্যাচের ফেয়ার ওয়েল অনুষ্ঠিত
পদ্মা রেলসেতু দিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে মঙ্গলবার
সেনবাগ হুফফাযুল কুরআন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত