সভ্যতায় হিজরী সনের প্রভাব
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:৫৬ পিএম | আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০১ এএম

মনে রাখতে হবে,ইসলামী তারিখ বা চান্দ্রবর্ষের হিসাব রক্ষা করা মুসলমানদের জন্য ফরযে কেফায়া। একথা মনে করার কোনোই অবকাশ নেই যে,হিজরী সনটি আসলে আরবী বা কেবল আরবদের একটি সন; বরং এটি মুসলমানদের সন এবং ইসলামী সন। এক্ষেত্রে শুধু একটা চাঁদ দেখা কমিটি করে একটি মুসলিম-রাষ্ট্রের দায়িত্ব পুরোপুরি পালিত হয় না। বরং সব মুসলিমপ্রধান রাষ্ট্রের উচিত,তাদের স্বাতন্ত্র্য ও স্বকীয়তা বজায় রেখে ইসলামী বা হিজরী সনকে প্রাধান্য দেওয়া।
আমার মনে হয়,এক্ষেত্রে ওআইসি অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে। নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রত্যেক মুসলিম রাষ্ট্রও এটা করতে পারে। অনেক মুসলিম রাষ্ট্রে এর নজিরও আছে।
কেউ কেউ বলার চেষ্টা করেন যে, চাঁদ দেখা নয়, গণনার ভিত্তিতে হিজরী সনের হিসাব রাখা গণনার ভিত্তিতে হিজরী ক্যালেন্ডার করার বিষয়টির আসলে দুটি রূপ হতে পারে। একটি হচ্ছে, সৌরবর্ষের মতো হিজরী সনেরও ১২ টি মাস এবং প্রতি মাসের দিন ২৯/৩০ হওয়ার হিসাব করা (যা এখন প্রচলিত আছে।) এভাবে ক্যালেন্ডার করা দোষনীয় নয়। তবে সেখানে উল্লেখ থাকতে হবে, এটি চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল। অনেক আরব দেশেও এ জাতীয় ক্যালেন্ডার অনুসরণ করা হয়। পরবর্তীতে চাঁদ দেখার ভিত্তিতে বেশ-কম হলে তারা ক্যালেন্ডার সংশোধন করে নেন।আরেকটিরূপ হচ্ছে, চাঁদ না দেখেই গণনার ভিত্তিতে নিশ্চয়তার সঙ্গে অগ্রিম বলে দেওয়া যে, এবার অমুক মাসের এক তারিখ অমুক বারে হবে। এ চিন্তাটা ভুল। শরীয়তে এর কোনো ভিত্তি নেই। কুরআন মজীদের বিভিন্ন স্থানে চান্দ্রমাসের কথা উল্লেখ হয়েছে এবং সেগুলোকে গণনার মাধ্যম হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। এখানে ‘গণনার মাধ্যম’ বলার উদ্দেশ্য প্রথম রূপটি। অর্থাৎ সৌরবর্ষ যেমন গণনার মাধ্যম চান্দ্রবর্ষও সেভাবে গণনার মাধ্যম। কুরআন মজীদের মৌলিক জ্ঞান না থাকার কারণে কেউ কেউ ওই শব্দগুলোর দ্বারা এ কথা বুঝে নিয়েছে যে, চাঁদ দেখার বিষয়ে নিশ্চিত না হয়েও হিজরী বর্ষের প্রত্যেক মাসের প্রথম তারিখ ও শেষ তারিখ নিশ্চিতভাবে চিহ্নিত করে হিজরী ক্যালেন্ডার বানিয়ে নেওয়া উচিত। অথচ হিজরী মাসের বিষয়টি যে চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল তা একটি স্বতঃসিদ্ধ বিষয়।
রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, তোমরা চাঁদ দেখে রোযা রাখ এবং চাঁদ দেখে ইফতার কর। কুরআন মজীদেও (সূরা বাকারা : ১৮৯) হজ্বের বিষয়কে চাঁদের ওপর নির্ভরশীল ঘোষণা করা হয়েছে। বিষয়টি হাজার বছর ধরে মুসলমানদের মাঝে মীমাংসিত। সুতরাং এ বিষয়ে নতুন করে বিভ্রান্তি সৃষ্টির সুযোগ নেই।
একটি মহল বিশ্বব্যাপী একদিনে ঈদ পালন ও একসঙ্গে রোযা রাখার দাবি তুলেছে। এ দেশের কিছু কিছু গ্রামে এভাবে পালিতও হচ্ছে। সাহাবায়ে কেরামের যুগেও ইসলাম যখন বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছিল তখনও ভিন্ন ভিন্ন এলাকা ভেদে ঈদ ও রোযার দিন ভিন্ন হয়েছে। সিরিয়া ও মদীনায় একই দিনে ঈদ হয়নি। পুরো বিশ্বে একই দিনে রোযা ও ঈদ করার নামে দেশের কোনো কোনো গ্রামে অগ্রিম রোযা বা ঈদ করে ফেলা ঐক্যের নামে অনৈক্যেরই একটি নিদর্শন। তবে এসব বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করা বা পরস্পর তিক্ততার সৃষ্টি করা কিছুতেই কাম্য নয়।
মনে রাখতে হবে যে, মুসলমানদের মূল সৌন্দর্য এবং ঐক্যের ভিত্তি হচ্ছে শরীয়তের অনুসরণের মধ্যে। পুরো পৃথিবীতে একই দিনে রোযা ও ঈদ করা জরুরি কোনো বিষয় নয়। যেমনিভাবে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ তাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামায বিভিন্ন সময়ে পড়ে থাকে। যেমন আপনি যখন ফজর পড়ছেন জাপানে তা পড়া হয়ে গেছে আরো ৩ ঘণ্টা আগে। আর সৌদী আরবে তা পড়া হবে ৩ ঘণ্টারও বেশি সময় পরে। এতে তো কোনো অনৈক্য সৃষ্টি হয় না। (সমাপ্ত)
লেখক: গবেষক, কলামিস্ট
বিভাগ : ধর্ম দর্শন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

১০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ প্ল্যান্ট স্থাপনে রবি, ফ্লোসোলার ও গ্রিনপাওয়ার এশিয়ার ত্রিপক্ষীয় চুক্তি

ভিক্টোরিয়ার নবজাতক আইসিইউ ইউনিট জেলার স্বাস্থ্য খাতে একটি মাইলফলক: ডিসি

যুদ্ধের আশঙ্কায় সীমান্ত এলাকায় পুলিশকে সতর্ক থাকার নির্দেশ

শিক্ষার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে কেমব্রিজে অনুষ্ঠিত হলো দক্ষিণ এশিয়া স্কুল সম্মেলন

উচ্চশিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধিতে ইইউ’র সহযোগিতা চেয়েছে ইউজিসি

শেরপুর বিআরটিএ অফিসে দুদকের অভিযান

বাউফলে কলেজ ছাত্রদলের কমিটি গঠন

ভারত-পাকিস্তানের সংঘাত নিয়ে যা বলছে রাশিয়া ও ফ্রান্স
জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়লো, কমলো রাফায়েলের

পাকিস্তানের পাল্টা হামলায় ভারতে নিহত বেড়ে ১৫

ড. ইউনূসের বার্তা পেয়েছেন সউদী যুবরাজ

মধুপুরে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক দখল করে চলছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কলার হাট

এএসপির লাশের পাশে চিরকুট— ‘বউ যেন সব সোনা নিয়ে যায়’

কুষ্টিয়ায় যুবদল নেতার পুকুরে বিষ দিয়ে অর্ধ কোটি টাকার মাছ নিধন

জামায়াত নেতার মুক্তির দাবিতে পঞ্চগড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ

১০ মে 'জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৫' উদ্বোধন ও প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২৪ বিতরণ

সিংগাইরে গণসংযোগ ও অগ্নিনির্বাপক প্রশিক্ষন অনুষ্ঠিত

নুরুল-মাহিদুলের জোড়া শতকে উড়ে গেল নিউজিল্যান্ড ‘এ’

যুদ্ধের মধ্যেও কি ভারত সফর করবেন পুতিন?

নতুন পোপ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু, সমবেত হয়েছেন কার্ডিনালরা