গারো পাহাড়ে কলার আবাদ
০২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম
স্বল্প খরচ আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় কলাচাষ লাভজনক হওয়ায় সীমান্তবর্তী শেরপুর জেলা ও গারো পাহাড়ি উপজেলাগুলোয় বেড়েছে কলার আবাদ। উৎপাদিত নানা জাতের কলার চাহিদা ও খ্যাতি এখন দেশজুড়ে। বানিজ্যিকভাবে সরবি, সাগর, চম্পা, আনাইজে বা কাঁচকলা, তুলইডে, ভিমাইডে ইত্যাদি জাতের কলাচাষ ও বিকিকিনির সঙ্গে জড়িয়ে সচ্ছলতা ফিরেছে শেরপুর জেলা- উপজেলার বেশ কয়েক শত কৃষক পরিবারে। মাটি ও আবহাওয়া কলা চাষের উপযোগী হওয়ায় একবার চারা রোপণ করে কোন কোন কলা বছরে ৩বার বিক্রি করতে পেরে লাভবান হচ্ছেন কৃষক। কৃষকরা বলছেন, একবার চারা রোপণে তিনবার কলার ফলন পাওয়া যায়। খরচ কম- লাভ বেশি। তাই চাষিরা কলাচাষে ঝুঁকে পড়েছেন তারা।
‘ঝিনাইগাতী উপজেলার ডেফলাই,ভালুকা,গান্দিগাঁও বাঁকাকুড়া, রাংটিয়সহ পাহাড়ি গ্রামাঞ্চলে সবচে বেশী কলাব আবাদ হচ্ছে বলে দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার।’ ঝিনাইগাতীর উল্লেখিত গ্রামেগুলোয় অনেক বাড়ির পাশেই শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন জাতের কলার বাগান।
‘কলা চাষিরা জানান,এসব গ্রামের মাঠে কলার বাগানে প্রচুর পরিমাণ কলার চাষ হয়েছে। এছাড়া গারো পাহাড় অঞ্চলের ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ীসহ বিভিন্ন উপজেলার মাঠে মাঠে ও কলার চাষ হচ্ছে।’
’৯০ দশক থেকে শেরপুরে বানিজ্যিকভাবে কলাচাষ শুরু হলেও বর্তমানে কৃষকদের কাছে কলা আবাদ এখন একটি অন্যতম অর্থকরী ফসল। স্থানীয় কলার কদর ও দিন দিন বেড়েই চলেছে। এসব জাতের কলা কাঁচা অবস্থায় গাড়ো সবুজ হলেও পাকলেই দেখতে হলুদ।’
‘শেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) কৃষিবিদ. হুমায়ুন কবির দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় কলার চাষ হয়েছে ৪৮৫ হেক্টর জমিতে। কলার দামও ভালো পাচ্ছেন কৃষকরা। আগামীতে কলাচাষ আরও বেড়ে যাবে বলে ওই জেলা কৃষি কর্মকর্তার ধারণা।’
‘ঝিনাইগাতী উপজেলার ভালুকা গ্রামের কলাচাষি আজাহার জানান, স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে কলার চারা আমদানি করে এক বিঘা জমিতে চাষ করেছিলেন। সেই এক বিঘা কলায় অল্প টাকা খরচ করে ভালো লাভ হয়। পরে গেল দুই বছর থেকে সরবি, সাগর ও চম্পা জাতের কলার আবাদ করি। এ জাতের কলা বড়, সুস্বাদু এবং রং সুন্দর হওয়ায় দেশের সব জেলাতেই কলার চাহিদা অনেক বেশি। প্রথমবারেই খরচের টাকা বাদ দিয়ে লাভ হয়েছে দ্বিগুণ। ওই জমি থেকে এখনও দুবার কলা পাওয়া যাবে। কলাচাষ লাভজনক হওয়ায় গান্দিগঁও গ্রামের কলাচাষি মিজানুর রহমান মিজান, আশ্রাফুল আলম ও বাবলু কলা চাষে তারা ভাল লাভের মূখ দেখেছেন। আগামীতে তারা আরো বেশী জমিতে কলা চাষ করবেন বলে জানান।’
‘কলা ব্যবসায়ীরা বলেন, এখানকার উৎপাদিত কলার চাহিদা অনেক বেশি এবং দামও ভালো। বাজারেতো বটেই বাগান থেকেই বেশীরভাগ কলা কিনে আনতে হয়। কলা ব্যবসায়ীরা জানান, স্থানীয় কলা থেকেই আমারা পরিবারের যাবতীয় সাংসারিক খরচ চালাই।’
‘ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশ্রাফুল আলম রাসেল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, লাভজনক হওয়ায় চাষিরা কলার চাষে ঝুকে পড়েছেন। সাগর, সবরি, চাঁপা, চিনিচাঁপাসহ বিভিন্ন ধরনের কলার চাষ হচ্ছে। সম্প্রতি কৃষি বিভাগ তরকারি খাওয়ার জন্য উন্নত জাতের কাঁচকলা
(আনাইজে কলা) চারা সরবরাহ ও চাষ করার জন্য চাষিদের উদ্বুদ্ধ করছেন। তবে একই জমিতে ২৪ মাসের বেশি কলার চাষ না করতে চাষিদের পরামর্শ দিতে হবে। নচেৎ জমির উরবরতা শক্তি হুমকির মুখে পড়বে। তিনি বলেন, কলাচাষিদের বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধানে কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা দিনভর মাঠে থাকছেন। চাষিদের কলা চাষে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন। অন্যদিকে ব্যবসায়ী ও কৃষকদের কলাতে কারবাইড ও বিষ স্প্রে না করার পরামর্শ দিচোছন।’
বিভাগ : অভ্যন্তরীণ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
কন্যার নাম প্রকাশ করলেন রণবীর-দীপিকা দম্পতি,দিয়েছেন মিষ্টি ছবি
তুরস্কে বিজয়ী বাংলাদেশের হাফেজ মুয়াজকে অভিনন্দন জানালেন পীর সাহেব চরমোনাই
সিলেট মহানগর ‘বৈষম্য বিরোধী হকার ঐক্য পরিষদ’র ১৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন
শেরপুরে তারে জড়িয়ে বন্য হাতির মৃত্যু
কাঁচা সড়কে জনদুর্ভোগ
দেরি করে ভাত দেওয়ায় হত্যা
গ্রামে প্রবেশের সড়ক নেই
বন্য হাতি হামলা
পলো বাওয়া উৎসব
গোদাগাড়ীর মহিশালবাড়ী হাটে ময়লার স্তূপ
কুয়াকাটায় ব্যবসা বাণিজ্যে গতি ফিরছে
সেতুর পনেরো শতাংশ কাজ করতেই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ
ডেঙ্গুতে ১০ মাসে মৃত্যু ৩০০
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্ন এবং বাস্তবতা
স্বেচ্ছায় রক্ত ও চক্ষু দানকে উৎসাহিত করতে হবে
অনন্য চিন্তক-দার্শনিক দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে
বিদ্যুৎ সংকট আর্থ-সামাজিক অস্থিরতার কারণ হতে পারে
শার্শায় আফিল জুট উইভিং ফ্যাক্টরি শ্রমিক নিহত
আফগান সিরিজের বাংলাদেশ দল ঘোষণা,আছে চমক