এত প্রাপ্তির পরও স্বস্তি কোথায়?
২৭ মে ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২৭ মে ২০২৪, ১২:০৩ এএম
যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সদ্য শেষ হওয়া সিরিজে ফিরে তাকালে দুঃস্মৃতিই উঁকি দিবে বাংলাদেশের মনে। আনকোড়া আমেরিকানদের কাছে টানা দুই ম্যাচে হেরে সিরিজ খুইয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। তবে রেকর্ডবুকে সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি আলাদা জায়গা দখল করে নিয়েই থাকবে টাইগারদের জন্য। বাংলাদেশের ক্রিকেটে এতদিন যা ঘটেনি, এই এক ম্যাচেই সেরকম তিনটি রেকর্ডের দেখা পেয়েছে লাল-সবুজের দল। টেক্সাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি ভিউ ক্রিকেট কমপ্লেক্সে এদিন একটি উইকেটও না হারিয়ে বাংলাদেশ কোনো টি-টোয়েন্টিতে জিতেছে, তা হয়নি কখনোই। সৌম্য সরকার ও তানজিদ হাসান তামিমের ব্যাটে গতপরশু রাতে ১০ উইকেটের প্রথম জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি দুটি রেকর্ড হয়েছে বোলিংয়ে।
টি-টোয়েন্টিতে মেডেন ওভারের দেখা মিলে কালেভদ্রেই। ম্যাচের পর ম্যাচ হয়ে যায় মেডেন ওভার ছাড়া। একটি মেডেন দেখলেই তাই আলাদা করে বাহবা দিতে হয় বোলারকে। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে একবার নয়, তিনবার সেক্ষেত্রে বাহবার প্রয়োজন। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো ম্যাচে তিন ওভার মেডেন করেছেন বোলাররা। এই রেকর্ডের সাথে কিপটে বোলিংয়ে আরেকটি প্রথমের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ। ১০ উইকেটে জয় পাওয়া ম্যাচে মুস্তাফিজুর রহমান চার ওভার করে রান দিয়েছেন ১০। রিশাদ হোসেনের ২৪ বলে যুক্তরাষ্ট্র এনেছে মাত্র ৭ রান। বাংলাদেশের সব বোলাররা ভালো করলেও রিশাদ ও মুস্তাফিজ- এই দুজন চার ওভার করেও ১০ রানের বেশি দেননি। কোনো ম্যাচে বাংলাদেশের দুজন এভাবে বোলিংয়ের কোটা পূরণ করেছেন, কিন্তু ১০ রানের বেশি দেননি, এমন ঘটনা এর আগে কখনোই দেখার সৌভাগ্য হয়নি সমর্থকদের।
এই দুই বোলার মেডেন ওভারও করেছেন দুটি। তার সঙ্গে বাংলাদেশের যে আরও একজন রান ছাড়া ওভার করেছেন, তিনি হচ্ছেন তানজিম হাসান সাকিব। ষষ্ঠ ওভার করতে এসে ম্যাচের প্রথম মেডেন করেন কাটার মাস্টার মুস্তাফিজ। এরপর নবম ওভারে রিশাদও কোনো রান দেননি। দ্বাদশ ওভারে তানজিমের ওভার থেকেও স্কোরবোর্ডে রান যোগ করতে পারেননি যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাটাররা। টি-টোয়েন্টিতে এক ম্যাচে কোনো দলের সবচেয়ে বেশি মেডেন ওভার করার বিশ্বরেকর্ড জানলে অবশ্য চমকে যেতে পারেন। ২০২৩ সালে কেনিয়ার বোলাররা মালির বিপক্ষে এক ম্যাচেই নিয়েছিলেন নয়টি মেডেন! আর কোনো দেশই এক ম্যাচে পাঁচটির বেশি মেডেন ওভার করতে পারেনি।
তবে কীর্তিতে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন সাকিব আল হাসান। ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের আন্দ্রিয়েস হাউসকে ফিরিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৭০০ উইকেট পূর্ণ হয় বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের। এর সঙ্গে ব্যাট হাতে তার নামের পাশে রয়েছে ১৪ হাজার ৫১৫ রান। সুদীর্ঘ ক্রিকেট ইতিহাসে সাতশ উইকেট ও ১৪ হাজার রানের ‘ডাবল’ ছোঁয়া একমাত্র ক্রিকেটার সাকিব। এমনকি ছয়শ উইকেট ও ১২ হাজার রানও নেই আর কারও।
বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে তিন সংস্করণ মিলিয়ে সাতশ উইকেট নিলেন সাকিব। সব মিলিয়ে বিশ্বের ১৭তম বোলার তিনি, স্পিনারদের মধ্যে সপ্তম। আর বাঁহাতি স্পিনে তার আগে এই কীর্তি শুধুমাত্র ড্যানিয়েল ভেটোরির।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১২২ ম্যাচে সাকিবের ১৪৬তম উইকেট এটি। এই সংস্করণে তার চেয়ে বেশি উইকেট আছে শুধু টিম সাউদির, ১২৩ ম্যাচে ১৫৭টি। দুজনই বোলিং করেছেন সমান ১২০ ইনিংস। এছাড়া টেস্টে ১১৩ ইনিংসে ২৩৭ ও ওয়ানডেতে ২৪১ ইনিংসে সাকিবের শিকার ৩১৭ উইকেট। আর ব্যাট হাতে টেস্টে ১২৩ ইনিংসে ৪ হাজার ৫০৫, ওয়ানডেতে ২৩৪ ইনিংসে ৭ হাজার ৫৭০ ও টি-টোয়েন্টিতে তার সংগ্রহ ১২০ ইনিংসে ২ হাজার ৪৪০ রান।
তবে সাকিবের দিনটি ছোঁ মেরে বাগিয়ে নেন মুস্তাফিজুর রহমান। ৪ ওভারে একটি মেডেনসহ মাত্র ১০ রানে ৬ উইকেট নেন মুস্তাফিজ। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো ম্যাচে ৬ উইকেট পেলেন বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটার। ২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাঁহাতি স্পিনার ইলিয়াস সানির ১৩ রানে ৫ উইকেট ছিল আগের সেরা বোলিং।
সব মিলিয়ে এই সংস্করণে সেরা বোলিংয়ের তালিকায় মুস্তাফিজের অবস্থান সপ্তম। গত বছর চীনের বিপক্ষে ৮ রানে ৭ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে মালয়েশিয়ার সিয়াজরুল ইদরুস। এই সংস্করণে দ্বিতীয়বার ৫ বা এর বেশি উইকেট পেলেন মুস্তাফিজ। এই কীর্তি গড়া দ্বিতীয় বাংলাদেশি বোলার তিনি। প্রথম জন সেই সাকিব। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দুবার ৫ উইকেট নেওয়া বোলার ১৮ জন।
মুস্তাফিজের তোপে ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১০৪ রানের বেশি করতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে মাত্র ১১.৪ ওভারেই কোনো উইকেট না হারিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ৪২ বলে ৫৮ রানে অপরাজিত ছিলেন তানজিদ তামিম। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে ২৮ বলে ৪৩ রানের ক্যামিও খেলেছেন সৌম্য। তবে ছন্দে ফিরতে একটু দেরিই হয়ে গেল বাংলাদেশ দলের। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ হেরেই সিরিজ খুইয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে এসে দল পেল সান্ত¡নার এক জয়, তাতে কেবল এড়ানো গেল ধবলধোলাইয়ের লজ্জা। যুক্তরাষ্ট্রের মতো দলের বিপক্ষে এমন জয়ের পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের সেরাটা দিতে পারে কি-না শান্তর দল, সেটিই এখন দেখার।
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
এলএন-এর বিরুদ্ধে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ, কলম্বিয়ায় শান্তি আলোচনা বাধাগ্রস্ত
ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি হলেন ইউসুফ হোসেন
ভাঙ্গায় এক্সপ্রেসওয়েতে পড়েছিল মোটরসাইকেল আরোহীর চূর্ণ-বিচূর্ণ লাশ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদরাই আজকের বাংলাদেশ- কক্সবাজারে শিল্প উপদেষ্টা
অতিরিক্ত সময়ে এন্দ্রিকের জোড়া গোলে জিতে শেষ আটে রিয়াল
গ্রিক সাইপ্রিয়ট প্রশাসনকে অস্ত্র বিক্রয়ের মার্কিন সিদ্ধান্তে টিআরএনসি-এর ক্ষোভ ও উদ্বেগ
নরসিংদীতে বাস-ট্রাকের ত্রিমুখী সংঘর্ষ, আহত ৮
পাবনায় জনজীবনে ভয়াবহ হচ্ছে ভার্চুয়াল আসক্তি
মাঝ আকাশে ভেঙে টুকরো ইলন মাস্কের ‘স্টারশিপ’
বাংলাদেশ-ভারতকে অতীত কবর দিয়ে নতুন করে শুরু করতে হবে: সুনন্দা কে দত্ত রায়
সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন
সাইফ ইস্যুতে কেজরিওয়ালের বিস্ফোরক মন্তব্য, পাল্টা প্রতিক্রিয়া বিজেপি নেতার
ট্রাম্পের শুল্ক ছাড়াও চীনের অর্থনৈতিক সংকটে তিনটি বড় চ্যালেঞ্জ !
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত
দিয়ালোর দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে ইউনাইটেডের নাটকীয় জয়
আজারবাইজান-জর্জিয়া সম্পর্ক শক্তিশালীকরণে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক
আসাদগেটে সিএনজি-ট্রাক সংঘর্ষ, একজনের মৃত্যু
মরক্কোতে নৌকা ডুবে ৪৪ পাকিস্তানির মৃত্যু
'বন্ধী মুক্তির চুক্তি' চূড়ান্ত জানিয়েছে নেতানিয়াহুর দপ্তর
সুদানের সেনাপ্রধানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ যুক্তরাষ্ট্রের