রূপকথা লেখা হলো না বায়ার্নের
২০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৩৫ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:০১ পিএম
বায়ার্ন মিউনিখের মাঠ অ্যালিয়েঞ্জ এরেনাতেই চোখ ছিল ক্লাব ফুটবল প্রেমীদের। জার্মান ক্লাব বায়ার্ন যে শেষ বাঁশি বাজার আগে হার স্বীকার করে না। তাই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে ম্যানচেস্টার সিটির ৩-০ ব্যবধানে হেরে যাওয়ার পরও হাল ছাড়েনি মিউনিখের জায়ান্টরা। ম্যাচে চেষ্টার কমতি রাখল না স্বাগতিকরা। তবে লাভ হলো না, পরশু রাতে ম্যাচ শেষ হলো ১-১ গোলের ড্রয়ে। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-১ গোলে এগিয়ে থেকে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চারে উঠে গেল ম্যানসিটি। এই নিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে খেলবে পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা। সেই আত্মবিশ্বাসেই সিটির মিডফিল্ডার বের্নার্ডো সিলভা পরের রাউন্ডের প্রতিপক্ষ রিয়াল মাদ্রিদকে হারানোর অগ্রিম হুমকি দিয়ে রাখলেন।
প্রথম লেগে তিন গোলে পিছিয়ে থাকায় এদিন ঘরের মাঠে নাটকীয় কিছু একটা করতে হতো বায়ার্নকে। সেই তাগিদটা দেখা যায় তাদের পারফরম্যান্সে। ঘন ঘন আক্রমণও শানিয়েছে তারা। বিশেষ করে প্রথমার্ধে বেশি কিছু গোলের সুযোগও তৈরি করেছিল। কিন্তু তা কাজে লাগাতে পারেনি। প্রথমার্ধে সিটির চেয়ে বায়ার্নের বল পজেশন ছিল প্রায় দেড়গুন। বায়ার্নের ১০টি শটের ৪টি লক্ষ্যেও ছিল। কিন্তু গোলের খেলা ফুটবলে গোল না পেলে কী চলে! আগ্রাসী বায়ার্নকে বেশ দক্ষতার সঙ্গেই সামাল দিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। উল্টো ৩৫তম মিনিটে এগিয়েও যেত পারত তারা। বায়ার্ন বক্সে ডিফেন্ডার উপামেকানোর হাতে বল লাগলে পেনাল্টির বাঁশি বাজিয়েছিলেন রেফারি। কিন্তু স্পট কিক থেকে গোল করতে পারেননি গোলমেশিন আর্লিং হলান্ড। বিরতির পর অবশ্য তার গোলেই এগিয়ে যায় সিটি। চলতি আসরে এটি ১২তম গোল হলান্ডের। পিছিয়ে পড়ে গোল পরিশোধের জন্য মরীয়া হয়ে ওঠা বায়ার্নকে ৮৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে সমতায় ফেরান কিমিচ। এর আগে অবশ্য ৭৫ মিনিটে মাথিসের একটি গোল অফসাইডের ফাঁদে বাতিল করে দেন রেফারি।
গত আসরেই সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যানচেস্টার সিটির মধ্যকার লড়াই এতটা ধ্রুপদি ছিল যে তা নিয়ে চর্চা হতে পারে যুগ যুগ ধরে। সেই দুই দল আবারও সেমির মঞ্চে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। ম্যাচ শেষে সিটি মিডফিল্ডার বের্নার্ডোকে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত?’ বের্নার্ডো উত্তর দিলেন সরাসরিই, ‘অবশ্যই। রিয়াল কঠিন প্রতিপক্ষ হলেও এই মুহূর্তে আমরা দারুণ আত্মবিশ্বাসী। আমার মনে হয়, ফাইনালে আমরাই যাব।’
একই রাতে সান সিরোতে পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকাকে আতিথ্য দিয়েছিল ইন্টার মিলান। আগের লেগে ২-০ ব্যবধানে জেতায় এই ম্যাচে কিছুটা স্বস্তিতে ছিল স্বাগতিকরা। ম্যাচে হলো হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। ৬ গোলের এই ম্যাচ শেষ পর্যন্ত ড্র হয় ৩-৩ ব্যবধানে। এই ম্যাচের আগের দিন সেমিফাইনালের টিকিট কেটেছিল ইন্টারের ঘরের প্রতিপক্ষ এসি মিলান। ১৬ বছর পর মিলানের চ্যাম্পিয়ন লিগের সেমিফাইনালে ওঠার পর দিনই দুই লেগ মিলিয়ে ৫-২ গোলে এগিয়ে থেকে টুর্নামেন্টের শেষ চার নিশ্চিত করল ইন্টার। আর তাতে ইউরোপীয় ক্লাব শ্রেষ্ঠত্বের এই টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল মিলান ডার্বিতে রূপ নেয়া নিশ্চিত হয়েছে।
আগের ম্যাচের মত এই ম্যাচেও বেনফিকা এগিয়ে ছিল প্রতিটি বিভাগে। তবে ম্যাচের ১৪ মিনিটেই নিকোলা বারেল্লার গোল অনেকটাই নির্ভার করে দিয়েছিল স্যান সিরোর দলটিকে। ৩৮ মিনিটে ফ্রেদরিক অর্সনেসের গোলে সমতায় ফিরেছিল বেনফিকা। ৬৫ মিনিটে আবার এগিয়ে যায় ইন্টার। গোল করেন ইন্টারের আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড লাওতারো মার্তিনেজ। ৭৮ মিনিটে আরেক আর্জেন্টাইন জোয়াকিন কোরেয়া ব্যবধান ৩-১ করলে মনে করা হয়েছিল পূর্ণ পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়বে ইন্টার। কিন্তু শেষ দিকে চমক দেখিয়ে দুই গোল পরিশোধ করে বসে বেনফিকা। ৮৬ মিনিটে আন্তোনিও সিলভার পর যোগ হওয়া সময়ে গোল করেন পিটার মুসা। ২০১০ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জেতার পর এই প্রথমবার আসরটির শেষ চারে উঠে আসল ইন্টার।
বিভাগ : খেলাধুলা