পীর মাওলানা শফিকুল হক ফারুকী (রাহ.)
২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ এএম
(পূর্বে প্রকাশিতের পর)
সিলেট ত্যাগ ও নওগায় গমন : চাচা ইবরাহিম তশ্নার ইন্তেকালের পর আসাম থেকে তাঁকে সিলেট আসতে হয় এবং মাওলানা তশ্না প্রতিষ্ঠতি উমরগঞ্জ মাদরাসা পরিচালনা, বায়আত-তরিকতের কার্যক্রমসহ দ্বীনি খেদমত ভালোই চলছিল। অন্যদিকে মাওলানা শফিকুল হকের রেখে আসা আসামের নওগা জেলায় নতুন নতুন এলাকা ইসলামের ছায়াতলে আসতে শুরু করে। সিলেট ছাড়া আসামের অন্যান্য অঞ্চল ইসলাম ধর্মের জন্য এতো বেশি উর্বর ছিল-না। এছাড়া বড় বড় অঞ্চল জঙ্গলে ভরাট ছিল। সে সময়ের সরকারের টার্গেট ছিল অনাবাদি জায়গাসমূহ পরিচ্ছন্ন ও উর্বর করা। সরকারের নির্দেশে মানুষদের নিয়ে প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ বনজঙ্গল পরিষ্কার করে ক্ষেত খামারের জন্য উর্বর করতে থাকে। এই ধারাবাহিকতায় অন্যান্য জেলার মতো নওগা জেলার বিভিন্ন অঞ্চল আবাদ হতে থাকে। পির শফিকুল হকের অনেক ভক্ত মুরিদ এসব এলাকায় বসবাস করতে শুরু করেন। তাঁরা মাওলানা শফিকুল হককে এই নতুন আবাদকৃত অঞ্চলে আসার দাওয়াত দেন এবং একপর্যায়ে তাঁর ভক্ত মুরিদরা এখানে আসতে পিড়াপিড়ি করেন। মাওলানা শফিকুল হক তো বেকায়দায় পড়ে গেলেন কী করবেন? তিনি প্রথমে রাজি না হলেও পরে রাসুল সা. ও সাহাবিদের ত্যাগ সাধনা তাঁকে পিড়া দেয়। তিনি স্বীয় জন্মস্থান ছেড়ে দ্বীনি শিক্ষার নেজাম ও শিক্ষালয় প্রতিষ্ঠার আগ্রহে অবশেষে প্রস্তুত হয়ে গেলেন। ১৯২৪-২৫ খ্রিষ্টাব্দের মাঝামাঝি সময়ে তিনি সিলেট ছেড়ে নওগা জেলার দক্ষিণাঞ্চলে পাড়ি জমান। পূর্ব নওগার মিলা শহরের অধিবাসী হয়ে যান। মিলা শহরে অবস্থান করেই প্রথমে একটি মসজিদ এবং তাঁরই সাথে একটি ছোট মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে তিনি প্রাথমিক শিক্ষাদান শুরু করেন। এলাকার জনসাধারণও তাঁর হাতে বায়আত হতে থাকেন। আমজনতার নিকট তিনি পিরসাহেব নামেই পরিচিত ছিলেন। এভাবে বিভিন্ন অঞ্চল আবাদ করেন দ্বীনি শিক্ষার মাধ্যমে। পির শফিকুল হক মানুষের আত্মসুদ্ধি আর আমলের সংশোধনের জন্য দ্বীনিশিক্ষা ও তারবিয়তি প্রশিক্ষণ দরদ নিয়ে আগ্রহভরে করতে থাকেন। আজাদি আন্দোলনের আগ পর্যন্ত তিনি একটি জুনিয়র মাদরাসা পরিচালনা করতেন। আজাদি আন্দোলনের প্রাক্কালে তিনি মাদরাসাটিকে ‘কওমি আজাদ মাদরাসা’য় রূপান্তর করেন ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে। এই মাদরাসাটি পরিদর্শন করতে আসেন আসাম প্রদেশের তৎকালীন খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক কর্মকর্তা (পরবর্তি মুখ্যমন্ত্রী) জনাব ফখর উদ্দিন। এ বৎসরই মাদরাসার বিশাল একটি সম্মেলন হয়। সে সম্মেলনে পাকভারতের খ্যাতিমান উলামা-মাশায়েখ ও মুসলিম জনতার সমাঘমে ঐতিহাসিক এক সম্মেলনে রূপ নেয়; যার বিস্তারিত বিবরণ দেয়া সহজ নয়। (মাশাহিরে উলামা ও মাশায়েখে আসাম : ১৫৭/৫৮)
তানজিমুল মাদারিস শিক্ষাবোর্ড প্রতিষ্ঠা : পিরে মাওলানা শফিকুল হক রাহ. প্রখ্যাত আলেম মাওলানা কাসিম নানতুবি রাহ.’র সমাজসংস্কার আন্দোলনের চেতনায় প্রভাবিত ও উজ্জিবিত ছিলেন। পূর্বসূরীদের আদর্শ বাস্তবায়নে তাঁর কর্মজীবনের অন্যতম চিন্তা ছিল ইসলামি শিক্ষাকে উঁচ্চাঙ্গে পৌঁছানো। এজন্য এ অঞ্চলের সকল মাদারিস জুড়েই তাঁর চিন্তা-ফিকর ছিল। আসামের প্রশিদ্ধ প্রতিষ্ঠান ‘জামেয়া আসাম দারূল হাদিস জয়নগর’সহ মাদরাসাসমূহকে একটি নিয়মনীতি ও ঐক্যের ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়ার একটি প্লাটফর্মে নিয়ে আসার চিন্তা সর্বপ্রথম তিনিই করেন। প্রথমে তিনি আসাম অঞ্চলের মাদরাসাগুলোর দায়িত্বশীল ও শিক্ষকদের সাথে দফায় দফায় মতবিনিময় করেন। সকলেই তাঁর সাথে একাত্বতা পোষণ করলে একপর্যায়ে ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে ‘তানজিমুল মাদারিস’ নামে দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের একটি বোর্ড প্রতিষ্ঠা করেন। তানজিমুল মাদারিস বোর্ড প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল ইসলামি শিক্ষার বিস্তার। একক মূলনীতি, যৌথ পরীক্ষা ব্যবস্থা ইত্যাদি বোর্ডের মূলনীতি সম্বলিত গঠনতন্ত্র মাওলানা শফিকুল হক নিজেই লিপিবদ্ধ করেন। বিভিন্ন শ্রেণিতে কেন্দ্রীয় পরীক্ষার ব্যবস্থা এবং মেধাতালিকায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর বৃত্তিপ্রথাও তিনি করেন। তাঁর হাতে লেখা বোর্ডের গঠনতন্ত্রটি পরবর্তিতে অনেক খোঁজাখুঁজি করে পাওয়া যায়নি, তবে খুব সংক্ষিপ্ত কাট পিন্সিলে হাতের লেখা একটি কপি উদ্ধার করা হয়, কিন্তু পরিষ্কার না থাকায় খুব একটা পড়া যায়নি, যদিও হাতে লেখা এই কপিতে বর্ণিত বৃত্তি ভাতার পরিমাণ এবং তাঁর স্বাক্ষর স্পষ্টভাবে বুঝা যায়। অনুরূপ কোন স্তরের শিক্ষকদের বেতন ভাতা কত হবে? বোর্ডের সাধারণ নিয়মাবলি এবং প্রত্যেক মাদ্রাসার মজলিসে শুরা সংক্রান্ত কথা ও নিয়মাবলি এই গঠনতন্ত্রে সবিস্তারে উল্লেখ ছিল। এই গঠনতন্ত্রে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ বিষয়ক একজন কর্মকর্তা নিয়োগ এবং দৈনন্দিন কার্যক্রমের রিপোর্ট অফিসে জমা দেওয়ার পরামর্শও ছিল। পির মাওলানা শফিকুল হকের হাতের লেখা কপি এই ছাপা গঠনতন্ত্রের উল্টো পৃষ্ঠায় উল্লেখ ছিল। ‘তানজিমুল মাদারিস শিক্ষাবোর্ড’-এর সূচনা হয়েছিল আসামের দক্ষিণ নওগাঁও জেলা থেকে। প্রথমে তাঁর কার্যক্রম এ জেলায় সীমাবদ্ধ ছিল। ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দের শেষদিকে পির শফিকুল হক ও তাঁরই আন্তরিক বন্ধু মাওলা হুসাইন আহমদ ডিনÑজামেয়া আসাম দারুল হাদিস জয়নগর, মাওলানা মুসদ্দর আলি রাগিব, মাওলানা ইলিয়াস প্রমূখ উলামায়ে কেরামের অক্লান্ত চেষ্টায় বোর্ডের কার্যক্রম নওগা জেলা ছাড়িয়ে আসামের অন্যান্য অঞ্চলে বিস্তৃত হতে থাকে। পির শফিকুল হকের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে আসামের মাদারাসাগুলো একই নিয়মনীতি ও এক প্লার্টফর্মে যোথবদ্ধ হয়। মাদরাসাগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক ও সমন্বয় সৃষ্ঠি হয়। শিক্ষা-দিক্ষার মানোন্নয়নে প্রতিযোগীতা চলে আসে। এটি পির সাহেবের জীবনে শ্রেষ্ঠ এক কাজ। যার ফলশ্রুতিতে মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষা-দিক্ষার উন্নয়ন ও ফলাফল যথারীতি উচ্চতায় পৌঁছে যায়। তানজিম বোর্ডের অধীনে লেখাপড়া করে উচ্চশিক্ষার জন্য দারুল উলুম দেওবন্দ গমন ছাত্ররা অনেক যোগ্যতা নিয়ে শিক্ষাসমাপ্ত করে আসতে থাকেন। দেওবন্দ পড়–য়া আলেমরা তানজিমুল মাদারিস বোর্ডকে নতুন করে ঢেলে সাজানো এবং আরো সমৃদ্ধ করার কর্মসূচী হাতে নেন। প্রথমে ‘দারুল উলুম মিটিগাঁও-এ আব্দুল জলিল রাগিবির ভূমিকায় তানজিমুল মাদারিস বোর্ডের এক প্রীতি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের পূর্বেই পির মাওলানা শফিকুল হকের ইন্তেকাল হয়ে যায়। তাঁর ইন্তেকালের পর ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে জামেয়া আসাম জয়নগরে তানজিমুল মাদারিস বোর্ডের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন পির মাওলানা শফিকুল হক প্রতিষ্ঠিত ‘মাদ্রাসায়ে শফিকিয়া রহমত নগর’ এর প্রধান মুনসি মাওলানা আব্দুল বারি রাহ.। বৈঠকে অংশগ্রহণকারী মাদরাসাগুলো হলÑ১. জামেয়া আসাম দারুল হাদিস জয়নগর-প্রতিনিধি, শাইখুল হাদিস মাওলানা আব্দুস সবুর। ২. মাদরাসায়ে রহিমীয়া মোরাজারÑপ্রতিনিধি, মুফতি মাওলানা হুসাইন আহমদ। ৩. মাদ্রাসায়ে শফিকিয়া রহমতনগরÑপ্রতিনিধি, মাওলানা মনোয়ার হুসাইন আসির। ৪. মাদরাসায়ে আনওয়ারুল উলুম শিবপুরÑপ্রতিনিধি, মাওলানা আব্দুর রহমান। ৫. বুরুঙ্গা মাদ্রাসা জয়নগরÑপ্রতিনিধি, মাওলানা মুকররম আলি। ৬. জালালিয়া মাদ্রাসা শামরাঈলÑপ্রতিনিধি, মাওলানা শামসুল হক। ৭. দারুল উলুম মিটিগাঁওÑপ্রতিনিধি, মাওলানা মুহাম্মদ ইলিয়াস। ৮. মাতলাউল উলুম মাদ্রাসা ডুবকাÑপ্রতিনিধি, জনাব আব্দুন নুর চৌধুরী। ৯. এশাআতুল ইসলাম মাদ্রাসা রেওয়ার পাড়Ñপ্রতিনিধি, শায়খ মাওলনা গোলাম রব্বানী প্রমূখের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ‘তানজিমুল মাদারিস’-এর নাম করণে কিছু পরিবর্তন করে নতুন নাম দেওয়া হয়Ñ‘আঞ্জুমানে তানজিমুল মাদারিস আসাম’। এ বৈঠকেই পরিমার্জিত একটি সু-শৃঙ্খল নীতিমালা প্রণয়ন ও ইন্তেজামিয়া কমিটি গঠন করা হয়। বোর্ড দায়িত্বশীলদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে নতুন করেÑমাদরাসায়ে রহমানিয়া আদালি, মাদ্রাসায়ে আমতলা, মাদ্রাসায়ে পুকহুরি, মাদ্রাসা নেকহারি মোকাহসহ আরো কতেক মাদ্রাসা তানজিমুল মাদারিস বোর্ডের অন্তর্ভূক্ত হয়। এসময় ‘আঞ্জুমানে তানজিমুল মাদারিস’ এর অধীনে বড়মাপের ১৩টি মাদ্রাসা ছিল। পরবর্তীতে তানজিমুল মাদারিস বোর্ডের অধীনে বড় মাদ্রাসা ২৮৭টি, হিফজুল কোরআন মাদ্রাসা ১৪৭টি, বানাত মাদ্রাসা ৪৭টিসহ মোট ৪৮১টি মাদ্রাসা অন্তর্ভূক্ত হয়। প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষা ব্যবস্থা বিশেষ একটি পর্যায়ে পৌঁছে যায়। আঞ্জুমানে তানজিমুল মাদারিস এর বর্তমান নাম ‘তানজিমুল মাদারিসলি কাওমিয়া আসাম’। ইন্তেকাল : মাওলানা শফিকুল হক ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসায়ে শফিকিয়া রহমতনগরে ইন্তেকাল করেন। তাঁর মৃত্যুতে আসাম জুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। ছাত্র ভক্ত শিষ্যরা মৃত্যুপরবর্তী অনেক শোকগীতি লিখেন। প্রসিদ্ধ কয়েকটি কবিতা লাইনÑ আয় শহিদে ইলমে ও ইরফা জাতে আকদস লা কালাম/ তেরি হাস্তি তিহি সরাপা উসউয়ায়ে খাইরুল আনামা/ তেরি শফকত তেরি রহমত হর কিসি পর আস তিহি/করদিয়া তাহা তুনে সবকো রাহে হক পর তেজ কাম। (সমাপ্ত)
লেখক: শিক্ষক ও গবেষক
বিভাগ : ধর্ম দর্শন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
রেমিট্যান্সে সুবাতাস: ডিসেম্বরের ২১ দিনেই এলো ২০০ কোটি ডলার
প্রশাসন ক্যাডারের ‘ইয়াং অফিসার্স’ ফোরামের সভাপতি শুভ, সাধারণ সম্পাদক জয়
ইউনিলিভার বাংলাদেশ ও কেওক্রাডং বাংলাদেশ’র উদ্যোগে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে হলো ‘কোস্টাল ক্লিনআপ’
তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানের বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী রাহাত ফাতেহ আলী খানের সৌজন্য সাক্ষাৎ
রক্তের বিনিময়ে অর্জিত ছাত্র জনতার বিজয়কে নস্যাৎ হতে দেয়া যাবে না
বিপিএল মিউজিক ফেস্ট: যান চলাচলে যে নির্দেশনা ডিএমপির
গাজীপুরের শ্রীপুরে মেঘনা গ্রুপের একটি বাটন তৈরির কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
সোনারগাঁওয়ে ছেলের ছুরিকাঘাতে বাবা নিহত
আনজার গ্রুপের আয়োজনে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠকদের সংবর্ধনা
মির্জাপুরে রাস্তায় বাঁশের বেড়া দেয়ায় জনদুর্ভোগ এলাকাবাসির মানববন্ধন
মেধা বৃত্তির ফলাফল ঘোষণা করলো উষা
পাহাড় কাটা, বায়ুদূষণ ও নিষিদ্ধ পলিথিনের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান জোরদার করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
ফুলপুরে অবৈধ ইট ভাটায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, এক লাখ টাকা জরিমানা
মিরপুরে বেড়েছে চুরি ছিনতাই
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ভাইয়ের হাতে ভাই খুন
পালিয়ে গিয়ে হাসিনা ভারত থেকে ষড়যন্ত্র করছে: মির্জা ফখরুল
মাগুরায় দলকে গতিশীল করতে কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত
মৌলভীবাজারে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে শ্রমিকের মৃত্যু, জিরো লাইন থেকে লাশ উদ্ধার
মাদারীপুরে ভুয়া সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্র জনতা
সেনবাগে ট্রাক্টর চাপায় ১ শিশু মৃত্যু : আহত ১