কটিয়াদী চরাঞ্চলের ফসল রক্ষায় প্রহরী কাকতাড়ুয়া
০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:২২ এএম | আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:২২ এএম
আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় চাষাবাদের ধরন বদলে গেলেও কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার চরাঞ্চলসহ আশপাশের বিভিন্ন স্থানে কৃষি জমির ফসল রক্ষায় কৃষকরা সনাতন পদ্ধতির কাকতাড়ুয়ার ব্যবহার করছেন এখনো।
সুত্র মতে, আদিকাল থেকে আবহমান গ্রাম বাংলায় কৃষকরা খেতের ফসল পশু-পাখি, ইঁদুর এমনকি মানুষের কুনজর হতে রক্ষার কৌশল হিসেবে অদ্ভুত ও অভিনব পদ্ধতি আবিষ্কার করে তার নাম দেন কাকতাড়ুয়া। যুগ যুগ ধরে এ রকম এক অতন্দ্রপ্রহরীকে ফসলের ক্ষেতে দেখতে পাওয়া যায়। আধুনিক যুগেও গ্রামীণ জনপদে এমন অদ্ভুত বিশ্বাসের লোকের যেন অভাব নেই। তেমনই বিশ্বাস নিয়ে কৃষকরা ক্ষেতের ফসল রক্ষার্থে মানুষের আকৃতি সদৃশ্য কাকতাড়ুয়া ব্যবহার করছেন।
সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহকালে উপজেলার আলগীরচর গ্রামের আদর্শ কৃষক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, লম্বা দন্ডায়মান একটি খুঁটি এবং দুই বা তিন ফুট ওপরে আড়াআড়ি আরেকটি খুঁটি বেঁধে তাতে ছন বা খড় প্যাঁচিয়ে মোটাসোটা করা হয়। তারপর আড়াআড়ি বাঁধানো অংশের সামান্য ওপরে ছন বা খড়কুটো দিয়ে ডিম্বাকৃতি বা মাথার মতো বস্তু বানানো হয়। এরপর ছেঁড়া জামা বা পাঞ্জাবি পড়িয়ে দেয়া হয় এটিকে। ডিম্বাকৃতির অংশটিকে ঢেকে দেয়া হয় মাটির হাঁড়ি দিয়ে। সেই হাঁড়িতে চোখ-নাক-মুখ এঁকে দেয়া হয় চুন বা চক দিয়ে। যা দেখে ভয় পাওয়ার মতো একটা ব্যাপার ঘটে থাকে। এই কাকতাড়ুয়াকে ফসলি জমির মাঝখানে দন্ডায়মান রাখা হয়। অনেকের বিশ্বাস বাড়ন্ত ফসলের দিকে পথচারীর কুদৃষ্টি থেকে কাকতাড়ুয়া রক্ষা করে। দূর থেকে দেখলে যেন মনে হয় মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। এই কাকতাড়ুয়া দেখে ক্ষেতে পশু-পাখির উপদ্রব ঘটে না।
ফলে ফসলও নষ্ট হয় না। চলতি মৌসুমে কৃষকের আবাদকৃত পটল, বেগুন, খিরা, মরিচ, আলু, পিঁয়াজ, শসা, টমেটো ইত্যাদি ফসলি জমিতে বেশি ওই কাকতাড়ুয়ার ব্যবহার করতে দেখা যায়।
উপজেলার চর ঝাকালিয়া গ্রামের কৃষক মো. জহিরুল ইসলামসহ অনেকেই জানান, কাকতাড়ুয়া পশু-পাখিকে ভয় দেখানোর জন্যে জমিতে দাঁড় করা মানুষের প্রতিকৃতি বিশেষ। যা ক্ষতিকর পাখির আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষার উদ্দেশে জমিতে এটা রাখা হয়। এটি এক প্রকার ফাঁদ, যা ভয় দেখানোর উদ্দেশে তৈরি করা হয়।
সনাতন ধারায় এটি মানুষের দেহের গঠনের সঙ্গে মিল রেখে পরিত্যক্ত কাপড় দিয়ে সঙের ন্যায় সাজানো হয়। তারপর জমির মাঝামাঝি স্থানে খুঁটি হিসেবে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এটি বাতাসে দুলতে থাকায় পাখির উৎপাত ও তাদের খাদ্য সংগ্রহ করা থেকে বিরত রাখার প্রয়াস চালানো হয় মাত্র।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শফিকুল ইসলাম ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন জানান, ফসল রক্ষায় কাক তাড়ুয়ার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। তবুও উপজেলার চরাঞ্চলসহ প্রত্যন্ত এলাকার অনেক কৃষি জমিতে এমনি কাকতাড়ুয়া দেখা যায়।
অনেকের ধারণা তাদের ক্ষেতে কাকতাড়ুয়া দাঁড়ানো থাকলে ফসলের কোনো ক্ষতি হবে না, এমন বিশ্বাস থেকেই কৃষকেরা কাকতাড়ুয়া জমিতে স্থাপন করে থাকতে পারেন বলেও মন্তব্য করেন তারা।
বিভাগ : অভ্যন্তরীণ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
জুলাই গণহত্যা: হাসিনাসহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল
শিগগিরই চালের দাম কমে আসবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
গাজায় ফিলিস্তিনিদের ত্রাণ সহযোগিতা দিচ্ছে হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি
ট্রাম্প প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতি যুদ্ধ নাকি বন্ধুত্বের পক্ষে
মিথ্যা ন্যারেটিভ ভেঙ্গে দেয়া আমাদের ইতিহাসের দায়বদ্ধতার অংশ
বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে
এক-পঞ্চমাংশ এইচ-১বি ভিসাই ভারতীয় সংস্থাগুলোর কাছে
গ্রীনল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন ট্রাম্প জুনিয়র
মক্কা-মদিনায় ভারী বৃষ্টিতে বন্যা
ভারতে চীনের পরিবর্তে বাড়ছে জাপানি বিনিয়োগ
পশ্চিম তীরে ৩ ইসরাইলি নিহত
যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা একীভূত করার প্রস্তাব ট্রাম্পের
অস্ট্রিয়ায় সরকার গঠন করছেন অতি ডানপন্থি নেতা কিকল
গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ-কুকুর
শত্রুদের যে বার্তা দিলেন কিম
আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিকসের সদস্যপদ পেল ইন্দোনেশিয়া
স্বামী ও ৬ সন্তান রেখে ভিক্ষুকের সঙ্গে পালালেন নারী
গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনড় এরদোগান
সন-টটেনহ্যাম চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি
ইবি’র পাঠ্যসূচিতে জুলাই বিপ্লবের ইতিহাস