ফুঁসছে পাকিস্তান
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১৬ এএম | আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১৬ এএম
বাংলাদেশের কাছে নিজেদের মাঠে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর ফুসে উঠেছে পাকিস্তানের ক্রিকেটাঙ্গণ। রাওয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশের কাছে ৬ উইকেটে হেরে ২-০তে সিরিজ হার কোনোভাবেই মানতে পারছেন না পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা। দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশকে হারানোর সুযোগ তৈরী করেও এমন হারে ক্ষুদ্ধ দেশের অগনিত ক্রিকেটপ্রেমীরা। শুধু সিরিজ হারই নয় ঘরের মাঠে দ্বিতীয় দল হিসেবে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ডুবিয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে একবারই মাত্র নিজেদের মাটিতে টেস্টে ইংল্যান্ডের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিলো পাকিস্তান। এমন পরাজয়ের জন্য ব্যাটসম্যানদের পাশাপাশি পিসিবির কড়া সমালোচনা করেছেন সাবেক তারকা ক্রিকেটার জাভেদ মিয়াঁদাদ, ইনজামাম-উল-হকরা।
এর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৩ টেস্টে হার নেই পাকিস্তানের। এবার নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বাধীন দল দুই ম্যাচের সিরিজ জিতে নিয়েছে ২-০ ব্যবধানে। রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ জিতে যায় ১০ উইকেটে। একই ভেন্যুতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় ম্যাচটিও ৬ উইকেটে জেতে বাংলাদেশ।
ঘরের মাঠে এই নিয়ে মাত্র দ্বিতীয়বার টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশড হওয়ার তেতো স্বাদ পেল পাকিস্তান। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে সাবেক ব্যাটসম্যান ও অধিনায়ক মিয়াঁদাদ বললেন, উত্তরসূরিদের বর্তমান অবস্থা দেখে ব্যথিত তিনি, ‘এটা কষ্টের যে, আমাদের ক্রিকেট এই পর্যায়ে এসেছে। বাংলাদেশকে কৃতিত্ব দিতেই হবে তাদের গোছানো পারফরম্যান্সের জন্য। কিন্তু এই সিরিজে যেভাবে আমাদের ব্যাটিং ভেঙ্গে পড়েছে, তা খুব বাজে লক্ষ্মণ।’ এই হারের দায় শুধু ক্রিকেটারদের ওপর চাপাচ্ছেন না মিঁয়াদাদ। তার মতে, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও সমানভাবে দায়ী, ‘আমি শুধু খেলোয়াড়দের দোষ দেব না, কারণ গত দেড় বছরে বোর্ডে যা কিছু হয়েছে এবং অধিনায়কত্ব ও ম্যানেজমেন্টের পরিবর্তন দলকে প্রভাবিত করেছে।’
ভারতে অনুষ্ঠিত গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে দলের ব্যর্থতার পর সব সংস্করণের অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ান বাবর আজম। পরে টেস্ট দলের নেতৃত্ব দেওয়া হয় শান মাসুদকে আর টি-টোয়েন্টির দায়িত্ব পান শাহিন শাহ আফ্রিদি। তবে এক সিরিজ পরই আফ্রিদিকে সরিয়ে সাদা বলের দুই সংস্করণের নেতৃত্বে ফেরানো হয় বাবরকে। এছাড়া গত এপ্রিলে টেস্টের জন্য জেসন গিলেস্পি ও সাদা বলের দুই সংস্করণের জন্য গ্যারি কার্স্টেনকে প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয় পিসিবি। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পেসার গিলেস্পির কোচিংয়ে প্রথম সিরিজ ছিল এটিই। আর মাসুদের নেতৃত্বে প্রথম পাঁচ টেস্টেই হারল পাকিস্তান। ঘরের মাঠে সবশেষ ১০ টেস্টে জয়ের দেখা পায়নি তারা। সময়ের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন বাবর সাদা পোশাকে ব্যাট হাতে ছন্দে নেই অনেক দিন ধরে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে করাচিতে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরির পর সবশেষ ১৬ ইনিংসে একবারও পঞ্চাশ ছুঁতে পারেননি তিনি। সিরিজ হারের জন্য ব্যাটারদেরই কাঠগড়ায় তুললেন আরেক সাবেক অধিনায়ক ইনজামাম-উল-হক, ‘অতীতে সেরা দলগুলোকে হারানোর জন্য হোম সিরিজকে সবসময় আমাদের সেরা সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এর জন্য তো ব্যাটারদের রান পেতে হবে।’ টেস্টে পাকিস্তানের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান ও সেঞ্চুরি করা ইউনিস খান সমস্যা দেখছেন ব্যাটারদের মানসিকতায়, ‘আমাদের ব্যাটাররা অতীতে রান পেয়েছে, কিন্তু এই মুহূর্তে আমি মনে করি, এই সংকট কাটিয়ে উঠতে তাদের মানসিক দৃঢ়তা দরকার।’
পাকিস্তানের ক্রিকেটে সমালোচনার ধরন এমনিতেই প্রচণ্ড তীব্র। সাবেক ক্রিকেটার ও বিশ্লেষক থেকে শুরু করে সংবাদমাধ্যমও বেশ আগ্রাসী থাকেন। বাংলাদেশের কাছে হোয়াইটওয়াশড হওয়ার পর পরিস্থিতিটা সহজেই অনুমেয়। সংবাদ সম্মেলনে অনুমিতভাবেই তোপের মুখে পড়তে হলো শান মাসুদকেও। তাতে রেগে না গিয়ে পাকিস্তান অধিনায়ক অকপটে স্বীকার করে নিলেন ভুলগুলো। ক্ষমা চাইলেন তিনি গোটা জাতির কাছে। পাশাপাশি পাকিস্তান অধিনায়ক প্রতিপক্ষ হিসেবে বাংলাদেশকে খাটো করে দেখতে চাইলেন না, বরং প্রাপ্য কৃতিত্বটুকু দিয়ে নিজেদের ঘাটতি তুলে ধরলেন, ‘আমরা এরকম বলতে পারি না যে “এই ধরনের প্রতিপক্ষ”। সব প্রতিপক্ষকেই সম্মান করা উচিত। বাংলাদেশের একটা বড় গুণ ছিল, দুই টেস্ট ম্যাচেই আমাদের চেয়ে বেশি শৃক্সক্ষলা ছিল ওদের। আমাদের উচিত নিজেদের দিকে দেখা, আমরা অনেক ভুল করেছি। টেস্ট ক্রিকেটের যে চাহিদা, যে শারীরিক ও মানসিক ফিটনেস লাগে, সেটা চার-পাঁচ দিন ধরে রাখতে হয়। বেশ কয়েকটি সিরিজেই আমরা যা দেখেছি, এই জায়গাটায় আমাদের উন্নতি করতে হবে। আরেকটা ব্যাপার, ১০ মাস পর টেস্ট খেললে এরকম হবেই। এত বড় বিরতি দেওয়া যাবে না।’ মাসুদের মতে, অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশ এগিয়ে ছিল। নিজ দলে সেই অভিজ্ঞতার অভাব অনুভব করেছেন তিনি, ‘ওদের দুজন ক্রিকেটার সাকিব আর মুশফিক যারা ৭০-৮০টি টেস্ট খেলেছে। এছাড়াও লিটন ও মেহেদিও ৪০টির বেশি টেস্ট খেলেছে। আমাদেরও লাল বলের ক্রিকেটে এমন অভিজ্ঞতা প্রয়োজন। এভাবেই আমাদের রসদ গড়ে তুলতে হবে। টেস্ট ম্যাচ হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্করণ। এখানে অভিজ্ঞতা লাগবেই।’
সবশেষে সংবাদ সম্মেলনে অনুরোধ করলেন দেশের ক্রিকেটের ভালোর জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে।
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ঈশ্বরগঞ্জে ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ বিষয়ক কর্মশালা
বনানীতে সড়কে সিএনজি চালকদের বিক্ষোভ, রাস্তা বন্ধ
বগুড়া সেনানিবাসে সাঁজোয়া কোরের ৪৪তম বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলনে যোগ দিলেন সেনা প্রধান
গাজীপুরে এ্যাপারেলস্ কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে আহত ১২
ব্যবহারকারীদের আশ্বাস ট্রাম্পের, যুক্তরাষ্ট্রে ফের চালু টিকটক
পদ্মায় ধরা পড়লো ৪২ কেজির মহা বিপন্ন বাঘাইড় মাছ
আরও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রিয়ালের প্রেসিডেন্ট পেরেজ
সিলেটে প্রখ্যাত আলেম ইসহাক আল মাদানির ইন্তেকাল!
গাজার ধ্বংসস্তূপে নতুন স্বপ্ন বুনছেন যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষ
গাজা চুক্তিকে যেকারণে ‘হামাসের জয়’ বলছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম
সত্যিকারের সুখী হওয়া অনেক কঠিনঃ মিশা
গাজায় ব্যাংক সেবা পুনরায় চালুর প্রস্তুতি শুরু ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের
বদলে যাচ্ছে পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যদের পোশাক
লক্ষ্মীপুরে ড্রামট্রাকের চাপায় প্রাণ গেল দুই অটোরিকশা যাত্রীর
মানিকগঞ্জে পদ্মায় বড়শিতে ধরা পরল ৯ কেজি ওজনের বোয়াল
রাজশাহী নার্সিং কলেজের ১৪ শিক্ষার্থী ফেল করে অধ্যক্ষের কক্ষে তালা দিলেন
মেলানিয়া ট্রাম্প বাজারে আনলেন নিজস্ব ক্রিপ্টোকারেন্সি
সাবেক এমপি মোস্তফা জালাল গ্রেপ্তার
শরীয়তপুর পৌরসভার বিএনপি কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা
সাইফ ইস্যুতে মেজাজ হারালেন অভিনেতা জাকি শ্রফ