একীভূত হয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত গণঅধিকার পরিষদের

Daily Inqilab অনলা্ইন ডেস্ক

০১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:২০ পিএম | আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৪৭ পিএম

২০১৮ সালের কোটা আন্দোলন থেকে গড়ে ওঠা রাজনৈতিক দল গণঅধিকার পরিষদ নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। এবার সেই বিভেদ ভুলে এক হলো দুই গ্রুপ। মঙ্গলবার জিওপি দলীয় কার্যালয় আলরাজি কমপ্লেক্সে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছেন দুই গ্রুপের নেতারা।

 

সংবাদ সম্মেলনে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য রাখেন নেতারা। এসময় নতুন বাংলাদেশ গঠনে অতীতের সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে একীভূত হয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। বক্তব্যে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, বৃহত্তর স্বার্থে সব ব্যবধান ভুলে গণঅধিকার পরিষদকে এক করা হয়েছে। দু’একজন বাইরে থাকতে পারে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এরা সবাই যুক্ত হবেন আশা করি।

 

৭২ এর সংবিধান বাতিলের কোনো প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে নুর বলেন, বিভিন্ন সময় সংবিধান ১৭ বার সংশোধন করা হয়েছে। এটা বাতিলের প্রয়োজন নেই। বরং সবার সঙ্গে আলোচনা করে সংশোধন করা যায়। এই জাতি একবারই স্বাধীন হয়। ৭১ এর সঙ্গে ২৪ এর তুলনা চলে না। কোটা আন্দোলন ও জুলাই আন্দোলনে আহত সবাইকে সরকারের সার্বিক সহযোগিতা করতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে সরকারের নানা দুর্বলতা লক্ষ করছি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এখনও উন্নতি হয়নি। আওয়ামী হাইকমান্ডের লোকজন পালিয়ে যাচ্ছে, সচিবালয়ে আগুন আমাদের হতাশ করছে। শিক্ষার্থীরা একটি ঘোষণাপত্রের উদ্যোগ নিয়েছিল। প্রধান উপদেষ্টা সেটিকে সার্বজনীন করার উদ্যোগ নিয়ে জাতিকে একটি বিভাজন থেকে রক্ষা করেছেন। আগামীর নতুন বাংলাদেশ গঠনে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই। এই পরিস্থিতিতে যেকোনো হঠকারি সিদ্ধান্ত দেশকে পিছনে নিয়ে যাবে। দেশ ও জাতিকে রক্ষায় ঐক্য ও সংহতির ভিত্তিতেই দেশ চালাতে হবে।

২০১৮ সালের কোটা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ফারুক হাসান বলেন, গণঅধিকার পরিষদ তরুণদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। মাঝখানে কিছু মতপার্থক্যের কারণে গণঅধিকার পরিষদ আলাদাভাবে পথ চলতে শুরু করে। কিন্তু ২০২৪ সালের বিপ্লবে গণঅধিকার পরিষদের উভয়ে রাজপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তাই দেশ ও জাতির প্রয়োজনে গণঅধিকার পরিষদের উভয় নেতারা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার তাগিদ অনুভব করার জায়গা থেকে আজকে থেকে গণঅধিকার পরিষদ একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে গণঅধিকার পরিষদ আজকে থেকে একটিই যার ভিত্তি কোটা আন্দোলন। ফারুক হাসানের নেতৃত্বে সংবাদ সম্মেলনে গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ, নির্বাহী কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

 

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে আমরা রাজপথে ছিলাম। একসঙ্গে পথ চলতে গিয়ে আমাদের মতপার্থক্য হয়েছে, সেই মতপার্থক্যের আজ অবসান ঘটতে শুরু হয়েছে। জনগণের কাঙ্ক্ষিত নতুন বাংলাদেশ গঠনে সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে আমরা অতীতের ন্যায় একীভূত হয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি যে, তিনি জাতিকে আরেকটি বিভাজনের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র সব দল, সংগঠন ও অংশীজনদের নিয়ে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে করতে হবে। কারণ, এই গণঅভ্যুত্থানের মালিক এই দেশের ১৮ কোটি জনগণ। জনগণকে বাদ দিয়ে এই দেশে আর কোরো রাজনীতি হবে না।

 

দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন বলেন, ৪৩তম বিসিএস বাদ পড়াদের গেজেট ভুক্ত করতে হবে। শেখ হাসিনার সময়ে রাজনৈতিক পরিচয়ে বিএনপি জামাত করার কারণে অনেকের গেজেট আটকানো হতো, ঠিক একই কায়দায় এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলেও আটকানো হচ্ছে। যা খুবই দুঃখজনক। সরকারি চাকরিতে পুলিশ ভেরিফিকেশন পুরোপুরি বাদ দেওয়া দরকার। আমরা দাবি জানাচ্ছি নিদিষ্ট অভিযোগ ব্যতীত কারো গেজেট যেন না আটকানো হয়। ৪৩ বিসিএস থেকে বাদ পড়া ১৬৮ জনকে গেজেট ভুক্ত না করা হলে বাদ পড়া শিক্ষার্থীদের পক্ষে যদি রাজপথে নামতে হয় সেটিও আমরা করবো। বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনই ছিল কোটা আন্দোলনের মূল স্পিরিট সেখানে কোনো অন্যায় বৈষম্য মেনে নেওয়া হবে না।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

প্রবীণ শ্রমিক নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সহিদুল্লাহ চৌধুরী মারা গেছেন
হাসিনাকে নিয়ে হাটে হাঁড়ি ভাঙলেন সোহেল তাজ
সংস্কার এবং নির্বাচন নিয়ে ঝগড়া বন্ধ করুন: মজিবুর রহমান মঞ্জু
নির্বাচন সংস্কার কমিশনের মেয়াদ ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে
পাঠ্যবইয়ে হান্নান-সেজানের সাহসিকতার গল্প
আরও

আরও পড়ুন

মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জে গণপিটুনিতে ডাকাত নিহত

মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জে গণপিটুনিতে ডাকাত নিহত

গ্রিনল্যান্ডের স্বাধীনতার আহ্বান, ডেনমার্ক থেকে মুক্তি চায় প্রধানমন্ত্রী মিউতে এগেদে

গ্রিনল্যান্ডের স্বাধীনতার আহ্বান, ডেনমার্ক থেকে মুক্তি চায় প্রধানমন্ত্রী মিউতে এগেদে

কিশোরগঞ্জে শীতের বাহারি পিঠা বিক্রির ধুম...

কিশোরগঞ্জে শীতের বাহারি পিঠা বিক্রির ধুম...

বিদায় বেলায় ইরানের পরমানু স্থাপনায় হামলার খায়েস বাইডেনের

বিদায় বেলায় ইরানের পরমানু স্থাপনায় হামলার খায়েস বাইডেনের

‘এইচএমপিভি’ এশিয়ায় নতুন ভাইরাসের আতঙ্ক

‘এইচএমপিভি’ এশিয়ায় নতুন ভাইরাসের আতঙ্ক

বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে হামলা : নিউ অরলিন্স সফরে যাচ্ছেন বাইডেন

বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে হামলা : নিউ অরলিন্স সফরে যাচ্ছেন বাইডেন

বিয়ে করেছেন তাহসান খান, নতুন বছরের সেরা চমক

বিয়ে করেছেন তাহসান খান, নতুন বছরের সেরা চমক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প–সমর্থিত মাইক জনসন স্পিকার পদে পুনরায় নির্বাচিত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প–সমর্থিত মাইক জনসন স্পিকার পদে পুনরায় নির্বাচিত

ঢাকায় সেনাবাহিনীর অভিযান, ১৯ চাঁদাবাজ-ছিনতাইকারী গ্রেফতার

ঢাকায় সেনাবাহিনীর অভিযান, ১৯ চাঁদাবাজ-ছিনতাইকারী গ্রেফতার

ঢাকার বাতাস আজও ‘অস্বাস্থ্যকর’

ঢাকার বাতাস আজও ‘অস্বাস্থ্যকর’

সিরিয়ায় রুশ সামরিক ঘাঁটি নিয়ে জার্মানিকে রাশিয়ার হুঁশিয়ারি

সিরিয়ায় রুশ সামরিক ঘাঁটি নিয়ে জার্মানিকে রাশিয়ার হুঁশিয়ারি

আজ ঢাকায় উঁকি দিতে পারে সূর্য, বাড়তে পারে তাপমাত্রা

আজ ঢাকায় উঁকি দিতে পারে সূর্য, বাড়তে পারে তাপমাত্রা

চলতি সপ্তাহেই মধ্যপ্রাচ্যের ৩ দেশ সফরে যাচ্ছেন সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী

চলতি সপ্তাহেই মধ্যপ্রাচ্যের ৩ দেশ সফরে যাচ্ছেন সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সউদী আরবের সিরিয়ার পুনর্গঠনে সমর্থন,পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি

সউদী আরবের সিরিয়ার পুনর্গঠনে সমর্থন,পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি

কাজাখস্তানে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা, দুমড়েমুচড়ে গেল প্রায় ১০০ গাড়ি

কাজাখস্তানে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা, দুমড়েমুচড়ে গেল প্রায় ১০০ গাড়ি

ইয়েমেনে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ভারতীয় নার্স নিমিষা প্রিয়ার শেষ আশা ক্ষমা

ইয়েমেনে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ভারতীয় নার্স নিমিষা প্রিয়ার শেষ আশা ক্ষমা

দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় শতাধিক এতিম শিশুকে ইউএনওর কম্বল উপহার

দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় শতাধিক এতিম শিশুকে ইউএনওর কম্বল উপহার

কানাডার সাংবাদিকতায় গুগলের বড় আর্থিক সহযোগিতা

কানাডার সাংবাদিকতায় গুগলের বড় আর্থিক সহযোগিতা

‘আল্লাহ মানব জাতিকে সম্মান দিয়ে সৃষ্টি করেছেন’

‘আল্লাহ মানব জাতিকে সম্মান দিয়ে সৃষ্টি করেছেন’

ট্রাম্পের 'হাশমানি' মামলার  শাস্তি ঘোষণা ১০ জানুয়ারি  , কারাদণ্ডের ইঙ্গিত নেই

ট্রাম্পের 'হাশমানি' মামলার শাস্তি ঘোষণা ১০ জানুয়ারি , কারাদণ্ডের ইঙ্গিত নেই