হরিরামপুর ও আশুলিয়ায় গরম কাপড় বিক্রি বেড়েছে
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম
শীতের তীব্রতা বাড়া সাথে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের বিভিন্ন হাটবাজারে পুরাতন কাপড়ের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। নিম্নআয়ের মানুষের পাশাপাশি মধ্যবিত্তরাও এসব দোকান থেকে গরম কাপড় কিনে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
শনিবার দুপুর সরেজমিনে উপজেলার ঝিটকা বাজারের সাপ্তাহিক হাটে ফুটপাতের দোকানগুলোতে দেখা যায়, প্রতিটি পুরাতন কাপড়ের দোকানে বিভিন্ন বয়েসের নারী পুরুষের ভিড় করেছে। এসব দোকানে শিশু কিশোর থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সব বয়েসের বিভিন্ন প্রকারের শীতের পুরাতন কাপড় রয়েছে। সর্বনিম্ন একশো টাকা থেকে শুরু করে দেড় হাজার টাকা দামের কাপড়চোপড় রয়েছে বলে জানা যায়।
তবে ব্যবসায়ীরা দাবি করেন, এখনো শীত পুরোপুরি না আসায় বেচাকেনা তেমন নেই। শীতের তীব্রতা আরো বাড়লে হয়তো বেচাকেনা বাড়বে।
বরিশাল থকে আসা ব্যবসায়ী মনির জানান, আমি পুরাতন জ্যাকেট বিক্রি করি। বিভিন্ন এলাকার হাটবাজারে আমি দোকান করি। আমার এখানে একদাম দেড়শো টাকা করে প্রতিটি পুরাতন জ্যাকেট বিক্রি করছি। এ অঞ্চলে এখনো শীতের প্রভাব খুব বেশি না থাকায় বেচাকেনা তেমন নাই। তারপরেও প্রতি হাটে সাত থেকে আট হাজার টাকা বিক্রি হয়।
উপজেলার গালা ইউনিয়নের গোয়ালবাগ গ্রামের বাসিন্দা পুরাতন কাপড়ের ব্যবসায়ী গফুর জানান, আমার এখানে সব বয়েসের নারী পুরুষের স্যুয়েটার, গেঞ্জি, ট্রাউজার, জ্যাকেট আছে। এ বছর মোকাম থেকে আমাদের পাইকারী দাম যে হারে বাড়ছে, সে হারে আমাদের বিক্রিও কম, লাভও কম। তাই আমরা ব্যবসায় তেমন সুবিধার করতে পারছি না। শীত এখনো ভাল মতো না পরায় বিক্রিও কম হচ্ছে। তবে শীত বাড়লে বিক্রিও বাড়বে বলে আশা করছি। তবে বর্তমান দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে না থাকায় আমাদের চলতে খুব কষ্ট হচ্ছে।
পুরাতন জ্যাকেট কিনতে আসা আলমাস নামের এক যুবক জানান, কম দামে কেনা যাবে ভেবে পুরাতন কাপড়ের দোকানে আসলাম। এখানেও দাম বেশ চড়া। বর্তমান বাজার অনুযায়ী আমাদের মতো নিম্নআয়ের মানুষের জন্য কাপড়চোপড় কেনা কষ্টকর।
তবে শীত মৌসুমকে সামনে রেখে উপজেলার বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কম্বল বিতরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করছে বলেও জানা যায়। এ উপজেলার এসএসসি-৯৫ ব্যাচ থেকে চলতি শীত মৌসুমে অসহায় শীতার্তদের জন্য পাঁচশত কম্বল বিতরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে জানান ব্যাচের সমন্বয়ক দেবাশীষ ঘোষ।
শীতার্তদের কম্বল বিতরণ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহরিয়ার রহমান ইনকিলাবকে জানান, চলতি শীতে দুস্থ ও অসহায় শীতার্তের জন্য কম্বল বিতরণ প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে আমরা শুরু করেছি। প্রাথমিকভাবে ১ হাজার ২০০ কম্বল বিতরণের প্রক্রিয়া চলছে। সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই কম্বল বিতরণ কার্যক্রম শুরু করব, ইন শা আল্লাহ।
এদিকে শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় সাভার ও আশুলিয়ায় ফুটপাতে জমে উঠেছে শীতে গরম কাপড় বিক্রি। শপিংমলের থেকে দামে কম হওয়ায় সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ ভিড় করছেন ফুটপাতে। আর ফুটপাতের দোকানগুলো দরিদ্র মানুষের জন্য বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
সাভার ও আশুলিয়ার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায় হেমায়েতপুর, উলাইল,সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড, ডিইপিজেড, বলিভদ্র বাজার, শ্রীপুর, জিরানী বাজার, পল্লীবিদ্যুত এবং বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের জামগড়াসহ বিভিন্ন মহাসড়কের পাশের ফুটপাতে জমে উঠেছে শীতবস্ত্রের বাজার। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ফুটপাতের দোকানগুলোতে নিম্নআয়ের মানুষের পাশাপাশি উচ্চবিত্তরাও এসব দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন। বিশেষ করে মৌসুম ভিত্তিক দোকানগুলোতে শীতবস্ত্র বিক্রি চলছে পুরোদমে। শীত কম থাকায় ব্যবসা কম হচ্ছে। শীত পড়লে সামনে আরো ভালো ব্যবসা হবে এরকম প্রত্যাশা দোকানিদের।
ফুটপাতের এসব দোকানগুলোতে একটি স্যোয়েটারের দাম ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা, বাচ্চাদের কাপড় ৫০ থেকে শুরু করে ২০০ টাকা পর্যন্ত, বাচ্চাদের ফুলাহাত গেঞ্জি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। আবার ছেলেদের হুডিও পাওয়া যাচ্ছে ২৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে। সাধ্যের মধ্যে থেকেই পছন্দের শীতের পোশাকটি বেছে নিচ্ছেন অনেকে।
ডিইপিজেড এলাকার ফুটপাতে শীতের কাপড় এর একজন বিক্রেতা জানান, শীত এখনো সেরকম পড়ছে না। তবে দুই/তিনদিন আগে বেশ শীত পড়েছিল, তখন বিক্রিও ছিল বেশি। এখন একটু কম। তিনি ছোট-বড় সকলের শীতের পোশাক বিক্রি করছেন। বিশেষ করে স্যোয়েটার, চাদর, ফুলহাতা গেঞ্জি, বাচ্চাদের শীতের পোশাক সহ নানা ধরনের পোশাক। তবে বড়দের তুলনায় বাচ্চাদের পোশাক তুলনামূলকভাবে বেশি বিক্রি হচ্ছে। দুই/একদিন পরে বিক্রি আরো বাড়বে বলেও জানান তিনি।
শ্রীপুর ফুটপাতের খোলা আকাশের নীচে মেঝেতে জামা কাপড় রেখে বিক্রি করছেন আব্দুর রহমান। তিনি জানান, এবার শীতের মৌসুম আসতেই মানুষজন কাপড় কিনছেন। শিল্পাঞ্চল এলাকা হওয়াতে মাসের ০৭-১২ এর মধ্যে বেচা-বিক্রি বেশি হয়। কারণ এই সময়টাতেই পোশাক শ্রমিকরা বেতন পেয়ে থাকেন। পোশাক শ্রমিকরাই তাদের অধিকাংশ ক্রেতা। এছাড়াও এখানে দাম কম হওয়ায় প্রায় সব রকমের মানুষজন এখান থেকে শীতের পোশাক কিনে থাকেন।
জিরানী বাজার এলাকা থেকে মেয়ের জন্য শীতের পোশাক কিনতে এসেছেন জাহানারা বেগম নামের এক নারী শ্রমিক। তিনি বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে শীত শুরু হয়েছে। বাচ্চাদের এখনো শীতের জামা কিনে দেয়নি। লোকমুখে শুনে শ্রীপুরে ফুটপাতে এসেছি। এখানে নাকি কম দামে শীতের পোশাক পাওয়া যায়। মেয়ের জন্য একটা কিনেও ফেলেছি। তবে শপিং মল গুলোতে কাপড়ের দাম অনেকটা বেশি, তাই বাধ্য হয়ে ফুটপাত থেকেই কিনছি বলেও তিনি যোগ করেন।
শীতের পোশাক কিনতে এসেছেন শাহাদাত হোসেন নামের একজন। তিনি জানান, শপিংমলগুলোতে কাপড়ের দাম বেশি হওয়ায় তিনি ফুটপাতে এসেছেন নিজের জন্য একটা স্যোয়েটার কিনতে। এখানে কম দামে শীতের কাপড় পাওয়া যায়। একটা কিনেছি।
বিভাগ : অভ্যন্তরীণ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
প্রোটিয়াদের হোয়াইট ওয়াশ করে পাকিস্তানের ইতিহাস
৯ গোলের উৎসবে লিভারপুলের বড় জয়
বড়দিনের ছুটির আগে রিয়ালের বড় জয়
ঘরের মাঠেই বিধ্বস্ত ইউনাইটেড
গোলশূন্য ড্রয়ে থামল চেলসির জয়রথ
এনার্জিপ্যাকের বার্ষিক সাধারণ সভায় ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ
আমার খাবার কি ফর্টিফায়েড?
হাসিনা পরিবারের নামে ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি তাকিয়ে আছে সরকারের দিকে
ব্র্যাক ব্যাংকের রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন
দিনাজপুর জেলা শিক্ষা অফিসারের বিদায়ী সংবর্ধনা
নরসিংদীর শিবপুরে প্লাস্টিক কারখানা আগুনে পুড়ে ছাই
ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স শূন্য যে ১০ ব্যাংকে
বিএনপি নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় আসতে চায় না: আব্দুস সালাম
সরকারের আশ্বাসে শাহবাগ থেকে সরে গেলেন বিএসএমএমইউ ট্রেইনি চিকিৎসকরা
সাকাকে হারিয়ে চিন্তিত আর্সেনাল কোচ
৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব জমা হবে : বদিউল আলম মজুমদার
সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বদলী
মানিকগঞ্জের ঘিওরে ছাত্রদল নেতা লাভলু হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
বঙ্গবাজার পুড়ে যাওয়া মামলায় একজন গ্রেফতার
জনগণের প্রত্যাশা পূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধীর গতিতে চলছে: আমিনুল হক