তালপাতার পাখায় সংসারে স্বচ্ছলতা
১৭ জুন ২০২৩, ০৯:৫৬ পিএম | আপডেট: ১৮ জুন ২০২৩, ১২:০২ এএম
লোডশেডিং কিংবা প্রকৃতির বাতাস যখন থমকে দাঁড়ায়, মানুষ যখন অতি গরমে অতিষ্ট হয়ে পড়ে, তখন হাতপাখা খোঁজা হয়। অতিগরমে খানিকটা সময় হাতপাখার বাতাস একটু প্রশান্তি এনে দেয় মানুষকে। আবার প্রকৃতি যখন লু-হাওয়া ছড়ায় তখনও হাতপাখার প্রয়োজন হয়। আগের দিনে গ্রাম-গঞ্জে বিয়েতে কনের সঙ্গে বাহারি তালপাতার হাতপাখা দেওয়ার রেওয়াজ ছিল। এ রেওয়াজ ওঠে গেলেও এর কদর কমেনি। কিশোরগঞ্জ জেলার হাওর অধ্যুষিত নিকলী উপজেলার দামপাড়া ইউনিয়নের টেকপাড়া ও সূত্রধর পাড়া গ্রামের বাসিন্দারা প্রায় ২৫ বছর ধরে তালপাতার বাহারি অথবা কারুকার্য মন্ডিত পাখা তৈরি করছে। তালপাতার পাখ তৈরি করে তারা সংসারে সচ্ছলতা ফিরে পেয়েছে। এখানকার গ্রামের তালপাতার পাখার কদর দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
বাংলা চৈত্র মাস থেকে ভাদ্র মাস পর্যন্ত তাদের তৈরি এসব হাত পাখাগুলো বিভিন্ন জেলার পাইকাররা নিতে আসে। এ গ্রামের শিল্পীদের তৈরি প্রতিটি তালপাতার পাখা প্রকার মূল্য সর্বোচ্চ ৬০ টাকায় বিক্রি হয়। শীতকাল ছাড়া বছরের সব সময় এ হাত পাখা বিক্রি হয়। তালপাতার পাখা সাধারণত গ্রামের মহিলা শিল্পীরাই তৈরি করে থাকেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, নিকলী উপজেলার দামপাড়া ইউনিয়নের টেকপাড়া গ্রামে এসব পাখা তৈরি হচ্ছে। তালপাতার পাখা শিল্পী মনোয়ারা খাতুন (৫০) এ বিষয়ে বলেন, ‘দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে আমি তালপাতার পাখা তৈরি করছি। সংসারের কাজকর্ম সেরে অবসরে তালপাতার পাখা বুনন করি। পাখ বিক্রির আয় দিয়ে ছেলে-মেয়েদের পড়া-লেখাসহ সংসারের যাবতীয় খরচ যুগিয়েছি। আমরা পাখাগুলো খুচরা ও পাইকারিতে বিক্রি করে থাকি। বিভিন্ন এলাকার লোকজন আমাদের পাখাগুলো কিনে নেয়। শুনেছি আমাদের তালপাতা পাখা বিদেশেও যাচ্ছে। এ পাখার জন্য বাঁশ, তালপাতা, বেত, প্লাস্টিক এসব উপকরণ বিভিন্ন গ্রাম থেকে আমাদের সংগ্রহ করতে হয়।’ একই গ্রামের বিধবা ফুলনা রানী কর্মকার বলেন, ‘একাত্তর সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে এ গ্রামের প্রায় ৪৬ জন পুরুষকে পাকবাহিনীরা ধরে মেরে ফেলে। তখন থেকে তাদের বিধবা স্ত্রীরা তালপাতার পাখা তৈরির কাজ হাতে নেয়। এরপর থেকে অধ্যাবদি এর রেওয়াজ চলে আসছে। আমি সরকারের দেয়া বিধবা ভাতা পাই। এ দিয়ে চলতে পারি না। তাই তালপাতার পাখা তৈরি করে বিক্রি করে সংসার চালাই। রুমা আক্তার (২৮) বলেন, ‘আমার মায়ের কাছ থেকে তালপাতা পাখা তৈরি কাজ শিখেছি। আমরা এর আয় দিয়ে পড়ালেখা করেছি। এখন চাকরি করি। এরপরও অবসরে মাকে সহায়তা করি। বর্তমানে এ কাজ করে এ গ্রামের সবাই খেয়ে-পড়ে চলতে পারে।’
উপজেলার মাহাতাব উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী সালমা বেগম বলেন, ‘পড়ালেখার ফাঁকে তালপাতার পাখা তৈরি করি। মা-বাবাকে এর উপর্জিত অর্থ দিই। এতে করে আমাদের সংসার ভালোই চলে।’
টেকপাড়ার গ্রামের অলকা রায়, দিপা রায়, চম্পা রানী রায় বলেন, ‘বর্তমান সরকার যদি আমাদের প্রতি সুনজর দেন তাহলে আমরা আরও সাবলম্বী।
বিভাগ : অভ্যন্তরীণ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
হাওয়াইয়ের কিলাওয়া আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাত, লাভার প্রবাহ শুরু
ম্যাট গেটসের বিরুদ্ধে যৌন ও মাদক কেলেঙ্কারির তথ্য প্রকাশ
লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে যুবককে বেঁধে নির্যাতন-নাকে খত দেওয়ার ভিডিও ভাইরাল
গাজার হাসপাতাল ও ত্রাণ বহরে ইসরায়েলি হামলা, নিহত আরও ৫৮ ফিলিস্তিনি
অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানের বিশাল বহর কিনছে পাকিস্তান, ছাড়িয়ে যাবে ভারতকেও
১৩ বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ
সাতক্ষীরা কালিগঞ্জে পটল চাষে বাম্পার ফলন
গফরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু
শাহরাস্তিতে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু
পাকিস্তানে অবশেষে সরকার ও বিরোধী দলের আলোচনা শুরু
ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার ফোন
রানার অটোমোবাইলস পিএলসির এজিএম সম্পন্ন
আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ কাজের আহ্বান: এমরান আহমদ চৌধুরী
নকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির উপর শুল্ক কমানোর দাবি বাজারের ২০ শতাংশ খাদ্য মানহীন
লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে জনসম্মুখে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, নাকে খত
বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ
বিশ্বে বছরজুড়ে আলোচনায় যুদ্ধ, নির্বাচন ও মূল্যস্ফীতি
যুক্তরাষ্ট্র আগুন নিয়ে খেলছে : চীন
আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার না হলে জুলাই আগষ্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে: ডা. জাহিদ হোসেন
মেক্সিকোতে প্লেন বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ৭