রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে বিচলিত উপকূলীবাসী
২২ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৫ এএম | আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৫ এএম

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত বছর ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যে যার মত করে দেশ ছাড়েন। অনেকে জীবন বাঁচাতে আত্মগোপনে চলে যান। আ.লীগহীন ফাঁকা মাঠ পেয়ে হালে পানি পায় বিএনপি নেতাকর্মীরা। একে একে তৃণমূল থেকে শীর্ষ পর্যায়ের বিএনপি নেতাকর্মীরা ক্ষমতায় না এসেও ক্ষমতার স্বাদ নিতে শুরু করে। রাতারাতি নেতাকর্মীরা ক্ষমতাবান হয়ে ওঠেন।
অভিযোগ ওঠে, দখলবাণিজ্য, চাঁদাবাজি আর থানার দালালি নিয়ে টানাটানি শুরু হয়। সারা দেশের ন্যায় সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির মধ্যে দলীয় কোন্দল যা এখন প্রতিনিয়ত রূপ নিচ্ছে সংঘর্ষ, মারামারি, হানাহানি, মামলা পাল্টা মামলায়। বিএনপির এমন কার্যক্রমে ক্ষুব্ধ হচ্ছে কালিগঞ্জ উপজেলার সাধারণ জনগণ। বিষয়টা নিয়ে অনেক সুধী, রাজনৈতিক ব্যক্তিরা এ প্রতিনিধিকে জানান বিএনপি, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে তবে দলের কোন্দল কর্মকা-ে জনসমর্থন এখন তলানিতে চলে গেছে। যার কারণে দলের বদনাম হচ্ছে। ঠিক এই সুযোগ নিচ্ছেন প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলো। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের কঠোর বার্তার পরও থামছে না। বরং বেসামাল বিএনপি›র নেতাকর্মী সমর্থকরা উপজেলাজুড়ে আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজি, দখলবাজি ,এমনকি মাদক কারবারির মত জঘন্যতম অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।
গত ৫ আগস্টের পর পুলিন বাবুর হাটখোলায় অবস্থিত কুশুলিয়া গ্রামের তন্ময়ের একটি দোকান উপজেলা কৃষকদলের সভাপতি রোকনুজ্জামানের নেতৃত্বে লক্ষ লক্ষ টাকার মালামাল লুটপাট হয়।
বিষয়টি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ফলাওভাবে প্রকাশ পেলে তাকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। উক্ত বহিষ্কারাদেশ উপেক্ষা করে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি›র স্থায়ী কমিটির সদস্য কাজী আলাউদ্দিনের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য দলের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে চলেছে। আর এই বিভেদকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ঝাটা মিছিল করে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করে চলেছে। ঈদের পর হতে সাতক্ষীরা-৩ আসন অর্থাৎ কালিগঞ্জ (আংশিক), দেবহাটা, আশাশুনি নির্বাচনী এলাকার সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপির কেন্দ্রীয় ও সাতক্ষীরা জেলা কমিটির সদস্য গরিবের ডাক্তার খ্যাত জনপ্রিয়তার শীর্ষে ডা. শহিদুল আলম বিভিন্ন সভা-সমাবেশ গণসংযোগ চালিয়ে আসছে। অন্যদিকে সাতক্ষীরা-৪ অর্থাৎ কালিগঞ্জ (আংশিক) শ্যামনগর উপজেলা নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসনে নিজের পুরানো আসন ধরে রাখার জন্য সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য কাজী আলাউদ্দিন তার নির্বাচনী এলাকায় সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে গণসংযোগ ও বিভিন্ন মিছিল সমাবেশ চালিয়ে আসছে।
এই দুই ব্যক্তির পেছনে কালিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক শেখ ইবাদুল ইসলাম সাবেক সদস্য সচিব ডাক্তার শফিকুল ইসলাম বাবু এবং সাময়িক বহিষ্কৃত থানা কৃষকদলের সভাপতি রোকনুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ কাজী আলাউদ্দিনের সভা ও সমাবেশে থেকে অপর গ্রুপের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দখলবাজিসহ বিভিন্ন বক্তব্য দিয়ে বিষধাগার করে চলেছে। অন্যদিকে সাতক্ষীরা-৪ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্যপ্রার্থী না হয়েও ডাক্তার শহিদুল আলম ও গণসংযোগ মিছিল মিটিং চালিয়ে যাচ্ছে। এ গ্রুপে উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শেখ নুরুজ্জামান, সাবেক সদস্য সচিব বিষ্ণুপুর ইউপির জনপ্রিয় চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমসহ বিএনপির অধিকাংশ নেতৃবৃন্দ যুবদলের নেতৃবৃন্দ ডাক্তার শহিদুল আলমের পক্ষে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে। এখানেও এক পক্ষ আর পক্ষের বিরুদ্ধে জ্বালাময়ী বক্তব্যে সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্তিতে ফেলছে। গত ১১ এপ্রিল বিকেল ৫টার সময় বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মুকুন্দ মধুসূদনপুর চৌমুহনী এলাকায় কাজী আলাউদ্দিন গ্রুপের এক ঈদ পুনর্মিলনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সমাবেশে এবাদুল ইসলাম এবং ডাক্তার শফিকুল ইসলাম বাবু ও রোকনুজ্জামান গ্রুপের সভা শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়। পরের দিন ডাক্তার শহিদুল ইসলামের অপর গ্রুপের নুরুজ্জামান, জাহাঙ্গীর আলম গ্রুপের নেতৃত্বে ঈদ পুনর্মিলনী ও কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ঐদিন অনুষ্ঠান শেষে পূর্বপরিকল্পিতভাবে রাত আনুমানিক ৯ টার দিকে বহিষ্কৃত নেতা কৃষকদলের রোকনুজ্জামানের নির্দেশে তার ক্যাডার বাহিনী সাতক্ষীরা জেলা তাঁতি দলের যুগ্ম আহবায়ক মাহমুদ মোস্তফা, উপজেলা মৎস্যজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক সফির উদ্দীন সপু, উপজেলা তরুণ দলের সম্পাদক আলমগীর হোসেন, সহ-সভাপতি আশরাফুল ইসলাম এবং উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক নুর ইসলামকে বেধড়ক পিটিয়ে কুপিয়ে জখম করে। এর প্রতিশোধ নিতে ঐদিন রাতে প্রতিপক্ষ জাসাস শাহাজান গ্রুপকে পিটিয়ে আহত করে।
উক্ত ঘটনায় উভয় পক্ষের ৬/৭ জন কালিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি হয়। উক্ত ঘটনায় বিএনপির দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি দু’টি মামলা দায়ের হয়েছে। দলের বিভেদকে কেন্দ্র করে উপজেলায় সর্বত্রে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন মুহূর্তে বিএনপির দু’গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটতে পারে। এরমধ্যে সাময়িক বহিষ্কৃত রোকনুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যবসায়ী এবং ব্যক্তির নিকট থেকে চাঁদাবাজির ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে উপজেলা বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। এবং অনেক এলাকায় তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিষয়ে অতি জরুরী জেলা বিএনপির আহবায়কসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
বিভাগ : অভ্যন্তরীণ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

নেত্রকোনার কলমাকান্দায় ট্রাক চাপায় এক শিশু নিহত

এলপি গ্যাসের দাম বাড়বে না কমবে—জানা যাবে রবিবার

কোরআন সুন্নাহ বিরোধী প্রতিবেদন বাতিলে কঠিন হুঁশিয়ারি হেফাজতের

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

যুক্তরাষ্ট্রে বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৭, আহত ৮

এবার উটের দুধের ব্যবসা করবেন মিষ্টি জান্নাত

নারী কমিশনের প্রতিবেদনের কিছু সুপারিশ সরাসরি কোরআন বিরোধী: ডা. শফিকুর রহমান

বিমানের বিশেষ সুবিধা নিলেন না খালেদা জিয়া, মানবিকতার নজির

বৈষম্য নিরসনে সচিবালয়ে ছাত্রদের স্মারকলিপি

হেফাজতের সমাবেশস্থল কানায় কানায় পূর্ণ

মঞ্চে হেফাজতে ইসলামের নেতারা, সোহরাওয়ার্দীতে ঢল নেমেছে লক্ষ জনতার

সাভার ও আশুলিয়ার মহাসড়কে অটোরিকশার দাপট, প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা

জাতিসংঘ ‘মানবিক করিডোর’র উদ্যোগ নিলে সবার সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত হবে

পাঁচ মে মাঠে গড়াচ্ছে সেলিব্রেটি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি–২০২৫

মতলবে গ্যাস অনুসন্ধানে বাপেক্সের কূপ খনন

নিকুঞ্জে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ করলেন এলাকাবাসী

তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে ফিরবে গণতন্ত্রের মূলধারা: শহিদুল ইসলাম

বায়ুদূষণের শীর্ষে উঠে এসেছে বাগদাদ, তৃতীয় ঢাকা

সউদীর কাছে ৩৫০ কোটি ডলারের ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রি করছে যুক্তরাষ্ট্র

সোহরাওয়ার্দীতে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশ চলছে