কুষ্টিয়ায় জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সদর শাখার আয়োজনে বিশেষ কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটায় বটতৈল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির সদস্য মো. বশিরুল আলম চাঁদ’র সভাপতিত্বে উদ্বোধক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ এবং প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক সাংসদ ও কেন্দ্রীয় বিএনপির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন। অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির সদস্য ও সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. জাহিদুল ইসলাম বিপ্লবের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার।
দীর্ঘ দিন পর কুষ্টিয়া সদর উপজেলা বিএনপির বিশেষ কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হওয়ায় দলীয় নেতা কর্মিদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা যায়। সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড থেকে দলে দলে নেতা কর্মিরা বিভিন্ন স্লোগানে স্লোগানে সভার স্থলে এসে হাজির হয়। সভা শুরু হওয়ার পূর্বেই দলীয় নেতা কর্মিদের উপস্থিতিতে সভার স্থল পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। প্রধান বক্তার বক্তব্যে প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, বিগত ১৭ বছর আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করে স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার পতন ঘটিয়েছি। আমরা বিজয় অর্জন করেছি, আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি। আমরা ভোটের অধিকার ফিরিয়ে এনেছি। শুধু তাই নয়, আমরা দলের মধ্যে নেতা নির্বাচনের অধিকার ফিরিয়ে এনেছি। আজকে আমরা আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি, গঠনতন্ত্রের আলোকে সম্পূর্ণ গণতান্ত্রীকভাবে দল পূণঃগঠনের বার্তা নিয়ে। আজকে থেকে আপনাদের নেতা হওয়ার জন্য কোন নেতার দারস্থ হওয়া লাগবে না। বরং নেতা হওয়ার জন্য কর্মিদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট সংগ্রহ করতে হবে।
আপনারা জানেন আমাদের গঠনতন্ত্রে বলা আছে প্রতিটা ওয়ার্ডে একশত জন ভোটার সংগ্রহ করতে হবে। কোন কোন ওয়ার্ডে ১৫০ থেকে ৩০০ জনও হতে পারে। আমরা যাচাই বাচাই করে সবার সম্মতি নিয়ে নেতা নির্বাচন করা হবে। প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার উপস্থিত নেতা কর্মিদের উদ্দেশ্যে বলেন, সব ভেদাভেদ ভূলে দলকে ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী করতে হবে। খুব বেশী দিন আর হাতে নেই। হয়তো ২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে আমরা ধানের শীষের পক্ষ থেকে প্রার্থীকে তৈরি করতে চাই, তাহলে অবশ্যই আমাদের মধ্যে ইস্পাত কঠিন ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। এই ঐক্যের কোন বিকল্প নাই। উদ্বোধক হিসাবে বক্তব্য প্রদানকালে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ চাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনায় কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বিএনপির বিদ্যমান কমিটি বিলুপ্তি ঘোষনা করছি। সেই সাথে আপনাদের আশ্বাস্ত করছি,
চুলচেরা বিশ্লেষন করে অতি দ্রুত আপনাদের একটি গ্রহনযোগ্য আহ্বায়ক কমিটি উপহার দিবো। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক সাংসদ ও কেন্দ্রীয় বিএনপির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন বলেন, শেখ হাসিনা হলো খুনি ও হিটলার। সে আমাদের পুলিশ বাহিনীকে নষ্ট করেছে। শেখ হাসিনা সমস্ত নির্বাচন ব্যবস্থাকে নষ্ট করেছে। সে শিক্ষা সহ সব কিছু নষ্ট করেছে। দলীয় নেতা কর্মিদের উদ্দেশ্যে অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন বলেন, আমাদের মধ্যে দুইটি জিনিসের লোভ আছে। একটা হলো ক্ষমতার লোভ, আর একটি হলো অর্থের লোভ। ক্ষমতার লোভ হলো এমন জিনিস যে আমার যোগ্যতা থাক বা না থাক, আমাদের চিয়ার পেতেই হবে, আমাকে গদি ধরতেই হবে। সেই গদির উপর ভিত্তি করে আমাকে লাখ লাখ টাকা রোজগার করতে হবে। নৈতিকতার নষ্ট হলো জাতির সবচেয়ে খারাপ দিক। এখান থেকে উঠে আসতে না পারলে আমাদের ভবিষ্যত কিন্তু ভালো হবে না।