ভারতীয় ৮ ধরনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালো ইনসাফ কায়েমকারী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা
০১ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০২ এএম | আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩৭ এএম
আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশের উপরে ভারত সবসময়ই তার হিংসাত্নক আগ্রাসন চালানোর অপচেষ্টা করেই যাচ্ছে। ভারতের আগ্রাসী ভূমিকা দেথে মনে হয় ভারত বাংলাদেশকে তার অঙ্গরাজ্য করতে চাচ্ছে। আমরা বাঙালী মুসলমান। আমরা কখনই কারো কাছে মাথা নত করি না। আর ভারতকে কখনই আমরা শতকরা ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত বাংলাদেশে আগ্রাসন চালাতে দিবোনা। ভারতের দাদাগিরি দেখার জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়নি। ভারতের উচিত অবিলম্বে বাংলাদেশবিরোধী অপতৎপরতা ও অপপ্রচার বন্ধ করা। ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশন, উপহাইকমিশনসহ সব কূটনৈতিক স্থাপনায় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা। ভারত মুসলমানদের ঈমানকে উত্তেজিত করার জন্য সবসময়ই ইসলাম ও মুসলিম বিরোধী অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।
ইনসাফ কায়েমকারী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা ভারতের ৮ ধরণের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আজ মঙ্গলবার বা’দ আছর রাজধানীর মালিবাগ মোড়ে ফালইয়াফরাহু চত্ত্বরে এক সাংবাদিক সমাবেশে প্রতিবাদ জানিয়েছে। প্রতিবাদের বিষয়গুলো হলো:
১. ভারতে কথিত ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ বই বিক্রি বন্ধ করতে হবে। মুসলিম বিশ্বের কঠোর আপত্তির মুখে নাস্তিক কাট্টা কাফির অপন্যাসিক সালমান রুশদির ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ ভারত ও বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি দেশে নিষিদ্ধ করা হয়। ১৯৮৮ সালে তৎকালীন রাজীব সরকার ভারতে এই বই বিক্রি নিষিদ্ধ করে। তবে এখন আবার বইটি কিছু বইয়ের দোকানে পাওয়া যাচ্ছে। এটি মুসলমানদের ঈমানী অনুভূতিকে কঠিনভাবে আঘাত করেছে।
কুখ্যাত যোগী রামগিরি আমাদের প্রাণের চেয়ে প্রিয় নবীজী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে মানহানি করেছিলো। সারা পৃথিবীতে এর প্রতিবাদ হয়েছে। কিন্তু ভারতের মোদী সরকার এখনও তার শাস্তি দেয়নি। ভারতকে অবশ্যই অতি দ্রুত স্যাটানিক ভার্সেস বই বিক্রি বন্ধ করতে হবে এবং কুলাঙ্গার রামগিরিকে শাস্তি দিতে হবে। নইলে বাংলাদশের মুসলিম জনতা অবশ্যই ভারতের এই নিন্দিত কাজের সমুচিত জবাব দিবে ইনশা আল্লাহ।
২. ভারতে মসজিদ, মাদ্রাসা ও মাজার শরীফ ভাঙ্গা বন্ধ করতে হবে। ভারতে কল্প কাহিনীর অজুহাতে কথিত দেব দেবীর মন্দির এর ভূয়া অজুহাতে প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে মসজিদ, মাদরাসা, মাজার শরীফ ভাঙ্গছে উগ্র হিন্দু জালিমরা। বাবরি মসজিদ, জ্ঞানবাপী মসজিদ, সম্ভল মসজিদের মত অনেক ঐতিহাসিক মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়েছে। ভারতকে অবশ্যই এই সব অপকর্ম বন্ধ করতে হবে এবং যেসব মসজিদ-মাদরাসা-মাজার শরীফ ভেঙেছে সেগুলো পুননির্মাণ করে মুসলমানদেরকে বুঝিয়ে দিতে হবে। নইলে হিন্দুদের মন্দিরগুলোও হুমকির মুখে থাকবে।
৩. বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইনে প্রকাশিত ‘উর্দিতে বাঙালি গণহত্যার রক্তের ছিটে! ৫৩ বছর পর বাংলাদেশে ফিরছে সেই পরাজিত পাক ফৌজ’ শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পেশাদারিত্ব, নিরপেক্ষতা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার নীতিতে অটল। নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিভিন্ন দেশের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখে এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ছাত্র বিনিময় ও প্রশিক্ষণসহ বিবিধ সহযোগিতামূলক কর্মসূচি পরিচালনা করে। এছাড়াও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তার চাহিদার ভিত্তিতে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রয়োজনীয় গোলাবারুদ সংগ্রহ করে। এটা বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর পছন্দের স্বাধীনতা। ভারতকে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী নিয়ে অপপ্রচার বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশ সেনাবহিনীর অব্যন্তরীন বিষয়ে নাক গলানোর অপচেষ্টা ভারতকে বাদ দিতে হবে।
৪. বাংলাদেশ সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। সীমান্ত হত্যা বন্ধে ভারত বারবার আশ্বাস দিলেও সেটার বাস্তবায়ন হয়নি। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পরিসংখ্যান বলছে, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বিএসএফের গুলিতে ও নির্যাতনে অন্তত ৬০৭ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া অধিকার নামের একটি মানবাধিকার সংস্থার মতে, ২০০৯ থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বিএসএফ সদস্যদের হাতে অন্তত ৫৮২ বাংলাদেশি নিহত এবং ৭৬১ জন আহত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন অনুযায়ী শূন্যরেখা থেকে দেড় শ গজের মধ্যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যায় না। লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম সীমান্তে আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে বিএসএফের বিরুদ্ধে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের অভিযোগ উঠলে বিজিবি বাধা দেয়। ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে ১৩ জন বাংলাদেশি নাগরিককে ভারতের অভ্যন্তরে বিএসএফ গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ভারত সীমান্তে কুপিয়ে ও পিটুনিতে তিন বাংলাদেশি যুবককে শহীদ করা হয়েছে। ভারতে এই সব সন্ত্রাসী কাজ বন্ধ করতে হবে। নইলে বাংলাদেশকেও তার পাল্টা জবাব দিতে হবে।
৫. বাংলাদেশ নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ায় অপ্রচার বন্ধ করো। ভারত সবসময়
বাংলাদেশকে নিয়ে মিডিয়ায় ভুল তথ্য দিয়ে যাচ্ছে। ভারতের এই মিডিয়া সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে।
৬. বাংলাদেশের অপরাধী তসলিমাকে গ্রেফতার করে ফেরত দিতে হবে। সে বাংলাদেশের দাগী এবং দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী। তসলিমা নাসরিনকে অবশ্যই বাংলাদেশের কাছে ফেরত দিতে হবে এবং অবশ্যই অবশ্যই অবশ্যই তাকে ফাঁসি দিতে হবে।
৭. ভারত থেকে সর্বপ্রকার আমদানি বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশের সব কিছু বাংলাদেশেই উৎপদিত হয়ে থাকে। তাই ভারত তেকে কোন কিছু আমদানির প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশে পর্যাপ্ত চাল উৎপাদিত হওয়ার পরও ভারত তথেকে চাল আমদানি করা হচ্ছে দেশের টাকা ভারতে পাচারের জন্য। জনগণকে ধোকা দিয়ে এই ধরণের কোনো কিছুই ভারত বা অন্য কোনো দেশ থেকে আমদানির প্রয়োজন নেই।
৮. ভারতের গরু জবাইয়ের উপর সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে। আসামে বা অন্য কোন স্থানে গরু জবাই এবং গরুর গোস্ত খাওয়ার উপরে কোনো প্রকার নিষেধাজ্ঞা রাখা যাবেনা। এটা মুসলমানদের দ্বীনী অধিকার। গরুর গোস্ত খাওয়া এবং গরু কুরবানী করা ইসলামের শেয়ার বা নিদর্শন। ভারতের আসামের বিধানসভায় ‘অসম ক্যাটল প্রিজারভেশন বিল ২০২১’ বা গো-সংরক্ষণ বিল পাস হয়েছে মুসলমানদের সঙ্গে সংঘাত বৃদ্ধির জন্য। গোটা বিশ্বে দ্বিতীয় গরুর গোস্ত রফতানিকারক দেশ হচ্ছে ভারত। অথচ গরুর গোস্ত খাওয়ার মিথ্যা অজুহাতে বারতে মুসলমানকে পিটিয়ে শহীদ করা হয়।
ভারতকে অবশ্যই গরুর গোস্ত খাওয়ার জন্য মুসলমানদের প্রতি এই বৈষম্যমূলক আচরণ পরিহার করতে হবে। মুসলমানদেরকে গরু কুরবানী করা এবং গরুর গোস্ত খাওয়ার অধিকার দিতে হবে। নতুবা গরু কুরবানীকে কেন্দ্র করেই ভারতে কেঠিন গৃহযুদ্ধের সূচনা হবে এবং এতে ভারতের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ।
প্রতিবাদ সমাবেশে ইনসাফ কায়েমকারী ছাত্র- শ্রমিক-জনতার শতাধিক কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
আওয়ামী ফ্যাসিস্ট 'ক্র্যাক প্লাটুন হ্যাকার' গ্রুপের ছবি পোস্ট করলেন সামী
শ্রীপুর স্বৈরাচার সরকারের বুলেটে ক্ষত-বিক্ষত শরীর নিয়ে বিছানায় কাঁতরাচ্ছে বাপ্পি
ডায়াবেটিস রোগীদের নিরাপদে রোজা রাখার উপায় জানালো এসিইডিবি
তেহরিক-ই তালেবানকে নির্মূল করার এখনই সময় : শেহবাজ শরীফ
বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের (৩৫তম ব্যাচ) কমিটি নির্বাচন
২৪ ঘন্টায়ও চিহ্নিত হয়নি সীতাকুণ্ডে বিএনপি নেতার হত্যাকারীরা, হয়নি মামলাও
৫০ লক্ষ টাকার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করলেন ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ নেতৃবৃন্দ
শার্শায় হারিয়ে যেতে বসেছে খেজুর রসের ঐতিহ্য
শিবচরে বিয়ের প্রলোভনে প্রেমিকের ধর্ষন: পরে বিয়ে না করে প্রতারনা করায় প্রেমিকার আত্বহত্যা
ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলা চলবে আদানির বিরুদ্ধে
বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া বাসীর ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যাবো: ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল-মামুন
শীতে স্থবির কুমিল্লার জনজীবন, ঘন কুয়াশার সঙ্গে বইছে ঠান্ডা বাতাস
শাপলার ‘গণহত্যা’ তদন্ত কমিশন সময়ের দাবি
ফের সন্তানহারা ওরকা তিমি, পানির মধ্য দিয়ে ঠেলে নিয়ে চলেছে মৃত শাবককে
পাকিস্তানের আমন্ত্রণ গ্রহণ করলেন ড. ইউনূস
নড়াইলে নারী ইউপি মেম্বারকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যায় দুজন গ্রেফতার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অনুষ্ঠিত হল হাফ ম্যারাথন
সিলেট সীমান্তে ১ বছরে ৭ বাংলাদেশিকে হত্যা
পাঠ্যবইয়ে হান্নান-সেজানের সাহসিকতার গল্প
নির্বাচন সংস্কার কমিশনের মেয়াদ ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে