শেরাটন ভবনের মালিকানা বিতর্কের অবসান, হিস্যা বুঝে নিল ডিএনসিসি
১২ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫৩ এএম | আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১৬ এএম

ঢাকার অভিজাত বনানী এলাকায় শেরাটন হোটেল ভবনের মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা অবশেষে কেটে গেছে। সরকারি মালিকানাধীন জমিতে নির্মিত এই ভবনটি নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বোরাক রিয়েল এস্টেটের মধ্যে চলমান বিরোধের নিষ্পত্তি হয়েছে চূড়ান্তভাবে। এর ফলে ডিএনসিসি ফিরে পেয়েছে তাদের ন্যায্য হিস্যা, আর দেশের রাজস্ব খাত ও পর্যটন খাত পেয়েছে নতুন গতি।
এই বিরোধের শুরু হয় অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন আমলে, যখন সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন ৬০ কাঠা জমিতে বোরাক রিয়েল এস্টেট ‘বনানী সুপার মার্কেট কাম হাউজিং কমপ্লেক্স’ নির্মাণের অনুমতি পায়। চুক্তি অনুযায়ী, সেখানে ১৪ তলা ভবন নির্মিত হবে এবং এর ৩০ শতাংশ থাকবে সিটি করপোরেশনের অধীনে। কিন্তু বাস্তবে নির্মাণ হয় ২৮ তলা ভবন, যার পুরো নিয়ন্ত্রণ নেয় বোরাক। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হলেও, সিটি করপোরেশনকে তাদের প্রাপ্য অংশ বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। সংসদীয় কমিটিতেও এই অসম চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়, যা বছর বছর ধরে ঝুলে ছিল।
এই জটিলতা নিরসনে ২০২২ সালে ডিএনসিসি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। বোরাক তখন প্রস্তাব দেয় যে ১৫ থেকে ২৮ তলা পর্যন্ত ভবনের ৪০ শতাংশ অংশ তারা ডিএনসিসিকে দেবে। ডিএনসিসির বোর্ড সভায় এই প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। এরপরও রাজনৈতিক কারণে চূড়ান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন বিলম্বিত হয়। অবশেষে ২০২৫ সালের এপ্রিলে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে নগর ভবনে এক আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান এবং বোরাকের প্রধান নির্বাহী গাজী মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন এই দখল হস্তান্তরনামায় স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ গর্বের সঙ্গে বলেন, "এটা খামখেয়ালি করে অন্যরা করতে পারেনি, আমি পেরেছি। রাষ্ট্রের অধিকার আদায় করাই আমার দায়িত্ব।"
এই দীর্ঘস্থায়ী জটিলতা শুধু ডিএনসিসির রাজস্ব ক্ষতির কারণ ছিল না, একই সঙ্গে হোটেল শেরাটন পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান বোরাক রিয়েল এস্টেটও ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছিল। পর্যটকদের জন্য নিরাপদ এবং আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন আশ্রয়স্থল হওয়া সত্ত্বেও ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা ও মালিকানা সংকটের কারণে বিদেশি পর্যটক ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা হারিয়েছিল হোটেলটি। চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার মাধ্যমে দুই পক্ষই যেমন লাভবান হবে, তেমনি দেশের পর্যটন খাতও ফিরে পাবে গতি ও স্থিতি।
এই ঘটনার পরিসমাপ্তি শুধু একটি নির্মাণ প্রকল্পের হিস্যা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধান নয়—এটি রাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষা, আইনি প্রক্রিয়ার সুষ্ঠু প্রয়োগ, এবং নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে ভবিষ্যতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বজায় থাকলে এমন জটিলতা এড়ানো সম্ভব হবে। জনস্বার্থে নেয়া এ ধরনের দৃঢ় পদক্ষেপই হতে পারে সুশাসনের নতুন মানদণ্ড।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

পাঞ্জাবে ম্যাক্সওয়েলের বদলি ওয়েন

দৈনিক ইনকিলাব এ সংবাদ প্রকাশের পর দেবীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতে আমিরের পদ স্থগিত

আরাকানকে ‘মানবিক করিডোর’ দেওয়া চরম ঝুঁকিপূর্ণ : বাংলাদেশ ন্যাপ

ভারত হতে অবৈধ অনুপ্রবেশকালে ১০ বাংলাদেশী নাগরিক আটক করেছে চুয়াডাঙ্গা বিজিবি সদস্যরা

নারীর ক্ষমতায়নে শহীদ জিয়া ও বেগম খালেদার অবদান অবিস্মরণীয় : খন্দকার মুক্তাদির

কমলনগরে খাল দখলমুক্ত করতে কৃষকদের মানববন্ধন

প্রাথমিক শিক্ষার উন্নতি না ঘটলে ভবিষ্যৎ কখনো ভালো হবে না : প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা

কথা বললেই আয়না ঘরে পাঠিয়ে দেয়া হতো- মেজর(অব:) ডা: মিনার

চলতি বছর কোরবানির জন্য পশু আমদানি করা হবে না: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

সালথায় বাড়িঘর ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের মামলায় বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার

শেষ হলো ফোটনের ঢাকা কমার্শিয়াল অটোমোটিভ শো

মিয়ানমারের সঙ্গে কোনো প্রক্সি ওয়ারে জড়াবে না বাংলাদেশ: জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা

হিলিতে কমেছে আদা-রসুন ও পেঁয়াজের দাম

আড়াইহাজারে ডাকাতিকালে আটক-১, পৌর বাজারে চুরি

অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন অপসারণে হাইকোর্টের রুল

কৃঞ্চচূড়ার ছবি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ হারালো যুবক! ভিডিও ভাইরাল

আওয়ামী দোসররা বিভিন্ন জায়গায় ঘাপটি মেরে বসে আছে : রিজভী

১১ বছরেও গ্যাস সংযোগ পায়নি ঝিনাইদহ বিসিক

শেরপুরে ২ শিক্ষকের অপসারণ ও গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন

সালথায় বিএনপি নেত্রী শামা ওবায়েদের গাড়ীবহরে হামলা : ১৮ আ'লীগ নেতাকর্মী কারাগারে