চ্যাম্পিয়ন ভারতকে কাঁদিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ
১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০২ এএম | আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০২ এএম
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন শক্তিশালি ভারতকে কাঁদিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে জায়গা করে নিলো বাংলাদেশ। গতকাল দুবাইয়ের আইসিসি একাডেমি ২ নং মাঠে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ভারতকে ৪ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে উঠলো ছোট টাইগাররা। আগে ব্যাট করে মুশির খান ও মুরুগান অভিশেকের হাফসেঞ্চুরিতে ৪২.৪ ওভারে ১৮৮ রানে অলআউট হয় ভারত। জবাবে আরিফুল ইসলামের মারকুটি হাফসেঞ্চুরিতে ৪২.৫ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮৯ রান তুলে ৪৩ বল হাতে রেখেই কাঙ্খিত জয় স্পর্শ করে বাংলাদেশ। অন্যদিকে একই দিন আইসিসি একাডেমি ১ নং মাঠে টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে ১১ রানে হারিয়ে ফাইনালে উঠলো স্বাগতিক সংযুক্ত আরব আমিরাত। আগে ব্যাট করে ৪৭.৫ ওভারে সবক’টি উইকেট হারিয়ে ১৯৩ রান তোলে স্বাগতিকরা। জবাবে ৪৯.৩ ওভারে ১৮২ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তানের ইনিংস। ফলে আগামীকাল দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের ফাইনালে বাংলাদেশের বিপক্ষে মাঠে নামবে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়নই শুধু নয়, টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ শিরোপাও তাদের (৮ বার) দখলেই। অথচ সেই ভারতকে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় করলো বাংলাদেশ। নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করেই অপরাজিত থেকে ফাইনালের টিকিট কাটলেন মাহফুজুর রহমান রাব্বিরা। প্রথম রাউন্ডে ‘বি’ গ্রুপের তিন ম্যাচ এবং সেমিফাইনালসহ টানা চার ম্যাচেই জয় পেল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল।
কাল টস জিতে ভারতকে প্রথমে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানান বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বি। ব্যাট করতে নেমে টাইগার পেসারদের তোপে শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়েন ভারতীয় ব্যাটাররা। এক পর্যায়ে ৬১ রানে ভারতের ৬ উইকেট তুলে নেন বাংলাদেশের বোলাররা। অবশ্য শেষদিকে মুশির খান ও মুরুগান অভিশেকের দুই ফিফটিতে সম্মানজনক সংগ্রহ পায় উদয় শাহারানের দল।
ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ১৩ রানে ৩ উইকেট হারায় ভারত। ২ বলে ২ রান করে ড্রেসিংরুমে ফেরেন ওপেনার আদর্শ সিং। বাংলাদেশের বাঁহাতি পেসার মারুফ মৃধার বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। এরপর ৬ বলে ১ রান করা আরেক ওপেনার আর্শিন কুলকার্নিকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান মারুফ। আর অধিনায়ক উদয় শাহারানকে রানের খাতাই খুলতে দেননি তিনি। অর্থাৎ ভারতের প্রথম তিন উইকেটের তিনটিই শিকার করেন মারুফ মৃধা। এরপর দলের হাল ধরান চেষ্টা করেন প্রিয়ানসু মলিয়া ও শচিন দাস। তবে বাংলাদেশি বোলারদের তোপের মুখে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি শচিন। ২৩ রানের জুটিটি ভেঙে দেন ডানহাতি পেসার রোহানাত দৌল্লা বর্ষণ। ফলে ৩৬ রানে ৪ উইকেট হারায় ভারত। সেখান থেকে প্রিয়ানসু মলিয়া ও মুশির খানের ২৫ রানের জুটি দলীয় স্কোর ৬১ রানে নিয়ে যায়। ইনিংসের ১৬ তম ওভারে জোড়া আঘাতে মলিয়াকে ১৯ রানে ও অ্যারাভেলি আভিনিশকে ০ রানে ফেরান ডানহাতি পেসার বর্ষণ। তখন মনে হয়েছিল ভারতকে ১০০ রানের আগেই গুটিয়ে দিতে পারবে বাংলাদেশ। কিন্তু তা হতে দেয়নি মুশির খান ও মুরুগান অভিশেকের গড়া সপ্তম উইকেটের জুটি। ১০৮ বলে ৮৪ রানের জুটিতে তারা দলকে নিয়ে যান ১৪৫ রানে। মুশির ফিফটি করে (৬১ বলে ৫০) রাব্বির বলে আরিফের হাতে ক্যাচ দেন। এরপর দলীয় সংগ্রহে তিন রান যোগ হতেই ফেরত যান নতুন ব্যাটার সৌমি পান্ডে। মুশির পর মুরুগানও হাকাঁন ফিফটি। অবশেষে ৭৪ বলে ৬২ রান (৬ চার ও ২ ছক্কা) করে মারুফের বলে জিসান আলমের হাতে ধরা পড়েন তিনি। শেষ পর্যন্ত ১৮৮ রানের বেশি আর করতে পারেনি ভারত।
৪১ রান খরচায় বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট শিকার করেন মারুফ মৃধা। রোহানাত দৌল্লা বর্ষণ ও শেখ পারভেজ জীবন যথাক্রমে ৩৯ ও ২৯ রানে পান ২টি করে উইকেট।
মামুলি লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ৩৪ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসেছিল যুবা টাইগাররা। তবে সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করেন আরিফুল ইসলাম। তিনি খেলেন চোখ ধাঁধানো এক ইনিংস। শুরুতে ইনিংস মেরামতে মনোযোগ দিলেন, সেট হয়ে মাঠ গরম করলেন চার ও ছক্কায়। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার। সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৬ রানে থাকার সময় ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচ হয়ে ফিরতে হয় ডানহাতি এই ব্যাটারকে। তবে আরিফুল ফিরলেও তখন জয় বলতে গেলে নিশ্চিত হয়ে গেছে বাংলাদেশের। শেষদিকে অবশ্য ভারত বেশ কয়েকটি উইকেট তুলে নেয়। তা না হলে বাংলাদেশের জয়টা আরও বড় হতে পারতো। নিজেদের ইনিংসের প্রথম ওভারেই রাজ লিম্বানির বলে বোল্ড হন বাংলাদেশ ওপেনার জিসান আলম। গোল্ডেন ডাকে (১ বলে ০) ফেরেন তিনি। ১৯ বলে ১৩ করে নামান তিওয়ারির শিকার হন চৌধুরী মো. রিজওয়ান। টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক আশিকুর রহমান শিবলির ওপর ভরসা ছিল। কিন্তু ২২ বলে ৭ করে রানআউটে কাটা পড়েন এই ওপেনার। বিপর্যয় কাটাতে আরিফুল ইসলাম খেলেন কার্যকরি এক ইনিংস। তিনি আহরার আমিনকে সঙ্গে নিয়ে ১৩৮ রানের জুটি গড়লে ম্যাচ জেতা নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের। এ জুটিতে মূল ভূমিকা আরিফুলেরই। তবে ৯০ বলে ৯ চার আর ৪ ছক্কায় ৯৪ রান করে ভারতীয় পেসার রাজ লিম্বানিকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়েই ভুল করেন তিনি। ক্যাচ হয়ে ফিরতে হয় ড্রেসিংরুমে।এরপরই তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে আউট হন মোহাম্মদ শিহাব (৭ বলে ৯) আর শেষদিকে এসে উইকেট বিলিয়ে আসেন আরিফুলের সঙ্গে ম্যাচ জেতানো জুটি গড়া আহরারও। ১০১ বলে ৪৪ রান করেন তিনি। তার ইনিংসে ছিল ৩টি চারের মার। শেষ পর্যন্ত অধিনায়ক রাব্বি ১১ বলে ৩ এবং জীবন ৬ বলে ২ রানে অপরাজিত থাকেন। ভারতের নমন তিওয়ারি ৩৫ রানে ৩টি ও রাজ লিম্বানি ৪৭ রানে ২টি উইকেট পান। ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতে নেন বাংলাদেশ যুব দলের মারুফ মৃধা।
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে : তারেক রহমান
ঋণখেলাপিরা যাতে মনোনয়ন না পায় চেষ্টা করবো : মির্জা ফখরুল
অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর না হলে রাজনৈতিক সংস্কার টেকসই হবে না : বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি
টিসিবি’র এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারীর মধ্যে ৩৭ লাখই ভুয়া: বাণিজ্য উপদেষ্টা
ভোজ্যতেলের সরবরাহ নিশ্চিতে কারখানা পরিদর্শন ভোক্তা অধিকারের
গণপরিবহনে শৃঙ্খলায় কাউন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা
রাজধানীর তিন পার্কে ভেন্ডারের চুক্তি : শর্ত ভঙ্গের তদন্তে ডিএনসিসি
বাবা-মায়ের পুরোনো বাড়িতে যাই : শফিকুল আলম
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসায় ১৫০ কোটি টাকা অনুদান
২০২৪ সালে ৩১০ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
ভারতীয় ৭২ গণমাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে অপতথ্য প্রচার
লেবানন থেকে দেশে ফিরলেন আরো ৪৭
প্লাটফর্ম বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত
শক্তিশালী অর্থনীতি ও গর্বিত জাতি গড়তে শহীদ জিয়ার দর্শন ধারণ করতে হবে : আমির খসরু
কী আছে তৌফিকার লকারে?
ঘটনার তিনদিন পর থানায় মামলা
অনিয়ম ঢাকতে তড়িঘড়ি করে নির্বাচনের পাঁয়তারা
শেবাচিম হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের দুরবস্থা
৯৬টি সিএনজি ভাঙ্গাড়ি হিসাবে সাড়ে ১১ লাখ টাকায় বিক্রি
৩১ দফা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে রূপগঞ্জে বিএনপির সমাবেশ