সাইবার নিরাপত্তা আইন আরো ভয়ঙ্কর হতে পারে: রিজভী
০৭ আগস্ট ২০২৩, ০৮:১৪ পিএম | আপডেট: ০৮ আগস্ট ২০২৩, ১২:০২ এএম
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের চেয়ে সাইবার নিরাপত্তা আইন আরও ভয়ংকর ও বিপদজনক হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকার ক্ষমতায় থাকলে তাদের হাত দিয়ে ভালো কিছু হবে বলে আমি মনে করি না। দেশি-বিদেশি চাপে তারা আইওয়াস হিসেবে এটি করেছে। সোমবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বাংলাদেশ এখন মনুষ্যত্বহীন আওয়ামী ফ্যাসিজমের কালো ছায়ার নীচে। নির্যাতনের নির্মমতার মুখে দাঁড়িয়ে আছে গণতন্ত্রকামী মানুষ। অত্যাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রামী জনগণ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। আজ স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দি পরেও দেশকে গণতন্ত্রের অভিমুখী না করে নিষ্ঠুর ফ্যাসিজমকে প্রতিষ্ঠিত করার আয়োজন চলছে মহাধুমধামে। কবির কথায় বলতে হয়ে ‘অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এই পৃথিবীতে আজ’। হিংসার একটা আদিম রুপের ছবি বাংলাদেশের সর্বত্র। প্রভুত্বকামী জুলুমবাজ সরকারের বিষাক্ত থাবা পাড়া মহল্লা থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃত।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দেশব্যাপী বিদ্বেষের মন্ত্রণাদাতা, শান্তির শত্রু। বিগত কয়েকদিনে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর চালানো হয়েছে এক সর্বগ্রাসী সহিংসতার ভয়ঙ্কর আক্রমণ। আইনের শাসন, সুবিচার, মানবিক মর্যাদার অস্তিত্ব ক্রমান্বয়ে রাষ্ট্রসমাজ থেকে মুছে দেয়া হয়েছে নগ্ন দলীয়করণের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় বাহিনী গুলোকে। গণতন্ত্র এখন মৃত, সেজন্যই গণতন্ত্রে স্বীকৃত বিরোধী দলের যেকোন কর্মসূচিকে বরদাশ্ত করছে না অবৈধ সরকার। মিছিলের শব্দ শুনলেই গুলি চালানো হচ্ছে নির্বিচারে, সাপ পেটানোর মতো লাঠিপেটা করা হয় নেতাকর্মীদের। প্রায় প্রতিদিনই পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে বিরোধী নেতাকর্মীদের হাত, পা, পিঠ, পাকস্থলীই বিদ্ধ হচ্ছে না, তাদের মহামূল্যবান অঙ্গ চোখ হারিয়ে চিরদিনের জন্য অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছে, চেনা পৃথিবী হয়ে যায় তাদের কাছে অচেনা। আজীবন পরিবারের নিকট বোঝা হয়ে দিন কাটাতে হয়, এ বেদনা সহ্য করার মতো নয়। তাদেরকে সহমর্মিতা জানানোর ভাষা খুঁজে পাওয়া যায় না।
রিজভী বলেন, বর্তমানে এদেশে মত প্রকাশের ওপর বাধা-নিষেধ রয়েছে। ব্যক্তি স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে গেলে তার ঠাঁই হয় কারাগারে বা আয়নাঘরে। এখন রাজনৈতিক দলের সমাবেশের অধিকার পুলিশের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর। সুষ্ঠু নির্বাচনে নিজের পছন্দের দলকে ক্ষমতায় আনার অধিকার ভোটার’রা হারিয়েছে। প্রতিনিয়ত সত্যকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার জন্য একটি তাবেদার তথ্য-ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। অতিযতেœ রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় অপপ্রচার আর কুৎসা ছড়ানোর জন্য গণমাধ্যমের কিছু অংশকে ব্যবহার করা হচ্ছে রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে। গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তনকে রোধ করার জন্য অবৈধ কর্তৃত্ববাদী সরকার জুলুমের সর্বোচ্চ পন্থা নামিয়ে এনেছে জনগণের ওপর। গণতন্ত্রের উল্টোযাত্রাকেই অব্যাহত রাখতে চায় আওয়ামী নিপীড়ক শাসকগোষ্ঠী।
তিনি বলেন, কোনভাবেই যাতে সরকারবিরোধী আন্দোলন তীব্র হতে না পারে সেজন্য খুন জখমে উৎসাহী ও সিন্ডিকেট-হিতৈষী ম্যান্ডেটবিহীন আওয়ামী সরকার দমন-পীড়ণে নতুন নতুন মাত্রা যোগ করছে। মুদ্রা পাচার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান লোপাট, শাসকগোষ্ঠীর আত্মীয়স্বজনদেরকে হরিলুট করার সুযোগ দেয়ার মাধ্যমে বিদ্যমান অর্থনৈতিক নৈরাজ্যের সীমাহীন আবর্তের মধ্যে দেশকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। এই অনাচারমূলক পরিস্থিতি তৈরী করার জন্য তাদের ক্ষমতা আঁকড়ে রাখা প্রয়োজন। তাই তারা ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে গুম, খুন, ক্রসফায়ারের মতো অমানবিক নিষ্ঠুরতার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবেই এই আতঙ্কের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে যাতে গণতন্ত্রকামী মানুষ রাজপথে ধেয়ে আসতে না পারে। বিএনপি ও ভিন্ন মতের মানুষদের পাইকারী হারে গ্রেফতার, রিমান্ডের নামে নির্যাতন, কখনো বিবস্ত্র করে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বিগত দেড় দশক ধরে। শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখার জন্য এখনও সেই পৈশাচিকতা অব্যাহত আছে। আর এ ক্ষেত্রে দলীয় চেতনাবাহী আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরা এখন শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, গত ২৮ ও ২৯ জুলাইয়ের পূর্বাপর চলছে জুলুম-উৎপীড়ণের নানামুখী তৎপরতা। পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে গ্রেফতার, গুম কোনভাবেই থামছে না। গভীর রাতে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গোয়েন্দা পুলিশের হানায় দিনকে দিন নতুন মাত্রা যোগ হচ্ছে। বিশেষ বিশেষ টিম গঠন করে চালানো হচ্ছে অভিযান। তাদের আক্রমণে টার্গেটকৃত নেতাকর্মীদের না পেলে পরিবারের সদস্যদের তুলে নেয়া হচ্ছে, এতে পরিবারের বয়স্ক সদস্যরা আতঙ্কে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। র্যাবের মতো গোয়েন্দা পুলিশও এখন মূর্তিমান আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। এদের নেতৃত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগের দলীয় অনুগত উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
রিজভী বলেন, আদালতে যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসাহাক সরকারসহ ২৭ জন নেতাকর্মীকে দু’বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। আমরা আগেই বলেছি-সরকারের নির্দেশে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় সাজা দেয়া হচ্ছে। ইসাহাক সরকারসহ ২৭ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সাজা প্রদানের ঘটনাও আরেকটি নতুন ন্যাক্কারজনক দৃষ্টান্ত। অবিলম্বে এই সাজার আদেশ প্রত্যাহারের জোর আহবান জানান তিনি।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, নির্বাহী কমিটির সদস্য আকরামুল হাসান মিন্টু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিভাগ : রাজনীতি
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় সিকিউরিটি গার্ড নিহত
শরীয়তপুরে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ কর্মী সভা
হাজীদের সর্বোত্তম স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ধর্ম উপদেষ্টা ড. খালিদ হোসেন
ইসলামকে রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে গোলটেবিল বৈঠকে নেতৃবৃন্দ
ময়মনসিংহে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২
নকলায় নদীতে গোসল করতে নেমে শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কাল ডিইউজে’র বার্ষিক সাধারণ সভা
ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় বছরের সর্বোচ্চ মৃত্যু ১১, শনাক্ত আরও ১০৭৯
ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় মজলুম জনতাকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : সিলেট জেলা বিএনপির সেক্রেটারি এমরান চৌধুরী
এবার কৃষ্ণসার হত্যা নিয়ে কথা বললেন সালমান খান
শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সচেতনতামূলক ট্রাফিক ব্যবস্থা গড়ে উঠবে-- ডিআইজি ড. আশরাফুর রহমান
চকরিয়ায় বাইক-ডাম্পার মুখোমুখি সংঘর্ষে বায়ো ফার্মার এরিয়া ম্যানেজার নিহত
প্রকাশনা জালিয়াতি করে পদোন্নতির অভিযোগ রাবি অধ্যাপক সাহালের বিরুদ্ধে
সখিপুরে পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
ইবিতে র্যাগিংয়ের ঘটনা, প্রতিবেদন চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়
‘মানুষ একদিন বলবে আ.লীগ নামে কোন দল ছিল না সন্ত্রাসীরাই আ.লীগ’
হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার, বরখাস্ত ডিসি মশিউর ও এডিসি জুয়েল
পান্তকে রেকর্ড দামে কিনে নিল লাক্ষ্ণৌ
তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন
বিএনপি’র জন্য ফাঁকা মাঠ এমন ভাবার কোন অবকাশ নাই: তারেক রহমান