টাইটানের পরিণতির কারণ কীভাবে খুঁজবেন তদন্তকারীরা

অন্যের ছেড়ে দেয়া আসনে ছেলেকে নিলেন দাউদ

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

২৪ জুন ২০২৩, ০৮:২৯ পিএম | আপডেট: ২৫ জুন ২০২৩, ১২:০১ এএম

আটলান্টিকের অতলে হারিয়ে গেল মিনি সাবমেরিন (ডুবোযান) টাইটান। যে টাইটানিক দর্শনের জন্য এত ঘনঘটা, সেই জাহাজের মতোই করুণ পরিণতি ডুবোযানের। এই টাইটানেই সওয়ার হওয়ার কথা ছিল লাস ভেগাসের বিনিয়োগকারী জে ব্লুম এবং তার ছেলের। বলা ভালো, ভাগ্যের জোরেই এক প্রকার প্রাণে বাঁচলেন তারা। আর তাদের জায়গায় বসে প্রাণ হারালেন পাকিস্তানে এক বিলিওনিয়ার ও তার ছেলে। ওশিয়ানগেটের ( যে কোম্পানি ওই ডুবোযান তৈরি করে) সিইও স্টকটন রাশ বিগত এক বছর ধরে জে-কে টাইটানে সওয়ার হওয়ার জন্য রাজি করিয়েছিলেন। স্টকটনের কথায় খানিক প্রভাবিতও হয়েছিলেন তিনি। আটলান্টিকে গভীরে থাকা টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে আগ্রহী ছিলেন তার ২০ বছরের ছেলেও। তবে শেষমেশ পিছিয়ে আসেন তারা। টাইটান আদৌ কতটা সুরক্ষিত, তা নিয়ে জে-র মনে খানিক সঙ্কোচ ছিল। তাই শেষ মুহূর্তে তিনি সেই অভিযান থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। তবে সেটা তখন প্রকাশ করেননি। সময়ের অভাবে অজুহাত দেখিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি। এর পরেই জে এবং তার ছেলের জন্য সংরক্ষিত টিকিট পান পাকিস্তানি ধনকুবের শাহজাদা দাউদ এবং সুলেমান দাউদ। টাইটানিকের ভগ্নাবশেষ দেখতে গিয়ে আর ফিরে আসেননি তারা। অপর এক খবরে বলা হয়, টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে পাঁচ আরোহীসহ পানির চাপে বিস্ফোরিত হয়েছে সাবমেরিন টাইটান। মার্কিন কোস্টগার্ড এমন ধারণার কথা জানিয়েছে। টাইটানিক জাহাজের কাছ থেকে বিস্ফোরিত টাইটানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারের কথা জানানো হয়েছে। এর ফলে উদ্ধার অভিযানের মূল মনোযোগ এখন দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে। কীভাবে তদন্তকারীরা এই কারণ খুঁজে বের করতে পারেন তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের কথা বলে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। মার্কিন কোস্টগার্ডের রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মাউজারের মতে, তারা সমুদ্রের তলদেশে যা পেয়েছেন তা ভয়াবহ অন্তর্মুখী বিস্ফোরণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কারণ তারা দুটি ধ্বংসাবশেষ পেয়েছেন। একটি টাইটানের পেছনের দিকের একটি অংশ এবং অপরটি এর ল্যান্ডিং ফ্রেম, যা ইঙ্গিত দিচ্ছে ডুবোযানটি পানির চাপে খ--বিখ- হয়ে গেছে। ব্রিটেনের রয়্যাল নেভির সাবেক সাবমেরিন ক্যাপ্টেন রায়ান র‌্যামসের মতে, এমনটি কেন ঘটেছে এবং এটি এড়াতে কী করার ছিল তা সম্পর্কে জানতে কর্তৃপক্ষ খুঁজে পাওয়া সব ধ্বাংসাবশেষ একত্রিত করবে। তিনি বলেন, এটায় কোনও ব্ল্যাক বক্স নেই। ফলে ডুবোযানটির সর্বশেষ গতিবিধি জানার সুযোগ থাকছে না। এটি বাদে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা তদন্তের সঙ্গে এর তেমন কোনও পার্থক্য নেই। তার মতে, তদন্তকারীরা ধ্বংসাবশেষগুলো সাগর থেকে তুলে আনার পর ভেঙে যাওয়া কাঠামোগুলোর কার্বন গঠন পর্যবেক্ষণ করবেন। শেষ মুহূর্তে কী ঘটেছে তা বুঝতে এটি খুব সহযোগিতা করবে। প্রতিটি টুকরো পুংখানুপুংখভাবে যাচাই করা হবে। কার্বন ফাইবারের ফিলামেন্টের দিক পর্যবেক্ষণ করা হবে। খুঁজে দেখা হবে ‘মাইক্রোস্কোপিক টিয়ার্স’। এগুলো থেকে কোন স্থানে ফাটল ধরেছিল তা সম্পর্কে ইঙ্গিত পাওয়া যাবে। তদন্তকারীদের যে বড় প্রশ্নটির উত্তর খুঁজতে হবে তা হলো অবকাঠামোগত ত্রুটির কারণে এমনটি ঘটেছিল কিনা। ইউনিভার্সিটি অব সাউদাম্পটনের অধ্যাপক ব্লেয়ার থর্নটন বলেন, যদি এমনটি হয়ে থাকে তাহলে টাইটান অবিশ্বাস্য রকমের চাপে পড়েছিল, যে চাপের ভর আইফেল টাওয়ারের সমান হতে পারে। তিনি বলেন, আমরা টাইটানের ভেতরে একটি খুব শক্তিশালী অন্তর্মুখী বিস্ফোরণের কথা বলছি। কয়েকজন বিশেষজ্ঞ ইঙ্গিত দিয়েছেন, এক্ষেত্রে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন দেখা দেবে। আর তা হলো পর্যাপ্ত পরীক্ষার অভাবে কি এমনটি ঘটেছে? ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক রডেরিক অ্যা স্মিথ বলেন, কার্বন ফাইবার এবং টাইটানিয়ামের সংযোগ খুব সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। অন্তর্মুখী বিস্ফোরণের তীব্রতার কারণে ঘটনাগুলোর পরম্পরা নির্দিষ্ট করা খুব কঠিন হতে পারে। তাই সম্ভব হলে পুনরুদ্ধার এবং কষ্টসাধ্য পরীক্ষার প্রয়োজন। বিবিসি।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

পাকিস্তানে সামরিক আদালতে ২৫ বেসামরিক ব্যক্তির সাজায় উদ্বিগ্ন ইইউ
মার্কিন বিমানবাহী রণতরী হামলা হুথিদের, যুদ্ধবিমান ভূপাতিত
বাসার আল-আসাদ ও আসমা’র ডিভোর্সের সংবাদ প্রত্যাখ্যান রাশিয়ার
সাধারণ ক্ষমার বিনিময়ে দোষ স্বীকার করছেন আসাদের সৈন্যরা
অস্তিত্ব সংকটে ট্রাম্প টাওয়ারসহ ৩৫ বিলাসবহুল ভবন
আরও

আরও পড়ুন

বিডিআর হত্যাকাণ্ড তদন্তে ৭ সদস্যের কমিশনে যারা আছেন

বিডিআর হত্যাকাণ্ড তদন্তে ৭ সদস্যের কমিশনে যারা আছেন

‘বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন’-এ বারের অন্তর্ভুক্তিকরণ প্রস্তাব

‘বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন’-এ বারের অন্তর্ভুক্তিকরণ প্রস্তাব

সোনারগাঁওয়ে বাস-অ্যাম্বুলেন্সের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১০

সোনারগাঁওয়ে বাস-অ্যাম্বুলেন্সের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১০

মামলা রেকর্ড করতে ঘুষ গ্রহণ, কুষ্টিয়ায় ওসি ও এসআই ক্লোজ

মামলা রেকর্ড করতে ঘুষ গ্রহণ, কুষ্টিয়ায় ওসি ও এসআই ক্লোজ

কুমিল্লায় বীর মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় জামায়াতের ২ কর্মী বহিষ্কার

কুমিল্লায় বীর মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় জামায়াতের ২ কর্মী বহিষ্কার

পতিত আওয়ামী স্বৈরাচারের গত ১৭ বছরের নির্যাতন ভুলে যাবার সুযোগ নেই: আমিনুল হক

পতিত আওয়ামী স্বৈরাচারের গত ১৭ বছরের নির্যাতন ভুলে যাবার সুযোগ নেই: আমিনুল হক

পাবনা ব্যাপ্টিস্ট চার্চে প্রাক বড়দিন উৎসব অনুষ্ঠিত

পাবনা ব্যাপ্টিস্ট চার্চে প্রাক বড়দিন উৎসব অনুষ্ঠিত

পূর্বধলায় শীতার্ত মানুষের মাঝে ইসলামী যুব আন্দোলনের কম্বল বিতরণ

পূর্বধলায় শীতার্ত মানুষের মাঝে ইসলামী যুব আন্দোলনের কম্বল বিতরণ

ধর্ম-বর্ণ নয়, সমান মর্যাদায় হোক নাগরিক পরিচয়: জোনায়েদ সাকি

ধর্ম-বর্ণ নয়, সমান মর্যাদায় হোক নাগরিক পরিচয়: জোনায়েদ সাকি

এসবিএসি ব্যাংকের শরিয়াহ্ সুপারভাইজরি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

এসবিএসি ব্যাংকের শরিয়াহ্ সুপারভাইজরি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

আ.লীগের হাতেও নির্যাতিত হয়েছিলেন সেই মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু তুলে ধরেনি গণমাধ্যম!

আ.লীগের হাতেও নির্যাতিত হয়েছিলেন সেই মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু তুলে ধরেনি গণমাধ্যম!

ভারত বাংলাদেশ থেকে বস্তা বস্তা টাকা লুট করেছে : দুদু

ভারত বাংলাদেশ থেকে বস্তা বস্তা টাকা লুট করেছে : দুদু

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে সিটিজেন’স চার্টার অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে সিটিজেন’স চার্টার অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত

মতিঝিলে বিশ্বমানের ডায়াগনস্টিক সেবা প্রদান শুরু আইসিডিডিআর,বি’র

মতিঝিলে বিশ্বমানের ডায়াগনস্টিক সেবা প্রদান শুরু আইসিডিডিআর,বি’র

স্বামীর অগোচরে স্ত্রী অন্য কারও সাথে কথা বলা প্রসঙ্গে?

স্বামীর অগোচরে স্ত্রী অন্য কারও সাথে কথা বলা প্রসঙ্গে?

চাঁদপুর মেঘনায় মালবাহী জাহাজে ৭ জনকে কুপিয়ে হত্যা, গুরুতর আহত ১

চাঁদপুর মেঘনায় মালবাহী জাহাজে ৭ জনকে কুপিয়ে হত্যা, গুরুতর আহত ১

পতিত স্বৈরাচার হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি

পতিত স্বৈরাচার হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি

যাকাত বোর্ডের ১১ কোটি টাকা বিতরণের প্রস্তাব অনুমোদিত

যাকাত বোর্ডের ১১ কোটি টাকা বিতরণের প্রস্তাব অনুমোদিত

১৬ বছরে নির্বাচন ব্যবস্থা নির্বাসনে চলে গিয়েছিল : সংস্কার কমিশন প্রধান

১৬ বছরে নির্বাচন ব্যবস্থা নির্বাসনে চলে গিয়েছিল : সংস্কার কমিশন প্রধান

জিনিসের দাম একবার বাড়লে কমানো কঠিন: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

জিনিসের দাম একবার বাড়লে কমানো কঠিন: পরিকল্পনা উপদেষ্টা