শিরোপা ধরে রাখার বিশ্বাসই নেই সাবিনাদের!
১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৪ এএম
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে আগামী ১৭ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের খেলা। এবার শিরোপা ধরে রাখার মিশন বাংলাদেশের সামনে। লক্ষ্যপূরণে আজ সকালে কাঠমান্ডুর উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়ছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। তবে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি নিয়েই নেপাল যাচ্ছেন সাবিনারা। গতকাল বিকালে মতিঝিলস্থ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন কথাই বলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। দুই বছর আগে এই নেপাল থেকেই প্রথমবারের মতো সাফ শিরোপা জিতে ঢাকায় ফিরে ছাদখোলা বাসে সংবর্ধনা পেয়েছিল লাল-সবুজের মেয়েরা। এরপর জাতীয় নারী দলের চিত্র অনেক পাল্টেছে। সাফ শিরোপা জয়ী বাংলাদেশ দল এখন যেন ভাঙা হাট। আগের দলের ৯ জন নেই এবার। একঝাঁক নতুন মুখ নিয়ে এবারের সাফ খেলতে যাচ্ছে জাতীয় নারী দল। সবচেয়ে বড় কথা, আসন্ন সাফে নেই বাংলদেশ নারী দলের সবচেয়ে সফল কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। তাই শিরোপা ধরে রাখতে জোর গলায় কথা বলতে পারলেন না অধিনায়ক সাবিনা। তার কথা শুনে মনে হল আত্মবিশ্বাসের বড়ই অভাব। সংবাদ সম্মেলনে সাবিনা বলেন,‘শিরোপা ধরে রাখতে পারব কিনা তা বলতে পারছি না। তবে অনেক চ্যালেঞ্জিং হবে।’
দক্ষিণ এশিয়া নারী ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদার এ আসরকে সামনে রেখে কাল সংবাদ সম্মেলনেই ২৩ জনের দল ঘোষণা করেন বাংলাদেশের ইংলিশ প্রধান কোচ পিটার জেমস বাটলার। শঙ্কার মেঘ উড়িয়ে চোট কাটিয়ে এই দলে ফিরেছেন তারকা ফরোয়ার্ড কৃষ্ণা রানী সরকার। গত আসরে সেরা গোলরক্ষকের খেতাব জেতা রুপনা চাকমা যথারীতি এবারও দলের প্রথম পছন্দ। স্কোয়াডে আছেন বয়সভিত্তিক সাফে আলো ছড়ানো দুই গোলরক্ষক ইয়ারজান বেগম ও মিলি আক্তারও। সাফ জয়ের পর ফুটবল থেকে দূরে সরে যাওয়া ডিফেন্ডার আঁখি খাতুন অবশ্য নেই এবারের আসরে। তবে মাসুরা পারভিন, শিউলি আজিম, নিলুফা ইয়াসমিন নীলা, শামসুন্নাহার সিনিয়রদের সঙ্গে এবার নতুন সুযোগ পেয়েছেন কোহাতি কিসকু, আফিদা খন্দকাররা। মাঝমাঠের ভরসা মনিকা চাকমা ও মারিয়া মান্ডার সঙ্গে এবারও আছেন সানজিদা আক্তার। সিরাত জাহান স্বপ্না আচমকা খেলা থেকে অবসর নেওয়ায় আক্রমণভাগে এবার সাবিনা খাতুন, তহুরা খাতুন ও কৃষ্ণা রানী সরকারদের ওপর চাপটা বেশি থাকবে। সাবিনা ও কৃষ্ণার সঙ্গে আক্রমণভাগে আছেন সাগরিকা। আঁখি চীনে পড়াশুনায় ব্যস্ত। স্বপ্না বিয়ের পর ব্যস্ত ঘর-সংসার নিয়ে। এবারের সাফে স্বাভাবিকভাবেই তাদের অভাব অনুভব করবেন সাবিনা,‘এটা সত্যি আঁখি ও স্বপ্নাকে মিস করব। ওরা দু’জন থাকলে ভারত ও নেপাল ভয় পায়। তবে যারা আছে তাদেরকে নিয়েই আমাদের লড়াই করতে হবে।’ নেপালগামী বাংলাদেশ দলের এবার বড় দুর্বলতা হচ্ছে- সাফের মত গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টে খেলতে যাওয়ার আগে কোনো প্রস্তুতি ম্যাচ না খেলতে পারা। যদিও অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সঙ্গে বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনায় কয়েকটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছেন মারিয়া মান্ডা, মনিকা চাকমারা। তবে এটাকে যথেষ্ট মানছেন না অধিনায়ক সাবিনা, ‘সাফের প্রস্তুতির জন্য কিছু ম্যাচ খেলা দরকার ছিল। যদিও সারা বছর অনুশীলনে থাকা ও ম্যাচ টেম্পারমেন্ট এক বিষয় নয়। নেপাল যাওয়ার আগে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে না পারার আক্ষেপ তো থাকছেই।’
এবারের সাফে বাংলাদেশ খেলবে ‘এ’ গ্রæপে। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ থাকছে শক্তিশালী ভারত ও পাকিস্তান। ‘বি’ গ্রæপের দলগুলো হচ্ছে- স্বাগতিক নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটান ও মালদ্বীপ। ১৭ অক্টোবর পাকিস্তান-ভারত ম্যাচ দিয়ে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন হলেও ২০ অক্টোবর গ্রæপ পর্বে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আসর শুরু করবে বাংলাদেশ। ২৩ অক্টোবর গ্রæপের শেষ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামবেন সাবিনারা। গ্রæপ পর্ব শেষে ২৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে দু’টি সেমিফাইনাল। ৩০ অক্টোবর ফাইনালের মধ্যদিয়ে পর্দা নামবে এবারের সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের।
বাংলাদেশ দল
রুপনা চাকমা, ইয়ারজান বেগম, মিলি আক্তার, মাসুরা পারভীন, কোহাতি কিসকু, আফিদা খন্দকার, নিলুফা ইয়াসমিন নীলা, শামসুন্নাহার সিনিয়র, শিউলি আজিম, মনিকা চাকমা, মারিয়া মান্ডা, মুনকি আক্তার, স্বপ্না রানী, আইরিন আক্তার, মাতসুশিমা সুমাইয়া, শাহেদা আক্তার রিপা, ঋতুপর্ণা চাকমা, তহুরা খাতুন, শামসুন্নাহার জুনিয়র, সাবিনা খাতুন (অধিনায়ক), কৃষ্ণা রানী সরকার, সানজিদা আক্তার ও সাগরিকা।
বিভাগ : খেলাধুলা