পলো বাওয়া উৎসব
০২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম
গ্রাম বাংলার পুরনো একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব হচ্ছে পলো বাওয়া। এক সময় গ্রাম এলাকাজুড়ে বর্ষা মৌসুম শেষে শীতকে উপেক্ষা করে বাঁশ দিয়ে তৈরী পলো দিয়ে নদী-নালা ও খাল-বিলে সারিবদ্ধভাবে মাছ শিকার করতে দেখা যেতো। কিন্তু, কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে এই পলো বাওয়া উৎসব।
তবে বিলুপ্তির পথে গ্রামীণ এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে শুক্রবার (০১ নভেম্বর) ফরিদপুর সদরের অম্বিকাপুর ইউনিয়নের আদমপুর বিলে তথা কাইজ্বার কোলে, আয়োজন করা হয় ‘পলো বাওয়া’ উৎসব। আর এতে কয়েক হাজার সৌখিন মাছ শিকারি অংশ নেয়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খুব ভোরেই আদমপুর বিলে হৈ হৈ করে একসাথে পলো-জাল হাতে মাছ শিকারে নেমে পড়েন সবাই। ঝপ ঝপ শব্দের তালে তালে চলতে থাকে পলো বাওয়া।
কয়েক ঘন্টাব্যাবপী এ ‘পলো বাওয়া উৎসবে’ আশেপাশের গ্রামের নানা বয়সের লোকজন; শিশু থেকে বৃদ্ধ যে যার মতো পলো বাওয়া উৎসবে মেতে উঠেন।
বিলের মধ্যে নানা বয়সের মানুষ মাছ ধরতে নামলে তাদের মাছ ধরা দেখতে পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন গ্রামের নারীরাও। কেউ আবার জাল থেকে মাছ ধরে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। নানা প্রজাতির মাছ ধরে হাসিমুখে ফিরতে দেখা যায় সৌখিন মাছ শিকারীদের। স্থানীয়রা জানান, ‘একসময় পলো দিয়ে মাছ শিকারের অপরুপ দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হতো গ্রামের ছোট-বড় সকল বয়সী মানুষ।
কম বেশি প্রায় সবাই বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শিকার করতো। আর সেই মাছ দিয়ে পরিবারের সকলে আনন্দের সাথে রান্না করে খেতো।
কিন্তু সেই বাংলার ঐহিত্য আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। এখন নেই নদী- নালায় পানি, যতোটুকু আছে সেখানে অসাধু মাছ শিকারিরা চায়না দুয়ারি, কারেন্ট জালের ফাঁদ পেতে ছোট মাছ গুলো মেরে দেশীয় মাছের বংশ বিস্তারে বাধা সৃষ্টি করছে।
তবে এবার মাছ ধরার সেই ঐতিহ্য ফিরে যাওয়ার চেষ্টায় ফরিদপুর সদরেরের অম্বিকাপুর ইউনিয়নের আদমপুর বিলে পলো দিয়ে মাছ শিকার উৎসবের আয়োজন করা হয়। আর এতে কয়েক হাজার সৌখিন মাছ শিকারি অংশ নেন।’
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পূর্ব থেকেই নির্ধারিত ছিল শুক্রবার (০১ নভেম্বর) আদমপুর বিলে পলো দিয়ে মাছ শিকার করা হবে। এ সংবাদে কয়েকটি গ্রাম থেকে সৌখিন মাছ শিকারির ভোর থেকে জড়ো হয় বিল পাড়ে। ‘উন্মুক্ত জলাশয়ে ভেসাল, কারেন্ট জাল ও চায়না দুয়ারি চাই না’ স্লোগানে এ উৎসব দেখতে জড়ো হয় আশেপাশের গ্রামের নানা বয়সী মানুষ ।
মাছ শিকারি ও উৎসুক একাধিক জনতা জানান, যান্ত্রিক যুগে আমরা ভুলেই গিয়েছিলাম পলো দিয়ে মাছ ধরার গল্পকে। আজ এই উৎসবের মধ্য দিয়ে শৈশবকে ফিরে পেলাম। আয়োজকরা জানালেন, স্থানীয় প্রশাসনের আন্তরিকতা থাকলে উন্মুক্ত জলাশয়ে কারেন্ট জাল বা চায়না দুয়ারি দিয়ে দেশীয় মাছের বংশক্রম ধ্বংস করতে পারতো না। কিন্তু, প্রশাসনের আন্তরিকতা না বাড়ালে এক সময় দেশীয় মাছ চায়না জাল, কারেন্ট জালের বুকে বিলীন হয়ে যাবে। হারিয়ে যাবে গ্রামীণ ঐতিহ্য পলো দিয়ে মাছ শিকারের মতো নানা উৎসবও।
বিভাগ : অভ্যন্তরীণ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
কন্যার নাম প্রকাশ করলেন রণবীর-দীপিকা দম্পতি,দিয়েছেন মিষ্টি ছবি
তুরস্কে বিজয়ী বাংলাদেশের হাফেজ মুয়াজকে অভিনন্দন জানালেন পীর সাহেব চরমোনাই
সিলেট মহানগর ‘বৈষম্য বিরোধী হকার ঐক্য পরিষদ’র ১৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন
শেরপুরে তারে জড়িয়ে বন্য হাতির মৃত্যু
কাঁচা সড়কে জনদুর্ভোগ
দেরি করে ভাত দেওয়ায় হত্যা
গ্রামে প্রবেশের সড়ক নেই
বন্য হাতি হামলা
গোদাগাড়ীর মহিশালবাড়ী হাটে ময়লার স্তূপ
কুয়াকাটায় ব্যবসা বাণিজ্যে গতি ফিরছে
গারো পাহাড়ে কলার আবাদ
সেতুর পনেরো শতাংশ কাজ করতেই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ
ডেঙ্গুতে ১০ মাসে মৃত্যু ৩০০
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্ন এবং বাস্তবতা
স্বেচ্ছায় রক্ত ও চক্ষু দানকে উৎসাহিত করতে হবে
অনন্য চিন্তক-দার্শনিক দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে
বিদ্যুৎ সংকট আর্থ-সামাজিক অস্থিরতার কারণ হতে পারে
শার্শায় আফিল জুট উইভিং ফ্যাক্টরি শ্রমিক নিহত
আফগান সিরিজের বাংলাদেশ দল ঘোষণা,আছে চমক