আবারও ব্যাটিং ব্যর্থতায় হার বাংলাদেশের

স্পোর্টস ডেস্ক

০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:৪৬ পিএম | আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৩৫ এএম

ছবি: বিসিবি

সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে একাই লড়লেন তাওহিদ হৃদয়। কিন্তু ম্যাচের নায়ক হতে পারলেন না তরুণ এই ব্যাটার। দাসুন শানাকা, মাহেশ থিকশানা আর মাথিশা পাথিরানার বোলিং তোপে লক্ষ্য থেকে অনেক দূরে থাকতেই গুটিয়ে গেল বাংলাদেশ। এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্বের পর সুপার ফোরেও শ্রীলঙ্কার কাছে হারল সাকিব আল হাসানের দল।

সাদিরা সামারাবিক্রমা ও কুসল মেন্ডিসের ব্যাটে ৯ উইকেটে ২৫৭ রানের সংগ্রহ গড়ে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ১১ বল বাকি থাকতে ২৩৬ রানে। পাকিস্তানের কাছে ৭ উইকেটে হারা সাকিব বাহিনী এবার হারল ২১ রানের ব্যাবধানে।

স্লো উইকেটে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যে দরকার ছিল উইকেট ধরে রেখে খেলা। ৫৫ রানের উদ্বোধনী জুটিতে শুরুটা মন্দ ছিল না যদিও। কিন্তু ৮৩ রানে গিয়ে ৪ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। এরপর ৭২ রানের জুটি গড়েন মুশফিকুর রহিম ও হৃদয়। মুশফিক ৪৮ বলে ২৯ রান করে আউট হওয়ার পর আর ৩০ রানের জুটিও পায়নি বাংলাদেশ। শেষ উইকেটে ১২ বলে নাসুম-হাসানের ২০ রানের জুটি অপেক্ষা বাড়িয়েছে কেবল। ৯৭ বলে ৮২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন হৃদয়।

ম্যাচ শেষে সাকিবও হারের কারণ হিসেবে উপরের চার ব্যাটারদের রান না পাওয়া আর মাঝে বড় কোনো জুটি না পাওয়াকে দুষলেন। বোলারদেরও দায় দেখছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

ক্যারিয়ার সেরা ৭২ বলে সর্বোচ্চ ৯৩ রানের ইনিংসে শ্রীলঙ্কার জয়ের নায়ক সামারাবিক্রমা। সঙ্গে কুসল মেন্ডিসের ফিফটিতে লড়াইয়ের পুজি পায় স্বাগতিকরা। তিনটি করে উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ ও হাসান মাহমুদ। দলের খুব গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দুটি শিকার ধরেন শরিফুল ইসলাম।

স্লো উইকেটে এই রান চ্যালেঞ্জিং হলেও অসম্ভব ছিল না। কিন্তু ব্যাটারদের ব্যর্থতায় তা আর হয়ে ওঠেনি।

স্লো উইকেটের কথা ভেবেই আফিফ হোসেনকে বাদ দিয়ে দলে একজন স্পিনার বাড়ায় বাংলাদেশ। তবে শ্রীলঙ্কার হারানো ৯ উইকেটের আটটিই বাংলাদেশের পেসারদের শিকার। অন্যটি রান আউট।

শঙ্কা থাকলেও পুরো ইনংসে বাধ সাধেনি বৃষ্টি। টস জিতে বোলিং বেছে নেওয়া বাংলাদেশ ষষ্ঠ ওভারে প্রথম সফলতা পায়। টানা দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়েছিলেন দিমুথ করুনারত্নে। পরের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে শ্রীলঙ্কার ওপেনারকে কট বিহাইন্ড করেন হাসান।

দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে স্বাগতিকরা যোগ করে সর্বোচ্চ ৭৪ রান। পাথুন নিশানকাকে (৪০) এলবিডব্লিউ করে জুটি ভাঙেন শরিফুল। নিজের পরের ওভারে জুটির আরেক ব্যাটার কুসল মেন্ডিসকে থার্ড ম্যানে তাসকিনের ক্যাচ বানান তরুণ এই পেসার।

চতুর্থ উইকেটে জুটি বড় হতে দেননি তাসকিন। মিড অনে সাকিবের ক্যাচ বানান চারিথ আসালাঙ্কাকে। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকেও দ্রুত কট বিহাইন্ড করে ফেরান হাসান। ষষ্ঠ উইকেটে সামারাবিক্রমা ও অধিনায়ক দাশুন শানাকার ৫৭ বলে ৬০ রানের জুটি শ্রীলঙ্কাকে আড়াইশোর্ধো সংগ্রহের পথ দেখায়।

শানাকাকে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন হাসান। শেষ ওভারে দুই উইকেট তুলে নেন তাসকিন। এর মধ্যে আছে সামারাবিক্রমার উইকেটও।

উইকেট না পেলেও বল হাতে মিতব্যায়ি ছিলেন নাসুম। ১০ ওভারে দেন কেবল ৩১ রান।

আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর ভারতের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা: ৫০ ওভারে ২৫৭/৯ (নিশানকা ৪০, করুনারত্নে ১৮, কুসল ৫০, সামারাবিক্রমা ৯৩, আসালাঙ্কা ১০, ধনাঞ্জয়া ৬, শানাকা ২৪, ভেল্লালাগে ৩, থিকসানা ২, রাজিথা ১*; অতিরিক্ত ১০; তাসকিন ১০-০-৬২-৩, শরিফুল ৮-০-৪৮-২, হাসান ৯-০-৫৭-৩, সাকিব ১০-০-৪৪-০, নাসুম ১০-১-৩১-০, মিরাজ ৩-০-১৪-০)।

বাংলাদেশ: ৪৮.১ ওভারে ২৩৬ (নাঈম ২১, মিরাজ ২৮, লিটন ১৫, সাকিব ৩, মুশফিকুর ২৯, হৃদয় ৮২, শামিম ৫, তাসকিন ১, শরিফুল ৭, হাসান ১০*, নাসুম ১৫; অতিরিক্ত ২০, রাজিথা ৭-০-২৯-০, থিকশানা ৯-০-৬৯-৩, শানাকা ৯-০-২৮-৩, পাথিরানা ৯.১-১-৫৮-৩, ভেল্লালাগে ১০-১-২৬-১, ধনাঞ্জয়া ৪-০-১৮-০)।

ফল: শ্রীলঙ্কা ২১ রানে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: সাদিরা সামারাবিক্রমা।

বিভাগ : খেলাধুলা