ঢাকা   মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১০ পৌষ ১৪৩১

গ্রামে প্রবেশের সড়ক নেই

Daily Inqilab হারুন-অর-রশীদ, সালথা (ফরিদপুর) উপজেলা সংবাদদাতা

০২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম

সোনাডাঙ্গী নামে ছোট্ট একটি গ্রাম। সেখানে ৫০টির মতো পরিবার বসবাস করেন। তবে গ্রামটিতে ঢোকার কোনো ধরণের রাস্তা নেই। তাই ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির আইল দিয়ে হাটবাজার ও জেলা-উপজেলা শহরে আসা যাওয়া করে আসছেন বাসিন্দারা। বর্ষাকালে গ্রামটির চারপাশে পানি থৈ থৈ করে। তখন নৌকা ছাড়া বাড়ি থেকে বের হতে পারে না কেউ। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়তে হচ্ছে স্কুল-মাদরাসার শিশু শিক্ষার্থীদের। এ ছাড়া রাস্তা না থাকায় গ্রামের বাসিন্দাররা তাদের প্রাপ্ত বয়সি ছেলেমেদের ভাল কোনো পরিবারে বিয়ে দিতে পারছেন না।
অসহায় এই গ্রামটির অবস্থান ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নে। গ্রামের বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে তাদের দুর্ভোগের এসব তথ্য জানা গেছে। গ্রামবাসীর দাবি, গ্রামে প্রবেশের জন্য মাত্র ১০০মিটার একটি রাস্তা নির্মাণ করা দিলেই তারা ভয়াবহ এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবেন।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সোনাডাঙ্গী গ্রামের প্রবেশের জন্য কোনো রাস্তা নেই। বর্তমানে বর্ষার পানি কমে যাওয়ায় গ্রামের চারপাশ কাঁদামাটির স্তুপে পরিনত হয়েছে। বাসিন্দারা কৃষিপণ্য মাথায় করে ওই কাঁদামাটির ভেতর দিয়ে পায়ে হেটে হাট-বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন। কোলমমতি শিশু শিক্ষার্থীরাও কাঁদামাটি পার হয়ে স্কুল-মাদরাসায় যাচ্ছে। এমন অবস্থায় ওই গ্রামের বাসিন্দাদের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। সোনাডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা ইমামুল হক ও সেলিমা বেগম বলেন, আমাদের ছোট্ট এই গ্রামে ৫০টি পরিবারের দুই শতাধিক সদস্য বসবাস করেন। গ্রামে শতভাগ বিদ্যুত আছে। তবে গ্রামের ঢোকার কোনো রাস্তা নেই। রাস্তা না থাকায় আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। প্রতিদিন কাঁদামাটি পারি দিয়ে হাট-বাজার ও উপজেলায় যেতে হয়। এ ছাড়া গ্রামে ৫০ জনের মতো স্কুল-মাদরাসার শিক্ষার্থী রয়েছে। তারাও অনেক কস্ট করে স্কুল-মাদরাসায় যায়। তারা আরো বলেন, এমন অবস্থায় বিশেষ করে গ্রামের কেউ হঠাৎ অসুস্থ হলে বা কোনো গর্ভবতী নারীর সমস্যা হলে দ্রুত যে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাবো, সেই সুযোগ নেই। রাস্তা না থাকায় শুধু দুর্ভোগ পোহাতেই হচ্ছে না আমাদের, ছেলেমেয়েদর বিয়ে দেওয়া নিয়েও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
যাতায়াত ব্যবস্থা ভাল না থাকায় কেউ আমাদের সাথে আত্মীয় করতে চায় না। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমার গ্রামে ঢোকার একটি রাস্তা দ্রুত নির্মাণের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
বল্লভদী ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুর রহমান শাহিদ বলেন, রাস্তা না থাকায় সোনাডাঙ্গী গ্রামের মানুষ একরকম গৃহবন্দী। তাদের দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনা করে কয়েকবার রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু সরকারি হালট না থাকায় সম্ভব হয়নি। জমির মালিকরাও জমি দিতে রাজি হচ্ছে না। বিষয়টি ইউএনও স্যারকে জানিয়েছি।

সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, সোনাডাঙ্গী গ্রামের ঢোকার মতো সরকারি হালটও নেই। তাই রাস্তা নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে ওই এলাকার মানুষ যদি রাস্তা নির্মাণের জন্য জমি দেন তাহলে রাস্তা নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


বিভাগ : অভ্যন্তরীণ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

যশোর-খুলনা মহাসড়ক খানাখন্দে বেহাল
দাউদকান্দি-মতলব সড়কের কয়রাপুর ব্রিজের কাজ ৯ মাস ধরে বন্ধ
গৌরীপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার
লক্ষ্মীপুরে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু
মহাদেবপুরে প্রতারণার মূলহোতা গ্রেফতার ও পাওনা টাকা দাবি
আরও

আরও পড়ুন

নতুন ট্রেন ‘জাহানাবাদ এক্সপ্রেস’ চলাচল শুরু

নতুন ট্রেন ‘জাহানাবাদ এক্সপ্রেস’ চলাচল শুরু

ইসরায়েল নিশ্চিত করেছে, হামাস নেতা হানিয়া তেহরানে নিহত

ইসরায়েল নিশ্চিত করেছে, হামাস নেতা হানিয়া তেহরানে নিহত

হাওয়াইয়ের কিলাওয়া আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাত, লাভার প্রবাহ শুরু

হাওয়াইয়ের কিলাওয়া আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাত, লাভার প্রবাহ শুরু

ম্যাট গেটসের বিরুদ্ধে যৌন ও মাদক কেলেঙ্কারির তথ্য প্রকাশ

ম্যাট গেটসের বিরুদ্ধে যৌন ও মাদক কেলেঙ্কারির তথ্য প্রকাশ

লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে যুবককে বেঁধে নির্যাতন-নাকে খত দেওয়ার ভিডিও ভাইরাল

লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে যুবককে বেঁধে নির্যাতন-নাকে খত দেওয়ার ভিডিও ভাইরাল

গাজার হাসপাতাল ও ত্রাণ বহরে ইসরায়েলি হামলা, নিহত আরও ৫৮ ফিলিস্তিনি

গাজার হাসপাতাল ও ত্রাণ বহরে ইসরায়েলি হামলা, নিহত আরও ৫৮ ফিলিস্তিনি

অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানের বিশাল বহর কিনছে পাকিস্তান, ছাড়িয়ে যাবে ভারতকেও

অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানের বিশাল বহর কিনছে পাকিস্তান, ছাড়িয়ে যাবে ভারতকেও

১৩ বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ

১৩ বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ

সাতক্ষীরা কালিগঞ্জে পটল চাষে বাম্পার ফলন

সাতক্ষীরা কালিগঞ্জে পটল চাষে বাম্পার ফলন

গফরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু

গফরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু

শাহরাস্তিতে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

শাহরাস্তিতে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

পাকিস্তানে অবশেষে সরকার ও বিরোধী দলের আলোচনা শুরু

পাকিস্তানে অবশেষে সরকার ও বিরোধী দলের আলোচনা শুরু

ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার ফোন

ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার ফোন

রানার অটোমোবাইলস পিএলসির এজিএম সম্পন্ন

রানার অটোমোবাইলস পিএলসির এজিএম সম্পন্ন

আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ  কাজের আহ্বান: এমরান আহমদ চৌধুরী

আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ  কাজের আহ্বান: এমরান আহমদ চৌধুরী

নকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির উপর শুল্ক কমানোর দাবি  বাজারের ২০ শতাংশ খাদ্য মানহীন

নকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির উপর শুল্ক কমানোর দাবি বাজারের ২০ শতাংশ খাদ্য মানহীন

লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে জনসম্মুখে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, নাকে খত

লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে জনসম্মুখে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, নাকে খত

বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ

বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ

বিশ্বে বছরজুড়ে আলোচনায় যুদ্ধ, নির্বাচন ও মূল্যস্ফীতি

বিশ্বে বছরজুড়ে আলোচনায় যুদ্ধ, নির্বাচন ও মূল্যস্ফীতি

যুক্তরাষ্ট্র আগুন নিয়ে খেলছে : চীন

যুক্তরাষ্ট্র আগুন নিয়ে খেলছে : চীন