চট্ট.আবাহনীকে গুড়িয়ে সেমিতে মোহামেডান
১৮ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৪৩ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৪২ পিএম
ঘরোয়া ফুটবলে চলতি মৌসুমের দ্বিতীয় আসর বসুন্ধরা গ্রুপ ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। কোয়ার্টার ফাইনালে চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে বড় জয়ে তৃতীয় দল হিসেবে শেষ চারে নাম লেখায় তারা। গতকাল কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের শেষ আটের তৃতীয় ম্যাচে মোহামেডান ৪-১ গোলে হারায় চট্টগ্রাম আবাহনীকে। বিজয়ী দলের হয়ে মালির ফরোয়ার্ড অধিনায়ক সুলায়মানে দিয়াবাতে দুইটি এবং নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড ইমানুয়েল সানডে ও উজবেকিস্তানের মিডফিল্ডার মোজাফফারভ একটি করে গোল করেন। চট্টগ্রাম আবাহনীর হয়ে একমাত্র গোলটি শোধ দেন নাইজেরিয়ান মিডফিল্ডার ক্যান্ডি অগাস্টিন। এই জয়ে প্রথম সেমিফাইনালে মোহামেডান মুখোমুখি হবে টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসের। গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে আগামী ৯ মে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচটি। ফেডারেশন কাপের শেষ কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচটি মাঠে গড়াবে ২ মে। এ ম্যাচে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের বিপক্ষে খেলবে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। এই ম্যাচের বিজয়ী দল আগামী ১৬ মে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ঢাকা আবাহনী লিমিটেডের মুখোমুখি হবে। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে।
কাল ফেডারেশন কাপের তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচের শুরু থেকেই উজ্জীবিত ছিল মোহামেডান। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামকেই নিজেদের হোম ভেন্যু করেছে সাদাকালোরা। ফলে ঘরের মাঠে চট্টগ্রাম আবাহনীকে পেয়ে অনেকটা নাস্তানাবুদই করে ছেড়েছে মতিঝিলের দলটি। ম্যাচের ১৮ মিনিটে বাঁ প্রান্ত ধরে বল নিয়ে চট্টগ্রামের অর্ধে ঢুকে পরেন মোহামেডানের ইমানুয়েল সানডে। তবে ক্যান্ডি অগাস্টিনের বাধার মুখে বেশি দূর এগুতে পারেননি তিনি। তবে দুই মিনিট পর ঠিকই গোল আদায় করে নেয় মোহামেডান। ম্যাচের ২০ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে দারুণ একটা পাস দেন শাহরিয়ার ইমন। তার সেই পাস ধরে সময় মতো বক্সে ঢুকে ডান পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন ইমানুয়েল (১-০)। ছয় মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করার একটা সুযোগ এসেছিল মোহামেডানের সামনে। ডান প্রান্ত থেকে ইমানুয়েল বল বাড়িয়েছিলেন সুলায়মানে দিয়াবাতেকে। কিন্তু প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগের বাধায় গোল আদায় করে নিতে পারেননি দিয়াবাতে। ম্যাচের ২৭ মিনিটে ডান প্রান্তের কর্ণার থেকে প্রতিপক্ষের বাধায় গতি বদলে যাওয়া বল পেয়ে মোজাফফারভ দূর পাল্লার ডান পায়ের যে শটটি নেন তা চলে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে। ৩৪ মিনিটে দূর থেকে দারুণ শট নেন ইমানুয়েল। তবে তার শট চট্টলার গোলরক্ষক পাপ্পু হোসেন দারুণ দক্ষতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে রক্ষা করেন।
পরের মিনিটেই দ্বিতীয় গোলের দেখা পায় সাদাকালোরা। ম্যাচে ৩৫ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে কর্ণার করেন মোহামেডানের উজবেক মিডফিল্ডার মোজাফফারভ। তার সেই শট সরাসরি চট্টগ্রাম আবাহনীর প্রবেশ করলে ব্যবধান বাড়ায় বিজয়ীরা (২-০)। এই ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় মোহামেডান। বিশ্রাম থেকে ফিরে দ্বিতীয়ার্ধে আরও দুই গোল আদায় করে নেয় তারা। ম্যাচের ৪৮ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে মোজাফফারভের পাস ডান প্রান্তে পেয়ে ক্রস করেন মেহদী মিঠু। বক্সের ভেতর অরক্ষিত ছিলেন দিয়াবাতে। ফলে তার কাছে বল গেলে তিনি বাঁ পায়ের শটে দলের পক্ষে তৃতীয় গোলটি করেন (৩-০)। এরপরের কাহিনীটাও দিয়াবাতেরই। ম্যাচের ৭০ মিনিটে গোলের জোড়া পূর্ণ করেন তিনি। এসময় বক্স লাইনের ডান প্রান্ত থেকে কোনাকুনি জোড়ালো শটে বল জালে জড়ান সুলায়মানে দিয়াবাতে (৪-০)। ম্যাচের শেষদিকে এসে বেশ কয়েকজন ফুটবলার পরিবর্তন করে চট্টগ্রাম আবাহনী। তাতে তাদের খেলার গতিও কিছুটা বাড়ে। ৭৬ মিনিটে নিজেদের বক্সে ক্যান্ডি অগাস্টিনকে ফাউল করেন মোহামেডানের এক ডিফেন্ডার। রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। চট্টগ্রাম আবাহনীর ক্যান্ডি অগাস্টিনের স্পট কিক প্রায় ফিরিয়েও দিয়েছিলেন মোহামেডানের গোলরক্ষক সুজন। তবে শেষ রক্ষা হলো না। বল প্রবেশ করে সাদাকালোদের গোলবারে (৪-১)। ম্যাচের যোগকরা সময়ে (৯০+২মিনিট) আরেকটি গোলের সুযোগ পেয়েও তা নষ্ট করেন চট্টগ্রামের উজবেক ডিফেন্ডার পোলাতভ। তার শট রুখে দেন মোহামেডানের গোলরক্ষক সুজন। ফলে শেষ পর্যন্ত ৪-১ ব্যবধানের বড় নিয়েই মাঠ ছাড়ে মোহামেডান।
বিভাগ : খেলাধুলা