ভোট আয়োজনের পর নিজের কাজে ফিরে যাব : প্রধান উপদেষ্টা

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৭ পিএম | আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১৩ পিএম

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নিজের কাজে ফিরে যাবেন বলে জানিয়েছেন অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

 

 

প্রতিবছরের মতো এবারও বর্ষসেরা দেশ নির্বাচন করেছে ‘দ্য ইকোনমিস্ট’। ২০২৪ সালের বর্ষসেরা দেশ হিসেবে এবার বাংলাদেশের নাম ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক এই গণমাধ্যম। এ উপলক্ষে সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়।

 

 

নির্বাচন আয়োজনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পরিকল্পনা জানতে চান উপস্থাপক। জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আসলে আমার চাকরি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমাকে জোর করে এ কাজে আনা হয়েছে। আমি আমার কাজ উপভোগ করছিলাম। এ জন্য প্যারিসে ছিলাম। সেখান থেকে অন্য কিছু করার জন্য আমাকে টেনে আনা হয়েছে।

 

 

তিনি আরও বলেন, আমি আমার নিয়মিত কাজে ফিরে যেতে পারলে খুশি হব। যা আমি সারা জীবন ধরে করেছি এবং তরুণরাও এটিকে ভালোবাসে। সুতরাং আমি আমার সেই দলে বা কার্যক্রমে ফিরে যাব যেটা আমি সারা বিশ্বে তৈরি করেছি।

 

 

সাক্ষাৎকারে বর্তমান বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়েও কথা হয়। জঙ্গিবাদের ঝুঁকি সংক্রান্ত এক প্রশ্নে জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেবে না; এটি আমি আশ্বস্ত করছি। তরুণরা ধর্ম নিয়ে নিরপেক্ষ। তারা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায়। এই তরুণরা পুরো বিশ্ব পরিবর্তন করতে পারে। এটা শুধু এক দেশ বা আরেকটি দেশ পরিবর্তনের বিষয় না। বাংলাদেশ যা করেছে এটি একটি উদাহরণ যে তরুণরা কত শক্তিশালী। আমাদের উচিত তাদের প্রতি মনোযোগ দেওয়া। বিশেষ করে তরুণীদের ওপর। তারা বাংলাদেশের অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের উচিত তরুণ-তরুণীদের ওপর মনোযোগ দেওয়া যাতে তারা নিজেদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে। তাদের সুযোগ এসেছে। তাদের সক্ষমতাও রয়েছে। অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তিন তরুণ আমার ক্যাবিনেটে আছেন। তারা দুর্দান্ত কাজ করছে। তারা সক্ষম। এই তরুণরা গত শতাব্দীর তরুণ নয়। তারা এই শতাব্দীর তরুণ। তারা অন্যান্যদের মতোই সক্ষম।

 

 

প্রসঙ্গত, বর্ষসেরা দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নাম ঘোষণার কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক এই গণমাধ্যম বলেছে- সবচেয়ে ধনী, সুখী বা নৈতিকভাবে শ্রেষ্ঠ স্থান অধিকারী কি না, সেই হিসাবে নয়; সেরা দেশ বেছে নেওয়া হয় আগের ১২ মাসে সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে কি না, সেই বিচারে।

 

 

এবারের সেরা দেশ বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত তালিকায় ছিল পাঁচটি দেশ। বাংলাদেশ ছাড়াও সিরিয়া, আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পোল্যান্ড রয়েছে এই তালিকায়। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকেই বেছে নেওয়া হয়।

 

 

বাংলাদেশ সম্পর্কে ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমাদের এবারের বিজয়ী বাংলাদেশ, যারা এক স্বৈরশাসককে উৎখাত করেছে। আগস্টে ছাত্রদের নেতৃত্বে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়, যিনি সাড়ে ১৭ কোটি জনসংখ্যার দেশটি ১৫ বছর ধরে শাসন করছিলেন। দেশের স্বাধীনতার হিরোর এক কন্যা হিসেবে তিনি একসময় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি দমন শুরু করেন, নির্বাচনে কারচুপি করেন, বিরোধীদের কারাগারে পাঠান এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেন। তার শাসনামলে বিশাল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়।

 

 

তারা আরও বলেছে, বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলের সময় প্রতিশোধমূলক সহিংসতার ইতিহাস রয়েছে। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সেখানে রয়েছে একটি অস্থায়ী সরকার, যা ছাত্র, সেনাবাহিনী, ব্যবসায়ী ও নাগরিক সমাজের সমর্থন পেয়েছে। এই সরকার শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে এবং অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করেছে। ২০২৫ সালে এই সরকারকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করতে হবে এবং কবে নাগাদ নির্বাচন আয়োজন করা হবে তা নির্ধারণ করতে হবে। এর আগে নিশ্চিত করতে হবে যে দেশটির আদালত নিরপেক্ষভাবে চলছে এবং বিরোধী দলগুলোকে সংগঠিত হওয়ার সময় দেওয়া হয়েছে। এর কোনোটিই সহজ হবে না।

 


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

চাঁদাবাজের তালিকা হচ্ছে, দুই-তিনদিনের মধ্যে গ্রেপ্তার শুরু : ডিএমপি কমিশনার
সড়কের নৈরাজ্যে রাজনৈতিক প্রভাব জড়িত : নাহিদ ইসলাম
১৫ বাংলাদেশি নারী-শিশুকে ফেরত দিয়েছে ভারত
হাসান আরিফের প্রতি প্রধান বিচারপতির শ্রদ্ধা
হাইকোর্টে উপদেষ্টা হাসান আরিফের জানাজা অনুষ্ঠিত
আরও

আরও পড়ুন

নাটোরে মহাশ্মশান থেকে হাত-পা বাঁধা ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার

নাটোরে মহাশ্মশান থেকে হাত-পা বাঁধা ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার

অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে ভারতের নতুন কৌশল, ডিটেনশন ক্যাম্প

অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে ভারতের নতুন কৌশল, ডিটেনশন ক্যাম্প

কেরানীগঞ্জে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণের জন্য  অপহৃত  উদ্ধার : অপহরণকারী  গ্রেফতার

কেরানীগঞ্জে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণের জন্য  অপহৃত  উদ্ধার : অপহরণকারী  গ্রেফতার

চাঁদাবাজের তালিকা হচ্ছে, দুই-তিনদিনের মধ্যে গ্রেপ্তার শুরু : ডিএমপি কমিশনার

চাঁদাবাজের তালিকা হচ্ছে, দুই-তিনদিনের মধ্যে গ্রেপ্তার শুরু : ডিএমপি কমিশনার

ঝিনাইদহে ৩ দিন ব্যাপী বেসিক জার্নালিজম বিষয়ক প্রশিক্ষণ শুরু

ঝিনাইদহে ৩ দিন ব্যাপী বেসিক জার্নালিজম বিষয়ক প্রশিক্ষণ শুরু

গৌরনদীতে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ

গৌরনদীতে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ

সাদ্ পন্থীদের নিষিদ্ধ করার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত

সাদ্ পন্থীদের নিষিদ্ধ করার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত

বেক্সিমকোর শ্রমিকদের সাথে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

বেক্সিমকোর শ্রমিকদের সাথে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

দিল্লিতে অবৈধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করতে স্কুলগুলিকে নির্দেশ

দিল্লিতে অবৈধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করতে স্কুলগুলিকে নির্দেশ

টাঙ্গাইলে বাসের চাপায় সিএনজির চালকসহ নিহত ২

টাঙ্গাইলে বাসের চাপায় সিএনজির চালকসহ নিহত ২

প্রিমিয়ার ব্যাংকের অর্থায়নে ছাগলনাইয়ায় প্রকাশ্যে কৃষি ও পল্লি ঋণ বিতরণ

প্রিমিয়ার ব্যাংকের অর্থায়নে ছাগলনাইয়ায় প্রকাশ্যে কৃষি ও পল্লি ঋণ বিতরণ

শেষ মুহূর্তে বিল পাশ করে 'শাটডাউন' এড়ালো যুক্তরাষ্ট্র

শেষ মুহূর্তে বিল পাশ করে 'শাটডাউন' এড়ালো যুক্তরাষ্ট্র

সড়কের নৈরাজ্যে রাজনৈতিক প্রভাব জড়িত : নাহিদ ইসলাম

সড়কের নৈরাজ্যে রাজনৈতিক প্রভাব জড়িত : নাহিদ ইসলাম

পাকিস্তানে রাজনৈতিক সংকট নিরূপণে উদ্যোগ

পাকিস্তানে রাজনৈতিক সংকট নিরূপণে উদ্যোগ

পতনের দ্বারপ্রান্তে ট্রুডো সরকার

পতনের দ্বারপ্রান্তে ট্রুডো সরকার

রাশিয়া কিয়েভের ছয় বিদেশি দূতাবাসে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল

রাশিয়া কিয়েভের ছয় বিদেশি দূতাবাসে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল

লঘুচাপ নিম্নচাপে পরিণত : উপকূলীয় এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি

লঘুচাপ নিম্নচাপে পরিণত : উপকূলীয় এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি

১৫ বাংলাদেশি নারী-শিশুকে ফেরত দিয়েছে ভারত

১৫ বাংলাদেশি নারী-শিশুকে ফেরত দিয়েছে ভারত

ভেঙ্গে পড়লো উত্তরা আব্দুল্লাহপুরের অরক্ষিত বেইলি সেতু

ভেঙ্গে পড়লো উত্তরা আব্দুল্লাহপুরের অরক্ষিত বেইলি সেতু

হাসান আরিফের প্রতি প্রধান বিচারপতির শ্রদ্ধা

হাসান আরিফের প্রতি প্রধান বিচারপতির শ্রদ্ধা