ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৪ আশ্বিন ১৪৩১

ফিলিস্তিনকে বড় ছাড় না দিলে সউদী-ইসরাইল চুক্তি সম্ভব নয়

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

০১ আগস্ট ২০২৩, ০৮:৩৩ পিএম | আপডেট: ০২ আগস্ট ২০২৩, ১২:০২ এএম

ইসরাইলসহ যুক্তরাষ্ট্রের বহু দিনের চাওয়া, সউদী-ইসরাইলের সম্পর্ক স্বাভাবিকীরণ চুক্তি। তবে এ নিয়ে অনেক আলোচনা হলেও, খুব শিগগির চুক্তিটি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মন্তব্য করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইসরাইলি কর্মকর্তা। আর এ ক্ষেত্রে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ইস্যু অর্থাৎ, ফিলিস্তিনি ভূখ-ে ইসরাইলের দখলদারিত্ব বন্ধসহ রিয়াদের আরও কিছু শর্তকে প্রধান বাধা হিসেবে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ চুক্তির আগে ইসরাইলের ওপর বেশকিছু শর্ত দিতে পারে রিয়াদ। যার মধ্যে থাকতে পারেÑ ফিলিস্তিনি ভূখ-ে দখলদারিত্ব বন্ধ, পশ্চিম তীরকে ইসরাইলি ভূখ-ের সঙ্গে যুক্ত না করার মতো বিষয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, এসব শর্তে ইসরাইলের কট্টর ডানপন্থি সরকারের সম্মত না হওয়ার সম্ভাবনা-ই বেশি। এদিকে, গত শুক্রবার (২৮ জুলাই) মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় রিয়াদ-তেল আবিবের সম্পর্ক উন্নয়ন ও একটি চুক্তি হতে পারে। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি সউদী আরব। ইসরাইলভিত্তিক সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরাইল বলছে, এক মাস আগেও পুরো ভিন্ন কথা বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। গত ৯ জুলাই সিএনএনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জো বাইডেন বলেছিলেন, সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ চুক্তি থেকে এখনো অনেক দূরে সউদী ও ইসরাইল। বলা হচ্ছে, এ চুক্তির জন্য শুধু বাইডেন নন, মুখিয়ে রয়েছে ইসরাইলও। গত শুক্রবার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছিলেন, সউদী যদি চায়, তাহলে এ চুক্তি খুব দ্রুতই হতে পারে। এতে দুই দেশেরই ব্যাপক অর্থনৈতিক সুবিধা হবে, বদলে যাবে গোটা আরব বিশ্ব। সউদীসহ লাভবান হবে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র। সেই সঙ্গে ইরানকে নিয়ন্ত্রণ করাও অনেক সহজ হয়ে যাবে। এ চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য এরই মধ্যে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান ও মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্রদূত ব্রেট ম্যাকগার্ককে জেদ্দায় পাঠিয়েছেন বাইডেন। সেখানে সউদী যুবরাজের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এর আগে গত জুনে একই ইস্যুতে সউদী আরব সফর করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। সে সময় সউদী পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান বলেছিলেন, ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য শান্তির ব্যবস্থা না করে তেল আবিবের সঙ্গে চুক্তি হলে, তা খুব এটা সুফল বয়ে আনবে না। টম ফ্রিডম্যান নামে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ সহচর গত বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক টাইমসের একটি কলামে লিখেছেন, ফিলিস্তিনকে দেওয়া ছাড়ের মধ্যে ইসরাইলকে একটি সরকারি প্রতিশ্রুতি দিতে বলতে পারে রিয়াদ। এতে উল্লেখ থাকবে, পশ্চিম তীরকে কখনোই নিজ ভূখ-ের সঙ্গে যুক্ত করবে না ইসরাইল। এছাড়া পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনের সীমানা আর বাড়ানো যাবে না। তার মতে সউদী আরও শর্ত দেবে যে, ইসরাইল কোনো অবৈধ ফাঁড়ি বৈধ করতে পারবে না ও পশ্চিম তীরের ‘সি’ নামক এলাকাসহ ফিলিস্তিনের জনবহুল কিছু অঞ্চল ছেড়ে দিতে হবে, যা অসলো চুক্তির অধীনে এখন ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণে। এছাড়া, শর্তের মধ্যে সউদীর বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচি চালুর বিষয়টিও উঠে আসতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল শুরু থেকেই রিয়াদের এ দাবির বিরোধিতা করে আসছে। এর আগে টাইমস অব ইসরাইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ওয়াশিংটনের কাছ থেকে আরও উন্নত অস্ত্র ও সামরিক প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি কিনতে চায় রিয়াদ। এসবের মধ্যে রয়েছে টার্মিনাল হাই অল্টিটিউড এরিয়া ডিফেন্স ও অ্যান্টিব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যা ইরানের ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক অগ্রগতির বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যেতে পারে। ২০২০ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তি সই করেছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, সুদান ও মরক্কো। কিন্তু সউদী আরব এ দেশগুলোকে অনুসরণ করেনি। তারা আনুষ্ঠানিকভাবে আরব লীগের আদর্শ ও নীতি মেনে চলার অঙ্গীকার করেছে। তাদের দাবি, ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আগে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। টাইমস অব ইসরাইল, নিউ ইয়র্ক টাইমস।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সবধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সবধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপিটুনিতে হত্যা মামলায় আরও একজনসহ গ্রেপ্তার ৬

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপিটুনিতে হত্যা মামলায় আরও একজনসহ গ্রেপ্তার ৬

সাধ্যের বাইরে গিয়ে মা-বাবার চাহিদা পূরণ করা প্রসঙ্গে?

সাধ্যের বাইরে গিয়ে মা-বাবার চাহিদা পূরণ করা প্রসঙ্গে?

আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা প্রথম বিদেশ সফরে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন

আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা প্রথম বিদেশ সফরে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন

ইসলামি দেশগুলোর মধ্যে জ্ঞানীয় বিজ্ঞানে শীর্ষ দুয়ে ইরান

ইসলামি দেশগুলোর মধ্যে জ্ঞানীয় বিজ্ঞানে শীর্ষ দুয়ে ইরান

জাইসের লেন্সের জয়জয়কার, স্মার্টফোনেও দুর্দান্ত

জাইসের লেন্সের জয়জয়কার, স্মার্টফোনেও দুর্দান্ত

সাগর-রুনি হত্যার বিচারের প্রাথমিক স্তর পরিষ্কার করা দরকার : শামসুজ্জামান দুদু

সাগর-রুনি হত্যার বিচারের প্রাথমিক স্তর পরিষ্কার করা দরকার : শামসুজ্জামান দুদু

আন্দোলন সংগ্রামে থাকা নেতাকর্মীদের পিছনে রাখার সুযোগ নেই : আমিনুল হক

আন্দোলন সংগ্রামে থাকা নেতাকর্মীদের পিছনে রাখার সুযোগ নেই : আমিনুল হক

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টার সাথে বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টের বৈঠক

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টার সাথে বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টের বৈঠক

যশোরে সাবেক এমপি, এসপিসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

যশোরে সাবেক এমপি, এসপিসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি স্থানান্তরে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া রিটের আদেশ আগামী রোববার

এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি স্থানান্তরে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া রিটের আদেশ আগামী রোববার

গণহত্যাকারী আ.লীগের সঙ্গে আলোচনা নয় : আসিফ নজরুল

গণহত্যাকারী আ.লীগের সঙ্গে আলোচনা নয় : আসিফ নজরুল

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি’র সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি শুরু

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি’র সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি শুরু

প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে নোবিপ্রবি শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদিনের বেতন প্রদান

প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে নোবিপ্রবি শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদিনের বেতন প্রদান

সিল্ক রোড উৎসবে ইরানের ‘মেলোডি’

সিল্ক রোড উৎসবে ইরানের ‘মেলোডি’

বেনজির ও আজিজসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের

বেনজির ও আজিজসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের

৬ ব্যাংকের এমডি নিয়োগ বাতিল

৬ ব্যাংকের এমডি নিয়োগ বাতিল

১৪৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এলো সেপ্টেম্বরের ১৭ দিনে

১৪৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এলো সেপ্টেম্বরের ১৭ দিনে

ইউনূস গুড উইলের প্রতিফলন দেখতে চায় জনগণ: রিজভী

ইউনূস গুড উইলের প্রতিফলন দেখতে চায় জনগণ: রিজভী

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর আমীর আলী চৌধুরীর ইন্তেকাল

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর আমীর আলী চৌধুরীর ইন্তেকাল