স্মৃতিতে মুক্তিযুদ্ধ
২৫ মার্চ ২০২৩, ০৭:২৮ পিএম | আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৩, ০৫:১৩ এএম
১৯৭১ সালে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন। তার আগে ৭ মার্চের চূড়ান্ত ঘোষণায় প্রস্তুত জাতি মুহূর্তমাত্র বিলম্ব না করে ঝাঁপিয়ে পড়ে শত্রুসেনাদের প্রতিরোধে। পাকিস্তানিদের অব্যাহত শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সত্তরের নির্বাচনে তাঁর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু পাকিস্তানিরা বাঙালির হাতে ক্ষমতা না দিয়ে শুরু করেছিল বাঙালিনিধন। ৯ মাস ধরে চালিয়েছিল নিষ্ঠুর গণহত্যা। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর আমরা চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করি।
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমি ২ ও ৩ নং সেক্টরের রাজনৈতিক উপদেষ্টা ছিলাম। আমার সৌভাগ্য হয়েছিলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সেদিন মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে পুনর্গঠনের কাজেও শরীক হতে পেরেছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে আমি ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা ছিলাম। তখন বিভিন্ন প্রয়োজনে বঙ্গবন্ধুর বাসায় যেতাম। সর্বশেষ ২৫ তারিখ ও আমি বঙ্গবন্ধুর বাসায় গিয়েছিলাম। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কথা বলে বললাম, লিডার একটু ক্যান্টনম্যান্ট যাবো। এখানে বলে রাখি, ক্যান্টম্যান্টের সঙ্গে আমার ফার্নিচারের ব্যবসা ছিলো। ইস্টার্ন ফার্নিচার নামে আমার একটি ফার্নিচারের প্রতিষ্ঠান ছিলো। আমি ক্যান্টনম্যান্ট গিয়েছিলাম ফার্নিচারের বিল আনতে। আমার কাছে ওইদিন ক্যান্টনম্যান্টের পরিস্থিতি একটু অন্যরকম মনে হলো। ফিরে এসে বঙ্গবন্ধুর কাছে সংবাদটি পৌঁছেছিলাম। ওইদিনই আমরা যুদ্ধ শুরু করেছিলাম। আমরা ওইরাতে শত্রুদের মোকাবেলায় ধলপুর কাঠের পুল ভেঙ্গে ফেলি। ওই পুল ভাঙতে গিয়ে নুর নামে আমার এক সহযোদ্ধা মারা যায়।
স্বাধীনতা যে কোনো জাতির সবচেয়ে বড় অর্জন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রেও তা এক মহা সত্যি। এ দেশের মানুষ স্বাধীনতা অর্জন করেছে রক্তস্নাত পথ ধরে। স্বাধীনতার জন্য ৩০ লাখ মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে। ১৯৭০-এর নির্বাচনে নিরঙ্কুশভাবে জয়ী আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অস্বীকার করে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ তারা রাতের আঁধারে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঘুমন্ত মানুষের ওপর। শুরু হয় ইতিহাসের সবচেয়ে বর্বরতম গণহত্যা। জাতির এ ক্রান্তিলগ্নে ২৬ মার্চের শুরুতেই বঙ্গবন্ধু দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ডাক দেন সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের। দীর্ঘ ৯ মাসের যুদ্ধ শেষে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। আর এর মাধ্যমেই অর্জিত হয় মুক্তিযুদ্ধের মহিমান্বিত বিজয়।
আমি একজন রণাঙ্গণে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বলছি, আমার জীবনের শ্রেষ্ঠতম অধ্যায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের নয়টি মাস। এই নয় মাসকে কেন্দ্র করেই আমার জীবনের শ্রেষ্ঠতম আনন্দ বেদনার স্মৃতি। আমি প্রত্যক্ষ করেছি একটি স্বাধীন দেশের অভ্যুদয়, দেখেছি সহযোদ্ধার লাশ আর আপন সন্তানের নিথর দেহ। আমরা তিন ভাই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছি। আমার ভাই শাহ আলম চৌধুরী ও জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা।
যৌবনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে থাকার কারণে মুক্তিযুদ্ধ পূর্ববর্তী ঢাকা শহরের গণআন্দোলনের অনেক কর্মকা-েই ছিল আমার সক্রিয় অংশগ্রহণ। যে কারণে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নেওয়াই ছিল। ২৫ মার্চ ক্র্যাক ডাউনের পর ২৭ মার্চ হেঁটে, রিকশা এবং নৌকায় অনেক কষ্টে নরসিংদী পৌঁছলাম। চলতে লাগলো মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি। যোগাযোগ হলো ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবস্থানরত মেজর নূরুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি ক্যাপ্টেন মতিউরকে পাঠালেন যুদ্ধ প্রস্তুতির সার্বিক পরিস্থিতি জানার জন্য। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফিরে গিয়ে ক্যাপ্টেন মতিউর আবার নরসিংদী এলেন ৩০ মার্চ, সঙ্গে বহু ইপিআর সৈন্য ও অস্ত্রশস্ত্রসহ। নরসিংদীর জনগণ উজ্জীবিত হয়ে ঢাকা আক্রমণের প্রস্তুতি নিতে শুরু করল। ২ এপ্রিল ক্যাপ্টেন মতিউরের পরিকল্পনা অনুযায়ী কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। বিকালে নরসিংদীর পাঁচদোনা পৌঁছলে পাকবাহিনী নৌ, রেল ও স্থল তিন দিক থেকে আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লে শুরু হয় মুখোমুখি সংঘর্ষ। শত্রু বাহিনী ছিল আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত। তাদের অতর্কিত আক্রমণে আমরা হতবিহ্বল হয়ে পড়লেও অসীম সাহসিকতায় যুদ্ধ চালাতে থাকলাম। পাক বাহিনীর ৮-১০ জন সৈন্য হতাহত হয়। উড়িয়ে দেওয়া হলো তাদের ২টি গাড়ি। আমাদের কয়েকজন হতাহত হয়। সেই স্মৃতি এখনো আমাকে নাড়া দেয়।
নরসিংদীর স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রস্ততি নিলাম ভারত যাওয়ার। ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও সিলেট অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধকামীদের প্রথম এবং সহজতম আশ্রয়স্থল ছিল ত্রিপুরার আগরতলা। আগরতলা পৌঁছালাম। পেলাম পরিচিত মুখ মেজর নূরুজ্জামানসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী ও ঢাকার অনেক সংগঠকদের। আগরতলা মুখরিত হলো মুক্তিকামী বাঙালিদের পদভারে। বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে দায়ের করা তথাকথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, যে মামলাকে কেন্দ্র করেই ফাঁসিতে ঝোলানোর চেষ্টা করা হয়েছিল তাকে। বিস্ময়করভাবে সেই আগরতলাই হয়ে উঠল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ডেডলাইন।
ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলা। ত্রিপুরার ভৌগোলিক অবস্থান অদ্ভুতভাবে গাঁথা বাংলাদেশের সঙ্গে। ভারতের অন্যান্য অংশ যেখানে একদিক থেকে বেঁধে রয়েছে, সেখানে বাংলাদেশ তিন দিক থেকে আলিঙ্গন করে আছে ত্রিপুরাকে। ত্রিপুরার ৯১৭ কিলোমিটার সীমান্তের ৮৩৯ কিলোমিটারই বাংলাদেশের সঙ্গে। রাজধানী আগরতলা, যেখানে আর্যদের পা পড়েনি, আসেনি কোনো বিদেশি। সারা বাংলায় যখন বাংলা ভাষার সরকারি মর্যাদা ছিল না, ইংরেজি ও ফার্সি যখন সব কিছুর উপর দাঁড়িয়ে ত্রিপুরার রাজভাষা তখনো বাংলা। পাহাড়ি ত্রিপুরার যে হৃদ্যতা, সেই হৃদ্যতা ক্রমশ বাড়া বৈ কমেনি। মহারাজাদের বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতা যেমন ইতিহাস তেমনি ১৯৭১-এর বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধে পরবর্তী প্রজন্মের ত্রিপুরাবাসীর তেমন ইতিহাস। ১৯৭১ সালে সমগ্র ত্রিপুরার জনসংখ্যা ছিল ১৫.৫৩ লাখ অথচ ত্রিপুরা ধারণ করেছিল ১৩.৪২ লাখ বাংলাদেশ ত্যাগী শরণার্থী ও মুক্তিযোদ্ধা।
’৭১-এর এপ্রিল মাসে আমি আগরতলা যাই। মূলত সেখানেই সর্বজনাব মিজানুর রহমান চৌধুরী, শেখ জামাল, আবদুস সামাদ আজাদ, গাজী গোলাম মোস্তফা, কর্নেল ওসমানী, মেজর জিয়া, মেজর শফিউল্লাহ, মেজর খালেদ মোশাররফ, মেজর হায়দার, মেজর নূরুজ্জামান প্রমুখ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যুদ্ধ বিষয়ে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ হয়। আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় ২ ও ৩নং সেক্টরের রাজনৈতিক উপদেষ্টার। সে দায়িত্ব থেকেই ২৫ এপ্রিল আমি খালেদ মোশাররফ ও কুমিল্লার হোমনার এমপি মোজাফফর আলী প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে দেখা করি। তার নির্দেশনা গ্রহণ করে কলকাতা থেকে আগরতলায় ফিরে আসি। সংগঠক হিসাবে সে সময়ে মেলাঘর ট্রেনিং ক্যাম্পসহ ত্রিপুরার অনেক ক্যাম্পেই প্রতিনিয়তই যেতে হত আমাকে। সূর্যমনিনগর হাসপাতাল, যা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য। পরিদর্শনে গিয়ে দেখা হলো আমার স্কুল জীবনের বন্ধু ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে, সে বর্তমানে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি। এ সময়ে অর্থাৎ ২৮ মে তৎকালীন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী শচীন্দ্র লাল সিং এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে কথা বলারও সুযোগ হয় আমার।
প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ দেশের অভ্যন্তরে গিয়ে এমপি, মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগের নির্দেশ দিলে আমি ১ জুন হোমনার এমপি মোজাফফর আলী ও ছাত্রলীগ নেতা আলীসহ হবিগঞ্জের মাধবপুর বর্ডার দিয়ে দেশে প্রবেশ করি। রাত ২.৩০ মিনিটে বর্ডার ক্রস করতে সাহায্য করলেন ক্যাপ্টেন আইন উদ্দিন। সকালে চারগাছ বাজারে চা-নাস্তা করার সময় লক্ষ্য করলাম স্থানীয় লোকজন আমাদের সন্দেহের চোখে দেখছে। সে সময়ে দেশে শত্রুমিত্র চেনা খুবই দুরূহ ছিল। সে কারণে দেরি না করে হোমনার উদ্দেশে রওনা হলাম। সারাদিন চলার পর রাতে ঝড়-বাদলে মাঝি পথ হারিয়ে ফেলাতে অনেক কষ্টে ৩ জুন সকালে মোজাফফর আলী এমপির এক আত্মীয়ের বাড়িতে উঠলাম। পরদিন সকালে বাঞ্ছারামপুরের এমপি মহিউদ্দিনের খোঁজে তার এলাকায় গিয়ে তাকে পেলাম ডোমরাকান্দিতে। এরপর রায়পুরার এমপি আফতাব উদ্দিন ভূঁইয়ার সঙ্গে দেখা হলো নিলক্ষিয়ায়। শিবপুর-মনোহরদীর এমপি ফজলুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় হাইরমারা গ্রামে। তাদের সবাইকে প্রধানমন্ত্রীর মেসেজ জানাই এবং তারা সবাই আগরতলায় তথা ভারতে যাওয়ার ব্যাপারে একমত হন। এভাবে ২১ জুন পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরে এমপি, মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও মুক্তিকামী বাঙালিদের সঙ্গে বিভিন্নভাবে আলোচনা ও সাক্ষাৎকার কার্যক্রম চালাই। ২২ জুন নিজ গ্রাম নরসিংদীর আলোকবালীতে যাই। অপেক্ষা করছিল দুঃসংবাদ। জানতে পারলাম আমার সন্তান বিপ্লবের বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর সংবাদ। চলতে থাকে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করার কাজ। আমাদের বাড়িতে ২৯ জুন রাতে পরিবার পরিজনসহ এলেন নরসিংদীর এমপি মোসলেহউদ্দিন। তাকে পেয়ে আমার কাজে অনেকটাই সুবিধা হলো। এ সময়ে আলোকবালী নিরাপদ নয় ভেবে পরিবার-পরিজন স্থানান্তর করলাম বাঞ্ছারামপুরে। সেখানেই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলো আমার ছোট মেয়ে সুইটি। পরে সেও হোমনাতে মারা গেল এক প্রকার বিনা চিকিৎসাতেই। পরিবার-পরিজন রেখে ৩০ জুলাই আবারও ঢাকার পথে রওনা হলাম। পায়ে হেঁটে, নৌকায়, রেলপথে ও রিকশায় অনেক কষ্টে ঢাকায় পৌঁছালাম ৩ আগস্ট রাতে। ১৬ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকার যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, মান্ডা, মুরাদপুর ও আশপাশের এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে ১৭ আগস্ট নরসিংদী রওনা হয়ে ১৯ আগস্ট পৌঁছালাম। নরসিংদী তখন ভীষণ উত্তপ্ত। পাকবাহিনী ও রাজাকারদের দৌরাত্ম্য তখন চরমে। এর মধ্যেই বাড়াইল হয়ে আমার গ্রাম আলোকবালীতে পৌঁছালাম। এখানে মুক্তিযোদ্ধাদের নির্দেশনা দিয়ে ১১ সেপ্টেম্বর ভোরে আবারও রওনা হলাম আগরতলার উদ্দেশে পাকবাহিনী ও রাজাকারদের চোখ এড়িয়ে দুই-এক জায়গায় ছদ্মবেশে অনেক বিপদ এড়িয়ে ১৮ সেপ্টেম্বর ভারতীয় সীমানায় প্রবেশ করলাম। ২৫ সেপ্টেম্বর মেজর নূরুজ্জামান ও ২৬ সেপ্টেম্বর গাজী গোলাম মোস্তফাকে দেশের অভ্যন্তরের যুদ্ধ পরিস্থিতি বর্ণনা করলাম, এরপর ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত আগরতলা, কলকাতাসহ বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং ক্যাম্প ও শরণার্থী শিবিরসমূহ পরিদর্শন এবং অন্যান্য সাংগঠনিক কাজে ভারতেই ছিলাম, দেশে আর আসা সম্ভব হয়নি। দেশে এলাম ১৪ ডিসেম্বর মেজর হায়দারসহ হেলিকপ্টারে কুমিল্লায়। পরে নরসিংদী হয়ে ঢাকায় এলাম ১৫ ডিসেম্বর বিকালে। যাত্রাবাড়ীতে সেদিনই বিজয় উল্লাস। সে স্মৃতি সারাজীবন মনে রাখবার মতো, জনতা মেজর হায়দার ও আমাকে মাথায় নিয়ে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় নাচতে থাকে। ১৫ ডিসেম্বর কাটলো আনন্দ আর উৎকণ্ঠায়। অবশেষে এল জীবনের শ্রেষ্ঠতম দিন ১৬ ডিসেম্বর। ঢাকা ক্লাব থেকে আনা হলো চেয়ার টেবিল, যে টেবিলে স্বাক্ষরিত হলো বাঙালির বিজয়ের দলিল। ১৬ ডিসেম্বরের সেই দৃশ্য সুখ-স্বপ্ন হয়ে আছে এখনো।
লেখক: মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষাবিদ, সাবেক চেয়ারম্যান রাজউক, উপদেষ্টা, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আর কে চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ।
বিভাগ : বিশেষ সংখ্যা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র বৈঠক, হাসিনাকে ফেরানো নিয়ে আলোচনা থাকবে
রামু সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালিত
এক সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ল ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার
প্রবাসীদের যে জন্য সুখবর দিলো মালয়েশিয়া
জাবি শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় মামলা, তদন্ত কমিটি গঠন, ফটকে তালা, মশাল মিছিল
মাদকের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে থাকবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল
"নতুন সিনেমা নিয়ে ফিরছেন গ্লোবাল তারকা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি"
ড. ইউনূসকে নিয়ে খালেদা জিয়ার পুরোনো যে বক্তব্য ভাইরাল
নতুন নির্বাচন কমিশনের প্রতি ইসলামী আন্দোলনের শুভ কামনা
আলোচনায় ফ্যাসিস্ট হাসিনার ‘টুস করে ফেলে দেয়ার’ হুমকি
দীর্ঘ ১৫ বছর সাংবাদিকরা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে পারেনি: খোকন
'ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে রয়েছে অভিনেতা তারিক আনাম খানের নাটক'
বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান
ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বোর্ড অব গভর্নর সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সম্বর্ধনা
সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সংবর্ধনা
লালমোহনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত যুবদল নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু
চকরিয়ার বিএনপি নেতা আবু তাহের চৌধুরীর মৃত্যুতে সালাহউদ্দিন আহমদ ও হাসিনা আহমদের শোক
উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
বেইজিং সংস্কৃতি ও পর্যটন ব্যুরো ও আটাবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ