আয়ারল্যান্ডকে নিয়েও ‘সিরিয়াস’ বাংলাদেশ
০৩ এপ্রিল ২০২৩, ১০:০৯ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০৭:৩৫ এএম
একটা সময় মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টেস্ট মানেই ছিল স্পিন স্বর্গে খেলা। ম্যাচের প্রথম সেশন থেকে বল নিচু হওয়া, বড় বড় বাঁক খাওয়া বা অসম বাউন্স ছিল নিয়মিত চিত্র। স্পিনারদের দাপটে তিন-চার দিনেই শেষ হতো যে কোনো ম্যাচ। সাদা বলের ক্রিকেটে সেখান থেকে বেরিয়ে ভালো উইকেটে খেলার বার্তা আগেই দিয়েছেন ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল। এবার টেস্টেও মিলল তেমন কিছুর আভাস।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের আগে দুই দলের অনুশীলন শুরুর দিন দেখা যায়, সবুজ উইকেটে রয়েছে সতেজ ঘাসের উপস্থিতি। পরদিন অনুমিতভাবেই ছাঁটা হয়েছে কিছু ঘাস। তাতে সবুজাভ আভা যেন কিছুটা বাড়ল। ম্যাচের দিন সকালে তা চমক হতে পারে দুই দলের জন্য। তবে এর আগে উইকেট দেখে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের ভাবনা অভিন্ন, ভালো উইকেটে হবে একমাত্র টেস্ট ম্যাচটি।
এমন উইকেটে ব্যাট-বলের জমাট লড়াই হবে বলে মনে করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ম্যাচের আগের দিন দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে এই স্পিনার বললেন, সবার জন্যই সুযোগ থাকবে এই উইকেটে, ‘আমাদের হোম কন্ডিশনের খেলা। যেটা সবসময় বলা হয়, আমরা স্পিন সহায়ক দল। স্পিন দিয়ে আমরা ভালো করি। তবে পেস বোলারদেরও সুযোগ থাকবে। উইকেটটা আমরা দেখেছি। ভালো উইকেট করার চেষ্টা করছে। যেন সব দিকেই আমরা ভালো করতে পারি। ব্যাটসম্যানরাও ভালো করতে পারি, পেসার-স্পিনাররাও। ভালো একটা সংগ্রহ দাঁড় করানোর সুযোগ থাকবে। যেন আমরা যথাযথ টেস্ট ক্রিকেটটা খেলতে পারি। সেরকমভাবে আমাদের দল সাজানো হচ্ছে। পেস বোলিং, স্পিন বোলিং বা ব্যাটসম্যান- তিনটা বিভাগেই যেন আমরা ভালো করতে পারি।’
বাংলাদেশ অনুশীলন শেষ করে যাওয়ার পর আসে আয়ারল্যান্ড দল। মাঠে ঢুকে বেশ কিছুক্ষণ উইকেট পর্যবেক্ষণ করতে দেখা যায় অ্যান্ড্রু বলবার্নিকে। তার কাছেও উইকেট ভালো বলেই মনে হয়েছে, ‘(উইকেট) দেখে খুব ভালো মনে হয়েছে। আমি ঠিক জানি না, তারা আজকে আবার ঘাস ছাঁটবে কি না। তবে আমরা এই মাঠ নিয়ে নিজেদের হোমওয়ার্ক করেছি। মাঠে নেমে আমাদের দ্রুত মানিয়ে নিতে হবে, হোক আমরা আগে ব্যাটিং করি অথবা বোলিং। উইকেটের ভাবনায় খুব বেশি প্রভাবিত হতে চাই না। আমরা নিজেদের দিকে মনোযোগ দেব।’
সবশেষ টেস্টে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল ভারত, এবার লড়াই আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে। মানের দিক থেকে দুই দলের পার্থক্য অনেক। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশও এখনও পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত কোনো শক্তি না হলেও এই কন্ডিশন, শক্তি-সামর্থ্য আর নানা বাস্তবতা মিলিয়ে স্বাগতিকরা অনেকটাই এগিয়ে আইরিশদের চেয়ে। টেস্টের আগে এবার সীমিত ওভারের দুই সিরিজেও তা স্পষ্ট হয়েছে। টেস্ট ম্যাচটি আইরিশদের জন্য হওয়ার কথা আরও কঠিন। প্রায় চার বছর বিরতির পর টেস্ট খেলতে নামবে তারা। মিরপুরের উইকেটও সিলেট-চট্টগ্রামের তুলনায় হতে পারে আরও চ্যালেঞ্জিং।
এই দলের বিপক্ষে খেলতে নেমে আত্মবিশ্বাস যে বেশি থাকবে, তা অস্বীকার করলেন না মিরাজ। তবে এই ম্যাচকে গুরুত্ব কোনো অংশেই তারা কম দেবেন না বলে দাবি তার, ‘আমরা সবাই অনেক সিরিয়াস। ম্যাচ যখন খেলা হয় দেখবেন না যে, ভারতের সঙ্গে খেললে অনেক সিরিয়াস থাকে বা আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে খেললে ফোকাস কম থাকে। ফোকাস একই রকম থাকে। হয়তো আত্মবিশ্বাস অনেক বেশি কাজ করে অনেক সময়, অনেক সময় কম কাজ করে। প্রতিটা মানুষের আত্মবিশ্বাস কিন্তু ওঠা-নামা করে। এটা প্রতিটা মানুষের মানসিক ব্যাপার। সবসময় একই রকম আত্মবিশ্বাস থাকে না। ভারতের সঙ্গে ১০০ করলে রেকর্ড থাকবে ১০০ করেছে। আবার আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে করলেও ১০০-ই থাকবে। খাতায় কিন্ত বদলাবে না। ওমুক দল বা তমুক দল- এরকম বলা হবে না। দিন শেষে এটিকেই আমরা এগিয়ে রাখি।’
একমাত্র টেস্টের জন্য ঘোষিত বাংলাদেশ স্কোয়াডের ১৪ জনের মিলে রয়েছে ৪৭৩ ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা। অন্য দিকে আইরিশ স্কোয়াডের ৯ জনের এখনও টেস্ট অভিষেকই হয়নি। তিন জন পাননি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলার স্বাদ। সবচেয়ে বেশি ৮ টেস্ট খেলা পিটার মুর দলে এসেছেন জিম্বাবুয়ে থেকে ঠিকানা বদল করে। বাংলাদেশ যে আয়ারল্যান্ডকে হালকা ভাবে নিচ্ছে না, এটির একটি প্রমাণ অবশ্য পূর্ণ শক্তির দল ঘোষণা করাতেই। নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক রোববার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, আয়ারল্যান্ডকে দাপট দেখিয়ে হারাতেই পূর্ণ শক্তির দল রেখেছেন তারা। মিরাজও বললেন সেই লক্ষ্যের কথা। তবে বড় জয়ের আগে যে জয়টা নিশ্চিত করা জরুরি, সেটিও তিনি মনে করিয়ে দিলেন।, ‘অভিজ্ঞতার দিক থেকে হয়তো আয়ারল্যান্ডের অনেক বেশি টেস্ট খেলা হয়নি। আমরা টেস্ট ক্রিকেট অনেক দিন ধরে খেলছি। আমাদের অনেক ক্রিকেটার আছে। অবশ্যই আমাদের চেষ্টা থাকবে ব্যবধানটা যেন ভালোভাবে জিততে পারি। তবে, দিন শেষে জেতাটা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি ১ রানে জিতলেও জিতবেন, ১০০ রানে জিতলেও জিতবেন। প্রথম চেষ্টা থাকবে ম্যাচ জেতা।’
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াইয়ে একটা চাপও দলের সঙ্গী। তুলনামূলক কম শক্তির দলের বিপক্ষে জিতলে তেমন কৃতিত্ব পাওয়া যায় না। তবে হেরে গেলে সমালোচনা হয় প্রবল। আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে এটি আবার বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট। প্রতিপক্ষ তুলনামূলক অচেনা-অজানা বলেই মনোযোগ বেশি রাখতে হবে বলে মনে করেন তিনি, ‘অবশ্যই ছোট দলের সঙ্গে খেলতে গেলে কিছু কিছু জিনিস কনফিউশন থাকে। আমার কাছে মনে হয়, বড় দলের চেয়ে ছোট দলের সঙ্গে বেশি ফোকাস থাকে।’
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ পা থেকে ১১০ দিন পরে বের করা হলো বু্লেট
বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের ইস্যু তুলে ঝাড়খণ্ডে জিততে পারে নি বিজেপি, তবে মহারাষ্ট্রে বড় জয়
আবু সাঈদকে নিয়ে হাসিনার দাবি কতটুকু সত্য
বগুড়ায় কনসার্টের ভীড়ে ছুরিকাঘাতে যুবকের মৃত্যু
অনলাইন জুয়ার প্রচারণায় বুবলী
রিংয়ে আমিনুল-সানজিদাদের উৎসব
চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির কাউন্সিলে প্রত্যক্ষ ভোটে সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত
আওয়ামী লীগকে কবর দিয়েছেন শেখ হাসিনা
রোচ-গ্রেভস জুটি ভাঙতে পারছে না বাংলাদেশ
মোমবাতি প্রজ্বলনে তাজরীন ট্র্যাজেডিতে নিহতদের স্মরণ
সিসিকের সাবেক কাউন্সিলর ১৩ মামলার আসামী আ‘লীগ নেতা লায়েক গ্রেফতার
যার হাত ধরে পরীমনি এসেছিলেন চলচ্চিত্রে,তার মরণ দিনে করলেন খাসি জবাই
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবর্তন হচ্ছে লেকের নাম, নতুন নাম ‘মুগ্ধ সরোবর’
সোনারগাঁয়ে বিএনপির কার্যালয় উদ্বোধন
সেনবাগে ইসলামী আন্দোলনের গণ সমাবেশে আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধের দাবী
পঞ্চগড়ে সিন্ডিকেট ভাঙতে তেঁতুলিয়ায় ৫৫ টাকায় আলু বিক্রি
স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের দাবী অত্যন্ত যৌক্তিক ধর্ম উপদেষ্টা ড.খালিদ হোসেন
সাধারণ মানুষের পেটে লাথি মেরে আ.লীগ নিজেদের ভাগ্য গড়েছে : এমরান সালেহ প্রিন্স
মাদক শুধু ব্যক্তিকে নয় পরিবারকেও ধ্বংস করে
অ্যাম্বাসেডর কাপ উশুতে সেনাবাহিনী চ্যাম্পিয়ন