শিল্পের সব ক্ষেত্রে দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে
০৩ জুন ২০২৩, ০৯:১৭ পিএম | আপডেট: ০৪ জুন ২০২৩, ০১:০২ এএম
চতুর্থ শিল্প বিপ্লব শুরু হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থা নাজুক! ডিজিটাল জিডিপির অবস্থাও খারাপ! সম্প্রতি প্রকাশিত এডিবির প্রতিবেদন মতে, ‘২০১৬-২০২১ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি পেলেও মোট জিডিপিতে ডিজিটাল খাতের অবদান ছিল ৩ শতাংশের নিচে’। এনালগ জিডিপিরও অবস্থা ভালো নয়! ভারী শিল্পের বেশিরভাগ বন্ধ হয়ে গেছে। পাট, বস্ত্র, চিনি, সুতা, চিনি, সার, কাগজ ইত্যাদি। কুঠির, হস্ত, অটোমোবাইল ও তাঁত তথা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পেরও বেশিরভাগ বন্ধ হয়ে গেছে। কোন মতে টিকে আছে প্লাস্টিক, চা, তামাক, চামড়া, সিমেন্ট, রড, ইস্পাত, ওষুধ, আবাসন, ফার্নিচার, বিদ্যুৎ, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, পর্যটন ও জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প। দেশের শিল্পের এই দৈনদশার জন্য প্রধানত দায়ী দুর্নীতি, অপচয়, অব্যবস্থাপনা, অদক্ষতা, শ্রমিক অসন্তোষ, কাঁচামালের অভাব এবং বিশেষ করে জ্বালানি সংকট ও মূল্য বৃদ্ধি। বেশিরভাগ শ্রমিক অশিক্ষিত ও অদক্ষ। দেশে কৃষি খাতের ব্যাপক উন্নতি হলেও যান্ত্রিকরণ হয়নি। কৃষিভিত্তিক শিল্পও তেমন নেই। প্রকাশনা শিল্পের অবস্থাও করুণ! শেয়ার বাজারের অবস্থা খারাপ। সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন দেশে এফডিআই অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশে তা কমেছে। গত অক্টোবরে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রতিবেদন মতে, দুর্নীতি, আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রিতা, অপর্যাপ্ত অবকাঠামো এবং সীমিত অর্থায়নের সুযোগের মতো বেশ কিছু কারণ বড় বাধা সৃষ্টি করছে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগে। সিপিডির সিনিয়র ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, নানা বাধা পেরিয়ে অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী নিবন্ধন করলেও শেষ পর্যন্ত তাদের কম সংখ্যকই বিনিয়োগ করে থাকেন। গত মার্চ মাসে আইএমএফ এক রিপোর্টে বলেছে, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেসব বাধা রয়েছে তার মধ্যে উচ্চ শুল্ক-অশুল্ক বাধা, অবকাঠামোসহ উপযুক্ত পরিবেশ না থাকা ও আস্থার সংকট। ফলে বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে খুবই হতাশাজনক অবস্থা বিরাজ করছে। একই কারণে দেশীয় বিনিয়োগের অবস্থাও কাক্সিক্ষত পর্যায়ের নেই। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ে ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করেও তেমন লাভ হচ্ছে না। শিল্পমন্ত্রী গত ১৬ মে বলেন, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য বিসিকে শিল্প প্লট প্রস্তুত করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে শিল্প স্থাপন করতে পারে, এমন ছোট উদ্যোক্তাদের পাওয়া যাচ্ছে না। তেমনি অবস্থা আইটি পার্কেরও। ১১০টি আইটি পার্ক করা হচ্ছে। অথচ, একটি আইটি পার্ক চালানোর মতো দক্ষ লোক নেই দেশে! অর্থনৈতিক অঞ্চলেও বিনিয়োগ আশানুরূপ নয়। তবুও ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন দেশে প্রায়ই ব্যয় বহুল ‘রোড শো’ এবং দেশে সেমিনার করা হচ্ছে। তবুও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তেমন কোনো উন্নতি হচ্ছে না। দেশে এখন শিল্প বলতে মূলত গার্মেন্ট। তারও অধোগতি শুরু হয়েছে। বিদেশি ক্রেতা সংগঠন-অ্যাকর্ড ও এলায়েন্সের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশ রক্ষা যাচাইয়ের কারণে অনেক গার্মেন্ট বন্ধ হয়ে গেছে কয়েক বছর আগে। বাকী যা ছিল, তারও অবস্থা খারাপ হচ্ছে! কারণ, বর্তমানে বৈশ্বিক মহামন্দার কারণে অর্ডার ও মূল্য হ্রাস পাওয়ায় রফতানি কমে যাচ্ছে। তাই ছোট কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয়ত: উচ্চমূল্যের গার্মেন্ট রফতানির পরিমাণ খুব কম, মাত্র ২০%। গার্মেন্টের বেশিরভাগ শ্রমিক প্রান্তিক নারী।
দেশের পর্যটন খাতের অবস্থা ভালো নয়। গত ১২ নভেম্বর এক দৈনিকে প্রকাশ, দেশের পর্যটনকেন্দ্রগুলো আবার প্রাণচাঞ্চল্যে মুখর হয়ে উঠলেও সাড়া মিলছে না বিদেশি পর্যটকদের। দিন দিন কমছে বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা। প্রকৃতির বহুরূপী সৌন্দর্যে ভরপুর এবং পর্যটনের অপার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও পর্যটকদের মানসম্মত সেবা ও নিরাপত্তার মান বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে পিছিয়ে থাকায় বিদেশি পর্যটকদের আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারছে না। বছরে প্রায় দেড় কোটি পর্যটক ভ্রমণ করছে। তন্মধ্যে বিদেশি পর্যটক মাত্র ৩-৫%। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ভ্রমণ ও পর্যটন উন্নয়ন সূচকে-২০২২ মতে, ১১৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১১০তম। ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম কাউন্সিলের মতে, ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশের পর্যটন খাত যথেষ্ট সম্ভাবনাময় হলেও এখনো নবজাতক পর্যায়েই রয়েছে। দেশের জিডিপিতে পর্যটন খাতের অবদান ৪%, যা নেপালে ৯%। এ ব্যাপারে পর্যটন প্রতিমন্ত্রীর অভিমত হচ্ছে, আমরা বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি। কিন্তু বিদেশি পর্যটকদের যে চাহিদা তা পূরণ করার মতো মনমানসিকতা আমাদের নেই। সেই পরিবেশ বাংলাদেশে এখনো তৈরি হয়নি। তাই বিদেশি পর্যটক কম আসে। আমাদের উদারনীতি অবলম্বন করতে হবে। ঢাবি’র ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামানের অভিমত হচ্ছে, বাংলাদেশে সঠিক পরিকল্পনা ও প্রচারণার অভাবে সম্ভাবনাময় এই খাত পিছিয়ে রয়েছে।
বিবিএস পরিসংখ্যান-২০২১ মতে, দেশে নিবন্ধিত ২৫ লাখ ৪৯ হাজার ৮৯৭টি শিল্প ও বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তন্মধ্যে ১২,৫০০টি খাদ্যের, ৩,৩২৬টি বস্ত্রের, ২,৭০৪টি প্রকৌশলীর। বর্তমানে এসবের অনেকগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। দেশের মোট শিল্প প্রতিষ্ঠানের ৯৮% এসএমই খাতের। দেশের বেশিরভাগ শিল্প প্রতিষ্ঠানে অগ্নিনির্বাপণসহ নিরাপত্তা ও কর্ম পরিবেশ নেই। বর্তমানে গ্রিন ফ্যাক্টরির সংখ্যা ৬৪৫টি। দেশের অনেক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বিলাসিতা, অর্থ পাচার, শ্রমিক ঠকানো ও নির্যাতন, বিপুল শিশু শ্রমিক নিয়োগ ও কর ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে। উপরন্তু দেশের ৭২% শিল্প-কারখানা আবাসিক এলাকায় বলে টিআইবির রিপোর্টে প্রকাশ, যা অবৈধ। দেশে পণ্যের সংখ্যা চার হাজারের বেশি। তন্মধ্যে মান সনদ রয়েছে মাত্র ২২৯টির, যার তদারকি করে বিএসটিআই। বাকীগুলো তদারকি ছাড়াই চলে। যার অনেকগুলোই মানহীন। সিইও ওয়ার্ল্ড ম্যাগাজিনের ‘এন্ট্রাপ্রেনারশিপ ইনডেক্সে-২০২১’ মতে, ১০০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৮৪তম, স্কোর ১২.৯৯ (উদ্ভাবনে ৪.৩৪, প্রতিযোগিতা সক্ষমতায় ৪.৮৯, শ্রম দক্ষতায় ২৩.০৫, অবকাঠামোয় ২০.৪৭, মূলধনে ৯৩.৬২ ও মুক্ত ব্যবসায় ১.০৭)। বর্তমানে এ অবস্থানের তেমন পরিবর্তন হয়নি। সম্প্রতি প্রকাশিত বিআইডিএসের গবেষণা রিপোর্ট মতে, দেশের শ্রমিকরা প্রশিক্ষিত নয় বলে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের উৎপাদনশীলতা সবচেয়ে কম। বিদেশগামী ৪৭% শ্রমিকও অদক্ষ। তাই মজুরীও কম। পণ্যের সরবরাহ চেইনও দুর্বল। বিশ্ব ব্যাংকের লজিস্টিকস পারফরম্যান্স সূচক-২০২৩ মতে, ১৩৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৮৮তম, স্কোর ২.৬। জাতীয় শিল্পনীতি-২০২২ প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশের মোট জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান বর্তমানে ৩৭.০৭%।
শিল্প খাতের বর্ণিত অবস্থার জন্য শিক্ষা ব্যবস্থাও দায়ী। কারণ, শিক্ষা ব্যবস্থা এখনো মূলত: সেকেলেই রয়ে গেছে, যা আছে, তারও মান সর্বনি¤œ! ফলে, একদিকে বেকারত্ব বাড়ছে অন্যদিকে, দক্ষ লোকের ব্যাপক ঘাটতি থেকে যাচ্ছে বিদেশ থেকে যা পূরণ করতে হচ্ছে! সম্প্রতি ফ্রিলান্সিংয়ের কাজ ব্যাপকভাবে বাড়ছে সারা বিশ্বেই। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বৈশ্বিক অবস্থান হচ্ছে: জনবলের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় আর আয়ের ক্ষেত্রে অষ্টম বলে পেয়োনিয়ারের ২০২২ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। আইসিটি প্রতিমন্ত্রী গত ২৪ মে বলেন, বর্তমানে দেশে ৭০ হাজার ছেলে-মেয়ে আউটসোর্সিংয়ের কাজ করছে। আউটসোর্সিংয়ে দেশের আয় কম হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে, উন্নতমানের কাজের ও ইংরেজিতে দক্ষতার অভাব। তাই কম আয়ের নি¤œমানের কাজ করে। বিশ্বে শুরু হওয়া চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে সংযুক্ত হওয়ার মতো উদ্যোক্তা ও কর্মীর প্রচ- অভাব রয়েছে। তাই যুগের চাহিদা অনুযায়ী দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে দ্রুত।
বিশ্বের এই নবতর পরিবর্তনে তথা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে আমাদের শামিল হতে হবে। উপরন্তু সব পণ্যের মান ও মূল্য বৈশ্বিক পর্যায়ের করতে হবে। নতুবা টিকে থাকা কঠিন। তাই দেশের সব শিল্পকে আধুনিক, প্রযুক্তিভিত্তিক এবং সব মালিক ও শ্রমিককে আধুনিক কাজে দক্ষ করতে হবে। সে জন্য নিয়োগের ক্ষেত্রে আধুনিক কাজে শিক্ষিত ও দক্ষদের প্রাধান্য এবং সকলকে ব্যাপক প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এছাড়া, সব শিল্প প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি, অপচয়, ফাঁকিবাজি, অতি মুনাফা, পণ্যে নকল ও ভেজাল দেওয়া এবং কর ফাঁকি ইত্যাদি বন্ধ করতে হবে। উপরন্তু সব শিল্পকে পরিবেশ ও শ্রমিক বান্ধব এবং শিশু শ্রমিক মুক্ত করতে হবে। এ লক্ষ্যে দেশের শ্রম আইন সংশোধন করা হচ্ছে ইউরোপের দেশগুলোর জিএসপি প্লাস সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তাদের দাবির প্রেক্ষিতে। যুক্তরাষ্ট্রও আইএলও’র নীতি বাস্তবায়ন করার দাবি জানিয়েছে। তাই শ্রম আইন সংশোধন করা হচ্ছে, যা চলতি জুনেই সম্পন্ন হবে বলে জানা গেছে। শ্রম আইন শুধু সংশোধন করলেই চলবে না, সেই সাথে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। নতুবা জিএসপি প্লাস পাওয়া যাবে না। সেটা না পেলে পশ্চিমা দেশগুলোতে শুল্ক দিয়ে পণ্য রফতানি করতে হবে। তাতে প্রতিযোগিতা মোকাবেলা করা কঠিন হবে। শ্রমিকদেরও মানসিকতার পরিবর্তন ঘটিয়ে শিল্প-প্রতিষ্ঠানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা সৃষ্টি এবং উৎপাদনের হার বাড়াতে হবে। অপরদিকে, দেশের সব শিল্প প্রতিষ্ঠানকে আধুনিক ও অগ্রগতির ক্ষেত্রে স্বল্প সুদে চাহিদা মাফিক ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা, অবকাঠামোর উন্নতি, ব্যবসা সহজীকরণ ও পর্যাপ্ত কাঁচামালের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। তবেই, শিল্প প্রতিষ্ঠান বিশ্ব প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবে। নচেৎ যেটুকু আছে, তারও প্রাণ প্রদীপ নিভে যাবে। দেশ সম্পূর্ণরূপে বিদেশি পণ্যনির্ভর হয়ে পড়বে, যা কাম্য নয়। স্মরণীয় যে, এলডিসি উত্তরণের পর জিএসপি ও ওষুধের প্যাটেন্ট সুবিধা থাকবে না। তখন কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে, যা মোকাবেলা করার জন্যও দেশের শিল্পের আধুনিকতা, প্রযুক্তির ব্যবহার ও দক্ষতা বাড়ানো দরকার।
বেসিস সভাপতি বলেন, আমাদের উৎপাদন ব্যবস্থায় তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করলে ৩৩% পর্যন্ত উৎপাদন বাড়বে। হালাল পণ্যের চাহিদা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ২০২৪ সালে বৈশ্বিক হালাল পণ্য ও সেবার বাজার হবে ১২.১৪ ট্রিলিয়ন ডলার। বৈশ্বিক টেকনিক্যাল টেক্সটাইল পণ্যের বাজার ২০২৫ সাল নাগাদ হবে ২২৪ বিলিয়ন ডলারের। দেশে কৃষিভিত্তিক শিল্পের ব্যাপক প্রয়োজন ও চাহিদা রয়েছে। এসব দিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। সিপিডি সম্প্রতি বলেছে, বর্তমানে ই-কমার্সের বাজার প্রায় ৪১ হাজার কোটি টাকা, যা আগামী চার বছরে প্রায় ৪০০ কোটি ডলার হবে। এটা যুগের চাহিদা। তাই এদিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। অন্যদিকে, দেশের রফতানি মূলত গার্মেন্ট, যার পরিমাণ মোট রফতানির প্রায় ৮৪%। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে হবে। রফতানি বহুমুখী করতে ও বাড়াতে হবে। গত ২৩ মে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশে শিল্প প্রতিষ্ঠা ও ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে ৩৩ প্রকারের সনদ লাগে, যার অধিকাংশই প্রতিবছর নবায়ন করতে হয়। এটা ঝামেলাপূর্ণ ও ব্যয় বহুল। তাই শিল্প ও ব্যবসা সংক্রান্ত প্রতিটি সনদের মেয়াদ পাঁচ বছর করা দরকার।বিষয়টি বিবেচনাযোগ্য। অপরদিকে, বিনিয়োগের যে প্রস্তাব পাওয়া যাবে, তা যদি দেশের জন্য কোন ক্ষতিকর না হয়, তাহলে সেটা স্বল্প দিনের মধ্যেই অনুমোদন করতে হবে। এ জন্য একটি সময় নির্ধারণ করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। বিনিয়োগের সব প্রতিবন্ধকতা দ্রুত দূর করতে হবে। বিনিয়োগ বৃদ্ধি না পাওয়ার কারণে কর্মসংস্থান বাড়ছে না। ফলে বেকারত্ব বেড়েই চলেছে। বেকাররা নানা দুর্দশায় নিপতিত হয়ে চরম হতাশগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। অনেকেই অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়েছে। যুবসম্প্রদায় ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছে, যা দেশের ভবিষ্যতের জন্য চরম ক্ষতিকর!
ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম কাউন্সিল গত ২৭ এপ্রিল জানিয়েছে, ‘চলতি বছরে পর্যটন খাতের বৈশ্বিক আয় ৯৫ লক্ষ কোটি ডলার হতে পারে, যা ২০১৯ সালে মহামারিপূর্ব আয়ের চেয়ে মাত্র ৫% কম। বর্তমানে ৩৪টি দেশ মহামারিপূর্ব পরিস্থিতিকেও অতিক্রম করেছে। মানুষ আগ্রহী হয়ে উঠছে ভ্রমণের ক্ষেত্রে’। অন্য এক খবরে প্রকাশ, ২০৫০ সাল নাগাদ এশিয়া হবে পর্যটকদের গন্তব্য। তখন পৃথিবীর প্রায় ৫০% পর্যটক ভ্রমণ করবে এশিয়া। এর একটি অংশকে বাংলাদেশমুখী করতে পারলে দেশের পর্যটন খাতের ব্যাপক উন্নতি হবে এবং বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে। কারণ, একজন পর্যটনের কারণে ১০ জনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। ২০৩০ সালে এসডিজি অর্জন ও ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হতে শিল্প খাতের কাক্সিক্ষত উন্নতি অপরিহার্য।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
বিভাগ : বিশেষ সংখ্যা
বিষয় : year
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
কিশোরগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার কামালসহ তিনজন গ্রেফতার
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ
বেইজিং সংস্কৃতি ও পর্যটন ব্যুরো ও আটাবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত
উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
গাজায় যুদ্ধবিরতি ছাড়া বন্দী বিনিময় হবে না : হামাস
শান্তিরক্ষা মিশন মোতায়েন করতে চায় জাতিসংঘ হাইতিতে
চকরিয়ার বিএনপি নেতা আবু তাহের চৌধুরীর মৃত্যুতে সালাহউদ্দিন আহমদ ও হাসিনা আহমদের শোক
পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে দ্বিধা করবেন না : সার্বিয়া
ক্লাইমেট অর্থায়ন ইস্যুতে দেশগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব
লালমোহনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত যুবদল নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু
ট্রাম্পের অ্যাটর্নির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন আটকে গেল
‘ফিলিস্তিনের পর ইরান, সউদী ও তুরস্ক হবে পরবর্তী টার্গেট’
প্রতি বছর ৩ লাখ নথিবিহীন অভিবাসীকে বৈধতা দানের ঘোষণা স্পেনের
প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে সবচেয়ে অসুখী দেশ জাপান-কোরিয়া
মুসলিম চিকিৎসক
শীর্ষে দিল্লি
সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সংবর্ধনা
ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বোর্ড অব গভর্নর সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সম্বর্ধনা
বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান
মানসিক সুস্থতায় কর্মবিরতি